অনেকদিন বাদে কাটানো আমার ও পিকলুর কিছু ভালো মুহুর্তের গল্প
Hello,
Everyone,
আশা করি আপনারা সকলে ভালো আছেন এবং আপনাদের সকলের দিনটি খুব ভালোভাবে কেটেছে।
আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার কিছু ভালো লাগার মুহূর্তের কথা শেয়ার করব। আসলে গত কয়েকদিন যাবৎ আমি বাবার শারীরিক অসুস্থতা, ঠাকুমার অসুস্থতা এবং পরে তার চলে যাওয়ার কারণে এত ব্যস্ত ছিলাম যে, পিকলুর সাথে খুব বেশি সময় কাটানো সম্ভব হয়নি।
আর মাঝখানে পিকলুর শরীরটা বেশ খারাপ হয়েছিল,যেই কারণে ওকে বেশি বিরক্ত করতে ইচ্ছে করত না। তবে ডাক্তার দেখানোর পরে যে সকল ওষুধ তিনি দিয়েছিলেন, সেগুলো খাওয়ার পর বর্তমানে ওর শরীর কিছুটা ভালো হয়েছে।
তাই অনেক দিন পরে আমি আর পিকলু আমাদের সেই পুরনো খুনসুটি গুলো আবার শুরু করেছি। আজকে আমার পোস্টের মাধ্যমে তেমনি কিছু মুহূর্ত আমি আপনাদের সকলের সামনে তুলে ধরব।
গত কয়েকদিন যে ধরনের মানসিক কষ্ট পেয়েছি সেগুলো থেকে বেরোনোটা অতটা সহজ না হলেও চেষ্টাটা আমাকে করে যেতেই হবে। আসলে আপনারা অনেকেই জানেন বাচ্চাদের সাথে সময় কাটালে আমাদের মন ভালো হয়ে যায় কিন্তু,যেহেতু আমার বাড়িতে এই মুহূর্তে কোনো বাচ্চা নেই, তাই আমার সমস্ত আদর, সমস্ত ভালোলাগা একপ্রকার পিকলুকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে।
তার থেকেও বড় কথা পিকলুদের মতন প্রাণীরা মানুষের থেকেও আমাদের দুঃখ কষ্ট অনেক বেশি অনুভব করতে পারে। আপনাদের যাদের বাড়িতে পোষ্য , তারা জানেন যে আমাদের মন খারাপ থাকলে সবার আগে পোষ্যরাই বুঝতে পারে।
আমার ক্ষেত্রে এটি প্রায়ই হয়ে থাকে, আমার মন খারাপের সময় আমি শুয়ে থাকলে বা বসে থাকলে পিকলু অবলীলায় এসে চুপচাপ আমার পাশে শুয়ে পড়ে বা বসে পড়ে। আবার যখন আমার মন ভালো থাকে ও বুঝতে পারে এবং ও আমার সাথে খেলা করার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
আপনারা আমার লেখা পুরনো পোস্ট দেখেছেন,তা জানেন আমি পিকলুকে নিয়ে আমার অনেক খারাপ লাগার দিন কাটিয়েছি। আমি পিকলুকে "পিকলু বাবু" বলে সম্বোধন করি, কারণ তার কিছু কিছু কার্যকলাপ সত্যিই বাবুর মতন।
এই যেমন ধরুন তিনি যখন সোফার উপরে বসেন, তিনি বসে কম শুয়ে থাকেন বেশি। কারণ সোফা তার ভীষণ পছন্দের জায়গা। যখনই সে দোতলায় আসে আমার রুমে ঢোকার আগেই সে একবার লাফ দিয়ে সোফায় উঠে পড়ে।
কখনো কখনো মন চাইলে সোফার সামনে রাখা টি টেবিলের উপরে উঠে বসে থাকে। শুধুমাত্র ওর কারনে টেবিল ক্লথ রাখা সম্ভব হয় না, কারণ তার যখন মর্জি হবে টেবিলের উপরে উঠে পায়ের সাহায্য টেবিল ক্লথ নিচে ফেলে দিয়ে টেবিলের উপরে নিজের ইচ্ছামত শুয়ে পড়ে। আমি যতবার টেবিল ক্লথ উপরে সাজিয়ে রাখি, ও ইচ্ছে করে ততবারই সেটা ফেলে দেয়।
