Better life with steem || The Diary Game || 18 th October
"Edited by canva" |
---|
Hello,
Everyone,
এখন রাত ১১.৪৯ বাজে, সবেমাত্র আমি আমার পোস্ট লিখতে বসলাম। সন্ধ্যা থেকে বহুবার বসার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোনো না কোনো কাজে আটকে পড়েছি।
সেই কারণে একেবারে রাতের খাওয়া দাওয়ার পরের কাজগুলো সেরে, তারপর লিখতে বসলাম। আসলে এই পোস্ট লেখাটা আমার জন্য খুব ভালোলাগার একটি কাজ।
তাই খুব তাড়াহুড়োর মধ্যে যদি কখনো পোস্ট লিখতে হয়, সেক্ষেত্রে আমার পক্ষে পোস্ট লেখা সম্ভব হয়ে ওঠে না। বরং সমস্ত কাজ শেষ করে, নিরিবিলি বসে পোস্ট লিখতেই আমার বরাবর ভালো লাগে।
কারণ আপনি চাইলেও আপনার মনের কথা ভীষণ ব্যস্ততার মাঝে ভালো ভাবে না কাউকে বলে বোঝাতে পারবেন,না লিখতে পারবেন। তার জন্য একটি সঠিক পরিস্থিতি বা মুহূর্তের দরকার, যেখানে আপনি আপনার মনের কথা শান্তভাবে কাউকে বলতে পারেন।
আমার ক্ষেত্রেও পোস্ট লেখার অর্থ আপনাদের সাথে নিজের মনের কথা শেয়ার করা,যেটা তাড়াহুড়ো করে আমি কখনোই করতে পারি না।
যাইহোক আশা করছি সকলে ভালো আছেন এবং আজকের দিনটা আপনাদের সকলের ভালো কেটেছে। প্রায় রোজকার মতনই আজকেও আমি আমার সারাদিন কিভাবে কাটল সেই কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আপনাদেরকে আমি আগের একটা পোস্টে জানিয়েছিলাম মহালয়ার দিনেই আমাদের পুজো প্যান্ডেলের থেকে গান শোনা গিয়েছিল। মাঝে দু'দিন বন্ধ থাকলেও আজ সকাল থেকে আবার গান চলা শুরু হয়েছে। আর আমার বিশ্বাস এই গান চলাটা বিজয় দশমীর পর্যন্ত চলবে।
কারণ ইতিমধ্যেই চারিদিকে পুজো পুজো রব ছড়িয়ে পড়েছে, রাস্তাঘাটে মানুষের ঢল নেমেছে, ইতিমধ্যেই সকলে পূজা পরিক্রমা করতে ব্যস্ত। সারারাত ধরে প্যান্ডেল হপিং, ঠাকুর দেখা, খাওয়া-দাওয়া, সমস্ত কিছুতেই এই সময় বাঙালি মেতে ওঠে।
সকালবেলা |
---|
যাইহোক, সকালবেলায় গানের শব্দে ঘুমটা ভেঙেছিল। তার কিছুক্ষণ পরেই মোবাইলে এলার্ম বাজলে আমিও ঘুম থেকে উঠে পড়লাম। জানলা দিয়ে বাইরের দিকে একনজর পড়তেই মনে হলো, সত্যিই পূজো এসেছে। আসলে প্রকৃতির রূপ পরিবর্তনই আমাদেরকে জানিয়ে দেয় কখন কি ঋতু চলছে।
এরপর আমি উঠে হাত মুখ ধুয়ে, ফ্রেশ হয়ে, নিচে গিয়ে প্রতিদিনকার মত প্রথম শ্বশুরমশাইকে ওষুধ দিলাম। তারপর রান্নাঘরে গিয়ে প্রতিদিনের মতো রুটি করে, তারপর চা বসলাম। শ্বশুরমশাইকে রুটি এবং চা দিয়ে, আমি শুভর জন্য চা নিয়ে উপরে এলাম। পিকলু আমার পিছু পিছু এলো, দুজনে মিলে খাটের উপরে বেশ কিছুক্ষণ মজা করলাম।
তারপর নিচে গিয়ে রান্না বসলাম। আজ সকালে শুধুমাত্র শুভর মতন করে অল্প রান্না হয়েছে। কারণ আজ যেহেতু আশ্বিন মাসের শেষ দিন, তাই আজ আমাদের বাড়িতে কিছু নিয়ম পালিত হয়। গত বছর এই দিনে এই সম্পর্কিত একটি পোস্ট আমি লিখেছিলাম।
