Better life with steem || The Diary Game || 14th April, 2024 ||
"পয়লা বৈশাখের সারাদিন"
Hello,
Everyone,
চলুন আজ আপনাদের সাথে পয়লা বৈশাখের দিনের গল্প শেয়ার করি। যদিও মাঝখানে দুদিন কেটে গিয়েছে, কিন্তু সেই দিনের গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়নি। তাই ভাবলাম আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করি, পয়লা বৈশাখের দিনটা ঠিক কিভাবে কাটিয়েছিলাম সেই গল্প।
প্রথমত রবিবার ছিলো, তার উপরে আবার পয়লা বৈশাখ। ইচ্ছে ছিলো একটু বেলা করে ঘুম থেকে উঠবো, কিন্তু দিনটি যেহেতু পয়লা বৈশাখ ছিলো, তাই আর সে সুযোগ হয়নি বরং উল্টোটাই হয়েছিলো, দিনটা অন্যান্য দিনের থেকে একটু আগেই শুরু করেছিলাম।
"সকালবেলা"
"আমাদের গাছের ফুল"
ছটা বেজে দশ মিনিটে ঘুম ভাঙলো। বাইরে তাকিয়ে দেখি রোদ্দুর উঠে গেছে ততক্ষণে, তাই আর আলসেমি করে শুয়ে না থেকে ঘুম থেকে উঠে, ফ্রেশ হয়ে নিয়ে, প্রথমে সবথেকে পছন্দের কাজ করলাম, - সেটি হলো পুজোর জন্য ফুল তোলা। যেহেতু শুভর অফিস ছুটি, তাই রান্না করার কোনো তাড়াহুড়া ছিল না। সেই কারণেই আজ শুরুতেই ফুল তুলে দিনটা শুরু করলাম।
লকডাউনের আগে প্রতিবছর আমাদের বাড়িতে এই দিনে লক্ষ্মী গণেশ পূজা হতো, কারণ আমাদের নিজস্ব ফার্মেসী ছিলো। বাড়িতে যে লক্ষী গণেশের পুজো হতো, সেই ঠাকুরটি আমার শ্বশুরমশাই দোকানের আসনটিতে বসাতেন। তবে যেহেতু এখন আমাদের আর দোকান নেই, সেই কারণে বাড়িতে আর আলাদা করে লক্ষ্মী গণেশ পূজা হয় না। কিন্তু নিয়ম মেনে বাড়ির ঠাকুরের নিত্য পুজোর এই দিন উপোস থেকেই করা হয়।
"বছরের শুরুর দিন সাজানো আসন"
তবে এই বছর পূজো আমার শাশুড়ি মা দিয়েছিলেন, আমি তাকে সমস্ত কিছু গুছিয়ে দিয়েছিলাম। যেহেতু রান্নার দিকের কাজগুলো আমাকে গোছাতে হবে, তাই পূজোর দিকে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না।
ও হ্যাঁ আপনারা অনেকেই জানেন, পয়লা বৈশাখের দিন শুভর অর্থাৎ আমার হাজব্যান্ডের জন্মদিন ছিলো। এই কারণে দুপুরবেলায় আমার ননদদের ও শুভর দুজন বন্ধুকে লাঞ্চের জন্য নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল।
যেহেতু দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়েছে, তাই সবকিছুর যোগার সকাল থেকেই করতে হলো। যাইহোক কিছুক্ষণ পরে ননদরা সকলেই চলে এলেন। এরপরে রান্নার দায়িত্ব ছিল আমার ননদের, আমি তাকে শুধু সাহায্য করছিলাম। রান্নার মেনুতে ছিলো চিকেন বিরিয়ানি এবং চিকেন রোস্ট। মটন খাওয়ার মানুষের সংখ্যা কম ছিলো, পাশাপাশি বেশ গরমও পড়েছিলো, তাই সেদিন আর মটন রান্না করা হয়নি।
"দুপুরবেলা"
যাইহোক সমস্ত কিছু যোগার করে রান্না শেষ করতে, প্রায় দুপুর হয়ে গেলো। অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু সকাল সকালই রান্না শেষ হয়েছিল এদিন, যেহেতু একটু বেশি সকাল থেকে সমস্ত কিছু শুরু করেছিলাম।
সাধারণ ভাত, ডাল, মাংস রান্না করলে যতটা সময় লাগে, তার থেকে অনেক বেশি সময় লাগে এই ভিন্ন ধরনের রান্না করলে। বিশেষ করে বিরিয়ানি। রান্না শেষ হওয়ার পর বিরিয়ানি দমে বসিয়ে, আমি ও ননদ করে স্নান করে এলাম। তারপর সবাইকে পয়লা বৈশাখের নমস্কার পর্ব সারলাম।
"বিরিয়ানী ও চিকেন রোস্ট"
এরপর এক এক করে সকলকে খেতে দিলাম এবং সর্বশেষ ব্যাচে খেতে বসলাম আমি, ননদ এবং শাশুড়ি মা। এই নিয়মটা সবসময়ের জন্যই প্রযোজ্য। যাইহোক খাওয়া-দাওয়া শেষ করে উঠতে আমাদের প্রায় ৪.৩০ বেজে গেলো।
"সন্ধ্যাবেলা"