আরও মজার বিষয় হচ্ছে,আমি যদি ওর ওপরে মিথ্যে রাগ দেখাই, ও কিন্তু সেটা বুঝতে পারে এবং রাগ দেখানোর পরেও ও দুষ্টুমি করতেই থাকে। কিন্তু ওর কোনো দুষ্টুমির পরে আমি যদি ওকে সত্যি সত্যি বকা দিই, ও বুঝতে পারে এবং আমার বকা শুনে চুপচাপ একটা কোণে গিয়ে শুয়ে পড়ে।
মাঝে মধ্যে আমার ভাবতে অবাক লাগে, আমাদের বাচ্চারা অনেক সময় আমাদের কথা শোনে না, কিন্তু এই প্রাণীগুলো কি অদ্ভুতভাবে আমাদের কথা শোনে।
সত্যি কথা বলতে পিকলু আমার জীবনের অনেকটা জায়গা জুড়ে আছে। আমি আমার জীবনটা পিকলুকে ছাড়া সত্যিই এখন আর কল্পনা করতে পারি না।
আমার সারাদিনের সমস্ত কাজকর্মের মধ্যে পিকলুর সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো ভীষণ প্রিয়। তা ওর সাথে খুনসুটি করা হোক, ওকে খাওয়ানো হোক কিংবা ওকে স্নান করানো হোক।
ও হাজার দুষ্টুমি করার পরেও যখন দুপুরবেলা ঘুমানোর সময় হলে,আমার রুমের দরজাটা খুলে আমার খাটে কিংবা আমার ঘরের মেঝেতে টানটান হয়ে শুয়ে পড়ে এবং শান্তিতে ঘুমিয়ে যায়, তখন একটা অদ্ভুত ভালো লাগা কাজ করে আমার।
মাঝে যে কয়েকদিন আমি বাড়িতে ছিলাম না, সেই কয়েকদিন ও কিন্তু দুপুরবেলায় ঠিকমতো ঘুমাইনি পর্যন্ত। এটাই আসলে সত্যি কারের ভালোবাসা। আমি না থাকাতে ওর এই বাড়িতে ভালো লাগত না, ঠিক যেই ভাবে ও না থাকলে আমার ভালো লাগে না।
যাইহোক আমাদের খুনসুটি মুহূর্ত গুলো আপনাদের কেমন লাগলো নিশ্চয়ই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভরাত্রি।
আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনার পোস্টটি পড়ে যা বুঝতে পারলাম আপনি পিকলুকে অনেক বেশি ভালোবাসেন। এই প্রাণীগুলো কথা বলতে না পারলেও এরা মানুষের মনের অবস্থা বুঝতে পারে। আর এদের সাথে কাটানো সময় গুলো অনেক আনন্দের হয়। এই প্রাণীগুলো কখনোই মানুষের মত বিশ্বাসঘাতকতা করে না। এরা অনেক ভালো বন্ধু হয়ে থাকে। পিকলুর সাথে কাটানো মুহূর্ত আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
বাহ...! আপনি দেখি আপনার টিকলুকে খুবই ভালোবাসেন। আসলে পৌষ্যরা মানুষের থেকে কোন অংশেই বেশি বোঝে না৷ কারন সৃষ্টি কর্তা বলেন মানুষ জ্ঞানী ও ক্ষমতাবান। কিন্তু মানুষ এক বেপরোয়া, তারা বুঝেও না বোঝার ভান করে, ক্ষমতা পেয়েও সেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে।
এখন তাদের থেকে পৌষা পশুরাও অনেক গুনে গুণান্বিত। এবং তারা যতটুকু জানে ও বোঝে সে অনুযায়ী আমল ও করে। ভালো থাকবেন।