Better life with steem || The Diary Game || 23th January, 2024 || Marriage Anniversary

in Incredible India7 months ago (edited)
IMG_20240124_020656.jpg
আজকের সারাদিন

Hello,

Everyone,

এখন বাজে রাত ১২.৩৫। সমস্ত কাজ সেরে সবেমাত্র পোস্ট লিখতে বসেছি। গতকাল বলেছিলাম আজ একটি বিশেষ দিন। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন তো বটেই, তার পাশাপাশি আজকের দিনেই শুরু হয়েছিল আমার জীবনের এক নতুন অধ্যায়।

IMG_20240124_015033.jpg

১১বছরের পথচলা

আজ আমার বিবাহবার্ষিকী। ১১ বছর আগে এইদিনে শুভর হাত ধরে নতুন পথ চলা শুরু করেছিলাম। দুচোখে তখন অনেক রঙীন স্বপ্ন, কারন বাস্তবতা তখনও দরজায় কড়া নাড়ে নি।

পথ চলতে চলতে বুঝলাম, জীবন আসলে জীবনের গতিতেই চলে, সেখানে আমাদের অনুভূতি গুলো সব সময়, সবার কাছে সমান মূল্যায়ন পাবে, তেমন আশা না করাই ভালো। তাতে কষ্ট কম হয়। তবে এই অভিজ্ঞতাটুকু অর্জন করতে অনেক গুলো বছর পার করতে হয়েছে।

যাইহোক ১১ বছর কিন্তু কম সময় নয়। ভাবতেও অবাক লাগে এতোগুলো দিন কিভাবে কাটালাম, জীবনের ঘাত প্রতিঘাত সবটা কাটিয়ে, একসাথে পথচলার এই ১১ বছর পূর্তির দিনটি কিভাবে কাটালাম, আজ সেই গল্প শেয়ার করবো আপনাদের সাথে। চলুন তাহলে শুরু করি, -

সকালবেলা

IMG_20240124_020527.jpg

অনেকদিন বাদে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া

প্রতিবছর ২৩ শে জানুয়ারি শুভর অফিস ছুটি থাকলেও, এই বছর কোনো কারনে ছুটি ক্যান্সেল হয়েছে। যে কারণে রোজকার মতোই সময় মত ঘুম থেকে উঠে, প্রতিদিন সকালের রুটিন অনুযায়ী সমস্ত কাজ সম্পন্ন করলাম। আজ অনেকদিন বাদে বাইরের রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া দেখে শুভ অফিসে বেরিয়ে যাওয়ার পরেই বেশকিছু জামা কাপড় কাঁচার জন্য ভিজিয়ে দিয়েছিলাম।

ননদের আজ দুপুরে দুই ছেলেকে দুই ছেলেকে সাথে নিয়ে আসার কথা। হাজব্যান্ড অফিসে যাবে, তাই সেই রাতে আসবে এমনটাই কথা ছিলো। সেই মতো সকলের সমস্ত কাজ সম্পন্ন করে কমিউনিটির কাজ করলাম বেশ কিছুক্ষণ। কারণ রাতের দিকে আজ খুব বেশি সময় দিতে পারবো না। কাজ করা সম্পন্ন করে ননদকে ফোন করে জানলাম, তারা কখনো আসছে। তারা জানালো পৌঁছাতে তাদের মোটামুটি দুপুর হয়ে যাবে।

কমিউনিটির কাজ গুছিয়ে নিয়ে, আমি পূজোর সবকিছু গুছিয়ে নিলাম। তারপর স্নান করতে গেলাম এবং তার আগে ভিজিয়ে রাখা জামা কাপড় গুলো কেঁচে একবারে স্নান করে উঠলাম। ছাদে তখন ভালোই রোদ্দুর ছিলো, তাই জামা কাপড়গুলো ছাদে মেলে দিয়ে প্রথম ঠাকুর পূজা দিয়ে নিলাম।

