Better life with steem || The Diary Game || 07th September, 2024 ||

in Incredible India2 months ago
IMG_20240908_025846.jpg
"ভালো-মন্দ মেলানো একটি দিনের কিছু মুহুর্ত"

Hello,

Everyone,

শরীরটা যদিও বেশ খারাপ,কিন্তু মনটা এই মুহূর্তে ভীষণ খুশি।খুশির কারণটা একদম পোস্টের শেষেই বলবো। শুরুতেই জিজ্ঞেস করি, কেমন আছেন আপনারা সকলে?

বেশ কিছুদিন বাদে আপনাদের সকলের সাথে আজকের দিনটি কিভাবে কাটিয়েছি, সেই গল্প শেয়ার করতে চলেছি। তাই দেরি না করে চলুন একদম সকাল থেকেই শুরু করি, -

1672344690977_010726.jpg

"সকালবেলা"

গতকাল থেকে শরীরটা একটু খারাপ। সারাদিন কেমন যেন ঝিমিয়েই কেটেছে। তাই রাতের দিকে অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়েছিলাম। তবে ঘুম এসেছিল বেশ অনেকক্ষণ বাদেই। চুপচাপ শুয়ে পুরনো দিনের কিছু বিষয় ভাবছিলাম মনে মনে।

IMG_20240907_022908.jpg
"সকালের রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া"

এরপর কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানিনা। সকালে ফোনের অ্যালার্মে ঘুম ভাঙলো। শরীরটা অনেক বেশি দুর্বল লাগছিলো, তাই বেশ কিছুক্ষণ বিছানাতেই আজ বসেছিলাম। বাইরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম রোদ ঝলমলে পরিবেশ। কিছুক্ষণ বাদে উঠে পড়লাম, কারণ শুভকে চা দেওয়ার সময় হয়ে আসছিল।

IMG_20240907_021942.jpg
"সকালের চা"

নিচে গিয়ে দেখি শশুর মশাই চিড়ে খাচ্ছেন। তাই একসাথে ওনার চা ও বসিয়ে দিলাম। আজ শুভর কাপ থেকেই এক চুমুক চা খেয়েছি, যাতে শরীরটা একটু ঠিক লাগে। তারপর নিচে গিয়ে রান্না বসিয়েছি।

আজ বেশি কিছু রান্না করিনি, শুধু আলু ফুলকপির তরকারি ও একটা ডিমের অমলেট করে দিয়েছিলাম। যদিও শুভ বলেছিল শরীর ভালো না থাকলে রান্না করা লাগবে না। কিন্তু সারাদিনের জন্য বেরোবে, একটু টিফিন করে না দিলে ভালো লাগে না। পরে আমাদের রান্না শাশুড়ি মা করেছিলেন।

কারণ সংসারের কোনো কাজই যখন শরীর খারাপের জন্য আটকে থাকবে তাহলে কেন শুধু শুধু ও না খেয়ে থাকবে। এমন ভাবনা থেকেই চেষ্টা করি, হাজার শরীর খারাপকে উপেক্ষা করে প্রতিদিন ওকে টিফিন করে দেওয়ার।

ব্রেকফাস্ট করে শুভ অফিসে বেরিয়ে যাওয়ার পর, শ্বশুরমশাই ও শাশুড়ি মা ব্রেকফাস্ট করে নিলেন। আমার নিজের দুদিন ধরে কিছুই খেতে ভালো লাগছে না, তাই একটু কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসেছিলাম। ভেবেছিলাম পরে উঠে কিছু খেয়ে নেব। কিন্তু ওই ভাবনা পর্যন্তই।

IMG_20240907_021607.jpg
"আমার আজকের ব্রেকফাস্ট 😊"

আজ আর ব্রেকফাস্ট করা হয়নি। ফ্রিজের মধ্যে শোন পাপড়ি আনা ছিলো, তাই সেখান থেকে একটু শোন পাপড়ি খেয়েছিলাম আজকের ব্রেকফাস্টে। দুপুর বেলার বেশিরভাগ কাজের শাশুড়ি মা করেছিলেন, আমি শুধু জলের বোতল গুলো ভরেছিলাম।

1672344690977_010726.jpg

"দুপুরবেলা"

IMG_20240907_023035.jpg
"শাশুড়ি মায়ের তৈরি আমাদের আজকের লাঞ্চ"

রান্নাবান্না শেষ করে শাশুড়ি মা পুজো দিতে চলে গিয়েছিলেন। আমি জলের বোতলগুলো ভরে স্নান করে, চুপচাপ শুয়ে ছিলাম কিছুক্ষণ। শ্বশুর মশাইয়ের স্নান করা হয়ে গেলে, আমি ওনাকে খেতে দিয়ে, পিকলুর খাবার দিয়ে দিয়েছিলাম। ইতিমধ্যে শাশুড়ি মায়ের পুজোর কাজ সম্পন্ন হয়েছিলো। তারপর আমরা দুজন একসাথে লাঞ্চ করেছি।

IMG_20240907_021901.jpg
"বিকালের মেঘলা আকাশ"

