"বৃষ্টিমুখর একটি বিকালের গল্প"
![]() |
---|
"বৃষ্টির পরে ছাদে দাঁড়িয়ে তোলা আকাশের ছবি।বৃষ্টির জল তখনও তারের মধ্যে জমে আছে" |
---|
Hello,
Everyone,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।
গত বেশ কয়েকদিন ধরে প্রতিদিন বিকেল বেলায় আবহাওয়া তার রূপ পরিবর্তন করে চলেছে। সারাদিন ঝলমলে রৌদ্র থাকলেও বিকেল থেকেই আকাশের মুখ ভার হতে শুরু করে এবং সন্ধ্যের পর থেকে শুরু হয় ঝোড়ো হাওয়া আর টুপটাপ বৃষ্টি।
গতকাল দুপুর বেলায় লাঞ্চ শেষ করে সবকিছু গুছিয়ে, একটু বিশ্রাম করতে যাবো, এমন সময় হঠাৎ করেই কারেন্ট চলে গেলো। জানালা দিয়ে বাইরে থেকে তাকিয়ে দেখি আকাশে তখন মেঘ ঘনিয়ে এসেছে। তৎক্ষণাৎ ছুটলাম দোতলায় কারণ, দোতলায় আমার রুমের সমস্ত দরজা-জানলা খোলা ছিল। সেগুলো না লাগালে ছাদের যত ধুলোবালি সবই হওয়ার সাথে ঘরের ভেতরে ঢুকে যায়।
![]() |
---|
"বৃষ্টি নামার আগে,আকাশে জমা কালো মেঘ" |
---|
আমি ওপরে গিয়ে জানালা লাগাতে না লাগাতেই হাওয়া শুরু হলো। আপনারা সকলেই এই সময়কার হওয়ার কথা জানেন, মুহূর্তের মধ্যে চারিদিক অন্ধকার করে, ঝোড়ো হাওয়া শুরু হলো। আর এই হাওয়া শুরু হওয়ার অর্থ হলো কারেন্ট চলে যাওয়া। আর সেই কারেন্ট কখন আসবে সেটাও কিন্তু নিশ্চিত করে বলা যায় না।
এইরকম আবহাওয়ায় কখনো কখনো মন অনেক ভালো হয়ে যায়। আবার কখনো কখনো অজানা কারনেই মন খারাপ হয়ে যায়। আসলে এইসব কিছুই আমাদের মনের উপরে নির্ভর করে। এই দিন যেমন আমার নিজের বৃষ্টির উপভোগ করতে খুবই ভালো লাগছিল।
![]() |
---|
"জানালার পাশে বসে বৃষ্টি উপভোগ করার সময় তোলা ছবি" |
---|
![]() |
---|
"বাইরে তখন অঝোর ধারায় বৃষ্টি নেমেছে" |
---|
ডাইনিং টেবিলের সামনে আমাদের যে ছোট্ট জানালা আছে, সেখান দিয়ে বাইরে বৃষ্টির আবহাওয়াকে অনেকক্ষণ ধরে উপভোগ করলাম। চেষ্টা করলাম জানলার ফাঁক দিয়ে কয়েকটি ছবি তোলার, এমনকি গেটের সামনে গিয়ে কিছু বৃষ্টির ছবিও তুলেছিলাম। জানিনা ছবিতে আপনারা সেটা কতখানি ভালো ভাবে বুঝতে পারবেন।
মাঝখানে যে পরিমাণে গরম পড়ছিল, তখন মনে হতো এর থেকে বর্ষাকাল অনেক ভালো। সারাদিন বৃষ্টি হলেও অন্তত গরমে এত কষ্ট হতো না। আবার যখন পরপর তিন-চার দিন বিকালে ঝোড়ো হওয়ার সাথে সাথে বৃষ্টি হচ্ছে তখন কেন জানি না মনে হচ্ছে এমন বৃষ্টি না হওয়াই ভালো। কারণ আবহাওয়া ঠান্ডা থাকলেও কারেন্ট থাকছে না। সেটা কিন্তু অনেক বেশি সমস্যা সৃষ্টি করছে।
![]() |
---|