দুপুরবেলা

IMG_20240124_020500.jpg

আজকের লাঞ্চ-পোলাও, চিকেন ও স্যালাড

পুজো দিতে বসেছি, এমন সময় ননদরা চলে এলো। আজকে দুপুরে রান্নার দায়িত্ব শাশুড়িমাই নিয়েছিলেন, কারণ যেহেতু সকলের আজ অফিস ছিলো। রাতে খাওয়া দাওয়ার আয়োজন করা হয়েছিল। এমনিতে যে পরিমাণে শীত পরছে তাতে বেশি রাত পর্যন্ত জাগাটা অসম্ভব। তারপর ননদেরও ফিরে যেতে হবে। তাই দুপুরে শাশুড়ি মা শুধু পোলাও ও চিকেন রান্না করেছেন। রাতের মেনুতে ছিল ফ্রাইড রাইস, মটন কষা এবং বেগুনী।

IMG_20240124_020429.jpg

ননদের ছোটো ছেলে গেম খেলতে ব্যস্ত

আজকে পিকলু অনেক দিনবাদে দুপুরে কিছুটা ভাত খেয়েছিল, যেটা দেখে অনেকটা শান্তি পেয়েছিলাম। যাইহোক ওকে ওষুধ দেয়ার পর, আমি শশুর মশাইকে খেতে দিলাম। ততক্ষণে ননদ ওনার ছেলেকে খাইয়ে দিল। খাওয়া শেষ করে ও ফোনে গেম খেলতে বসলো।

সকলের খাওয়া হয়ে গেলে শেষে আমি, ননদ ও শাশুড়ি মা একসাথে লাঞ্চ শেষ করলাম। তারপর যথারীতি কমিউনিটির বেশ কিছু কাজ সম্পন্ন করলাম। কারণ এই কাজের দায়িত্ব একান্তই আমার উপরে, তাই বাড়িতে অনেক ব্যস্ততা থাকলেও এই কাজটি সময় মত সম্পন্ন করতেই হবে।

সন্ধ্যাবেলা

এরপর সন্ধ্যা পুজো দিয়ে, সোজা রান্নাঘরে গেলাম রাতের রান্নার সমস্ত কিছু জোগাড় করার জন্য। একটু বাদে সকলে ঘুম থেকে উঠলে, আমি চা বসলাম। ননদ চা খেয়ে রান্নাঘরে চলে এলো। আমাদের বাড়িতে কোনো অনুষ্ঠান হলে রান্নার দায়িত্ব আমার ননদই নিয়ে থাকে। আমি শুধু তাকে একটু হেল্প করি।

সন্ধ্যার দিকে শুভ অফিস থেকে বাড়ি এলো। আজকে ওর দুজন বন্ধুকেও নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল রাতে ডিনার করার জন্য। ওর জন্য কফি বসিয়েছিলাম, তখনই ওর একজন বন্ধু এলো। তাই আবার নতুন করে তার জন্য কফি করে দিলাম। ওরা দুজন কফি নিয়ে উপরে চলে গেলো। তারপর যথারীতি আমরা রান্নার তোড়জোড় শুরু করলাম। সমস্ত রান্নার শেষ হতে প্রায় রাত দশটা বেজে গেলো।

এর মধ্যে একটা সারপ্রাইজ ছিলো আমার জন্য। এই বিষয়ে কথা বলতে গেলে পোস্ট অনেক বড় হয়ে যাবে, তবে অবশ্যই সেই গল্প আগামীকাল আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। যাইহোক রান্না শেষে সকলকে ডিনার দিয়ে দিলাম।

রাত্রিবেলা
IMG_20240124_015317_015614.jpg

ননদের আয়োজন

এক এক করে সকলের খেয়ে নিলো। যেহেতু শীতকাল রাত অনেকটাই হয়েছিল, তাই সকলের খাওয়া হতেই ননদ কেক কাটার আয়োজন করে ফেলল। ১১ বছর বাদে এসে কেক কাটাটা বেশ লজ্জাজনক। কিন্তু কিছু করার নেই,ননদের বড় ছেলে নিজে পছন্দ করে কেকটা নিয়ে এসেছিল।

