"কঠিন পরিস্থিতিতেও আনন্দ ঘন কিছু মুহুর্ত"

in Incredible Indialast month
IMG_20241007_021200.jpg
"জন্মদিনের কিছু আনন্দের মুহুর্ত"

Hello,

Everyone,

গত কয়েকদিন ধরে খুব বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সময় অতিবাহিত হচ্ছে। যে কারণে হয়তো অনেক কাজই সঠিক সময়ে করতে পারছি না। ঠিক যেমন গতকাল রাতে পোস্ট শেষ করতে পারি নি। এমনকি সকালেও সুযোগ হয়নি পোস্ট শেষ করে শেয়ার করার, তাই দুপুর হয়ে গিয়েছিল আজকের পোস্ট শেয়ার করতে করতে।

দুদিন ধরে ননদ আমাদের বাড়িতেই রয়েছে। কারণ শ্বশুর মশাইয়ের শারীরিক অবস্থা দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। জানিনা এই পরিস্থিতি আরও কতটা খারাপ দিকে নিয়ে যাবে। কারণ কঠিন হলেও সত্যি এটাই, ওনার শারীরিক অবস্থা উন্নত হওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই।

প্রথমত ওনার অনেকটা বয়স হয়েছে, আর দ্বিতীয়ত হাই সুগার। আর এই সুগারের কারণেই যুক্ত হয়েছে আনুষঙ্গিক আরও অনেক রোগ। যেগুলোর সঙ্গে লড়াই করার মত শক্তি বর্তমানে ওনার নেই। কিন্তু তবুও আমরা আপনজনকে আগলে রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করি, তাই বলতে পারেন আমরাও সকলে মিলে সেই চেষ্টাই করছি।

IMG_20241005_230418.jpg
IMG_20241005_230410.jpg

যাইহোক এই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলাটা এখন যেন আমার ভাগ্যে লেখা হয়ে গেছে। অন্তত গত দু'বছর ধরে আমি যা যা পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি বা হতে চলেছি, তাতে বর্তমানে এটাই মনে হয়। তবে জীবন মানেই তাতে উঠে পড়া থাকবে। তাই এই খারাপ পরিস্থিতির মধ্যেও কিছু ভালোলাগা হয়তো আমাদেরকে বেঁচে থাকার রসদ যোগায়।

গতকালও সেরকম কিছুটা মুহূর্ত তৈরি হয়েছিল আমার জন্মদিনকে কেন্দ্র করে। সত্যি কথা বলতে মানুষের জীবনের কোনো নিশ্চয়তা নেই। শ্বশুর মশাইয়ের শারীরিক অবস্থা যেমন, তাতে আদেও এর পরের বছর আমার জন্মদিনে উনি আমাদের সাথে থাকবেন কিনা আমরা কেউই জানিনা।

জন্মদিন সেলিব্রেট করার মত মানসিক অবস্থা না থাকলেও, শুধুমাত্র এই কথাটা মাথায় রেখে ননদ কেক নিয়ে এসেছিলো। তার সাথে উপহার হিসেবে একটা কুর্তিও এনেছে।

IMG-20241005-WA0002.jpg

যদিও নতুন জামা পড়া হয়নি। আসলে এই সমস্ত গুলো একটা বয়সের পরে কেমন যেন অতিরঞ্জিত বিষয় মনে হয়। তবে হ্যাঁ সকলের সাথে একটু ভালো মুহূর্ত কাটে, একসাথে ছবি তুলে কিছু মুহুর্ত ক্যামেরাবন্দি করা যায়। সেই গুলোই জীবনে স্মৃতি হয়ে থেকে যায়। শশুর মশাইয়ের শরীর অনেক খারাপ থাকা সত্ত্বেও, শুধুমাত্র ছবি তোলার জন্য ওনাকে কিছুক্ষণের জন্য ওঠানো হয়েছিলো।

IMG_20241005_230953_015409.jpg

যে কোনো কারোর জন্মদিনের জন্য সবথেকে বেশি অপেক্ষা করে বাড়ির ছোটরা। আর আমাদের পরিবারের সবথেকে ছোট হলো আমার ননদের ছোট ছেলে। তাই কেক কাটার সময় সবথেকে বেশি ওই আগ্রহী থাকে। তাই প্রতি বছর ওকে সাথে নিয়ে তবেই কেক কাটা হয়। ব্যাপারটা ও খুব এনজয় করে। সকলের উপস্থিতিতে কেক কেটে, কিছু ছবি তুললাম। জানিনা পরের বছর ফ্রেমটা একই থাকবে কিনা।

