Better life with steem || The Diary Game || 13th February, 2024 ||
![]() |
---|
"গতকাল সারাদিনের বেশকিছু মুহুর্ত"
Hello,
Everyone,
সুপ্রভাত সকলকে। সকলকে সরস্বতী পূজার শুভেচ্ছা জানাই কেমন আছেন আপনারা সকলে? আশা করছি সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন।
ক্লান্ত শরীরের সাথে, বেশ কিছুটা মন খারাপ নিয়ে আজকের পোস্ট লিখতে বসলাম। আগের বেশ কিছু পোস্টে আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম আমার ঠাকুর মায়ের বাৎসরিক কাজ রয়েছে এবং সেই অনুষ্ঠানের সকল দায়িত্ব এই বছর আমার উপরেই পড়েছে।
বেশ কিছু পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য সকল বারের মতন আমার দিদি এগিয়ে এসে দায়িত্ব নিতে পারেনি। আর এইবার দায়িত্ব নিয়ে বুঝলাম যে, কোনো অনুষ্ঠানকে পরিচালনা করার দায়িত্ব আসলে অনেক বড় দায়িত্ব।
যদিও এটি খুবই ছোট একটি অনুষ্ঠান ছিলো, তথাপি তা আমার জন্য অনেকটাই বড় ছিল, কারণ এটি আমার প্রথমবার কোনো অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নেওয়া।
গতকাল আমার ঠাকুরমার বাৎসরিক কাজ ছিলো। সারাদিন অনেক বেশি ব্যস্ততার মধ্যে কাটিয়েছি। সারাদিন কি কি করেছি, সেই বিষয়েই আজকের পোস্টে আপনাদের সাথে কথা বলবো, -
"সকালবেলা"
![]() |
---|
"কুয়াশাচ্ছন্ন সকালবেলা"
গতকাল সকালটা শুরু হয়েছিল ৫.২০ মিনিটে। সারারাত খুব যে ভালো ঘুম হয়েছে এমন নয়। কারণ সকালে ওঠার তাড়া ছিলো। গতপরশু বাড়ির সমস্ত কাজ গুছিয়ে, তারপর বাজার করতে গিয়েছিলাম। ফিরতে ফিরতে আমার প্রায় রাত ৮টা বেজেছিল। তারপর সেই সমস্ত কিছুই গোছগাছ করে, রান্না করে, ডিনার করে, শুয়ে ছিলাম বেশ রাতে।
ভোর ৫.৩০ টায় অ্যালার্ম দিয়েছিলাম। তবে তার আগে ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল। যেহেতু ৮ টা বাজে বাড়িতে ব্রাহ্মন আসার কথা ছিলো, তাই সমস্ত কিছু অনেক আগে থেকেই গোছানো দরকার ছিলো। খুব সত্যি কথা বলতে, এক বছর ধরে যদি কোনো মানুষ বসবাস না করে, সেই বাড়ি গোছাতে একটা দিন যথেষ্ট নয়।
![]() |
---|
"শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় জিনিস"
যাইহোক সকালে ওঠে সমস্ত কিছু মোটামুটি জোগাড় করলাম। ঠাকুর মশাই আসতে প্রায় ৯.৩০ টা বেজে গেলো। অন্যদিকে আমার মামীরাও চলে এসেছিলো। তারা রান্নার দিকটা সামলাচ্ছিলেন এবং আমি বাবাকে রেডি করে ঠাকুর মশাইয়ের হাতে হাতে সমস্ত কাজ গুছিয়ে দিলাম।
![]() |
---|
"ঠাকুরমায়ের ছবি"
![]() |
---|
"বাৎসরিক শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের কার্যক্রম"
তারপর যেখানে ঠাকুর মায়ের বাৎসরিক কাজ হবে, সেইখানে ঠাকুমার ছবিসহ অন্যান্য সমস্ত কিছু গুছিয়ে দিলাম।
বাবা মন্ত্র পড়তে বসলে, আমি সকালে সবাইকে খাবার দেওয়ার জোগাড় করলাম। যারা যারা সকাল থেকেই বাড়িতে ছিলো এবং কাজে সাহায্য করছিলো সকলে মিলে সকালের খাওয়া সম্পন্ন করার পর, মামিমা দুপুরের খাবারের প্রস্তুতি শুরু করলো।
![]() |
---|
"দুপুরের রান্নার আয়োজন"
যেহেতু ঠাকুর মাকেও ভোগ দিতে হবে, তাই রান্নাটা একটু আগেই শুরু করতে হয়েছিলো। দুপুরের মেনুতে খুব বেশি কিছু ছিল না, তবুও প্রতিটি জিনিসের ছবি তোলা হয়নি। তবে মেনুতে ছিল ভাত, বেগুন ভাজা, মাছের মাথা দিয়ে মুগ ডাল, আলুর চিপস, কাতলা মাছের ঝোল, টমেটোর চাটনি, পাপড় এবং মিষ্টি।
"দুপুরবেলা"
সমস্ত কিছু রান্না শেষ হতে প্রায় ২ টো বেজে গেলো। ততক্ষণে বাবার মন্ত্র পড়াও প্রায় সম্পন্ন হয়ে এসেছিল। শেষে পিণ্ডদান করা হয়ে গেলে, সমস্ত খাবার গুছিয়ে ঠাকুর মাকে ভোগ দিয়ে আসার পর, ব্রাহ্মণকে প্রথমে সেবা করতে দেওয়া হলো। তার সেবা নেওয়া হয়ে যাওয়ার পর, এক এক করে সকলে খেতে বসালাম। যেহেতু জায়গা ছোটো ছিলো, তাই একসাথে অনেক মানুষকে বসানো সম্ভব ছিল না।
আর যেহেতু আকাশ মেঘলা ছিল এবং প্যান্ডেলের কোনো ব্যবস্থা ছিল না, তাই বাইরে কাউকে খেতে দেওয়াও সম্ভব ছিল না। এই কারণে ঘরের বারান্দাতেই খাবার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলো। ইতিমধ্যে বাইরে টুপটাপ বৃষ্টি পড়াও শুরু হলো।
