"প্রথমবার মালদা ভ্রমনের অভিজ্ঞতা"

in Incredible India11 months ago
IMG_20230730_185154.jpg
"বাড়ি থেকে বেড়িয়ে দত্তপুকুর স্টেশনে আমি ও আমার বোন"

Hello,

Everyone,

আজ বেশ কিছুটা দেরিতেই আমি আমার পোস্ট লিখতে শুরু করলাম। আশা করছি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের দিনটাই অনেক সুন্দর কেটেছে।

আমি এখন মালদায় আমার জ্যেঠুর বাড়িতে বসে আপনাদের সাথে পোস্ট শেয়ার করছি। যদিও জ্যেঠু জ্যেঠিমা এখন আর কেউ বেঁচে নেই। তবে দাদা বৌদি এবং তাদের একটি ছোট ছেলে রয়েছে, তাদের সাথেই বেশ কিছুটা সময় কাটানোর জন্য, আমি,শুভ এবং আমার বোন মিলে মালদায় এসেছি।

আপনাদের সাথে আগেই শেয়ার করেছিলাম যে, টিকিট কনফর্ম ছিল না,যে কারণে আসা হবে কিনা সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। অবশেষে সমস্ত কিছু কাটিয়ে আমরা শুক্রবার রাতের ট্রেনে রওনা দিলাম। আজকের পোস্টের মাধ্যমে আমি আপনাদের সাথে আমার সেই জার্নির গল্পই শেয়ার করতে চলেছি।

শুক্রবার আমার বোন সন্ধ্যার মধ্যে আমাদের বাড়িতে চলে এসেছিল। সেখান থেকে আমরা তিনজন একসাথে রওনা দেব এরকমটাই ঠিক ছিল। কারণ আমাদের রাতে ট্রেন ছিল। দশটা কুড়ি মিনিটে ট্রেনটি শিয়ালদা স্টেশন থেকে ছাড়বে, এর জন্য আমরা একটু আগে বেরোলাম।

কারণ বাড়ি থেকে শিয়ালদা স্টেশনে পৌঁছাতে মোটামুটি এক ঘন্টা দশ মিনিট মতো সময় লাগবে। তারপর আবার স্টেশনে পৌঁছে নিজেদের সিট খোঁজারও ব্যাপার রয়েছে, সেই জন্য বেশ কিছুটা সময় হাতে নিয়েই আমরা বাড়ি থেকে বের হলাম।

শিয়ালদা স্টেশনে নেমেই দেখি ট্রেনের অ্যানাউন্সমেন্ট হয়ে গেছে। ১৪ নং প্লাটফর্ম থেকে আমাদের ট্রেন অর্থাৎ গৌড় এক্সপ্রেস ছাড়বে। তাই আমরা তিনজনে মিলে ১৪ নম্বর প্লাটফর্মের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। প্ল্যাটফর্মের ভিড় দেখে আমরা অবাক।

বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর আমাদের ট্রেন স্টেশনে দিয়ে দিল। দুঃখের বিষয় আমাদের সিট একদম শেষের দিকে ছিল। সুতরাং বেশ অনেকটা জায়গা হেঁটে, তবে আমাদের বগি পর্যন্ত পৌঁছাতে হয়েছিল। অবশেষে আমরা আমাদের সিট পেলাম।

সেখানে নিজেদের লাগেজ ঢুকিয়ে দিয়ে, ট্রেন ছাড়ার জন্য অপেক্ষা করলাম। একদম কারেক্ট টাইমে ট্রেন স্টেশন থেকে ছেড়ে দিল। এই রকম দূরের পথে যাওয়ার জন্য যখনি ট্রেন ছাড়ে, কেন জানিনা আমার মনটা অজানা কারণে কিছুক্ষণের জন্য খারাপ হয়ে যায়।

IMG_20230730_185217.jpg
"তখন ট্রেন চলতে শুরু করেছে"

যাইহোক, দু একটা স্টেশন দাঁড়ানোর পরে ট্রেনটা অনেক স্পিডে চলতে শুরু করল। কারণ মাঝখানের প্ল্যাটফর্ম গুলিতে ট্রেন দাঁড়ায় না। শুধু বিশেষ কয়েকটি প্লাটফর্মে ট্রেন দাঁড়ায়। ট্রেন চলতে শুরু করলে আমরা তিনজন বসে বেশ কিছুক্ষণ গল্প করলাম।

কারণ আমি এই প্রথমবার আমার জ্যেঠু বাড়িতে যাচ্ছি, তাই নতুন জায়গা বা নতুন পরিবেশ দেখার জন্য একটা অন্যরকম আনন্দ নিজের ভেতরে কাজ করছিল। এখানে এসে আমরা কি করব, কি না করব এইসব বিষয় নিয়ে, অনেক কিছু প্ল্যানিং করছিলাম। দেখতে দেখতে ট্রেন নৈহাটি, ব্যান্ডেল স্টেশন ক্রস করলো।