IMG_20240124_015244_015714.jpg

আমরা সকলে

কেক কাটাকে কেন্দ্র করে পরিবারের সকলে মিলে কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম। আসলে এই মুহূর্তগুলো ক্যামেরা বন্দি করাটার একটাই উদ্দেশ্য, আগামী বছর এই দিনে সকলে একসঙ্গে থাকবো কিনা জানি না, তাই এই ছবির মাধ্যমে এই স্মৃতিগুলোকে ধরে রাখার ছোট্ট একটা প্রচেষ্টা বলতে পারেন। যেহেতু পরিবারের লোকজনই ছিলাম, তাই সকলে মিলে এক জায়গায় দাড়িয়ে কয়েকটা ছবি তুলে নিলাম।

IMG_20240124_015348_015422.jpg

ডিনার- ফ্রয়েড রাইস,বেগুনি ও মটন কষা

এরপর সকলকে কেক দিলাম খাওয়ার জন্য। তবে আমার তখনও ডিনার করা বাকি ছিল, তাই আমি আর কেক খাইনি। শুধু বন্ধুরা একটু বাদে বাড়ির উউদ্দেশ্যে রওনা করলো।এরপর আমি, ননদ, শাশুড়ি মা খেতে বসলাম।
শীতকালে রান্না করার একটু বাদে সমস্ত কিছু ঠান্ডা হয়ে যায়। তবে খেয়ে বুঝলাম সবকিছু খেতে ভালোই হয়েছিল। আমি যেহেতু মটন খাই না, তাই দুপুরের রান্না করার চিকেন দিয়েই ফ্রাইড রাইস খেলাম।

খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ননদের জন্য বেশ কিছু খাবার প্যাক করে দিলাম। যাতে আগামী কাল ওনার ছেলে দুটো সেগুলো খেতে পারে। তারপর সমস্ত কিছু গুছিয়ে ননদেরকে বিদায় জানালাম। রাত যত বাড়ছে ঠান্ডাও ঠিক ততটাই বাড়ছে। আগামী কাল কি হবে জানিনা।

যাইহোক সমস্ত কাজ সম্পন্ন করে পোস্ট লিখতে বসেছি, তবে ভীষণ ক্লান্ত লাগছে। পাশাপাশি অনেক বেশি শীতও লাগছে। এভাবে আজকের দিনটি কাটালাম। ভালোলাগা, মন্দলাগা, আনন্দ, দুঃখ সব কিছু নিয়ে ১১টা বছর এই বাড়িতে কাটিয়ে দিলাম, এটা ভাবতে অবাক লাগছে।

যাইহোক লেখার মাধ্যমে অবশ্য সকাল সকলকে ধন্যবাদ দিতে চাই আমার জীবনের দিনটিকে এত সুন্দর ভাবে পালন করার জন্য ননদ প্রতিবারই দিনটাকে সুন্দরভাবে পালন করে থাকে।

যাইহোক এইভাবেই আজকের দিনটি কাটালাম। বেশ কিছুটা কর্মব্যস্ততা, কিছু কাছের মানুষের উপস্থিতি,সুন্দর কিছু মুহূর্ত, বেশকিছু স্মৃতি, সবকিছু নিয়ে বিবাহ বার্ষিকীর দিনটা বেশ ভালো কাটলো। আমার বিশ্বাস আপনাদের সকলের দিনটিও অনেক ভালো কেটেছিলো? সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, এই শুভকামনা রইলো। শুভরাত্রি।

দু-একটা ছবি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নেওয়া
Sort:  
Loading...
 7 months ago (edited)

দিদি, প্রথমেই শুভ বিবাহ বার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানাই আপনাকে। শুভকামনা রইল আপনার জন্য। সবাইকে সাথে নিয়ে অনেক ভালো থাকবেন।।।

 7 months ago 

ধন্যবাদ ভাই আপনাকে শুভেচ্ছা জাষআনোর জন্য। রিপ্লাই করতে একটু দেরি হলো। আপনিও ভালো থাকবেন।