দুপুরের পর থেকে আজ আবার আকাশের মুখ বেশ ভার হয়ে ছিলো। চারিদিক অন্ধকার করে এতটাই মেঘ করেছিলো যে, আকাশ দেখে মনে হচ্ছিল তখনই বৃষ্টি নামবে। কিন্তু দু চার ফোঁটা বৃষ্টি হওয়ার পর, মেঘ যেন কোথাও উধাও হয়ে গেলো। দুপুরবেলায় একটু বিশ্রাম নেব ভেবেছিলাম, কিন্তু সেই একই সমস্যা, শুয়েছিলাম ঠিকই কিন্তু এপাশ-ওপাশ করতেই সময় পার হয়ে গেছে, ঘুম আর হয়নি।

IMG_20240907_023250.jpg
"শুভর জন্য কাটা পেয়ারা"

শনিবার তাই শুভ একটু তাড়াতাড়ি ফিরেছে। গেটটা খুলে ওকে একটু শরবত করে দিলাম। তারপর একটা পেয়ারা কেটে দিয়েছিলাম। এই শনিবার দিনই একটু জোর করে হলেও ওকে একটা ফল খাওয়ানো যায়, তাও প্রতি শনিবার নয়। ও অবশ্য জোর করছিলে আমাকে খাওয়ার জন্য, কিন্তু খাবারের রুচি যেন একেবারেই নেই আমার, ঠিক কি কারনে বুঝতে পারছি না।

1672344690977_010726.jpg

"সন্ধ্যাবেলা"

যাইহোক দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে এলো। আমি ও আমার বুমিংয়ের কাজ নিয়ে বসলাম। ঐ কাজটা সম্পন্ন করার পর ম্যামকে মেইল করে দিয়ে, আমি ফোনে কিছু একটা ভিডিও দেখছিলাম। দেখতে দেখতে কখন যেন চোখ লেগে গেছে আমি বুঝতে পারিনি।

IMG_20240907_022009.jpg
"পিকলু খাটে ওটার ইচ্ছা জাহির করছে "

একটু পরে হঠাৎ করে আঁতকে উঠলাম। পিছন দিক থেকে শুভ পিকলুকে নিয়ে খাটের উপরে উঠেছিলো। ও ভাবছিল আমি বোধহয় শুয়ে ফোন দেখছি, কিন্তু বুঝতে পারিনি যে ফোন দেখতে দেখতে আমি কখন ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ করে বিছানায় লাফিয়ে ওঠাতেই, আমিও আঁতকে উঠলাম।

ভালোই হলো ঘুমটা ভেঙে গেলো। শুভ বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে বেড়োনোর সময় বললো, রাতে কিছু খাবো কিনা। অনেকক্ষণ সময় নিয়ে ভাবার পরেও, আমার যে ঠিক কি খেতে ইচ্ছা করছে, সেটা আমি নিজেই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তাই আর ওকে কিছু আনার কথা বলিনি।

1672344690977_010726.jpg

"রাত্রিবেলা"

কিছুক্ষণ বাদে আমার দিদি ফোন করলো। আগামীকাল ওর ওখানে যাওয়ার কথা বলছিলো, অন্তত ঘন্টা ৩/৪ এর জন্য। কারণ তিতলি ও তাতানের পুজোর শপিংটা দিদি একটু তাড়াতাড়ি সেরে নিতে চাইছে। দেখতে দেখতে পুজোর দিন প্রায় এগিয়েই এলো, এরপরে বাজার করাটা অনেক কষ্টকর, এতো বেশি ভিড় হয় যে, সেখানে গিয়ে পছন্দের সেই জিনিস কেনাটা বেশ মুশকিল। কিন্তু আমার শরীরের কন্ডিশন জানার পর ও বলল দরকার নেই।

IMG_20240907_021501.jpg
"মা-মেয়ের সেলফি, দিদি হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পাঠিয়েছে"

ফোন রেখে দেওয়ার পরে হঠাৎ কি মনে হলো জানি না, আবার ওকে ফোন করে, ওদেরকে আমাদের বাড়িতে আসার কথা বললাম। গত একটা বছর সারাদিন হসপিটালে ডিউটি করে বাড়িতে এসে, দাদার দেখাশোনা করতে করতে ও যেন কোথাও একটা রোবট হয়ে গেছে।

দাদাও মানসিক দিক থেকে নিশ্চয়ই একাকিত্বে ভোগে। একটা বছর ফ্ল্যাটে আটকে থাকা, যখনই বের হয় তখনই ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্যই বের হয়। যেহেতু কাল রবিবার ট্রেন অনেকটাই ফাঁকা থাকবে, আর আমাদের দত্তপুকুর লোকাল তো একদমই ফাঁকা থাকে, তাই বলতে পারেন একটু জোরই করলাম ওদেরকে আসার জন্য।।

