"একান্তে উপভোগ করা কিছু মুহুর্তের গল্প"
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
আশেপাশের সব দালান বাড়ির মাঝখান থেকে এক টুকরো আকাশ দেখার সৌভাগ্য হয় উপরের ঘরে এলে। বেডরুমের জালনার সামনে দাঁড়ালে, কখনো রৌদ্রজ্জ্বল আকাশের দেখা মেলে, আবার কখনো দেখা মেলে মেঘলা আকাশের। যদিও মেঘলা আকাশই আমাকে বেশি আকর্ষিত করে।
![]() |
---|
রবিবার তাই সব কাজেই দেরি। এই কিছুক্ষণ আগে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে উপরের ঘরের জানালায় এসে বসলাম। তার একটাই কারণ আবহাওয়াটা একটু উপভোগ করবো।
![]() |
---|
বাড়ির সকলেই খাওয়া দাওয়া শেষ করে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য শুয়ে পড়েছে। বিশ্রামের প্রয়োজন আমারও ছিলো, কিন্তু শুতে মন চাইল না। এছাড়া কমিউনিটির কাজও করবো, তাই ভাবলাম উপরের ঘরে গিয়েই বসি।
ইতিমধ্যে আশা করি প্রত্যেকেই ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে জেনেছেন। যার অভ্যাস আজ সকাল থেকেই কমবেশি পাচ্ছিলাম। তবে দুপুর গড়াতেই যেন আরো বেশি তীব্রতা শুরু হলো। কারেন্টের দেখা পাইনি সেই সকাল থেকে। ঘুম থেকে উঠার পর একটু হাওয়া হওয়ার পরে খবর পেলাম, রাস্তায় তার ছিড়ে পড়েছে। তখন কারেন্ট গেছে এখনো আসেনি। তবে নেটওয়ার্ক এখনো আছে তাই পোস্ট ভেরিফাই করে, ভাবলাম নিজের পোস্ট লিখতে বসি।
![]() |
---|
আমাদের বাড়ির আশেপাশে তেমন কোনো বড় গাছ না থাকলেও, পিছনের দিকে ছাদে আমরা আমাদের ছোট্ট ছাদ বাগান তৈরি করেছি। যেখানে শাশুড়ি মায়ের যত্নে গাছগুলো মোটামুটি বেড়ে উঠেছে ভালোই। জানালা ছাড়াও এই ছাদ বাগানে দাঁড়ালে আকাশের বেশ কিছু অংশ দেখতে পাই। বলতে পারেন, এটাই আমার ভালোলাগার একটা জায়গা।
আর বৃষ্টির পরে এই ছাদবাগানের সৌন্দর্য্য অনেক বৃদ্ধি পায়। গাছগুলো যেন নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়। জানালার কাছে বসে বাইরের আবহাওয়া উপভোগ করছি, তাই ভাবলাম আপনাদের আমার দেখা বর্তমান মুহূর্তগুলোই শেয়ার করি।
সকাল থেকে হাওয়া বৃষ্টি হয়নি তেমন, তবে এখন টুপটাপ বৃষ্টি পরতে শুরু করেছে। বেলা যত বাড়ছে ততই যেন অন্ধকার নেমে আসতে চারিদিক থেকে, তার সাথে বেড়ে চলছে ঘূর্ণিঝড়ের দাপট।
![]() |
---|
এই হওয়ার দাপট সামলাতে না পেরে ইতোমধ্যে ছাদে লাগানো একটি পাকা বাহার গাছ উল্টে পড়েছে। গাছটি অনেক দিন আগেই লাগানো। মাঝে দু তিনবার ওর টব পাল্টানো হয়েছে তবে গাছটি আজও বেঁচে আছে।
![]() |
---|
একটা লেবু গাছ এবং একটি ফুল গাছ প্রায় অর্ধ কাত অবস্থায় রয়েছে। লম্বা হওয়ার কারনে হাওয়া বেশি লেগেছে বোধহয় এই কারনেই কাত হয়ে গেছে। আমার পক্ষে ওদেরকে সোজা করা সম্ভব নয় বলে, এভাবেই থাকতে দিলাম।
![]() |
---|
কয়েকদিন আগে আপনাদের সাথে আমার শাশুড়ি মায়ের হাতে লাগানো একটি পু্ঁই চারা লাগিয়েছেন ছিলাম। আজ দেখুন গাছটা বৃষ্টিতে ভিজে সুন্দর দেখতে লাগছে। একটা কাতার দড়ি শাশুড়ি মা বেঁধে দিয়েছেন, যাতে এই কাতার দড়িটাকে ধরে সাছটি একটু উপরের দিকে উঠতে পারে।
![]() |
---|
