Better life with steem || The Diary Game || 24th March, 2024 ||
"আমার গতকাল সারাদিনের কিছু মুহুর্ত"
Hello,
Everyone,
"সুপ্রভাত"
আজ দোল পূর্ণিমা। তাই লেখা শুরু করার আগে সকলকে দোলের অনেক শুভেচ্ছা জানাই। এই রঙের উৎসবে, আপনারা সকলে আনন্দে মেতে উঠুন, তবে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন, আপনার আনন্দ যেন অন্যের নিরানন্দের কারণ না হয়।
গত পরশুদিন থেকে আবার শশুর মশাইয়ের শরীর খারাপ শুরু হয়েছে। সেই পুরোনো সমস্যা, ইউরিন ইনফেকশন। আসলে যখন তার শরীর একটু ভালো থাকে, তখন তিনি নিজেকে ৩০ বছরের যুবক মনে করেন।
নিয়ম ছাড়া চলতে শুরু করেন, কারোর কথা শোনেন না। যখন অসুস্থ হন তখন একেবারে যেন কিছুই বোঝেন না।ইচ্ছাকৃতভাবে নিয়ম ছাড়া চলে, অসুস্থতাকে আমন্ত্রণ জানানোর এই প্রবৃত্তির জন্য, গতকাল থেকে বেশ বিরক্ত হয়ে আছি ওনার উপরে।
আর হবো না ই কেন বলুন? উনি শরীর খারাপ বাধিয়ে নিয়ে শুয়ে থাকেন। আর বাড়ির মানুষ গুলোর পরিশ্রম, দুঃশ্চিন্তা বেড়ে যায়। শুনেছি অসুস্থ না হলে সুস্থতার মূল্যায়ন করা যায় না। আর উনি তো প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন, তবুও সুস্থ থাকার চেষ্টা করতে রাজি নন। যাইহোক এই সবকিছু নিয়ে গতকাল দিনটি খুব খারাপ কেটেছে।
আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো আমার গতকাল দিনটি কেমন কাটলো। চলুন তাহলে শুরু করি, -
"সকালবেলা"
গত পরশুদিন রাতে কখন ঘুমিয়েছি জানিনা। কমিউনিটির কিছু কাজ গুছিয়ে, পোস্ট লেখা কিছুটা এগিয়ে রেখে, অনেকক্ষন গান শুনলাম। কানে হেডফোন দিয়ে, ফুল ভলিউমে, অনেক দিন বাদে গতকাল গান শুনতে শুনতে, কখন যেন ঘুমিয়ে পরেছিলাম।
গতকাল রবিবার ছিল, তাই ফোনের অ্যালার্ম বন্ধ ছিল। যখন ঘুম ভাঙলো ঘড়ির কাটায় তখন ৮.৪৪ মিনিট। ইচ্ছে করেই আরো অনেকক্ষণ শুয়ে রইলাম। তারপর কমিউনিটির একটি কন্টেস্টের ডিটেলস ম্যামকে মেইল করে পাঠাতে হতো আজ, তাই সেই কাজটাও করে নিলাম।
পরশু রাতে যেহেতু পোস্ট সম্পূর্ন লিখিনি, তাই গতকাল সকালে পোস্ট লিখতেই হতো, এই কারণে বসে পড়লাম পোস্ট লিখতে। পোস্ট করা শেষে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ডিসকর্ডে কথা বলার জন্য যোগ দিলাম। এই সমস্ত কাজ করতেই প্রায় ১১টার বেশি বেজে গেলো।
তারপর আমি আমার রুম থেকে বেরোলাম। এরকমটা বোধহয় এর আগে কখনো হয়নি, যে ঘুম থেকে ওঠার এতক্ষণ বাদে আমি রুম থেকে বেরিয়েছি। তবে হ্যাঁ কখনো কখনো অন্যরকম জীবন যাত্রা, নিজের পাশাপাশি অন্যদেরকেও অবাক করে তোলে। গতকাল আমাদের আমার বাড়ির লোকজনদের একই অবস্থা হয়েছিল।
প্রথমে ফ্রেশ হলাম, তারপর ব্রাশ করে, দুটো বিস্কুট খেলাম। বেশ খিদে পেয়ে গিয়েছিলো। চা করতে ইচ্ছে করছিল না, তাই আর করিনি। কারণ আমি বাদে বাকি সকলেরই চা খাওয়া হয়ে গিয়েছিলো। আমি বিস্কুট দুটো খেয়ে জল খেলাম।
তারপর আবার কমিউনিটির কাজে সকলের সাথে ডিসকর্ডে যোগ দিলাম, একজন নতুন ইউজারের ভিডিও ভেরিফিকেশনের জন্য। যখনই কোনো নতুন ইউজার আমাদের কমিউনিটিতে যোগদান করে, সত্যিই ভীষণ ভালো লাগে। মনে হয় যেন নিজের পরিবারের আরো একজন সদস্য বেড়ে গেলো।
এই সকল কাজ সেরে, আমি বেশ কিছু জামা কাপড় কাঁচার জন্য ভিজিয়ে দিলাম। তারপর ঘরের টুকটাক কাজ সেরে নিলাম। ও হ্যাঁ আজ অনেকদিন বাদে আমি আমাদের গাছ থেকে ফুল তুলেছি। কারণ এখন আমাদের গাছে একটা দুটো করে ফুল ফুটতে শুরু করেছে।
তাই বলতে পারেন, রোজকার সকল কাজের মধ্যে এখন থেকে আরো একটা নতুন কাজ যুক্ত হবে, সেটা হচ্ছে ফুল তোলা এবং এই কাজটা করতে আমার খুব ভালো লাগে। আরো কয়েকদিন বাদে আরো অনেক বেশি পরিমাণে ফুল ফুটবে, তবে আজকে যতগুলো ফুল ফুটেছিলো, তার ছবি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