IMG_20230730_185246.jpg
"ব্যান্ডেল স্টেশনে ঢোকার মুহুর্তে তোলা ছবি "
IMG_20230730_185421.jpg
"ব্যান্ডেল প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে আসার সময়"

ব্যান্ডেলে অনেকক্ষণ ট্রেন দাঁড়িয়ে ছিল। হয়তো পরবর্তী স্টেশনের সিগনালে কোন প্রবলেম হচ্ছিল, সেই কারণে ব্যান্ডেল স্টেশনটা দেখে আমার ইউনিভারসিটির দিনগুলো মনে পড়ছিল। যখন বর্ধমানে আসতাম তখন এই ব্যান্ডেল স্টেশনে ওপর দিয়েই বেশিরভাগ সময় যাতায়াত করতে হতো। সেই বিষয়েও শুভর সাথে বেশি কিছু পুরনো দিনের কথা আলোচনা করছিলাম।

এরপর এক এক করে ট্রেনের ভেতরে লাইট অফ হতে শুরু করল। কারণ সকলেরই শোবার সময় হয়ে গেলো। কিন্তু আমাদের তিনজনের তখনও পর্যন্ত ডিনার করা হয়নি। তাই ভাবলাম আমরাও ডিনারটা সেরে নিই। রাতের জন্য শাশুড়ি মা সুজে এবং রুটি করে দিয়েছিলেন।

তার সাথে আমরা কলা ও মিষ্টি কিনেছিলাম। সব কিছু মিলিয়ে তিনজনে ডিনার কমপ্লিট করে নিলাম। যদিও ঘুম আসছিল না, কিন্তু যেহেতু সকলে লাইট অফ করে দিয়েছিল। তাই আমরা নিজেরাই একটু নিজেদের মতো করে মোবাইল দেখছিলাম।

যেহেতু শুভ সেদিন অফিস থেকে এসেছিল, তাই একটু পরেই ওর ঘুম পাচ্ছিল। সেই কারণে ও একটু শুয়ে পড়ল। আমি তখনও পর্যন্ত জেগে ছিলাম। আসলে শান্তিনিকেতন প্লাটফর্মটি আসার জন্য আমি অপেক্ষা করছিলাম। ট্রেন টাইম অনুযায়ী শান্তিনিকেতন পৌছাতে রাত প্রায় আড়াইটা বাজবে, তাই ভেবেছিলাম শান্তিনিকেতন প্ল্যাটফর্মটা দেখে আমিও কিছুটা বিশ্রাম করবো।

IMG_20230730_185352.jpg
"ব্যান্ডেল প্ল্যাটফর্মের ক্যাটেরিং সার্ভিস "

কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা যখন শান্তিনিকেতন প্লাটফর্মে পৌছালাম, তখন আমাদের জানলার দিকটাতে বড় একটা মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল, যার ফলে আমি প্ল্যাটফর্মটা সঠিকভাবে দেখতেই পারি না। এরপর আমিও কিছুক্ষণের জন্য শুয়ে পড়লাম। যদিও ঘুম হয়নি কিন্তু কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে, আমি আবার সাড়ে চারটা নাগাদ উঠে পড়লাম।

এরপর আমরা কি কি দেখলাম, সেগুলো আমি আমার পরবর্তী পর্বে আপনাদের সাথে শেয়ার করব। কারণ আগেই আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম যে, এখানে আসার এবং থাকার বিষয়ে আমার অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।

এই পর্বের জার্নি আপনাদের কেমন লাগলো, নিশ্চয়ই কমেন্ট করে জানাবেন। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করবেন, এই পর্বে আমার লেখা আমি এখানেই শেষ করলাম। ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...
 11 months ago 

আপনি মালদায় জেঠুর বাড়িতে বেড়াতে যাবেন! এই বিষয়টা আমাদের সাথে আগেও শেয়ার করেছেন! যাইহোক তারপরে আপনারা ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করেছেন,,,, অবশেষে ট্রেন আসলে এবং আপনাদের উদ্দেশ্য সফল হলো।

আপনার বোন এবং আপনি মিলে অনেক বেশি মজা করেছেন। যেটা জানতে পেরে অনেক বেশি ভালো লাগলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মালদা ঘুরতে যাওয়ার বিষয়টা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।

 11 months ago (edited)

আপনি প্রথমবার মালদাতে আপনার জেঠুর বাড়িতে বেড়াতে গেছেন জেনে ভালো লাগলো ।আসলে প্রতিটা মানুষের কাজের মাঝে থেকে কিছুটা সময় বের ঘুরে বেড়ানো উচিত। এতে করে মন ভালো থাকে।আপনার লেখা পড়তে পড়তে স্টেশনগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছিলো। মনে হচ্ছিল যে আমিই যাচ্ছি।যাই হোক আপনাদের মালদাতে থাকার দিনগুলো সুন্দর হোক। সবাই মিলে ভালো আর সুস্থথাকুন এ ইশুভকামনা রইলো আপনার জন্য

Coin Marketplace

STEEM 0.19
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 61865.17
ETH 3411.12
USDT 1.00
SBD 2.48