এই পাতি লেবু গাছটা আমার শ্বশুর মশায়ের লাগানো। সারা বছর কম বেশি লেবু হয়। এখনো গাছে অনেকগুলো লেবু ধরেছে। ছাদে লাগানোর সমস্ত গাছের মধ্যে এই গাছটাই সবথেকে পুরানো। শশুর মশাই অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর থেকে এদের সম্পূর্ণ যত্ন আমার শাশুড়ি নিয়ে থাকেন।
![]() |
---|
![]() |
---|
পাতি লেবু গাছ ছাড়াও, ছাদ বাগানে যোগ হয়েছে আর একটি লেবু গাছ। এটি নাকি কাগজি লেবুগাছ। যেটি এনে লাগানো হয়েছে বেশ কিছুদিন হলো, একেবারে পাতা ঝরে যাওয়া গাছটি থেকে আবার নতুন পাতা গজিয়েছে। আর আজ বৃষ্টির পর গাছটি যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
![]() |
---|
স্থলপদ্ম গাছ আমার বরাবরের খুব পছন্দের। আমাদের পাশে বাড়িতে একটি গাছ আছে, যেখানে অনেক সময় ফুল এনে পুজো দেওয়া হয়। তবে অনেক দিনের শখ ছিল নিজেদের ছাদবাগানে একটি গাছ লাগানোর। এই শখটাও শাশুড়ি পূরণ করেছেন।
![]() |
---|
লেবু গাছের পরে সব থেকে পুরনো গাছ হল আমাদের এই জবা ফুলগাছ। বেশ ভালোই ফুল ফটো এখনোও। এই ফুলগুলো দিয়ে মোটামুটি নিত্য দিনের পূজো হয়ে যায়। এছাড়াও বাড়ির পিছন দিকে দুটো সাদা ফুল গাছ আছে সেখানকার ফুল তুলে আনা হয় প্রতিদিন।
![]() |
---|
জবা ফুলের গা ঘেঁষে রাখা হয়েছে বেল ফুলের গাছটি। যেটা একদম ঘরের দরজার সামনে রেখেছি। রাতের বেলায় এই বেল ফুলের গন্ধ সারা ঘরে ছড়িয়ে পডলে, সে এক অন্যরকম ভালো লাগা। রাতের দিকে দরজা খুললেই ফুলগাছটা ফুলে সাদা হয়ে থাকে, আর তার সাথে ভেসে আসে সুগন্ধ। অবশ্য ফুল ফোটা শেষ হয়ে গেলে, এই টবটাকে আবার ছাদের অন্যদিকে রেখে দেওয়া হয়।
![]() |
---|
টাইম ফুল গাছের জন্য বৃষ্টির থেকেও রোদ্দুর বেশি ভালো
তাই রোদ উঠলেই ফুলগুলি খুব সুন্দরভাবে ফুটে ওঠে, তবে বৃষ্টিতে ফুটন্ত ফুল গুলো কেমন যেন নষ্ট হয়ে যায়।
![]() |
---|
ফুল গাছটার নাম আমার জানা নেই তবে ফুলের রং গুলো বেশ সুন্দর। একটু পুরনো হয়ে গেলে এই রংটা কেমন যেন পরিবর্তন হয়ে যায়। বৃষ্টি পেয়ে এই গাছটি যেন সতেজ হয়ে উঠেছে।
![]() |
---|
এইতো গেলো আমার ছাদ বাগানের গল্প। পাশের বাড়ির একটি আম গাছ আমাদের ছাদ থেকে দেখা যায়। আমের ফলন এ বছর কম হলেও, কিভাবে যেন এই গাছটাতে কয়েকটি আম ধরেছে। ফটো তোলার উদ্দেশ্যে একটু জুম করেছি ক্যামেরাটা, যাতে আমগুলোকে আপনাদেরকে দেখাতে পারি। ঝোড়ো হাওয়ায় আমগুলো খুব সুন্দর ভাবে ঝুলছে, জানিনা কতক্ষণ নিজেদেরকে এই ঝড়ের থেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারবে।
![]() |
---|
আর ছাদে দাঁড়িয়ে দেখা যায় দূরের নারকেল গাছ, কলা গাছ ও আরও বিভিন্ন গাছ। যেগুলো হওয়ার সাথে সাথে শুধু এদিক ওদিক নড়তে দেখছি। ঘরে বসে উপভোগ করছি ঘূর্ণিঝড়ের প্রতিক্রিয়া।
তবে এই ঘূর্ণিঝড় কোনো কোনো মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে ইতিমধ্যে। সংবাদ মাধ্যম সচেতন বার্তা দিচ্ছে গতকাল থেকে। আমাদের পঞ্চায়েত থেকেও মাইকিং করে গেছে, যাতে সকলেই সাবধানতা অবলম্বন করে।