"দুপুরবেলা"
যাইহোক ফুল তোলা শেষ করে, আমি সমস্ত জামাকাপড় গুলো কেঁচে দিলাম। কারণ ততক্ষণে অনেক বেলা হয়ে গিয়েছিল। যেহেতু কাজ শুরু করেছি প্রায় ১২ টার কাছাকাছি সময়, তাই টুকটাক কাজ করতে করতে ঘড়ির কাঁটা কখন ৩টের কাছে পৌঁছে গেছে বুঝতে পারিনি।
জামা গুলো ছাদে মেলে দিয়ে, স্নান করে, আগে ঠাকুর পুজো দিয়ে নিলাম। অন্যদিকে শাশুড়ি মা রান্না করে নিয়েছিলেন, ও হ্যাঁ আপনাদের জানাতে ভুলে গিয়েছি, গত পরশু তিনি বাড়িতে ফিরেছেন।
রান্নাবান্নার শেষে আমি সমস্ত খাবারগুলো টেবিলে এনে গুছিয়ে নিলাম। তারপর শ্বশুরমশাইকে খেতে দিলাম। কারণ আজ বেশ অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছিলো। ওনার খাওয়া শেষ হয়ে গেলে, আমি পিকলুকে লাঞ্চ করিয়ে দিলাম।
রবিবারের আড্ডা শেষ করে, শুভ বাড়িতে এসে স্নান করলে, আমি আর শুভ একসাথে লাঞ্চ করলাম। শাশুড়ি মায়ের তখনও স্নান হয়নি বলে, উনি আমাদেরকে আগে খেয়ে নিতে বললেন।
যেহেতু আমি সকালে কিছু খাইনি, আমার বেশ খিদে পেয়েছিলো। তাই খুব বেশি দেরি না করে আমিও শুভর সাথে খেতে বসে পড়লাম। তারপর সবকিছু গুছিয়ে রাখলাম, একটু বাদে শাশুড়ি মা লাঞ্চ করতে বসলেন।
"সন্ধ্যাবেলা"
লাঞ্চ করে উঠে আমি যথারীতি কমিউনিটির কাজ নিয়েই বসলাম এবং বেশ কিছুক্ষণ বাদে সন্ধ্যা হয়ে এলে, আমি উঠে সন্ধ্যা পূজা দিলাম। ছাদ থেকে সমস্ত জামা কাপড় তুলে রেখেছি, আজ আর ভাঁজ করতে ইচ্ছে করছিল না বলে।
এরপর আমার দিদির সাথে ফোনে বেশ কিছুক্ষণ কথা হলো। যেহেতু আজ দোল, তাই দিদির মেয়ে কাল অনেকবার করে যেতে বলছিলো। তবে এই মুহূর্তে যাওয়া সম্ভব নয়, যেহেতু শশুর মশাইয়ের শরীর খারাপ। তবে দু-একদিনের মধ্যে আমাকে যেতে হবে।
"রাত্রিবেলা"
যাইহোক এরপরে নিজে কাজে ব্যস্ত ছিলাম। গতকাল অনেকদিন পরে একটা পারলেজি বিস্কুট খেয়েছি। এই বিস্কুটটি দেখলে ছোটবেলার কথা খুব মনে পড়ে। ছোটবেলায় এটা আমার খুব প্রিয় একটি বিস্কুট ছিলো।
আমার খাওয়া দেখে পিকলুও সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু যেহেতু বিস্কুটটা বেশ মিষ্টি ছিলো, তাই ওকে দেওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু তিনি তো বিস্কুট না খেয়ে নড়বেন না, তাই ওকে একটা সুগার ফ্রি বিস্কুট দিয়েছিলাম।
এরপর আর কি, বেশ কিছুক্ষণ কমিউনিটির কাজ করলাম তারপর গেলাম রাতের জন্য রুটি বানাতে। কাল বেশ অনেকটাই ভাত ছিল, তাই খুব বেশি রুটি বানাতে হয়নি। পিকলুকে খেতে দিয়ে, আমরাও খাওয়া-দাওয়া শেষ করে নিলাম। এরপর সবকিছু গুছিয়ে নিজে পোস্ট লিখতে বসেছিলাম, তবে সম্পূর্ণ করতে পারিনি। গতকাল দিনটা আমার এই ভাবেই কাটলো। সকলে ভালো থাকবেন।
আপনার ছোটবেলায় পছন্দের বিস্কুটের কথা জানতে পেরে বেশ ভালো লাগলো,, সারাদিন বেশ সুন্দর একটা দিন কাটিয়েছেন আপনি তবে পরে ভালো লাগলো বিস্কুট কারো সামনে তুলে এসে সামনে দাঁড়িয়ে আছে, ভীষণ মিষ্টি লাগছিল দেখতে ধন্যবাদ আপনাকে।।
এই পোষ্টের মাধ্যমে অনেক সুন্দর করে আপনার দিনলিপি তুলে ধরেছেন। আপনার শশুর মশায়ের কথা শুনে আমার বাবার কথা মনে পড়লো। আমার বাবাও একটু সুস্থ হলে তিনি আর কোন ওষুধ খেতে চান না। অথচ এক সময় তিনি নিজে মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট ছিলেন। তিনি একজন ডায়াবেটিসের রোগী। কিন্তু নিজে পন্ডিতি করে ইনসুলিন নেওয়া বন্ধ করে দিয়ে খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। ডাইবেটিস চেক করলে অনেক বেড়ে যাবে এই ভয়েতে চেকই করান না। নিয়ম করে একদিন ওষুধ খান আর পরের দিন বাদ দেন।