যাইহোক আজকের দিনটাকে আমরা বলি গাড়ো সংক্রান্তি, অনেকে আবার গাড়ু সংক্রান্তিও বলে। এই দিনে সমস্ত কিছু ধোঁয়া মাজা করে, শুধুমাত্র নিরামিষ রান্না হয়। এই দিনে আমাদের বাড়িতে এক ধরনের বিশেষ ডাল রান্না করা হয়, যাকে চলতি ভাষায় গাড়ুর ডাল বলে। যেখানে বিভিন্ন ধরনের সবজি দিয়ে ডাল রান্না করা হয়।
ঠিক সেই মতন শুভ অফিসে বেরিয়ে যাওয়ার পর,।শাশুড়ি মা আমাদের বাড়ির চারপাশটা ঝাড় দিয়ে এলেন। আর আমি ঘরের মধ্যে সমস্ত কিছু গুছিয়ে রান্না ঘরে সকল জিনিসপত্র ধুয়ে মুছে নিলাম। তারপর নিয়ম অনুসরণ করে প্রথমে গিয়ে স্নান করে, শুদ্ধ বস্ত্রে ঠাকুর পুজো করলাম। আর শাশুড়ি মা রান্নাঘরে গেলেন।
দুপুরবেলা |
---|
তিনি সমস্ত কিছু সবজি কেটে নিয়ে তিনি রান্না বসালেন। আর আজকের দিনে স্নান করে ওঠে প্রথমে চাল, ডাল এবং শাপলা একটু করে কামড় দিতে হয়। যদি আপনারা এর যৌক্তিকতা জিজ্ঞেস করেন, আমি বোঝাতে পারবো না। তবে যেহেতু এটা পূর্বপুরুষ থেকে সকলে পালন করে আসছে, তাই না মানলে মনটা খুঁতখুঁত করে।
বলতে পারেন সেই হিসেব করেই এই নিয়মগুলো চলে আসছে এবং আরো কিছু বছর হয়তো চলবে। তবে এটাও আমি বিশ্বাস করি, একটা সময় পরে এই সমস্ত নিয়ম বন্ধ হয়ে যাবে। যাইহোক এরপর পুজো দেয়া হয়ে গেলে, আজ আমি শ্বশুর মশাই ও শাশুড়ি মা একসাথে লাঞ্চ করেছি।
অবশ্য তার আগে আমি পিকলুকে লাঞ্চ করিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর সকলেই একটু বিশ্রাম নিলাম। আমিও কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে, কমিউনিটির কিছু কাজ গুছিয়ে নিলাম। যথারীতি সন্ধ্যা ও নেমে এল কিছুক্ষণ বাদে। আমিও সন্ধ্যা পুজো দিয়ে নিলাম।
সন্ধ্যাবেলা |
---|
সন্ধ্যাবেলাতে আবার আমাদের বাড়ির চারপাশে ২১ প্রদীপ জ্বালানোর নিয়ম রয়েছে। অর্থাৎ ২১ টা প্রদীপে তেল এবং সলতে দিয়ে, সেই প্রদীপ গুলো জ্বালিয়ে বাড়ির চারপাশে, প্রতিটি ঘরের মধ্যে দিতে হয়। তাই পুজো দেয়া শেষ করে, এই কাজটা আমি ও শাশুড়ি মা দুজনে মিলে একসাথে করে নিলাম।
আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আমি আমাদের তুলসী মঞ্চ এবং ঘরে ঢোকার গেটের সাইডে যে প্রদীপ দেয়া হয়েছিল তার ছবিও তুলেছি। আসলে এই কাজটি করতে বেশ ভালো লাগে। কেন জানিনা একটা অন্য ধরনের আনন্দ অনুভূত হয়, যখন বাড়ির চারপাশে এমন করে প্রদীপ জ্বালানো হয়।
যাইহোক, এই কাজগুলো সম্পন্ন করে আমি পুনরায় কমিউনিটের কাজ নিয়ে বসলাম। গুরুত্বপূর্ণ কিছু কাজ করার পাশাপাশি কমিউনিটির বিষয়ে এই ডিসকর্ডে অন্য মডারেটরদের পাশাপাশি ইউজারদের সাথে কথা বললাম।
কথা বলা শেষ হতে হতেই শুভ অফিস থেকে বাড়িতে ফিরলো। শ্বশুর মশায়ের ইনসুলিন প্রায় শেষের দিকে, এই কারণে শুভ আবার পুনরায় ওষুধের দোকানে গেল। ইনসুলিন এবং আরো দু'রকমের ওষুধ লাগবে, তাই একই সাথে সবকিছু কিনে নিয়ে এলো।
এরপর ওকে এক কাপ চা করে দিলাম। তারপর ও উপরে দিয়ে ফ্রেশ হলো এবং আবার পুনরায় কমিউনিটির কাজ শুরু করলাম। দেখতে দেখতে ঘড়ির কাঁটা ৯.৩০ টায় পৌঁছালো। শশুর মশাইকে ওষুধ দিয়ে, আমি আবার রান্না ঘরে গিয়ে রাতে খাবারের জন্য রুটি তৈরি করলাম। তারপর শ্বশুর মশাইকে খেতে দিয়ে, খাওয়ার পরের ওষুধ গুলো দিয়ে দিলাম।