সবকিছু মিলিয়ে জানালার পাশে বসে এক অন্য ভালোলাগায় মনটা ভরে উঠলো। গরমের তীব্রতা থেকে মুক্তি পাওয়ার পাশাপাশি, প্রকৃতির এক অপূর্ব সৌন্দর্য্য উপভোগ করার সুযোগ পেলাম আজ। আপনাদের সকলের এই ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে কি অনুভূতি, অবশ্যই মন্তব্যের মাধ্যমে জানাবেন। ভালো থাকবেন।
ঠিকই বলেছেন দিদি ।আমাদের এখানেও কাল থেকে আকাশ বেশ মেঘলা। সারাদিন হাওয়া বইছিল। কিন্তু রাত থেকে প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি আমার বাগানেও কিছু গাছ ভেঙে গেছে। সকাল বেলায় প্রচন্ড পরিমাণে বৃষ্টির কারণে আমার শাশুড়ি মা তো ফুল তুলতেই পারিনি ।কারণ ফুলগুলো সব নষ্ট হয়ে গেছে। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো সত্যি খুব সুন্দর হয়েছে। আপনার পোস্টটি পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো। ভালো থাকবেন।
TEAM 1
Congratulations! This post has been upvoted through steemcurator04. We support quality posts, good comments anywhere, and any tags.
Curated by : @sualeha
যদিও ঘূর্ণিঝড় কোনো কোনো যায়গায় মানুষের জীবন বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে,তবুও দীর্ঘদিন যাবত অত্যাধিক ঘরমের পর একটু মানুষ শান্তি মেলেছে সবার।আমিও আপনার মতো একজন প্রকৃতি প্রেমি মানুষ। আসলেই বৃষ্টিতে গাছপালাগুলো সতেজ হয় আর প্রানের ছন্দ ফিরে পায়।তবে আমাদের এখানেও বারবার বিদ্যুৎ বিভ্রান্ত হচ্ছিল। আমি গতকাল ফোনে চার্জ পর্যন্ত দিতে পারিনি।আপনার কথা শুনে মনে হলো আপনার শাশুড়ী মা আপনাকে অনেক ভালোবাসে।দোয়া করি সম্পর্ক যেন সারাজীবন এমন সুন্দর থাকে।
আমরা ইতিমধ্যে সবাই কমবেশি ঘূর্ণিঝড়ের কথা শুনেছি। বিশেষ করে আমাদের বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের জেলাগুলোতে অবস্থা একেবারেই খারাপ। তবে আমাদের বাসা উত্তরবঙ্গে হওয়ায় তেমন একটা প্রভাব পড়েনি। কিন্তু হালকা ঝড় বাতাস হয়েছে তাতেই আমাদের সারাদিন কারেন্টের দেখা মিলে নি।
যাইহোক, আপনাদের ওদিকে ও দেখি আবহাওয়া খারাপ ছিল। ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের কারণে আপনাদের ছাদের অনেক কয়েকটা গাছ ঢেলে পড়ে গেছে। আপনাদের ছাদে লাগানো অনেকগুলো গাছের ছবি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।
এই ঘূর্ণিঝড় অবস্থায় আপনি এবং পরিবারের সবাই সব সময় সতর্ক থাকবেন।
সারাদিনের মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ঝড় হওয়ার আগে থেকেই আভাস পাওয়া যায় প্রচন্ড বাতাস শুরু হয়ে গিয়েছিল। আমাদের এখানেও ঝিরিঝিরি বৃষ্টি বাতাস। দুপুর হওয়ার পর থেকেই মনে হচ্ছিল এই বুঝি গাছপালা গুলো ভেঙ্গে একেবারেই একাকার হয়ে যাবে। আমার চাচাতো বোনের ফুল বাগানের অবস্থা খুবই খারাপ। কিছু গাছ একেবারে উল্টে পড়ে গেছে, আবার কিছু গাছ মোটামুটি ঠিকঠাক আছে।
ছাদ বাগান এবং আপনার একান্তে কাটানো কিছু সময় আপনি খুব সুন্দর ভাবে আমাদের সাথে উপস্থাপন করেছেন। বৃষ্টির পরে গাছের উপর জমে থাকা বৃষ্টির ফোঁটা গুলো দেখতে, অন্যরকম এক ভালো লাগা কাজ করে। ধন্যবাদ আপনাকে একান্তে কাটানো সময়ের কিছুটা মুহূর্ত, আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।