Better life with steem || The Diary Game || 03rd September, 2024 ||
|
---|
Hello,
Everyone,
আজ ভেবেছিলাম আপনাদের সকলের সাথে মায়াপুর ঘোরার অন্তিম পর্ব শেয়ার করবো। যে পর্বের মাধ্যমে মায়াপুরের আশেপাশে যে দর্শনীয় স্থানগুলোতে ঘুরেছিলাম, ভেবেছিলাম সেই সম্পর্কে কিছু তথ্য ও ছবি পোস্টের মাধ্যমে আজ তুলে ধরবো।
কিন্তু সত্যি কথা বলতে আজ আর ওই সম্পর্কিত পোস্ট লিখতে ইচ্ছে করছে না। কারণ জায়গা গুলো এতটাই সুন্দর ছিল যে, সেগুলো সম্পর্কে লিখতে গেলেও বেশ যত্ন সহকারে লিখতে হবে। তবে আজ সারাটা দিন যেভাবে কেটেছে, তাতে বড্ড বেশি ক্লান্ত, আর মানসিক দিক থেকে বেশ কিছুটা অশান্তিতে রয়েছি বলা যায়।
তাই ভাবলাম সেই সম্পর্কিত কিছু কথাই না হয় আপনাদের সাথে আজ শেয়ার করি। কারণ মনের মধ্যে অশান্তি বয়ে বেড়ানোর থেকে, লেখার মাধ্যমে কথাগুলো শেয়ার করলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতে পারি।
"সকালবেলা"
|
---|
গত বেশ কয়েকদিন ধরে ঘুম থেকে উঠলেই রৌদ্রের প্রখরতা চোখে পড়ে, ঠিক যেমনটা ভাদ্র মাসে হওয়ার কথা। নীল আকাশে ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘগুলো জানান দেয়,আশ্বিন মাস একেবারেই কাছে চলে এসেছে। চারিদিকে পুজো পুজো রব। আজও তার অন্যথা হয়নি।
ঘুম ভেঙেছে বেশ সকালেই। গতকাল রাতে বেশ কিছুটা খাপছাড়া ঘুম হয়েছিলো, যার কারণে সকালে শরীরটা খুব একটা ভালো লাগছিল না। গতরাতে পোস্ট লেখাটা শেষ করে রেখেছিলাম। তাই সকালেই পোস্ট করে দিয়ে, ফ্রেশ হয়ে, নিচে গেলাম।
|
---|
ঘুরে আসার পর থেকেই গলাটা বেশ ব্যথা করছে। এই কারণে আজ সকালে শুভর সাথে নিজের জন্যেও এক কাপ চা করেছিলাম। শশুর মশাইকে চা দিয়ে আমাদের দুজনের চা নিয়ে, উপরে বসে চা খেয়েছিলাম আজ। যেহেতু একটু সকালে ঘুম থেকে উঠেছি, তাই রান্না করার খুব বেশি তাড়া ছিলো না।
|
---|
আমাদের নতুন গাছে একটা জবা ফুল ফুটেছে। এই গাছটি আমার শাশুড়িমা বাজার থেকে কিনে এনেছিলেন। আসলে এই রক্তপঞ্চ জবা ফুলটি আমার খুব পছন্দের। এর থেকে একটা হালকা গোলাপি রঙের ফুল পাওয়া যায়। তবে সেই গোলাপি রঙের ফুলটির থেকেও, যেন এই রংটি আমার বেশি পছন্দ। অনেকদিন আগেই গাছটি লাগানো হয়েছিলো, তবে আজ প্রথম ফুল ফুটেছে।
সকালবেলাতেই রোদ্রের এত তাপ থাকে আজকাল যে, ফুল তুলতে গেলেও ওইটুকু সময় ছাদে দাঁড়িয়ে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়ে। যাইহোক এরপর নিচে নেমে রান্না শেষ করলাম। শুভর অফিসের জন্য জন্য কাতলা মাছের ঝোল ও ঢেঁড়স ভাজা তৈরি করলাম। ব্রেকফাস্ট হিসেবে সকলের জন্য রুটি তৈরি করেছিলাম।
|
---|
