"আর্ট ক্লাসের অভিজ্ঞতা ও প্রজাপতি আঁকার প্রচেষ্টা"
![]()
|
---|
Hello,
Everyone,
গত দু সপ্তাহ যাবৎ নিয়মিত আর্ট ক্লাসে যোগদান করলেও, নেটওয়ার্কের কারণে হোক বা অন্য কোনো কারণে সঠিকভাবে ক্লাস করতে পারছি না। গতকালকের পোস্টেও আপনাদের বলেছিলাম, অ্যাডমিন ম্যাম হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে প্রতিটি স্টেপের স্ক্রিনশট পাঠিয়েছিলেন। আর সেই পাঠানো স্ক্রীনশট দেখেই আমি গতকাল করার চেষ্টা করছিলাম।
আগের সপ্তাহেও সমস্যা হওয়ার কারনে আমি সব স্টেপ গুলো দেখতে পারিনি। তারপরও গতকাল বাড়িতে বসে, পূর্বে শেখা একটি ছবি আঁকার চেষ্টা করেছি। বর্তমানে এমন সিচুয়েশন দিয়ে যাচ্ছি যে, কোনো কিছুতেই জোর করে মনোনিবেশ না করলে, কিছুতেই যেন কাজটা করা হয়ে উঠছে না।
সেই কারণেই গতকাল দুপুরবেলায় সমস্ত কাজ সেরে, বসে গেছিলাম ছবি আঁকতে। কারণ ২ ঘন্টা বাদে বাদে শশুর মশাইয়ের সুগার টেস্ট করতে হচ্ছিলো। সবকিছু মিলিয়ে ঘুম আসছিল না। তাই কমিউনিটির কাজ দেখার পাশাপাশি, ভাবলাম ছবি আঁকার কাজটাও এগিয়ে রাখি। যেহেতু গতকাল আর্ট ক্লাস ছিলো, তাই ম্যামকেও একবার দেখিয়ে নেওয়া যাবে।
তাই আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ফুলের উপরে বসা সাইড ভিউ বাটারফ্লাই এর ছবি। যেদিন ম্যাম আঁকাটা শিখিয়েছিলেন, সেদিন নেটওয়ার্কের বেশ প্রবলেম ছিলো। আর আমি একাই সেদিন ক্লাস করেছিলাম।
সেদিন মাঝে মধ্যে দেখতে পেয়েছিলাম, তাই কিছু স্ক্রিনশট আমি রেখেছিলাম। আর কিছু অ্যাডমিন ম্যাম আমাকে পাঠিয়েছিলেন, সবকিছু মিলিয়েই চেষ্টা করেছি সঠিক ভাবে ছবিটি আঁকার। তবে জানি না আপনাদের কেমন লাগবে। চলুন আমি আজ আপনাদের সাথে ছবি আকার পদ্ধতিটি শেয়ার করি।
![]()
|
---|
প্রথমে একটি এ-ফোর সাইজের পেপারের মাঝ বরাবর সমান্তরাল ভাবে হালকা একটা দাগ টেনে নিতে হবে। এরপর ঠিক উপরে আর একটা সমান্তরাল রেখা টানতে হবে, তবে সেটা মাঝ বরাবর নয়, রেখাটি এমন ভাবে টানতে হবে যাতে দেখতে খানিকটা ত্রিভুজের একটা কোনের মতো লাগে। যেমনটা আপনারা ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন।
![]()
|
---|
এরপর সমান্তরাল লেখাটির উপরের দিকের একদম শেষ বিন্দুতে পয়েন্ট করে, সেই পয়েন্ট কে কেন্দ্র করে একটি বৃত্ত আঁকতে হবে, যেটা প্রজাপতির মাথা হবে। এরপর বৃত্তের বাইরে যে সমান্তরাল রেখাটি থাকবে, তার মাঝ বরাবর একটা বিন্দু আঁকতে হবে যাতে, প্রজাপতি শারীরিক গঠনের চিত্রটি সঠিকভাবে আঁকা যায়। এরপর এক এক করে প্রজাপতির পা এবং মাথার শুঁড় গুলো এঁকে নিতে হবে।
![]()
|
---|
এরপর পাখনা গুলো আঁকতে হবে এবং পাখনা উপর থেকে একই রকম ভাবে আরও একটা দাগ টানতে হবে যাতে, সেগুলো দেখে মনে হয় দুটো পাখনা একত্র করে প্রজাপতিটি ফুলের উপরে বসেছে। এরপর প্রজাপতির পাখনায় যে বিভিন্ন ধরনের ডিজাইন থাকে, সেগুলোর জন্য পাখনার উপরেই কিছু কিছু জায়গায়, হালকা হাতে পেন্সিল দিয়ে ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের বৃত্ত এঁকে নিতে হবে।
![]()
|
---|
এইবার পৃষ্ঠার মাঝ বরাবর যে হালকা সমান্তরাল রেখাটি এঁকেছিলাম, ঠিক তার নিচে একটা ফুল আঁকতে হবে। যাতে দেখে মনে হয়, ঠিক ফুলটির উপরেই প্রজাপতিটি বসে আছে। তাই খেয়াল রাখতে হবে যেন, প্রজাপতির পায়ের দিকটা, ফুল থাকে সামান্য উপরে থাকে। ফুলটির পাপড়ি আমি আমার মতো করে এঁকেছি, আপনারা চাইলে অন্য ধরনেরও পাঁপড়ি আঁকতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন যাতে ফুলের পাঁপড়ি গুলো নিচের দিকে থাকে।
