Better life with steem || The Diary Game || 15th January, 2024 ||

in Incredible India9 months ago
IMG_20240116_120531.jpg

"আমার সারাদিনের গল্প"

Hello,

Everyone,

আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের প্রত্যেকের আজকের দিনটি অনেক ভালো কাটুক এই কামনা রইলো।

শুভ যদিও বললো, গত দুদিনের তুলনায় আজকে ঠান্ডা কিছুটা কম। তবে সত্যি বলতে আমার সেটা মনে হচ্ছে না। শীতের তীব্রতা আমি গত কয়েক দিনের মতই অনুভব করছি। আজকের পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, গতকালকের দিনটি আমি কিভাবে কাটিয়েছি।

আপনারা হয়তো আমার পূর্বের পোস্ট পড়ে জেনেছিলেন, আমি কল্যাণীতে গিয়েছিলাম রুপম ইসলামের শো দেখার জন্য। আর তারপরের দিনও ফেরা হয়নি বলে, আমি গতকাল বাড়িতে ফিরেছি।

1672344690977_010726.jpg

"সকালবেলা"

গতকাল সকালে ফোনের অ্যালার্মে ঘুম ভেঙেছে। আসলে আগের দিন রাতে আমি অ্যালার্ম বন্ধ করতে ভুলে গিয়েছিলাম। যেহেতু সোমবার শুভর অফিস থাকে, সেই কারণে অ্যালার্ম সেট করা ছিলো।

ঘুম থেকে জেগে উঠলাম, পাশে তাকিয়ে দেখি মামি উঠে গেছে অনেকক্ষণ আগেই। এরপর আমি উঠলাম, ফ্রেশ হলাম। মামি তখন রান্নাঘরে বাসন মাজছিল, আমার আওয়াজ পেতেই বলল বাইরের অবস্থাটা একবার দেখো। আমিও রান্না ঘরে জানালা দিয়ে উঁকে মেরে দেখলাম,এতো পরিমানে কুয়াশা যে, কিছুটা দূরে কেউ দাঁড়িয়ে থাকলে দেখা সম্ভব নয়।

ভেবেছিলাম সকালবেলায় ফিরে আসবো। কিন্তু বাইরের ওয়েদার দেখে মামীও আমাকে বেরোতে বারণ করলো,বলল দুপুরের দিকের ট্রেন আমাকে ধরিয়ে দেবে। সত্যি বলতে কল্যাণীর থেকে ট্রেনে আমি কখনো আসেনি।

IMG_20240116_120015.jpg

প্রথমবার একা আসবো, তাই মামী বলল আমাকে ট্রেন ধরিয়ে দেবে। এরপর আমরা চা খেলাম। আগের দিন মামি বলেছিল মামিদের বাড়ির পাশে একটা জায়গাতে ঘুরতে নিয়ে যাবে, কিন্তু এত পরিমাণে ঠান্ডার ছিল যে, আমার যেতে ইচ্ছে করছিল না। আমরা সারাদিন ঘরে বসে গল্প করেই কাটিয়েছিলাম।

মামি জোর করাতে ভাবলাম আজতো বাড়িতে চলেই যাবো। তাই একেবারে রেডি হয়ে নিয়ে, পাশের ওই জায়গা থেকে ঘুরে এসে, লাঞ্চ করে বেরিয়ে যাবো। তারপর একসাথে আমি ও মামি এক এক করে স্নান করে নিলাম। মামির পুজো দেওয়া হয়ে গেলে, মোটামুটি ১১ টা নাগাদ আমরা বাড়ি থেকে বেরোলাম।

IMG_20240115_115223_120003.jpg

টোটোতে ওঠার পরে মনে হচ্ছিলো যেন বরফের হাওয়া বইছে। এতটাই ঠান্ডা লাগছিল। মিনিট পনেরোর মধ্যে আমরা পৌঁছে গেলাম মামির গুরুদেবের মন্দিরে, যেটা একদমই গঙ্গার পাশে। খুব সুন্দর পরিবেশ। সেখানে গিয়ে বেশ কিছুটা সময় আমরা কাটালাম। গঙ্গার পাড় একটু ঘুরে দেখলাম। ততক্ষণে বাড়ি ফেরার সময় হয়ে গিয়েছে, মামী বলল কিছুটা দূরে রামপ্রসাদের ভিটে বাড়ি আছে। আমার কেন জানি না একটু দেখতে মন চাইলো।