শুভ অফিসে বেরিয়ে যাওয়ার পর, আমি কমিউনিটির কাজ নিয়ে বসেছিলাম। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার বাকি ছিলো, সেই কাজগুলোই শেষ করেছিলাম সকালে। তারপর নিজে ব্রেকফাস্ট করেছি। আজ দুপুরে আবার শশুর মশাইকে নিয়ে ডাক্তার দেখাতে যাওয়ার কথা ছিলো, তাই ঘরের কাজ গুলো একটু দ্রুত শুরু করতে হয়েছিল আজ।
"দুপুরবেলা"
|
---|
প্রতিবারই ডাক্তার দেখানোর সময়টা এমন সময় পরে, যখন রাস্তায় গিয়ে অন্ততপক্ষে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় গাড়ি পাওয়ার জন্য। আর তার ওপরে আজ এতো পরিমাণে রোদ্দুর ছিলো যে, সত্যি কথা বলতে বেশ কষ্টই হয়ে গিয়েছিলো।
|
---|
|
---|
তার উপরে শ্বশুর মশাইয়ের শরীর অনেকটাই খারাপ। ওনাকে ধরে গাড়িতে তোলা, ধরে নামানো, চেয়ারের বসানো- উঠানো, সবকিছু করাটা বেশ কষ্টকরই ছিলো। কিন্তু কিছু করার নেই। ডাক্তার দেখানোর পর্ব শেষ করে, সবেমাত্র চেম্বারের বাইরে বেরিয়েছি, হঠাৎ করেই শুভর ফোন।
|
---|
প্রথমে তো শ্বশুর মশাইয়ের খবরই জানতে চাইলো। আমিও ভাবলাম হয়তো অফিসে গিয়ে টেনশন করছে বলে, ফোন করে জানতে চাইছে। সমস্তটা জানার পর আমাকে বলছে, -"তোমাকে একটা খুশির খবর দেবো?"
আমি ভাবলাম হয়তো নিশ্চয়ই অফিস থেকে কোনো কিছু ভাল খবর পেয়েছে, সেটাই শেয়ার করবে। আমি হ্যাঁ বলাতেই ফোনের ওপাশ থেকে বলল,-"আমাকে একটু আগে কুকুরে কামড়েছে।"
দু মিনিটের জন্য পুরো ব্ল্যাঙ্ক হয়ে গিয়েছিলাম। কি বলবো, কি শুনলাম, কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।
আসলে যে কুকুরটি কামড়েছে, গত তিন চার মাস কুকুরটির জন্য আলাদা একটা বাটিতে করে বাড়ি থেকে ভাত নিয়ে যায়। কয়েকদিন আগে কেউ একজন কুকুরটিকে গরম জল ছুড়েছিল, ফলে ওর গায়ের চামড়া গুলো সব পুড়ে গিয়েছিল। শুভর অফিসের কোনো একটা গাড়ির নিচে শুয়ে থাকত।
ওরা যখন ভাত ফেলে দিতো, সেই ভাতগুলো খেতো। শুভর আবার কুকুরের প্রতি বড্ড বেশি ভালোবাসা। একদিন দুদিন ওকে খেতে দিতে দিতে, একটা সময় এটা ওর রুটিন হয়ে গেলো। নিজের টিফিন থেকে ভাত শেয়ার করে, নিজে কম খেতো, তাই আমি আলাদা করে কুকুরটির জন্য ভাত দিতাম।
|
---|
কুকুরটি অবশ্য ইচ্ছা করে কামড়াইনি। শুভ ওর জলের বাতিটা নিতে গিয়েছিলো, জলটা পাল্টে দেবে বলে। কিন্তু ও হয়তো ভেবেছে ওর খাবারটা তুলে নেবে, এই কারণেই বোধহয় অমন করে শুভর হাতটা আটকাতে গিয়েছিলো। আর সেই সময়ই অঘটনটা ঘটেছে।
যাইহোক অফিস থেকেই গাড়িতে করে ওকে তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে গিয়ে টিটিনাপ ইনজেকশন দিয়ে নিয়ে এসেছিলো। বাকি ইনজেকশনগুলো এরপর এক এক করে দিতে হবে। কথাটা শোনার পরে সত্যি কথা বলতে কিছুক্ষণের জন্য আমি নিজেই বুঝতে পারছিলাম না কি করবো।
আদেও কতখানি কি হয়েছে বুঝতে পারছিলাম না। অন্যদিকে শ্বশুর মশাইকে তখন সবে মাত্র চেম্বার থেকে বের করেছি। এরপর গাড়ি ঠিক করে বাড়িতে এলাম। আমি শুভর অফিসে যাবো ভাবছিলাম, তখন আমাকে বলল তেমন কিছু হয়নি। পরে আমাকে ছবিও পাঠিয়েছে।
আমাদের ওখানকার একটি ফার্মেসিতে কথা বলে ইনজেকশন অ্যারেঞ্জ করিয়েছে। ওখান থেকে ইনজেকশন গুলো দিয়ে নেবে। কারণ অফিস ছুটি করে প্রতিটা ইঞ্জেকশনের দিন হসপিটালে যাওয়া অসম্ভব। কোথা থেকে কি হলো কিছুক্ষণ কাটালাম। তারপর আমি খাওয়া-দাওয়া করে কিছুক্ষণ শুলাম। দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে এলো।
"সন্ধ্যাবেলা"
আজকে সন্ধ্যা বেলার সন্ধ্যা পুজো শাশুড়িমা দিয়েছিলেন। কেন জানিনা শুভর ঘটনাটা শোনার পর থেকে আমার কেমন একটা লাগছিলো। যতক্ষণ ওকে দেখতে না পাচ্ছিলাম ভেতরে একটা অস্বস্থি কাজ করছিল। এরপর আমি বুমিং এর কাজ সম্পন্ন করলাম।
কিছুক্ষণ বাদেই শুভ অফিস থেকে ফিরলো। বলল যে হাতে টিটিনাস ইঞ্জেকশন দিয়েছে, সেই হাতটা প্রচন্ড ব্যথা। তাই আমি কিছুটা বরফ নিয়ে সেঁক দিয়ে দিলাম।
|
---|
ওর বেশ খিদে পেয়েছিলো, এই কারণে শাশুড়ি মা আজ ম্যাগি বানিয়েছিলেন। শুভ ম্যাগি খেয়েছিলো, তবে আমার খেতে ইচ্ছে করছিল না যেহেতু অনেকটা বেলা করে ভাত খেয়েছিলাম। তাই আমি সন্ধ্যাবেলায় আর কিছুই খাইনি। আর কিছুক্ষণ পরে আমি ডিসকর্ডে যোগদান করলাম, কারণ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সকলের সাথে কথা বলার ছিলো।
"রাত্রিবেলা"
ডিসকর্ডে কথা বলতে বলতে অনেকটাই রাত হয়ে গেলো। তারপর আমি শশুর মশাইয়ের সুগার চেক করার কাজটি সম্পন্ন করি এবং রান্নাঘরে গিয়ে রুটি তৈরি করি। পিকলুকে খেতে দিয়ে, তারপর ওকে ওষুধ খাইয়ে দিলাম। তারপর আমরা নিজেরা রাতের খাবার খেয়ে নিই। সমস্ত কাজই আজ সারাদিন হয়তো করেছি, কিন্তু তবুও যেন দিন শেষে মনটা বেশ খারাপই লাগছে এখন।
|
---|
শ্বশুরমশাই অনেকদিন ধরেই অসুস্থ, তার সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার কোনো রকম সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে পিকলুর শরীরটাও অনেকদিন যাবত বেশ খারাপ। বারবার ওষুধ পরিবর্তন করা হচ্ছে ঠিকই, তবে তেমন কোনো উন্নতি বুঝতে পারছি না। তার উপর আজ আবার শুভর এই ঘটনা। সবকিছু মিলিয়ে চারিদিক থেকে যেন সবটাই খারাপ হচ্ছে, এই কারণে বোধহয় মন মেজাজ খারাপ হয়ে থাকছে।
যাইহোক এই সবটাই আসলে জীবনের একটি অংশ, সবটাকে মানিয়ে গুছিয়েই জীবন কাটাতে হবে। এইরকম একটি মানসিক পরিস্থিতিতে সত্যিই আজ আর ইচ্ছা করলো না যে, আপনাদের সাথে মায়াপুরের শেষ দিনের আনন্দময় মুহূর্তগুলো শেয়ার করি। সেই কারণে আজকের সারাটা দিন কিভাবে কাটালাম সেই গল্পই শেয়ার করলাম।
