Better life with steem || The Diary Game || 11th June, 2024 ||
![]()
|
---|
Hello,
Everyone,
জীবনে এমন একটি পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে চলছি, যেখানে নিজের থেকে বয়সে বেশ ছোট যারা তাদেরকে দেখলে নিজের ফেলে আসা দিনগুলোর জন্য আফসোস হয়। আবার ঠিক উল্টো দিকে, বয়স্ক মানুষগুলোকে শারীরিকভাবে লড়তে দেখলে নিজেদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে মনের মধ্যে ভয় বাসা বাঁধে।
আর সত্যি কথা বলতে, জীবনের এই দুটি পর্যায়ের বিষয়ে ভাবতে ভাবতে সবথেকে বেশি মানসিক লড়াই বোধ হয় এই বয়সটাতেই আমাদেরকে লড়তে হয়। যেখানে ফেলে আসা দিনগুলো সম্পর্কে আমরা ভাবতে পারি ঠিকই, তবে ভবিষ্যত আমাদের অচেনা তাই সেটা নিয়েই আমরা সব থেকে বেশি অনিশ্চয়তায় ভুগি।
গত প্রায় দুবছর ধরে এইরকম মানসিক লড়াই লড়ে চলেছি। নিজের সব থেকে কাছের মানুষগুলোকে মৃত্যুর সাথে লড়াই করতে দেখা কেমন যেন অবশ্যম্ভাবী ঘটনা হয়ে গেছে আমার জীবনে।
যখনই মনে হয় এইবার বোধহয় পরিস্থিতি একটু বদলাবে, কিছু সময়ের মধ্যে সত্যিই পরিস্থিতি বদলে যায় ঠিকই তবে সেটা খারাপের দিকে। যাইহোক যারা আমার পোস্ট পড়েন, তারা সকলেই আমার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত। তাই তারা নিশ্চয়ই জানবেন কোন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এই কথাগুলো বলছি।
যাইহোক আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, আমার গতকালের সারাটা দিন কিভাবে কাটিয়েছি,
"সকালবেলা"
![]()
|
---|
প্রতিদিন রাতেই ঘুমাতে অনেকটা লেট হয়। কারণ হসপিটাল থেকে এসে ননদদের খাওয়া দাওয়া করে বাড়ি যেতে প্রায় সাড়ে বারোটা বাজে। এরপর আমি একটু কমিউনিটির কাজ করি, তারপর ঘুমাতে যাই।
গতকাল ৭:১০ নাগাদ ঘুম ভেঙেছিল। তারপর পাঁচ মিনিট মতো শুয়ে উঠে পড়েছিলাম। যেহেতু শুভর অফিসে যাওয়ার ছিলো, তাই কিছু রান্না করে দিতেই হতো।
![]()
|
---|
এই কয়েকদিন অবশ্য শাশুড়িমাই রান্না করেন। সত্যি বলতে রাতে ঠিকঠাক ঘুম না হলে, আর দুপুর বেলায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে হসপিটালে সময় কাটিয়ে এলে, বাড়ি ফিরে আর কিছু করার মতো এনার্জি থাকে না। যাইহোক, শুভকে চা দিয়ে এসে আমি শুধু ভাত রান্না করলাম।
এরপর ব্রেকফাস্ট করে শুভ অফিসে চলে যাওয়ার পর কিছুক্ষণ শুয়ে রইলাম। কিছুক্ষণ বাদে ননদ তার ছেলেকে নিয়ে আমাদের বাড়িতে এলো। ব্রেকফাস্টের জন্য সে কচুরি নিয়ে এসেছিলো। আমরা সেগুলো খেয়ে নিলাম। এরপর বেশ কিছু জামা কাপড় কাঁচার ছিলো, আমি সেগুলো ভিজিয়ে রেখে একটু কমিউনিটির কাজ করে নিলাম।
"দুপুরবেলা"
বেলা যতো বাড়ে, গরমের মাত্রাও যেন বাড়তে থাকে সমান ভাবে। এরপর ঘরের কাজ গুছিয়ে, স্নান করে নিলাম। স্নান করে ওঠে ফ্যান চালিয়ে পুজো দিতে বসলেই, চোখ জুড়ে ঘুম আসে। মনে হয় তখনই যেন ঘুমিয়ে পড়বো।
পূজো দিয়ে উঠতে উঠতে আমাদের দুপুরের খাওয়ার সময় হয়ে গেলো। একটু আগে না খেয়ে নিলে সময় মতন বাড়ি থেকে বেরোতে খুবই কষ্ট হয়। ননদ স্নান করতে গিয়েছিল বলে আমি দু-চার মিনিট একটু শুয়ে নিলাম।
![]()
|
---|
তারপর সে এলে, আমরা দুজন আগে লাঞ্চ করে নিলাম। এরপর পিকলুকে খাইয়ে দিয়ে, আমরা তৈরি হয়ে বাড়ি থেকে প্রায় ৩.১০ নাগাদ বেরিয়ে পড়লাম।
"বিকালবেলা"