1672344690977_010726.jpg

"দুপুরবেলা"

IMG_20240115_120735_120124.jpg
IMG_20240116_121426.jpg

তাই ওখান থেকে আবার টোটো নিয়ে আমরা সেখানেও একবার ঘুরে এলাম। এই দুই জায়গার বিষয়ে আমি পরবর্তীতে আপনাদের সাথে ডিটেলস একটি পোস্ট অবশ্যই শেয়ার করবো। এরপর বাড়িতে ফিরতে আমাদের ১.১০বেজে গেলো। তাড়াতাড়ি করে লাঞ্চ করে নিলাম।

সেই মুহূর্তে ফোনে একদমই চার্জ ছিল না বলে ফোনটা চার্জে বসিয়ে লাঞ্চ করেছিলাম। তাই লাঞ্চের কোনো ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পারলাম না। লাঞ্চে ছিল মুসুরির ডাল, বেগুনি, বাটা মাছ ভাজা এবং ইলিশ মাছের ঝোল।

ঝটপট করে লাঞ্চ সেরে নিয়ে সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। মামি স্কুটিতে করে প্রথমে আমাকে কল্যাণী ঘোষপাড়া স্টেশনে নিয়ে এলো। সেখানে টিকিট কেটে আমরা প্লাটফর্মে উঠে দেখি অনেক লোক সুতরাং ট্রেনের সময় হয়ে গেছে বুঝতে পারলাম।

যেহেতু আমি মহিলা কামড়াতে উঠবো, তাই বেশ কিছুটা জোরে হেঁটে মহিলা কামরা যেখানে পড়বে সেখানে গিয়ে দাঁড়ালাম। ট্রেনটি শিয়ালদা পর্যন্ত যাবে, তবে যেহেতু আমি দত্তপুকুর আসবো, তাই ভায়া শিয়ালদা টিকিট না দিয়ে ভায়া দমদম করে দিয়েছে সুতরাং বাধ্য হয়ে আমাকে দমদমে নামতে হলো।

ট্রেনে উঠে বসার পর যখন ট্রেন চলতে শুরু করলে মনটা একটু খারাপ লাগছিল। যেহেতু দুটো দিন অনেক আনন্দ করে কাটালাম, আর ফেরার সময় একাই ফিরতে হচ্ছে। এরপর ট্রেনে বসলাম। দুটো তিনটে স্টেশন পার হওয়ার পরে বেশ ভিড় হয়ে গেলো। আবার দমদম আসতে আসতে খানিকটা ফাঁকা হয়ে গেল।

দমদমে নেমে একজন দোকানদারের কাছে জিজ্ঞেস করে জানলাম, দু মিনিট আগে বনগাঁ লোকাল বেরিয়ে গেছে। সুতরাং আমাকে অপেক্ষা করতে হবে পরে ট্রেনের জন্য। মিনিট দশ পর পরবর্তী ট্রেনের অ্যানাউন্সমেন্ট হলো।

মানুষের ভিড় দেখে একবার আমার মনে হয়েছিল আমি বোধহয় ট্রেনে উঠতে পারবো না, আমাকে আবার পুনরায় শিয়ালদা যেতে হবে। তবুও ভাবলাম একবার চেষ্টা করে দেখি,ট্রেন আসলো কোনো রকমে গলির ভিতরে ঢুকে দাঁড়ালাম।

IMG_20240116_120236.jpg

অবশ্য তিনটে স্টেশন পরে আমি বসার জায়গা পেয়েছিলাম। এরপর দেখতে দেখতে দত্তপুকুরে পৌঁছে গেলাম, ঘড়িতে তখন ৫.২০ বাজে।

1672344690977_010726.jpg

"সন্ধ্যাবেলা ও রাত্রিবেলা"

