স্মৃতির পাতায় মালদায় কাটানো কিছু সুন্দর মুহুর্ত
|
---|
Hello,
Everyone,
আজ ফোনের গ্যালারি ঘাটতে ঘাটতে হঠাৎ করে খুঁজে পেলাম, মালদাতে নিজের জেঠু বাড়িতে ঘুরতে গিয়ে কাটানো কিছু মুহূর্তের ছবি। যতদূর মনে করতে পারি সেই ঘোরার বেশকিছু অভিজ্ঞতা আমি পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম।
তবে আমার জেঠু বাড়ির সাথে আপনাদের পরিচয় করানো হয়নি। প্রথমবার জেঠুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার অনুভূতির কথা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম, কারণ এটাই প্রথমবার ছিলো, যখন আমি, শুভ এবং আমার বোন শ্বেতা, একসাথে কোথাও ঘুরতে গিয়েছিলাম।
|
---|
প্রথমেই বলি আমার জেঠুর বাড়ি প্রপার মালদায় নয়, মালদা থেকে আরো দুটো স্টেশন এগিয়ে, গাজোল নামক স্টেশনে নেমে আমার জ্যেঠুর বাড়িতে যেতে হয়। তবে স্টেশনে নামার পর সেখান থেকে কিভাবে যেতে হবে, সে বিষয়ে ভাবতে হয়নি।
কারণ আমার দাদা ও দাদার ছেলে আমাদেরকে নেওয়ার জন্য তার আগে থেকেই স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলো। দাদার নিজস্ব গাড়ি আছে, তাই আলাদা করে আর কোনো গাড়ির প্রয়োজন পড়েনি। আমরা দাদার গাড়িতে করেই রওনা করেছিলাম জেঠু বাড়ির উদ্দেশ্যে।
|
---|
|
---|
দূরত্বের কারণে ছোটবেলা থেকে বহুবার ইচ্ছে হলেও কখনো যাওয়া হয়ে ওঠেনি। একটা আফসোস আজীবন থাকবে জ্যেঠু জেঠিমা থাকাকালীন জ্যেঠু বাড়িতে যাওয়া হয়ে ওঠেনি কখনো। তবে যে বাড়িতে ওনরা থেকেছেন, আমরা গিয়েও যে সেই ঘর পেয়েছি, এটাই অনেক বেশি আনন্দে।
অনেক পুরনো দিনের ঐ ঘরেই দাদারা তখনও থাকত, কারণ তারা অন্যত্র জমি কিনে, ততদিনে বাড়ি তৈরি করা শুরু করেছিলো। বর্তমানে তারা এই পুরনো বাড়ি ছেড়ে নতুন বাড়িতেই থাকে। তবে সৌভাগ্যবশত আমরা যখন গিয়েছিলাম তখনও নতুন বাড়ি সম্পূর্ণ হয়নি, ফলে এই পুরনো বাড়িতে বেশ কিছু স্মৃতি তৈরি করার সুযোগ হয়েছে।
টিনের বাড়িটির অবস্থা খুব বেশি ভালো না থাকলেও, তার মধ্যে কেন জানিনা অনেক বেশি শান্তি পেয়েছিলাম, হয়তো এরকমই একটি জায়গার কল্পনাই মনে মনে ছোটবেলা থেকে করেছি বলেই। জেঠুর মুখে গল্প শুনে শুনে এই বাড়িটি সম্পর্কে একটা চিত্র মনের মধ্যে তৈরি হয়েছিলো।
|
---|
সম্পূর্ণটা না মিললেও কিয়দাংশ কিন্তু চিত্রটা মিলে গিয়েছিলো সেই সময়। তখন দাদাদের নতুন বাড়ির অর্ধেক প্রায় তৈরি হয়ে গিয়েছিলো, কিন্তু তখনও পর্যন্ত ওরা এই বাড়িতেই থাকতো। তাই সকলে মিলে তিনটে দিন এই বাড়িটাতে অনেক বেশি আনন্দ করেছিলাম।
|
---|
সম্পূর্ণ বাড়িটাকে ঘিরে আছে বিভিন্ন রকমের গাছ। জ্যেঠুর হাতে লাগানো একটা নিম গাছ এত বড় হয়েছে যে, তার ছায়ায় বসেই সারাটা দিন পার হয়ে যেতো। কারণ সেই সময় বেশ গরম পড়েছিলো।
|
---|
আপনারা সকলেই জানেন টিনের ঘর অনেক তাড়াতাড়ি গরম হয়ে যায়। এই কারণে আমরা সকাল সকাল রান্নাবান্না শেষ করে এই গাছের তলাতেই সারাদিন কাটিয়ে দিতাম। কত গল্প, কতো আড্ডায় সময়গুলো কাটিয়েছি।
|
---|
পাশে থাকা পুকুরটিতে যদিও কেউ স্নান করতো না, কিন্তু পুকুরের পারে বসে হাওয়া খেতে খেতে এবং তার পাশাপাশি পুকুরে খেলা করা হাঁস দেখতে মন্দ লাগত না। কখনো কখনো তো এমনও প্ল্যান করতাম, এখান থেকে একটা হাঁস তুলে নিয়ে সেটারই মাংস আমরা খেয়ে নেব কিনা☺।