**আনন্দের খবরটা এটাই যে, দিদি আসার জন্য রাজি হয়েছে। সাথে যেহেতু বাবা আছে, একটা কাকিমা আছে, তাই কোনো সমস্যা হবে না। যদিও বা দিদি বলেছে আসবে, তবে না আসা পর্যন্ত সঠিক ভাবে বলা সম্ভব নয় যে ও সত্যি সত্যিই এসেছে। যদি কাল আসে ভালো লাগবে। আমার তো বটেই, পাশাপাশি ওদেরও।

শ্বশুরমশাইকে দেখতে আসবে অনেক দিন ধরেই বলছিলো, কিন্তু সেটা হয়ে উঠছিল না। যদি আগামীকাল আসতে পারে তাহলে একসাথে সকলের দেখা হবে। দাদার অপারেশনের ডেট পিছিয়ে যাচ্ছে বেশ কিছু কারণে, সেগুলো না হয় অন্য কোনোদিন আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। যেহেতু এই মুহূর্তে অপারেশন হচ্ছে না, তাই দাদা বললো একবার শ্বশুর মশাইকে দেখে যাবে।

ফোনটা রাখার পর খবরটা শাশুড়ি মা ও শশুর মশাই কে দিতেই, দুজনেই খুব খুশি হলো এবং একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো, -"প্রশান্ত যে আবার কখনও আমাদের বাড়িতে আসতে পারবে, এটা আমি সত্যিই ভাবিনি।"প্রশান্ত আমার জামাইবাবু, যার এক্সিডেন্টের কথা আপনারা আমার পোস্টে পড়েছেন।

সত্যি বলতে এটা আমারও মনের কথা। আমি ভাবিনি দাদা আবার আমাদের মাঝে সুস্থ হয়ে ফিরে আসবে। তবে যে যুদ্ধ দাদা জিতেছে, আমার মনে হয় জীবনের সব যুদ্ধই তার কাছে ছোটো। এমন ভাবে সুখে থাকুক ওরা, ভালো থাকুক ওদের পরিবার, এই প্রার্থনা আমি সময় করি।

IMG_20240907_024714.jpg
"পিকলুর ঔষুধ"

যাইহোক এই ছিলো খুশির খবর। এরপর আমরা সকলে ডিনার সেরে নিলাম। আজ রাতে শাশুড়ি মা ই শশুর মশাইকে ওটস রান্না করে দিয়েছিলেন। বাকি সমস্ত কিছু গুছিয়ে টেবিলে আনার পর খেতে ডেকেছিলেন। রাতে সত্যিই আর কোনো কাজ করিনি, পিকলুকে ওষুধ দেওয়া ছাড়া। কারণ ওই কাজটা শাশুড়ি মা করতে পারেন না।

এরপর লিখতে বসলাম। পোস্টটা শেষ করে তারপর শুতে যাবো। সপ্তাহ শেষের দিনটা খুব বেশি খারাপ কাটেনি, শুধু শরীর খারাপটুকু যদি বাদ দিই। **তবে এটাও জীবনের একটা অংশস। তাই এটাকে মেনে নিয়েই ভালো থাকার প্রচেষ্টা করতে হবে সকলকে। আগামীকাল আদেও দিদিরা আসবে কিনা জানিনা, তবে যদি আসে কিছু মুহূর্ত অবশ্যই ক্যামেরা বন্দী করবো, আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। শুভরাত্রি।

9vWp6aU4y8kwSZ9Gw15LFL3aMdhmgmBBFMpDJregpdP328TqCvhjhspw5NBPbWMShaDD4yjYoZFwyWS9XH9YcrMyqTMGHiWpaGrwDGkXYMbDHgxptYZq3ueRpXapEAPkAuu3vPaZSXJ2USdTC.png

Sort:  
Loading...

দিন শেষে পরিবার নিয়ে খুশি থাকাটাই হলো ভাল থাকা। আর পরিবার নিয়ে এরকম খুশি থাকা মানে আপনি অসুস্থ হলেও একজন সুখী মানুষ।

 2 months ago 

সংসারের দায়িত্ব বড্ড বড় বিষয় যেটা আপনার লেখাতে সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত। তবে পোস্টটা পড়ে একটু খারাপই লাগলো। যে কোনো একটি কারণে আপনার পোস্টটি খুঁজে খোলা মাত্রই শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পারলাম।

আপনি কাজের চাপে মাঝেমধ্যেই নিজেকে বেশ কষ্ট দেন যেটা জেনে খারাপই লাগে। তাছাড়া বর্তমানে তো আবহাওয়া ও সুবিধার না। যাইহোক, ওষুধ খেতে হবে দিদি তবেই দ্রুত ঠিক হয়ে উঠবেন। বোন আসবে এটা শুনলে কার না ভালো লাগে। আমার বোন আসার কথা বললেই আমি জেগেই ভাগ্নির সাথে খেলার পরিকল্পনা করে ফেলি কি করবো? কিভাবে করবো?

পিকলুর শরীরটাও শুকিয়ে গেছে ছবি দেখে যেটা বুঝতে পারলাম। নিজের দিকেও একটু খেয়াল রাখতে হবে দিদি।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 68872.12
ETH 2524.42
USDT 1.00
SBD 2.53