এরপর বাড়িতে ফিরে প্রথমে কমিউনিটির কাজগুলো করলাম, তারপর ডিসকর্ডে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলারও দরকার ছিল, সেগুলো সেরে আমি সন্ধ্যা পূজা দিয়ে নিলাম। ঠান্ডাতে হাত পা ধোয়ার পর আমার কি অবস্থা হচ্ছিলো, সেটা আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়।

এরপর শীতের পোশাক পরে কম্বলের তলায় ঢুকে পড়লাম এবং এক এক করে কমিউনিটির কাজগুলো সারতে থাকলাম। গতকাল যেহেতু পৌষ সংক্রান্তি ছিলো,বাড়িতে কিছু না কিছু পিঠে তৈরি করা নিয়ম রয়েছে। তাই শাশুড়ি মা অন্য কিছু পিঠে করেননি, শুধু সাজের পিঠে করেছিলো।

IMG_20240115_205758.jpg

গুঁড় দিয়ে কয়েকটি পিঠে খেলাম। তারপর রুটি করে নিলাম ডিনারের জন্য। পিকলুর শরীরটা এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি। তাই রাতে ও কিছুই খেতে চাইছিল না বলে ওকে জোর করা হয়নি। আমরা গতকাল একটু তাড়াতাড়ি ডিনার করে নিয়েছিলাম এবং তারপর আমি পোস্ট ভেরিফাই করতে বসেছিলাম।

রাত হয়ে গিয়েছিল অনেকটা। প্রচুর ঠান্ডাও লাগছিল, তাই কম্বলের তলায় ঢুকে ভেরিফাই করে ঘুমিয়ে পড়লাম।
যে পোস্টগুলো ছিল সেগুলো সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে কমপ্লিট করে, আবার নিয়মমাফিক আজকের কাজ শুরু করলাম।

যেগুলো পরবর্তী পোস্টে অবশ্যই আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। মামা বাড়ি থেকে চলে আসার পর কাল একটু খারাপ লাগছিল,কারণ আগের দুদিন সন্ধ্যের পর থেকে আমরা অনেক মজা করেছিলাম। যাইহোক আবার নিশ্চয়ই পরে যাওয়া হবে, মামীদেরও কেউ আসার কথা বলে এসেছি।

কখনো কখনো নিয়মমাফিক জীবনযাত্রা থেকে একটু ছুটি পেলে, জীবনটাকে উপভোগ করার সুযোগ পাওয়া যায়, এই আর কি।

যাইহোক আপনাদের সকলেরও নিশ্চয়ই গতকালের দিনটি ভালো কেটেছিল এবং আগামী প্রত্যেকটা দিন আপনাদের ভালো থাকুক কাটুক, এই প্রার্থনা রইলো। ভালো থাকবেন।

Sort:  

Congratulations!
This publication has been supported through the Steemcurator06 account for containing good quality content.

Curated by @ridwant

 9 months ago 

Thank you for your support 🙏.

 9 months ago 

সকালে উঠে ভাবছিলেন যে বাড়িতে চলে আসবেন তবে আপনার মামী বলল দুপুরে যাস আমি ট্রেন ধরিয়ে দেবো যেহেতু আপনি একা একা মামীদের বাড়ি থেকে এই প্রথমবার আসবেন। সকালে যে চা টা পান করছেন মনে হচ্ছে যে একেবারে লিকার নাই। মনে হয় এমন কম লিকারে চা খাওয়া মনে হয় ভালো, আমি ভালো বুঝিনা বিষয়টা হল যেহেতু আমি চা খাই না তাই এই ব্যাপারে আমি পারদর্শী নয়।

আপনারা যে জায়গাটিতে বেড়াতে গিয়েছেন জায়গাটি খুবই সুন্দর ফুলে ফুলে ভরা।

শেষের যে ছবিটা শেয়ার করছেন চিতই পিঠা দিয়ে ঝোলা গুড় দেখেই তো খেতে ইচ্ছা করছে।

অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি আপনার একটি দিনের কার্যক্রম করুন আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 9 months ago 