তারপর সকলে মিলে একটু বিশ্রাম নিলো, আমিও বাদ গেলাম না। অনেকটা সকালে ঘুম থেকে উঠেছিলাম, পাশাপাশি বেশ পরিশ্রম হয়েছিলো, এর মাঝে টুকটাক কমিউনিটির কাজও করতে হয়েছিলো সবকিছু মিলিয়ে বেশ ক্লান্ত ছিলাম। তাই বিশ্রাম নেওয়ার জন্য যখন শুয়েছি, কখন ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম বুঝতে পারিনি। তবে খুব বেশিক্ষণ ঘুম হয়নি, একটু বাদেই ননদের ছোটো ছেলেটার ডাকে ঘুম ভেঙে গেল।
"ননদের ছোটো ছেলের বায়না, সেলফি তুলতেই হবে। তাই অগত্যা তুলেই ফেললাম।"
ওর বায়না ছিল সন্ধ্যা বেলায় ওকে ফুচকা খাওয়াতে নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আমার আর ইচ্ছে করছিল না বাইরে যেতে। তাই শাশুড়ি মা ওকে নিয়ে ফুচকা খাওয়াতে গেলো। আমি উঠে সন্ধ্যা পূজো দিয়ে, সকলের জন্য চা করলাম। আমার নিজেরও মাথাটা একটু ব্যথা করছিলো, তাই নিজেও একটু চা খেলাম।
শুভ আড্ডা দিতে ওর বন্ধুদের সাথে বাইরে গেলো। অন্যদিকে আমি গিয়ে রাতের জন্য ভাত বসালাম। দুপুরে সকলে বিরিয়ানি খাওয়ার পর, রাতে আর কেউ বিরিয়ানি খাবে না বললো, তাই ভাত, আলু উচ্ছে ভাজা এবং একটা মাছের ঝোল রান্না করলাম।
"রাত্রিবেলা"
তারপর বেশ কিছুক্ষণ গল্প চলল সকলের সাথে। শশুর মশাইয়ের শরীর সেদিন বেশ ভালোই ছিলো, সকলের সাথেই বেশ গল্প করেছেন সেদিন। তবে পরদিন থেকে যে শরীরের অবস্থা এতটা খারাপ হবে, সেটা কেউই আন্দাজ করতে পারে নি।
যাইহোক অল্প গুজব করতে করতেই রাতের খাবারের সময় হয়ে গেলো। যদিও ঐদিন সকলেই একটু সকাল সকাল ডিনার সেরে নিয়েছিলেন, কারণ ননদদের বাড়িতে ফিরতে হবে।
"গরমে খুব কষ্ট হচ্ছে পিকলুর। টেবিলের নীচে শুয়ে আছে চুপচাপ"
সকলের খাওয়া-দাওয়া শেষ হতে প্রায় রাত এগারোটার বেশি হয়ে গেলো। খাওয়া-দাওয়া শেষে ননদরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করলেন এবং আমি সমস্ত কিছু গুছিয়ে নিয়ে কমিউনিটির কাজ করতে বসলাম।
অন্যান্য দিনের মতনই কেটেছে পয়লা বৈশাখের দিনটি, তবে সকলের উপস্থিতিতে দিনটা বেশ আনন্দে কেটেছে এ কথা বলতেই হবে।
যাইহোক, এইভাবেই কাটলো আমার এই বছরের পয়লা বৈশাখ। আপনাদের সকলের নতুন বছর অনেক ভালো কাটুক এই কামনা রইলো। ভালো থাকবেন।
অনেক বছর আগে একবার কলকাতাতে পহেলা বৈশাখের দিনে আমি উপস্থিত ছিলাম। কলকাতা এত আড়ম্বর ভাবে যে পহেলা বৈশাখ পালন করে সেটা জেনেছিলাম তখন। পুরো সাজ সাজ রব পড়ে যায় শহরটিতে। আপনার লেখা পড়ে জানতে পারলাম যে বিশেষ পূজা করেন আপনারা এই দিনে। তবে শুভদার জন্মদিন উপলক্ষে জম্পেশ খাওয়া-দাওয়া হলো আপনাদের। যদিও গরম ছিল তবুও সব মিলিয়ে নিশ্চয়ই চমৎকার একটি দিন আপনি কাটিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার একটি দিনলিপি শেয়ার করার জন্য।
শুভ জন্মদিন দাদা। আপনার আগামী দিনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করি।
প্রথমে আপনাকে এবং আপনার পরিবার কে জানে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা।
মেয়ে মানুষের বাসায় কেন জানি কাজ শেষ হতেই যায় না। তার ওপর আরো পহেলা বৈশাখের দিন একটু বাড়তি চাপ থাকে।
সব মিলিয়ে আপনার সারাদিনটি ব্যস্ততার মাঝেই পার করেছেন।
সুন্দর একটি দিনের কার্যক্রম শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
এই পোষ্টের মাধ্যমে অনেক সুন্দর করে আপনার দিনলিপি তুলে ধরেছেন। বাসায় মেহমান আসলে কাজের চাপ একটু বেড়ে যায় । আপনার দিনটি বেশ ব্যস্ততার মধ্যেই কেটেছে। এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।সুস্থ থাকবেন,ভালো থাকবেন, আপনার জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।