"ঝড়ো হাওয়া এবং মুষলধারায় বৃষ্টির কারণে তুলসী গাছটি নুইয়ে গেছে" |
---|
আসলে আমরা মানুষের কি চাই সেটা আমরা নিজেরাও জানিনা। এই কারণেই বোধহয় কথায় আছে, -"আমরা যা চাই তা পাই না, আর যা পাই সেটা কখনো চাই না।" যাইহোক প্রতিদিন ওইরকম বৃষ্টি যদিও বা আমার খুব একটা ভালো লাগে না। তবে গত পরশু দিনের এই বৃষ্টিটা আমি বেশ উপভোগ করেছি এবং ছবির মাধ্যমে কিছু মুহূর্ত তুলে রাখার চেষ্টা করেছি, যেগুলো আমি আপনাদের সাথে আজকে শেয়ার করলাম।
![]() |
---|
"জানলা দিয়ে দেখতে পাওয়া এই খেজুর গাছটি, ছোটবেলার অনেক স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়" |
---|
এই ছবিটায় হয়তো আপনারা খেজুর গাছটি একদম স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পারছেন না। কারণ আমি আমাদের ঘরে বসে, জানালা দিয়ে ক্যামেরা জুম করে ছবিটি তুলেছি। আসলে আমাদের বাড়ির আশেপাশে খুব বেশি গাছ নেই। সবারই মোটামুটি অল্প জায়গার মধ্যে বাড়ি তৈরি করা।
কিন্তু আমি প্রতিবছর আমাদের বাড়ির জানালা দিয়ে এই খেজুর গাছটি দেখি আর আমার ছোটবেলাটাকে খুব মিস করি। কারণ ছোটবেলায় খেলার ফাঁকে ফাঁকে খেজুর গাছের তলায় গিয়ে, পাঁকা খেজুর কুরানোর স্মৃতিগুলো বড্ড মনে পড়ে এই গাছটিকে দেখলে।
ছোটবেলায় গাছ তলায় একটা খেজুর পেলেই কত আনন্দ লাগতো। কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথে সে আনন্দ গুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেলো। আজ গাছ তলা দিয়ে গেলে যদি খেজুর পড়ে থাকে, তবুও যেন হাতে ধরে তুলতে ইচ্ছা করে না।
অথচ ছোটবেলায় একটা খেজুর গাছে যতদিন খেজুর থাকত, আমরা সেই গাছের তলায় ঘুরঘুর করতাম। ঝড়ের সময় খেজুর গাছের ডালগুলো এদিক ওদিক এমন ভাবে নাড়াচাড়া করে, যেন মনে হয় ভেঙে পড়বে। কিন্তু তবুও সমস্ত ঝড় সামলে গাছটি ঠিক নিজের মতো দাঁড়িয়ে থাকে।
যাই হোক এই ছিলো আমার ঝড়ের দিনে কাটানো একটি দুপুরের অভিজ্ঞতা। যেটা আজকে ছবি এবং লেখার মাধ্যমে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করলাম। আপনাদের কেমন লাগলো, সেটা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।
এরকম বৃষ্টি স্নিগ্ধ বিকেল সত্যিই উপভোগ্য হয়। বৃষ্টি স্নাত এই বিকেলে আপনি বেশ ভালো কিছু সময় অতিবাহিত করেছেন, যেটা বুঝতে পারলাম আপনার লেখা থেকে।
তাছাড়া খেজুর গাছ বিষয়ক যে স্মৃতি আপনি উপস্থাপন করেছেন, এটা অসাধারণ। এই দৃশ্য গুলোর সাথে শৈশবের স্মৃতি আমারও আছে। তাই আমিও উপভোগ করলাম আপনার লেখাটি।