সবকিছু মিলিয়ে এইরকম একটি খারাপ সময় যেন খুব দ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারি, সেই চেষ্টাই করছি। পাশাপাশি আপনাদের সকলের সময়ও যেন ভালো কাটে, এই প্রার্থনাও রইলো। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আমি মনে করলাম পিকলু হয়তোবা দুষ্টুমি করে কামড়িয়ে দিয়েছে তবে সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ে দেখি না অন্য আরেকটি কুকুর জামাইবাবুকে কামড়ে দিয়েছে।
জামাইবাবু হয়তো বুঝে উঠতে পারি নাই সে এমনটা করবে কুকুরটাকে সুস্থ করার জন্য প্রতিদিন বাসা থেকে ভাত নিয়ে যায় আর সে এমনটা করতে পারলো। যাই হোক দ্রুতই ইনজেকশন ডোজ কমপ্লিট করতে বলবেন তা না হলে কিন্তু সমস্যা হতে পারে। কেননা এগুলো রাস্তার কুকুর এর ভিতরে ভাইরাস থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার একটি দিনের কার্যক্রম খুব ভালোভাবে আমাদের কাছে উপস্থাপনা করার জন্য ভালো থাকবেন।
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
আপনার মায়াপুর ভ্রমণের অন্তিম পর্ব পড়ার অপেক্ষায় ছিলাম, কারণ ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান এর বিষয়ে বিস্তারিত পড়তেও ভালো লাগে, এবং সেই ছবিগুলো দেখতে অনেক সুন্দর হয়, যাইহোক আগামীতে আপনার সেই পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম, আপনার সারাদিনের কার্যক্রম দেখে খুব ভালো লাগলো, ধন্যবাদ সুন্দর পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator06.
Good post here should be . . .
Curated by : @𝗁𝖾𝗋𝗂𝖺𝖽𝗂
Thank you for your support Sir @heriadi 🙏
আমাদের দেশের মতো আপনাদের ওখানেও সকালেই রোদের তাপমাত্রা অনেক বেশি দেখায়।। কয়েকদিন আগে বৃষ্টি হলো এখন তোদের তাপমাত্রা বেশ বেড়ে গেছে।।
শুনে খারাপ লাগলো বেশ গলা ব্যথা হয়েছে আপনার এছাড়াও ভালো লেগেছে নতুন ফুল ফুটেছে গাছে। গরমের মধ্যে বাইরে কোথাও যেতেও অস্বস্তি লাগে তারপরও অনেক কারণে আমাদেরকে যেতে হয়।। আর হ্যাঁ ভাইয়ের কুকুর কামড়ের কথাটা আপনার মুখ থেকে শুনেছিলাম হয়তো অনাকাঙ্খিতভাবে সেটা ঘটে গেছে।।
আসলে ঘটনাটা অনাকাঙ্ক্ষিতই ছিলো। কুকুরটি ইচ্ছাকৃতভাবে কামড়ায়নি। বিষয়টি আপনাকে বলেছিলাম বলে হয়তো আপনি বুঝতে পেরেছেন। শুভ এখন ভালো আছে, তবে ইনজেকশনগুলোর কোর্স অবশ্যই কমপ্লিট করতে হবে। আসলে যে ফুলের ছবি আমি শেয়ার করেছি, এটা আমার খুব পছন্দের। অনেকদিন ধরে শাশুড়ি মাকে বলছিলাম, তাই বাজার থেকে ফেরার পথে একদিন গাছটা দেখে নিয়ে এসেছিলেন। যেকোনো পছন্দের গাছে প্রথম ফোঁটা ফুল অনেক বেশি আনন্দ দেয়। আরও আনন্দের বিষয় হলো, এখন প্রতিদিনই প্রায় একটা দুটো করে ফুল ফুঁটছে গাছটিতে। ধন্যবাদ আপনাকে আমাকে পোস্ট পড়ার জন্য। ভালো থাকবেন।