সবার খাওয়া-দাওয়া শেষ হলে, যখন আমরা খেতে বসলাম তখন অলরেডি বাইরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। খাওয়া-দাওয়া সম্পন্ন করতেই আমাদের প্রায় ৫ টার বেশি বেজে গেলো। যে কোনো অনুষ্ঠান করলে চারিদিকে সমস্ত কিছু ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে, সবথেকে কষ্ট হয় খাওয়া-দাওয়া করে সেগুলোকে গোছাতে।
"বিকালবেলা ও সন্ধ্যাবেলা"
![]() |
---|
"কাজের ফাঁকে মামী ও বোনের সাথে তোলা ছবি"
![]() |
---|
"সকলে বাড়ি যাওয়ার জন্য তৈরি হওয়ার আগের মুহুর্ত ক্যামেরাবন্দি করলাম।আবার কবে সকলে একজায়গায় হতে পারবো জানি না।"
ইতিমধ্যে এক এক করে সকলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলো। তাই সকলকে বিদায় জানিয়ে,কমিউনিটির কাজ একটু গুছিয়ে, পুনরায় সমস্ত জিনিস গোছানোর কাজে হাত দিলাম। সব থেকে বেশি অসুবিধা হয়েছিল আমাদের কলটা নষ্ট হয়ে যাওয়াতে।
কলের মিস্ত্রি ডাকাও সেই মুহূর্তের সম্ভব ছিলো না। তাই সমস্ত বাসনপত্র নিয়ে পাশের বাড়ির কল থেকে ধুয়ে আনতে, সত্যিই অনেক বেশি কষ্ট করতে হয়েছিল। তবে মামীরা আমাকে হাতে হাতে অনেক সাহায্য করেছিল বলে, কষ্টটা কিছুটা হলেও কম হয়েছে। সমস্ত বাসনপত্র নিয়ে খাটের উপরে উবুর করে রাখা হয়েছে, কারণ জল না ঝরলে সেগুলোকে ভিতরে রাখলে বাসন গুলো নষ্ট হবে।
আজকে এই সমস্ত কিছু গোছানোর কাজ এখনো বাকি রয়েছে। কারণ এরপর আবার কবে এই বাড়িতে আসা হবে তার কোনো হিসেব নেই। তাই যাওয়ার আগে সমস্ত কিছু গুছিয়ে যেতেই হবে।
"রাত্রিবেলা"
গতকাল এই সমস্ত কাজ করে প্রায় ১০.৩০ টা নাগাদ আমি আমার বান্ধবীর বাড়িতে এসেছিলাম। সারাদিন এতো পরিমাণে খেটেছি যে, ভীষন পরিমাণে পায়ে ব্যথা করছিলো। আসলে খেতে বসার সময়টুকু ছাড়া আর একটুও বসার সুযোগ হয়নি আমার। সারাদিন শুধু এদিক থেকে ওদিকে ছুটে ছিলাম। এমনকি সকালেও পা মাটিতে ফেলতে পারছি না। এতো পরিমাণে ব্যাথা।
গতকাল সারাদিন অনেক ব্যস্ততার মধ্যে পার করেছি। রাতে ভেবেছিলাম পোস্ট লিখবো কিন্তু শরীর একটুও সাথ দেয়নি।গতকাল না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। তবে সবকিছুর মাঝেও মনটা বেশ খারাপ লাগছে।
"নিজস্ব অনুভূতি"
ঠাকুর মাকে হারিয়ে ফেলার একটা বছর কিভাবে চলে গেলো বুঝতেও পারলাম না। আপন মানুষের ছেড়ে যাওয়ার দিনগুলো, যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন, সমস্ত কিছুর মাঝেও পুরোনো স্মৃতিগুলো মন খারাপ করে দেয়। বাড়ির সবকিছু গোছানোর সময় ভিতর থেকে কেমন যেন,নিজের শৈশব হারিয়ে ফেলার কষ্ট হয়। এই বাড়িতে এতো স্মৃতি জমা হয়ে আছে,যেগুলো মনে পড়লে চোখের কোণে জল আসে।
আজও অনেক ক্লান্ত লাগছে। তবুও ভাবলাম গতকালের কথা গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করি। আজ আবার সবকাজ গোছানোর ব্যস্ততা থাকবে। যাইহোক, সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। ভালো কাটুক আজ আপনাদের সারাদিন।
আমার বাবার বাৎসরিকের কাজ করার সময় দেখেছি যে তা করতে প্রায় শ্রাদ্ধের মতনই সময় লাগে। আপনার শেয়ার করা ছবিগুলো থেকেই স্পষ্ট যে আপনার গতকাল কতখানি ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে কেটেছে।
তবে আপনি রাতে না খেয়ে একদমই সঠিক কাজ করেননি। বড়দি আর ছোড়দি মিলে এরকম ভাবে শরীরের প্রতি অবহেলা করলে শরীর কিন্তু একটা সময় তার উশুল নেবে।
Congratulations, your comment has been successfully curated by @msharif at 5%
@msharif Thanks a ton.
Your post has been successfully curated by @msharif at 35%.
Thanks for setting your post to 25% for @null.
We invite you to continue publishing quality content. In this way you could have the option of being selected in the weekly Top of our curation team.
ঠাকুর মা কে ভালো রাখেন পরপারে। ধন্যবাদ আপনাকে, ভালো থাকবেন।