|
---|
দাদাদের বাড়ির ঠিক পিছন দিকেই একটা মন্দির আছে, মন্দির বলতে সেই অর্থে সুন্দর করে তৈরি করা কোনো মন্দির নয়, বেড়া দিয়ে তৈরি একটা মন্দির। যেখানে বাৎসরিক পুজো করে গ্রামের সকলে মিলে এবং সকলেই বিশ্বাস করে মন্দিরটি বেশ জাগ্রত।
|
---|
বছরে একবার ঐ বাৎসরিক পুজোর সময় মন্দিরের চারপাশটা অনেক সুন্দর করে পরিষ্কার করা হলেও, সারা বছর মোটামুটি চারপাশে গাছপালা থাকে। তবে একটা লাইট আছে যে, লাইটাকে কেউ না কেউ প্রতিদিন সন্ধ্যা বেলায় জ্বালিয়ে দেয়। আবার সকাল বেলাতে বন্ধ করে দেয়। ওটা না থাকলে বোধ হয় দাদাদের পিছন দিকটা সম্পূর্ণই অন্ধকার থাকতো।
ঠাকুমা মারা যাওয়ার পর সেই শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে দাদা বৌদি এবং ওদের ছেলে ধীরাজ এসেছিলো। সেই সময় প্রথম ধীরাজের সাথে আমার পরিচয়। আমি মজা করে দাদাকে বলেছিলাম, - "ধীরাজকে তো আমি ফেসবুকেই বড় হতে দেখলাম দাদা।" কারণ ওর জন্মের পর থেকেই প্রথম ওর সাথে আমাদের সকলের দেখা হয়েছিলো।
তবে যেহেতু বছরখানেকের মধ্যেই আমরা দাদা বাড়িতে গিয়েছিলাম, তাই ও ভালোভাবে মনে রেখেছিল আমাদের। এই কারণে ওর সাথে আর নতুন করে বন্ডিংয়ের প্রয়োজন হয়নি। তবে অদ্ভুতভাবে আমার থেকেও বেশি বন্ডিং হয়ে গেছে ওর পীষুন অর্থাৎ শুভর সাথে। আর তার একটাই কারণ সেটা হল ক্রিকেট।
|
---|
দুজনেই ক্রিকেট পাগল। অত গরমের মধ্যেও একবার সকালে, একবার দুপুরে, একবার বিকেলে, পীষুনের সাথে তার ক্রিকেট খেলা চাই। শুভ ও তেমনি দাঁড়িয়ে পড়তো। আর আমরা সকলে বসে উপভোগ করতাম সেই খেলা।
যদিও অনেক গরম ছিলো, তার পরেও আমরা পরের দিন দাদাদের আশেপাশের বেশ কিছু জায়গা ঘুরে দেখেছিলাম। সেই বিষয়ে সম্পর্কে পরবর্তী পোস্টে আপনাদের সাথে গল্প করবো। আজ এই পর্যন্তই থাক, সকলে ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।
আপনার জেঠুর বাড়ি কাটানো মুহূর্ত পড়ে ভালো লাগল। ফটোগ্রাফি গুলো খুব সুন্দর হয়েছে। আমার গ্রামের পরিবেশ বরাবরই খুব ভালো লাগে। দিদি আপনার Title 'কাটানো 'বানানটা ভুল হয়েছে। আপনি কাঢানো লিখেছেন। দিদি কিছু মনে করবেন না। চোখে পড়ল তাই বললাম।
দিদি ধীরাজের মত আমরা দুই ভাই ও ক্রিকেট খেলার ভক্ত ছিলাম অনেক অনেকদিন পর সেই পুরনো স্মৃতি মনে পড়ে গেল। আমাদের দুই ভাইয়ের বয়স এক বছরে ডিফারেন্স ছোটবেলায় আমরা দুই ভাই তালপাতার ব্যাট বানিয়ে আমাদের উঠানে খুব সকালে খেলা শুরু করতাম। এই ক্রিকেট খেলা নিয়ে দুই ভাই কত মারামারি করেছি সেটা তো আজ লেখা শেষ করা যাবে না।
মালদায় যাওয়া নিয়ে আপনার আরো একটি পোস্ট আমি অনেক আগে পড়েছিলাম বলে মনে হচ্ছে যাইহোক সেটি খেয়াল নাই। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ খুব সুন্দর অনুভূতিগুলো আমাদের মাঝে উপস্থাপনা করার জন্য।
স্মৃতি স্মৃতি আমাদের জীবনে অনেক আছে এই স্মৃতিগুলো জড়িয়ে থাকে নিজেদের মানুষের সাথে এবং এখন আরো অনেক সুবিধা নিজের মোবাইলে অনেক ছবি ধারণ করা আছে যে ছবিগুলো দেখে আমাদের সেই সুন্দর দিনের কথা মনে পড়ে যায় ঠিক আপনিও আজ আপনার মোবাইলে ধারণ করা ছিল এই ছবিগুলো আপনার জীবনের স্মৃতি আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন যা আপনি মালদায় কাটানো কিছু সুন্দর মুহূর্ত জেঠুর বাড়ি গিয়ে দেখে অনেক ভালো লাগলো।