আসলে ঐটা দার্জিলিং টি। চায়ের জল ফুটিয়ে গ্যাস বন্ধ করে চা পাতা দিয়ে একটু সময় ঢেকে চা তৈরি করতে হয়। হ্যাঁ এতে রঙ কম হয় কিন্তু সুন্দর একটা ফ্লেভার আছে। আর এটাই দার্জিলিং টি এর বিশেষত্ব। চা না খাওয়ার অভ্যাস তো অনেক ভালো। যদিও খান, অবশ্যই চিনি ছাড়া খাবেন। শীতকালে ফুলের বাহার সব সময়ই মন কেড়ে নেয়। ঠিক ধরেছেন আপনারা যেগুলো চিতই পিঠে বলেন, ওগুলোই আমরা সাজের পিঠে বলি। ধন্যবাদ আপনার মুল্যবান মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

Loading...
 9 months ago 

আপনার দিনটা আনন্দের মাঝেই কেটে গিয়েছে তার সাথে একটু জার্নি এবং একটু ব্যস্ততা। আসলে আমাদের জীবনটাই এমন এভাবে চলতে হবে। তারপরেও আপনি মামীর বাসায় সবার সাথে অনেক বেশি আনন্দ করেছেন।

গাড়িতে উঠলে অবস্থা একেবারেই খারাপ। প্রচন্ড ঠান্ডা বাতাসে মনে হয় বরফ এসে আমাদের গায়ের উপরে পড়ছে। সেই সাথে বাসায় এসে আপনি আপনার শাশুড়ি তৈরি করা পিঠা খেয়েছেন। এবং কমিউনিটির কাজগুলো সম্পন্ন করেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার একটা দিনের কার্যক্রম উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 9 months ago 

সত্যিই অনেক ঠান্ডা ছিলো সেদিন, আর ট্রেনে উঠলে তো আরও হাওয়া বেশি লাগে। সবকিছু মিলিয়ে দুদিন মামাশশুর বাড়িতে ভালোই কাটিয়েছিলাম। যেহেতু সেদিন পৌষ সংক্রান্তি ছিলো, তাই পিঠে বানানো আমাদের বাঙালিদের একটি নিয়ম। তাই বাড়িতে ফিরে শাশুড়ি মায়ের বানানো পিঠে খাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

অবশেষে আপনার কল্যাণী ভ্রমণ সমাপ্ত হলো। পিকলুর শরীর কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরেই খারাপ আছে। নলেন গুড় দিয়ে সাজের পিঠা আমার মোটামুটি লাগে খেতে। আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে পাটিসাপটা খেতে। আবার আপনার প্রিয় কাজ রুটি বানানো চালু হয়ে গেল।

 9 months ago 

হা হা হা.... হুম অবশেষে সমাপ্ত হলো। হ্যাঁ একদিন হ্যাংআউটে শুনেছিলাম আপনার পাটিসাপটা পিঠে পছন্দ। পিকলুকে ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে কিন্তু ঠিক হচ্ছে না। আবার ডক্টর দেখাতে হবে মনে হচ্ছে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।

 9 months ago 

এই ভয়ানক শীতের মধ্যে সকাল বেলা কেউ যদি এক কাপ চা করে দেয়,তাহলে মনে অনেক আনন্দ হয়।

রূপম ইসলামের গান গুলো আমার কাছে অসাধারণ লাগে একদম মন ছুয়ে যায়।
শো দেখতে গিয়ে মামার বাড়ি বেশ আনন্দময় সময় কাটিয়েছেন, আসার সময় মন খারাপ হওয়াটা তো স্বাভাবিক। বাপের বাড়ির মানুষদের সাথে আত্মার এক অদ্ভুত টান থাকে।তাদের সাথে কাটানো সময় গুলো আমাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় হয়ে থাকে।

 9 months ago 

আসলে রুপমের কিছু কিছু গান শুনলেই যেন মনে হয় আমার জীবন নিয়ে লেখা। তবে ওর সব গান আমার ভালো লাগে না। দুদিন ছিলাম বটে, তবে এতো আনন্দ করেছিলাম যে ফেরার সময় মনটা বেশ খারাপ লাগছিল। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.15
JST 0.029
BTC 62195.97
ETH 2415.56
USDT 1.00
SBD 2.64