"স্মৃতির পাতায় বাসুগাঁও-এর গৌড়ীয় মঠ" (প্রথম পর্ব)

in Incredible Indialast year (edited)
png_20230712_214616_0000_094620.png
"Edited by canva"

Hello,

Everyone,

আশাকরছি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।

আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব একটি গৌড়ীয় মঠে ঘুরতে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা। প্রথমেই জানাই এই মঠটি কলকাতায় নয়, এটি আসামের বাসুগাঁও এর একটি মন্দির।

বেশ কয়েক মাস আগে যেখানে আমরা ঘুরতে গিয়েছিলাম। এটা সেখানকারই একটি মঠ। এতো সুন্দর ভাবে মঠটি সাজানো যে, সেখানে গেলে মন এমনিতেই ভালো হয়ে যায়।

আসলে বাসুগাঁও যে অনেক উন্নত একটি জায়গা, এমনটাও নয়। যেখানে সন্ধ্যার একটু বাদে চারিদিক মোটামুটি শান্ত পরিবেশ হয়ে যায়। কিন্ত ওই জায়গার মধ্যে এত উন্নত একটা মঠ, আমাকে বেশ মুগ্ধ করেছে।

IMG_20230712_213328_093647.jpg
"মঠের প্রবেশ দ্বার"

আপনারা যারা আসামে গিয়ে লেখা আমার পোস্ট গুলো পড়ে থাকেন, তারা সকলেই জানেন যে, আমরা আসামে একটি বিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলাম। ওখানকার যে কয়েকটি বাঙালি পরিবার রয়েছে, সেখানে তাদের বিয়ের বেশ কিছু আলাদা নিয়ম কানুন আছে।

তাদের মধ্যে একটি নিয়ম হল, বিয়ের আগের দিন সন্ধ্যা বেলায় ছেলের বাড়ি থেকে বরণডালা নিয়ে সকলে মিলে, এই মঠে যায়। সেখানে কিছু নিয়ম পালিত হয় এবং তারপর সেখান থেকে এক কলসি জল ছেলের বাড়িতে এনে রাখা হয়।

যে জল দিয়ে বিয়ের দিন সকালে ছেলেকে স্নান করানো হয়। আমাদের এই দিকে মূলত জলটি আমরা কোনো পুকুর থেকে বা কাছাকাছি কোনো নদী থেকে নিয়ে আসে। কিন্তু ওখানে আশেপাশে নদী থাকলেও, সকলে মিলে এই মঠের ভেতরে থাকা একটি কল থেকেই জল নিয়ে আসে।

IMG_20230712_213351_094001.jpg
"সকলে মিলে প্রবেশ করার সময় তোলা ছবি"

জানিনা এর পেছনে কোনো বিশ্বাস আছে কিনা। কিন্তু ওখানে এই জল আনার সুবাদেই মঠটি রাতের বেলায় দেখার সুযোগ হয়েছিল। কেননা ওখানে আশেপাশে আমরা যখনই ঘুরতে গেছি, সেটা দিনের বেলাতেই গেছি।

রাতের বেলা মঠটি পরিদর্শন করার পর,আমার ব্যক্তিগতভাবে এটা মনে হয়েছে যে মঠটি বোধহয় দিনের বেলায় এতটা সুন্দর লাগতো না। কারণ আলোর মধ্যে মন্দিরের সাজ সজ্জা গুলো আরো অনেক সুন্দর করে ফুটে উঠেছে।

প্রথমত জানাই মন্দিরের পরিবেশ সম্পর্কে। মন্দিরের ভিতরের পরিবেশ ভীষণ শান্ত, ভীষন স্নিগ্ধ। জল আনতে যাওয়ার সময় আমরা রাস্তায় যদিও বা নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলেছি, কিন্তু যখনই আমরা মঠের ভিতরে প্রবেশ করলাম, কেমন একটা নিস্তব্ধতা আমাদের ঘিরে ধরল।

আমার বিশ্বাস ওখানকার পরিবেশ আমাদের নিস্তব্ধ হতে বাধ্য করেছে। হঠাৎ করে কানে ভেসে আসলো ধীরে ধীরে চলা খুব সুন্দর একটি গানের আওয়াজ। ঘুরতে ঘুরতে আবিস্কার করলাম মন্দিরের পাশেই একটি রুম রয়েছে, যেই রুমের ভেতরে একজন ভগবত গীতা পাঠ করছেন এবং তার সামনে বসে রয়েছে বেশ কয়েকজন ভক্ত।

IMG_20230712_213416_094124.jpg
"মঠের ভিতরে মূল মন্দিরের বিগ্ৰহ"

যারা মন দিয়ে ভগবত পাঠ শুনছেন। সেই পাঠেরও যে খুব বেশি আওয়াজ এমনটি নয়। খুব শান্ত,স্নিগ্ধ পরিবেশের মধ্যে আমি এবং মামি ঘুরে ঘুরে পুরো মন্দিরটা দেখলাম এবং দেখার পর যেটা বুঝলাম, গোটা মন্দিরের বিল্ডিং এর দেওয়াল জুড়ে রয়েছে কৃষ্ণের জীবন কাহিনী।

IMG_20230712_213502_094213.jpg
"আমি ও আমার মামী"

এই কাহিনী গুলো কিভাবে দেওয়ালে গায়ে লেখা আছে সেই বিষয়ে আমি আপনাদের পরবর্তী পোস্টে জানাবো। কারন আমি আজকে আপনাদের সাথে মন্দিরের সৌন্দর্য্য সম্পর্কে আলোচনা করলাম।

ছবির মাধ্যমে আপনাদের সাথে আমি এই মঠের সৌন্দর্য্য শেয়ার করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু আমার বিশ্বাস ছবির থেকেও চোখে দেখে উপভোগ করার আনন্দ অনেক বেশি। তবে আমি চেষ্টা করেছিলাম তখন মঠের সৌন্দর্য্য ক্যামেরাবন্দী করার।

IMG_20230712_213622_094310.jpg
"মঠের ভিতরের তুলসী মঞ্চ"

তার কিছুটা আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। বাকিটা পরবর্তী পোস্টে শেয়ার করবো। আপনাদের মঠের ছবি দেখে কেমন লাগলো কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।

সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...
 last year 

আসলে আজকে আপনার পোস্ট ওপেন করার পরে! আমার একটা কথা মনে পড়ে গেল,,,,, আমাদের বাড়ি থেকে অনেকটা দূরেই,,, এই ধরনের একটা মঠ আছে।

আসলে সেখানেও এই ধরনের জিনিস গুলো আছে। আমি একবার গিয়েছিলাম,,, ওখানে অনেক বছর আগে। যেমন পাঁচ থেকে ছয় বছর আগে গিয়েছিলাম দেখার জন্য,, আসলে অসম্ভব সুন্দর ওই জায়গাটা।

আপনি মঠে ঘুরতে গিয়েছেন,,, সেই ফটোগ্রাফি এবং তার বিবরণ আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন ।আসলে আপনাদের ওখানকার জায়গাটা অনেকটা সুন্দর।

আপনার মঠে ঘুরতে যাওয়ার পরবর্তী পর্ব দেখার জন্য অপেক্ষায় রইলাম। আশাকরি করি তাড়াতাড়ি পেয়ে যাব,,, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল! ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.17
TRX 0.15
JST 0.028
BTC 60181.17
ETH 2419.82
USDT 1.00
SBD 2.44