রাত্রিবেলা |
---|
ততক্ষণে শুভ নিচে এলো। আজকে রাতে এই পিকলুকে খেতে দিয়েছে। আমি অন্যান্য কাজগুলো সেরে নিলাম
তারপর আমি, শুভ ও শাশুড়ি মা একসাথে ডিনার শেষ করলাম। ডিনারের শেষে সমস্ত কাজ গুছিয়ে রেখে আমি নিজের পোস্ট লিখতে বসলাম। এরপর লেখা শেষ করে পোস্ট করব এবং তারপর ঘুমাতে যাবো।
আজকের দিনটা আমি এভাবেই কাটালাম। কিছুটা ব্যস্ততা, কিছুটা নিয়ম পালন, কিছুটা নিজের কাজ, কিছুটা পিকলুকে সাথে খুনসুটি, সবকিছু মিলিয়ে দিনটা কেটে গেলো।
কাল আবার নতুন দিনের শুরু নতুনভাবে হবে। সকলের আগামী দিনগুলো খুব ভালো কাটুক, এই প্রার্থনা করে আমি আমার লেখা শেষ করছি। আমার পোস্ট সম্পর্কে আপনাদের অনুভূতি অবশ্যই কমেন্ট সেকশনে শেয়ার করবেন। সকলে ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।
Your post has been successfully curated by @kouba01 at 35%.
Thanks for setting your post to 25% for @null.
We invite you to continue publishing quality content. In this way you could have the option of being selected in the weekly Top of our curation team.
খুব সুন্দর পোস্ট হয়েছে।
যদিও আপনাদের এসব নিয়মকানুন সম্পর্কে আমার মোটেও ধারণা নেই। কিন্তু তারপরেও আমাদের এদিকে যারা রয়েছে সনাতন ধর্মের। তারা এই দিনটাকে অনেক বড় করেই পালন করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের পুজো করে থাকে। এবং অনেকেই বলে আশ্বিনে রান্না করবে কার্তিক মাসে খাবে। ছোটবেলায় এই জিনিসটাকে অনেক বেশি বড় করে ভাবতাম।
ছোটবেলায় তো আমি মনে করতাম যে, আশ্বিন মাসের প্রথম দিন রান্না করা হয়, এবং কার্তিক মাসের প্রথম দিন খাওয়া হয়। এরপর একদিন বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম। যে বাবা আসলে এটা কি? তখন বাবা আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছিল! আজকে আপনারা সেই দিনটা খুব সুন্দর ভাবেই পালন করেছেন, অনেক ব্যস্ততার মাঝে।
এত ব্যস্ততার মাঝে থেকেও আপনি খুব সুন্দর ভাবে, আপনার একটা দিনের কার্যক্রম খুব সুন্দর ভাবে আমাদের সাথে উপস্থাপন করেছেন। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।
প্রতিবার আমি আপনার পোষ্ট পরে ,আমি অবাক হই দিদি আপনি এত ব্যস্ত মানুষ তবু কত সুন্দর করে সবকিছু গুছিয়ে করেন ,যেটা আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। এবং আপনার কাছ থেকে আমি নিজেও কিছু শিখতে পারি।
আপনার পোস্ট টা সম্পূর্ণ পড়ে বুঝতে পেরেছি পুরনো দিনের কিছু নিয়ম আপনি আজ পালন করেছেন আজকের দিনের মাধ্যমে।
আমার এই গুলো পালন করতে বেশ ভালোই লাগে কারণ ,এই পরিবার টা আমার আর এই পরিবারটা আগে থেকে যা কিছু হয়ে আসছে এটা আমি আবার শুরু করব এটাই অন্যরকম একটা ভালো লাগে,