যাইহোক কেক কাটার পর কয়েকটা ছবি তুলেই আমার শশুর মশাইকে শুইয়ে দেওয়া হয়েছিলো। মানুষটা দিন দিন কেমন যেন চুপচাপ হয়ে যাচ্ছে। আগে এই সকল সেলিব্রেশনে অনেক সব থেকে বেশি আনন্দ করতেন। ওনাকে দেখলে মাঝে মধ্যেই মনে হয় বার্ধক্য আমাদের সকলেরই ভবিষ্যৎ।

IMG_20241005_231000_015521.jpg

এই বছর জন্মদিন যেমন ভাবে কাটাবো ভেবেছিলাম হয়তো তেমনটা কাটানো হলো না। তবে এমনও হতে পারে এবার যতটা ভালো কাটলো, আগামী বছর হয়তো এর থেকেও খারাপ কাটবে।

কারণ অতীত নিয়ে আমরা আফসোস করতে পারি ঠিকই, তবে ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো কিছুই নিশ্চিত করে বলতে পারি না। শুধুমাত্র পরিকল্পনাই করতে পারি। তবে সেগুলো বাস্তবায়িত হওয়া, বা না হওয়া কোনোটাই আমাদের হাতে থাকে না।

IMG-20241005-WA0003.jpg

যাইহোক এই ছিল পরিবারের সকলকে নিয়ে অনেক খারাপ মুহূর্তের মধ্যেও, জন্মদিন পালন করার ছোট্ট কিছু সুন্দর মুহূর্ত, যেগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। সকলে প্রার্থনা করবেন, যাতে আমার শ্বশুরমশাই একটু সুস্থ হয়ে ওঠেন এবং আরও অনেকগুলো বছর আমাদের মাঝে তিনি থাকতে পারেন। কারণ মাথার উপর বট গাছের ছায়ার প্রয়োজনীয়তা আমাদের আজীবনের। তাই সেটা হারাবার ভয় আজকাল সর্বক্ষণ ঘিরে থাকে চারপাশে।

বাবা মায়েরা সবসময় বলেন, সন্তানরা তাদের কাছে সারা জীবন ছোট থাকে। তবে সন্তান হিসেবে হয়তো কখনোই বাবা-মাকে কথাটা বলা হয়ে ওঠে না, আমরা আজীবন তোমাদের কাছে ছোট হয়ে থাকতে চাই। তবে পরিস্থিতি ও বাস্তবতা আমাদেরকে কখন বড় করে তোলে, হয়তো নিজেরাও বুঝতে পারি না।

তবে যদি বাবা মাকে হারানোর সময় আসে, তখন নিজেদেরকে ছোট ভাবতেই ভালো লাগে। তখন মনে হয় মাথার উপরে বটগাছটা থেকে যাক আরো অনেকগুলো বছর। কারণ আমাদের এখনো বড় হওয়া বাকি।

আপনাদের মধ্যে কার কার এরকমটা মনে হয়, মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।

Sort:  
 last month 

Be lated happy birthday দিদিভাই। পরিস্থিতি তো সব সময় একই রকম থাকে না। সুখ- দুঃখ, হাসি - কান্না এই সমস্ত কিছু নিয়েই আমাদের জীবন। তাই কখনো কখনো সামাল দিয়েও নিজের বিশেষ দিনটি উপভোগ করতে হয় ।

২০১০ সালে আমার বাবা মারা যান। বাবার চলে যাওয়াটা সত্যিই আমাদের পরিবারের জন্য খুবই মর্মান্তিক ছিল। আর তার চেয়েও দুঃখের বিষয় হলো আমার জন্মদিনের ঠিক পরের দিনই আমার বাবা স্বর্গগত হন। আজও জন্মদিন এলে বাবার শূন্যতা মনে প্রাণে উপলব্ধি করতে পারি।

Congratulations! - Your post has been upvoted through steemcurator06
1000152362.jpg

Curated by : @bonaventure24 - Selective Team

 last month 

Thank you for your support @lirvic ma'am. 🙏

Loading...
 last month 

সুখ দুঃখের সাথে প্রতিটা দিন আমাদের যুদ্ধ করতে হয় । আমরা জানি যে আপনার শ্বশুরমশাই খুবই অসুস্থ বাড়িতে একটি মানুষ অসুস্থ থাকলে বাড়ির সমস্ত আনন্দ যেন শেষ হয়ে যায় । তবুও তো আমাদের বেঁচে থাকতে হবে আনন্দ ও দুঃখের মধ্য দিয়ে। আপনার শশুরের শরীলের অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে কখন কি হয় সেটা বলতে পারছেন না তবে দোয়া করি যেন তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন । জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই শুভ জন্মদিন। দিদি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আনন্দময় কিছু মুহূর্ত আমাদের কাছে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।

My best wishes to the little kid. These are happy moments and we shouldn't miss it. Happy family 💐

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.17
JST 0.031
BTC 87962.02
ETH 3341.45
USDT 1.00
SBD 2.89