 7 months ago 

ধন্যবাদ দিদি,আমার মতামতের উওর দেওয়ার জন্য।।।

প্রথমে জানাই আপনার ১১ তম বিবাহ বার্ষিকীর শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন 💝 দোয়া করি আপনাদের দুজনের পথ চলা যেনো আর দীর্ঘ হয় এবং আমৃত্যু দুজন একই সুতিতে গাঁথা থাকে।
আপনার পুরো দিনটি অনেক বেশি সুন্দর এবং আনন্দে ঘেরা ছিলো।
তবে আপনার ননদের ছোট ছেলের প্রতি একটু কেয়ারফুলি হওয়া দরকার। কারণ বর্তমান সময়ের ছোট বাচ্চারা তাদের মহা মূল্যবান সময় গেমস খেলে নষ্ট করে থাকে।আমি মনে করি এধরণের কাজের জন্য বাচ্চাদের মেধার ব্যপক পেশার পরে।
পরিশেষে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই, আমাদের একটি সুন্দর দিনের গল্প শোনানোর জন্য।

 7 months ago 

প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই শুভেচ্ছা জানানোর জন্য। আসলে আমআর ননদের ছেলে বাড়িতে গেম খেলার অনুমতি পায় না। তাই মামাবাড়িতে একটু খেলে, সেটুকু না দিলে মামাবাড়িতে এসে আর আবদার করবে কি? খুব কম সময়ের জন্য গেম খেলতে দেওয়া হয়। তবে আপনাকে ধন্যবাদ সচেতন করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Congratulations!
This publication has been supported through the Steemcurator06 account for containing good quality content.

Curated by @ridwant

 7 months ago 

Thank you for your support 🙏.

 7 months ago 

বিবাহ বার্ষিকীর শুভেচ্ছা রইলো।
আসলে সময় যে কোনদিক চলে যায় বোঝাই যায় না।মনে হয় এই বুঝি সেদিন কিন্তু হিসেব করলে মনে হয় এত বছর কিভাবে হলো !
আপনার ননদের ছেলে একটা ভালো কাজ করেছে কেক নিয়ে এসে। এখনকার বাচচাগুলো আসলে এই বিষয়গুলোতে খুব সচেতন।
আমার ছেলেরাও একই কাজ করে। আমার ডেট মনে না থাকলেও ওরা সব মনে রাখে। অনেক সময় কেক কিনে এনে লুকিয়ে রাখে দুজনে মিলে।এই ছোট খাট জিনিসগুলো ভালোই লাগে।
রান্নার কাজে আপনার ননদের মতো একজন মানুষ থাকলে ভালোই হয়, যাকে সব দায়িত্ব দিয়ে অনেকটা নির্শি্চন্তে থাকা যায়।
বিবাহ বার্ষিকীর বিশেষ দিনটা ভালোই কেটে গেছে পরিবার এর সদস্য ও বন্ধুদের নিয়ে।মটনকষাটা দেখে মনে হচ্ছে খেতে খুব ভালো হয়েছে।
এই দিনটা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন সবসময়।

Posted using SteemPro Mobile

নেতাজির জন্মদিন আর আপনাদের বিবাহবার্ষিকী একই দিনে, দারুন ব্যাপার তো! আপনাদের বিবাহ বার্ষিকী ছিল বলেই গতকাল রোদ উঠেছিল। আজকে তো আমাদের এখানে টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়ছে। এরকম একটা ভালো দিনে কেন যে আপনি কাচাকাচি করতে যান। কেকটা দেখতে খুব সুন্দর হয়েছে আর স্পেশাল দিনে খাবারের মেনুগুলোও যথেষ্ট লোভনীয়।

 7 months ago 

Many many happy returns of the day 🎉🎉🎉🎉

দেখতে দেখতে বিয়ের এগারোটা বছর পার করে ফেলেছেন। আসলে সময়টা কখন চলে যায় বুঝতেও পারা যায় না। অনেকগুলো স্মৃতি আপনাদের বিয়ে কে নিয়ে আছে। আজকের দিনটাও খুব সুন্দর ভাবে পালন করেছেন। এভাবেই বাকি দিনগুলোতে একসাথে থাকুন,🥰 এই কামনা করে সৃষ্টিকর্তার কাছে ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.032
BTC 59304.77
ETH 2534.68
USDT 1.00
SBD 2.41