"জীবনে ভালোবাসার সম্পর্ক আগলে রাখতে প্রয়োজন ক্ষমাশীল মানসিকতাও"
Hello,
Everyone,
"ক্ষমা" শব্দটি দুটি অক্ষরের হলেও, এর আক্ষরিক অর্থ আমাদের জীবনের বহু ক্ষেত্রে, বহু পরিস্থিতিকে বদলে দেয়।
মানুষ সমাজবদ্ধ জীব, তাই পরিবার-পরিজন ও সমাজ, এদের ছাড়া মানুষ নিজের জীবন পরিকল্পনাও করতে পারে না। আর সকলকে নিয়ে চলতে গেলে, জীবনে বিভিন্ন পরিস্থিতির সম্মুখীন আমাদের হতেই হয়।
সেই পরিস্থিতিতে কখনো কখনো নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়। তখনই আমাদেরকে একে অপরের ভুল ক্ষমা করে, জীবনে এগিয়ে যেতে হয়, যাতে সম্পর্ক গুলো ঠিক থাকে। আমরা আমাদের জীবনে দুই ধরনের মানুষের সাথে পরিচিত হই। যারা খুব সহজে নিজের ভুল বুঝতে পেরে, সেই মানুষগুলোর কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন, যাদেরকে তারা আঘাত দিয়েছেন।
আবার এমন মানুষও চোখে পড়ে, যারা নিজেদের অন্যায়কে স্বীকার পর্যন্ত করতে চায় না। তারা এটা বুঝতেই পারে না যে, তাদের ব্যবহার উল্টোদিকে থাকা মানুষটাকে ঠিক কতটা আঘাত দিতে পারে। তারা এইটা ভাবতে থাকে, ক্ষমা চাওয়া মানে হয়তো নিজে ছোটো হয়ে যাওয়া।
এই সব কিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে সেই মানুষগুলোর সংখ্যা সব থেকে কম, যারা ক্ষমাশীল মানসিকতা বহন করে। অন্তত আমি আমার ব্যক্তি জীবনে এইরকম মানুষ খুবই কম দেখেছি, যারা খুব সহজেই উল্টোদিকে থাকা মানুষটার ভুলগুলো ক্ষমা করে দিতে পারেন।
""ক্ষমাশীল মানসিকতা"" আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই থাকা উচিত বলে আমি মনে করি, কারণ নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চাওয়াটা যেমন নিজের উন্নত ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে, ঠিক তেমনি অন্য কেউ ক্ষমা চাইলে, তাকে ক্ষমা করে দিতে পারাটাও কিন্তু অনেক ভালো একটি গুণ। সুতরাং মানুষ হিসেবে যদি নিজেকে উন্নত করতে হয়, তাহলে এই দুটো গুণই আমাদের মধ্যে থাকা উচিত।
একই পরিবারে বড় হলেও পরিবারের প্রতিটি মানুষ আলাদা, সুতরাং তাদের ব্যক্তিত্বও আলাদা ভাবে প্রকাশ পাবে ,এটাই খুব স্বাভাবিক। কিন্তু সেই মানুষগুলোকে নিয়ে আমাদেরকে জীবনে এগিয়ে চলতেই হয়।
সেই কারণে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে, অনেক সময় সম্পর্কের মধ্যে ওঠা পড়া তৈরি হয়। তবে সেই ওঠা পড়া গুলোকে কাটিয়ে, একে অপরের প্রতি ভালোবাসা ও ক্ষমাশীল মানসিকতা রাখলে, তবেই একটি পরিবার সুখী পরিবার হিসেবে, আদর্শ উদাহরণ হতে পারে।
মানুষ হিসেবে আমি নিজেও বহুবার এমন অনেক ভুল করেছি, যেখানে আমার খুব কাছের মানুষকে আমি আঘাত করেছি। তবে আমি যখন নিজের ভুল বুঝতে পেরেছি, তখন নির্দ্বিধায় তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছি। নিজের ভুল স্বীকার করেছি। কিন্তু কখনোই এই কাজ করতে গিয়ে নিজেকে তাদের সামনে ছোটো মনে হয়নি,কারণ নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়াটা কোনো লজ্জার বিষয় নয়।
তবে আমার জীবনে সেই সকল মানুষ গুলির সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখার কৃতিত্ব আমি তাদেরকেও দেবো। কারণ আমি যেমন তাদের কাছে নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছি, ঠিক তেমনি তারাও আমার অনুশোচনার মূল্যায়ন করে,আমাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।
আর ঠিক এই কারণেই সম্পর্কগুলো আজও আমার জীবনে অবিচ্ছেদ্য ভাবে রয়ে গেছে। আসলে জীবনের এই সকল ওঠা পড়া গুলো পার করে, যে সম্পর্ক গুলো টিকে থাকে সেগুলো আজীবনের হয়। তাই সেগুলোকে আগলে রাখা আমাদের প্রত্যেকেরই দায়িত্ব।
সম্পর্ক গড়ার জন্য যেমন দুটো মানুষের একে অপরের প্রতি বিশ্বাস, ভালোবাসা, সম্মান, দায়িত্ববোধ, এগুলি প্রয়োজন, ঠিক তেমনি সম্পর্কটাকে আজীবন একই রকম ভাবে বাঁচিয়ে রাখার জন্যও একে অপরের প্রতি ক্ষমাশীল মানসিকতাও রাখতে হবে।
আমরা মানুষ তাই ভুল হওয়াটা খুব স্বাভাবিক, কিন্তু সেই ভুলগুলোকে যদি ক্ষমা করার মতন ক্ষমতা আমাদের না থাকে, তাহলে কিন্তু সম্পর্কে ভাঙ্গন ধরতে বাধ্য।
আর সামান্য ভুল বোঝাবুঝিতে একে অপরকে ক্ষমা না করে, যদি নিজেদের ইগো বাঁচিয়ে রাখতে চাই, তাহলে সম্পর্কটাকে বাঁচানো কোনো ভাবেই সম্ভব নয়। সুতরাং কোন জিনিসটা আমাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তার সিদ্ধান্ত আমাদেরকে নিতে হবে।
হয় ক্ষমাশীল মানসিকতা দিয়ে আমরা আমাদের ভালোবাসার সম্পর্কটাকে বাঁচাতে পারি, অথবা ক্ষমাশীল মানসিকতা ত্যাগ করে, আমরা আমাদের ভিতরকার ইগোকে বাঁচাতে পারি।
আমার মনে হয় এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের প্রত্যেকেরই আরো একটু গভীরভাবে ভাবা উচিত। আজকের পোস্ট আমি এখানেই শেষ করছি। আপনারা ঠিক আমার সাথে কতখানি সহমত পোষণ করেন, সেটা অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে আমাকে জানাবেন।
সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, ভালোবাসায় থাকুন, এই প্রার্থনা রইলো। আজকের দিনটি ভালো কাটুক আপনাদের।
আপনার সম্পূর্ণ পোস্টটি পরে খুব ভালো লাগলো। আসলেই "ক্ষমা"শব্দটি দুটি অক্ষরের হলেও এর অর্থ অনেক বিশাল। জীবনে চলার পথে যেকোনো সময় যে কোন পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। এই সময় দেখা যায় যে কোন মানুষের সঙ্গেই ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। কিন্তু এই ভুল বোঝাবুঝি থেকে হিংসা তৈরী না করে ক্ষমা করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া উচিত।
সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।