একটু আগেই বেরোতে হয়। কারণ গত কয়েকদিন ট্রেন গন্ডগোল থাকার কারণে, আমাদেরকে চারবার গাড়ি পাল্টে তারপর হসপিটালে পৌঁছাতে হয়। ১০ মিনিট আগে পৌঁছানোর চেষ্টাই করি, কারণ যেহেতু সকাল থেকে ভিজিটিং আওয়ার নেই, তাই শ্বশুরমশাই সারাদিন অপেক্ষা করে কখন বাড়ির লোকের সাথে দেখা হবে। বয়সের সাথে সাথে মানুষের মন দুর্বল হয়ে পড়ে, সেটা ওনাকে দেখে বেশ ভালো বুঝতে পারি।
![]()
|
---|
ভিজিটিং আওয়ার শুরু হলে, ননদ গিয়ে প্রথমে দেখা করে এলো। গতকাল শুভও অফিস থেকেই হসপিটালে গিয়েছিল। ননদের আসার পর শুভ দেখা করে এলে, আমি গেলাম। তখন অবশ্য প্রায় ভিজিটিং আওয়ার শেষ।
এরপর বাইরে প্রায় ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করলাম, ডঃ ভিজিট করে আসার পর বাড়ির লোকের সাথে কথা বলেন। বাইরের আবহাওয়া অনেক গরম, আবার আই সি ইউ তে প্রচন্ড ঠান্ডা। এই কারনে আমার বেশ অসুবিধা হয়।
"সন্ধ্যাবেলা"
সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ ডক্টর আমাদেরকে ডাকলেন এবং কথা হলো। শ্বশুর মশাইয়ের শারীরিক অবস্থা খুব বেশি ভালো নয়। এছাড়াও গতকাল তার আর্টাসনোগ্রাফি করে একটা টিউমার পাওয়া গেছে।
যদিও ডাক্তার স্পষ্টভাবে বলেনি, তবে আশঙ্কা করছেন সেই টিউমারটা থেকে ক্যান্সারও হয়ে যেতে পারে। তার জন্য হয়তো আজ আবার বায়োপসি রিপোর্ট করাতে হতে পারে। সেটা সম্পর্কে অবশ্য আজ গেলে জানতে পারবো।
কথাবার্তা শেষ করে সেখান থেকে বেরোতে আমাদের প্রায় আটটা বেজে গেলো। এরপর আবার সেই ব্রেক জার্নি করে বাড়িতে ফিরতে দশটার বেশি বাজলো।
"রাত্রিবেলা"
বাড়ি এসে ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ বসলাম। শাশুড়ি মার সামনে আসলে শ্বশুর মশাইয়ের কন্ডিশন নিয়ে খুব বেশি আলোচনা করা সম্ভব হয়না। এই কারণে নানদের বর এলে আমরা আড়ালে গিয়ে একটু কথা বলার চেষ্টা করলাম।
![]()
|
---|
সত্যি কথা বলতে এই হসপিটালের চার্জ এত বেশি হয়ে যাচ্ছে যে, এখানে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করানো সাধের বাইরে হয়ে যাচ্ছে। অনেকের কাছ থেকে এমনটাও শুনতে পারছি যে, এখানে চিকিৎসা যতটা না ভালো হয়, তার থেকে অনেক বেশি ওরা চার্জ করে।
![]()
|
---|
সবকিছু মিলিয়ে একটা আলোচনা না করে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। যাইহোক এরপর খাওয়া-দাওয়া করতে করতে অনেক রাত হলো। ননদরা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করলে, আমিও স্নান করে কাজ নিয়ে বসেছিলাম। কিন্তু শরীর আর সাথ দিচ্ছিলো না, তাই একটু তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়েছিলাম।
এইভাবে কেটেছিলো আমার গতকালের দিনটি। আশাকরি আপনাদের দিন ভালো কেটেছে। আগামী দিনগুলো ভালো কাটুক সকলের, এই প্রার্থনা রইলো। সকলে ভালো থাকবেন।
বিগত পোস্টেই অবগত হয়েছি, আপনার শ্বশুর মশাই অসুস্থতার কারণে হসপিটালে ভর্তি রয়েছে। আসলে আমিও তাই মনে করি, একজন সুস্থ মানুষ হসপিটালে থাকলে সেও অসুস্থ হয়ে যায়। আপনার শ্বশুর মশাইয়ের কথা ভেবে, আজকে আমার দাদার কথা মনে পড়লো। আমার দাদার Stomac ক্যান্সার হয়েছিল। সত্যিই আপনি বেশ কয়েক দিন থেকে এতটাই চাপের মধ্যে আছেন যা বলার বাইরে।
আসলেই আপনার হসপিটালের বিল দেখে তো মনে হচ্ছে অনেক বেশি।
এত ব্যস্ত থাকার পরেও আমাদের মাঝে একটি দিনের কার্যক্রম শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
হ্যাঁ বিল অনেকটাই বেশি ছিলো। এখনও পর্যন্ত বায়োপসি করানো হয়নি, কারন সকলে বললো অন্য একটি ডাক্তারের সাথে কনসাল্ট করে তবেই টেস্ট করাবে। এখন ওনাকে বাড়িতে আনা হয়েছে। আপনার দাদার কথা জেনে খারাপ লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।