![]()
|
---|
![]()
|
---|
যেহেতু ফুলটা আমি প্রথমে হালকা হাতে এঁকেছিলাম, তাই তারপর পেন্সিল দিয়ে আরেকটু গাঢ়ও করে নিতে হবে এবং একই রকম ভাবে প্রজাপতির চিত্রটিকেও একটু গাঢ় করে নিতে হবে, যাতে রং করার সময় সমস্যা না হয়।
![]()
|
---|
![]()
|
---|
ফুলের রং আপনারা আপনাদের পছন্দ অনুযায়ী করতে পারেন। তবে আমি ম্যামের মতোই লাল এবং হলুদ রঙটি বেছে নিয়েছিলাম। তবে ফুলের নিচে যে ডাঁটটি এঁকেছি, সেটা সর্বদাই সবুজ রঙের হয়ে থাকে, তাই সেক্ষেত্রে সবুজ রং ব্যবহার করাই শ্রেয়।
রং করার ক্ষেত্রে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যাতে প্রতিটি পাপড়ির রং করার সময় একই রঙের রঙ ব্যবহার করা হয় ও রঙ পেন্সিল গুলো যেন একই দিকে টানা হয়।
![]()
|
---|
![]()
|
---|
প্রজাপতি রং করার ক্ষেত্রে আমি প্রথমেই প্রজাপতির পাখনা যে ডিজাইনগুলো তৈরি করেছিলেন, সেগুলোকে রং করে নিয়েছিলাম। সেক্ষেত্রে আমি কমলা এবং বেগুনি রং ব্যবহার করেছি। আর পাখনার দুটো আউটলাইনও আমি কমলা রঙ দিয়েই করেছি।
![]()
|
---|
![]()
|
---|
এরপর প্রজাপতির শুঁড়, পা এবং দেহের আউট লাইনটা কালো রং করেছি। আর ভেতরের অংশটা সম্পূর্ণ খয়েরি রং দিয়েছি। পাখনা গুলোর রং করেছি হলুদ। পাখনা দুটি রং করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে, রং করার সময় রঙ পেন্সিলের টান একই রকম থাকে এবং এটা শুধুমাত্র প্রজাপতির ক্ষেত্রে নয়, যেকোনো জিনিস আঁকার পর, রং করার সময় হাতের মুভমেন্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
![]()
|
---|
এইরকম ভাবে আমি গতকালের আঁকাটি শেষ করেছিলাম এবং আর্ট ক্লাসে ম্যামকে দেখিয়েছিলাম। ম্যাম ভালোই বলেছেন। তবে আপনাদের কেমন লাগলো সেটা কিন্তু অবশ্যই মন্তব্যের মাঝে জানাবেন।
আর্ট ক্লাসে জয়েন করার আগে এই জিনিসগুলোকে দেখে সত্যিই খুব সহজ মনে হতো। তবে প্রতিটি ছবি আঁকার ক্ষেত্রে প্রত্যেকটা ছোট ছোট জিনিস যে কত বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আন্দাজ করতে পারিনি।
যাইহোক আমি আমার পোস্টের মাধ্যমে আমার অভিজ্ঞতা এরকম ভাবেই আপনাদের সাথে পরবর্তীতেও শেয়ার করবো। যদি আপনাদের মধ্যে কারোর আঁকা শেখার আগ্রহ জন্মে, তাহলে অবশ্যই আমাদের কমিউনিটির সাপ্তাহিক আর্ট ক্লাসে যুক্ত হওয়ার অনুরোধ রইলো। ভালো থাকবেন সকলে। শুভরাত্রি।
মনে হচ্ছে যে ভালই শিখছেন , ফুলের সংস্পর্শে প্রজাপতির দৃশ্যটি অঙ্কন করে খুব সুন্দর ফুটিয়ে তুলছেন। অঙ্কনে প্রত্যেকটি ধাপ খুব ভালোভাবেই আমাদের কাছে উপস্থাপনা করেছেন। এভাবেই চেষ্টা করে গেলে আমার মনে হয় আরো সুন্দর হবে। দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আর্ট ক্লাসের অভিজ্ঞতা আমাদের কাছে উপস্থাপনা করার জন্য।
আমিও তেমনটাই প্রত্যাশা করি, ধীরে ধীরে বোধহয় আঁকা আরও বেশি উন্নত হবে। সত্যি কথা বলতে সঠিকভাবে আঁকা শেখা এই কমিউনিটির আর্ট ক্লাসের হাত ধরেই, তাই সামান্য ভুল ত্রুটি তো হবেই। তবে আপনি যে আমার আঁকা পছন্দ করেছেন, এটা জেনে সত্যিই ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন।