রবিবারের স্পেশাল রান্না - চিকেন কষার রেসিপি
Edited by canva |
---|
Hello,
Everyone,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের প্রত্যেকের আজকের দিনটি বেশি ভালো কেটেছে।
আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব, রবিবার দিন বাড়িতে রান্না করা চিকেনের একটি নতুন রেসিপি। গত কয়েকদিন ধরে আমার বেশ ঠান্ডা লেগেছে। তাই কোনো কিছুর স্বাদই পাচ্ছি না। তাই ভাবলাম একটু ঝাল ঝাল করে চিকেন রান্না করি, হয়তো খেতে ভালো লাগবে।
রান্না করার পর যদিও আমার মুখে স্বাদ লাগেনি। তবে আমার শ্বশুরমশাই ও শুভ খেয়ে বলেছিল বেশ ভালো হয়েছে। চলুন রান্নাটি করতে আমি কি কি উপকরণ ব্যবহার করেছি প্রথমে আপনাদের সাথে সেটি শেয়ার করি। তারপর ধাপে ধাপে আপনাদের সাথে রেসিপিটিও শেয়ার করব।
চিকেন কষা তৈরি করতে প্রয়োজনীয় উপকরণ"
উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|
১.চিকেন | ৬৫০ গ্ৰাম। |
২.আলু | ২ (বড় সাইজের) |
৩.পেঁয়াজ | ৪ টি (মাঝারি সাইজের) |
৪.টমেটো | ১টি (মাঝারি সাইজের) |
৫.আদা বাটা | ২ চা চামচ |
৬.রসুন বাটা | ২ চা চামচ |
৭.কাঁচা লঙ্কা বাটা | ২ চা চামচ |
৮.হলুদগুঁড়া | ২ চা চামচ |
৯.কাশ্মীর লঙ্কাগুঁড়া | ২চা চামচ |
১০.জিরা গুঁড়া | ১½চা চামচ |
১১.ধনে গুঁড়া | ১চা চামচ |
১২.সরষের তেল | ছোটো এক কাপ |
১৩.লবন | স্বাদ অনুসারে |
১৪.গোলমরিচ গুড়া | ১½ চামচ |
১৫.টক দই | ২চা চামচ |
১৬. কসৌরি মেথি | ১চা চামচ |
১৭.ধনে পাতা কুচি | ½কাপ |
১৯. পাতিলেবু | অর্ধেক |
"চিকেন কষা তৈরি করার পদ্ধতি"
সবার প্রথমে মাংস গুলোকে ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে জল ঝরিয়ে নিতে হবে যাতে, মাংসগুলোর মধ্যে একটুও জল না থাকে। বেশ কিছুক্ষণ জল ঝরানোর পরে মাংস গুলোকে একটি পাত্রে নিয়ে নিতে হবে যাতে সেগুলো ম্যারিনেট করা যায়।
এরপর ওই চিকেনের মধ্যে আমি ১ চা চামচ আদা রসুন বাটা, ½ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো, ১ চা চামচ লবণ , ½ কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো আর ১½ চা চামচ গোলমরিচের গুড়ো দিয়ে ভালোভাবে ম্যাগনেট করে নিলাম। সবশেষে উপর থেকে অর্ধেক পাতি লেবুর রস এবং সামান্য পরিমাণে সর্ষের তেল দিয়ে আবারও ভালো করে মেখে নিয়ে পাত্রটি বেশ কিছুক্ষণের জন্য ঢাকা দিয়ে রাখলাম।
অন্যদিকে আলু গুলো টুকরো করে কেটে ধুয়ে নিলাম। পেঁয়াজ গুলো ভালো করে কুচি করে নিলাম এবং একটা টমেটোকে গ্রেটারের সাহায্যে ভালো করে গ্রেট করে নিলাম। আপনারা চাইলে টমেটটি বেটেও নিতে পারেন।
এরপর গ্যাস জ্বালিয়ে কড়াই গরম করে, তার মধ্যে সর্ষের তেল দিয়ে দিলাম। তারপর আমি আলুগুলো লবন দিয়ে ভেজে নিলাম। তারপর আলুগুলো তুলে রেখে ঐ তেলের মধ্যে আমি তেজপাতা, লবঙ্গ, দারচিনি এবং এলাচ ফোড়ন দিলাম। কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে আমি তার মধ্যে কুচিয়ে রাখা পেঁয়াজ দিয়ে দিলাম। পেঁয়াজগুলো লাল হওয়া পর্যন্ত আমাকে ভাজলাম।
যখনই পেঁয়াজের কালার একটু চেঞ্জ হয়ে গেলো, আমি তার মধ্যে আমি ২ চা চামচ কাঁচালঙ্কা বাটা ও ১½ চা চামচের মতো আদা রসুনের পেস্ট দিয়ে দিলাম। এক্ষেত্রে আদা রসুন একটু কম দিয়েছিলাম, কারণ ম্যারিনেট করার সময় আমি তার মধ্যে আদা রসুনের পেস্ট ব্যবহার
করেছি।
এরপর সব মশলাগুলোকে ভালোভাবে কষিয়ে নিতে হবে। কিছুক্ষণ বাদে আমি তার মধ্যে আগে থেকে গ্রেট করে রাখা টমেটো দিয়ে দিলাম। বেশ কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করার পর আমি তার মধ্যে গুঁড়ো মশলাগুলো এক এক করে দিয়েদিলাম।
গুঁড়ো মশলার মধ্যে আমি ব্যবহার করেছি ১ চা চামচ ধনে গুঁড়ো, ১ চা চামচ জিরেগুঁড়ো, ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো। তারপর সামান্য জল দিয়ে মশলাগুলোকে ভালোভাবে কষে নিলাম।
এরপর আমি আগে থেকে ম্যারিনেট করে রাখা মাংসগুলো দিয়ে দিলাম। আমি মশলার মধ্যে আর আলাদাভাবে গোলমরিচের গুঁড়ো ব্যবহার করিনি। কারণ ম্যাগনেট করার সময় আমি অনেকটাই গোলমরিচের গুঁড়ো ব্যবহার করেছিলাম।
মাংসগুলো দিয়ে ভালোভাবে মশলার সাথে মিশিয়ে নেওয়ার পরে, আমি দু চামচ টক দই ভালো করে ফেটিয়ে মাংসের মধ্যে দিয়ে দিলাম। যাতে মাংসের রংটা আরো বেশি আকর্ষণীয় হয় এবং গ্রেভির টেস্টটাও সুন্দর হয়।
এরপর আমি আগে থেকে ভেজে রাখা আলু গুলো দিয়ে দিলাম। আসলে আলু দেওয়াটা আপনাদের পছন্দ। যারা আলু খেতে পছন্দ না করেন, তারা আলু ব্যবহার নাও করতে পারেন। তবে আমাদের বাড়িতে মাংসের মধ্যে আলু দিলে আমরা সবাই খেতে পছন্দ করি, এই কারণে আলু দেওয়া।
মাংসটা ভালোভাবে কষা হয়ে গেলে, আমি খুব সামান্য পরিমাণে উষ্ণ গরম জল দিলাম। এই মাংসটাতে আসলে গ্রেভিটা অনেকটাই গাঢ় হয়, এই কারণে আমি খুব বেশি জল দেইনি। সামান্য জল দেওয়ার পর ঝোলটা ফুটে উঠলে আমি উপর থেকে কসৌরি মেথি দিয়ে দিলাম।
এটি এই রেসিপি ব্যবহার করতে হবে, তাহলেই চিকেনের আসল স্বাদ পাওয়া যাবে। সবশেষে কড়াই থেকে নামিয়ে আমি উপর থেকে ফ্রেশ ধনেপাতা কুচি করে দিয়ে দিলাম। ধনেপাতাটা অবশ্যই মাংসটা কড়াই থেকে নামানোর পরে দেবেন, না হলে গন্ধটা ভালোভাবে পাওয়া যাবে না।
ব্যাস এই ভাবেই আমি রবিবার দিন চিকেনটা তৈরি করেছিলাম। যেটা দেখতে যত ভালো হয়েছিল, খেতেও ততটাই সুস্বাদু হয়েছিল। শুধু ঠান্ডা লাগার কারণে আমি স্বাদটা ভালো ভাবে পাইনি।
যাইহোক, রেসিপিটি আপনাদের কেমন লাগলো অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। সকলে ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।
দিদি বেশি কিছু বলতে চাচ্ছি না অলরেডি জীবে জল চলে আসছে শেষ পর্যন্ত পড়া ক্ষমতা হলো না।
আপনার এই রন্ধন প্রণালী পড়ে যদি আমার জীবে জল চলে আসে মাশাল্লাহ রান্না যে কত সুস্বাদু হয়েছে তা আমি কিছুটা অনুভব করতে পারছি। সত্যি বলছি আপনার বাসা যদি আমার রুমের পাশে হতো তাহলে দুই পিস খেয়ে আসতাম বিনা দাওয়াতে।
পরবর্তীতে আমি নিজে চেষ্টা করব আপনার মত করে রান্না করার। অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি স্পেশাল রান্না - চিকেন কষার রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
ওহ্ আমি যদি আপনাকে খাওয়াতে পারতাম তাহলে অনেক খুশি হতাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে, এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
দিদি আপনার কথাটা শুনেই মনটা ভরে গেল। 😍
আপনার রান্নার রেসিপিটা দেখেই মনে হচ্ছে এটা খেতে অবশ্যই ভালো লেগেছিল। নিজে কখনো রান্না করলে এই রেসিপিটা অবশ্যই ফলো করব।মুরগী টা কি দেশী ছিল?
অনেক ধন্যবাদ,আপনি আমার রান্না দেখে নিজে রান্না করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন জেনে সত্যিই খুশি হলাম। সম্ভব হলে অবশ্যই এইভাবে একদিন রান্না করবেন, আশাকরি ভালো লাগবে। আমি পোল্ট্রির মুরগি দিয়ে করেছিলাম, তবে আপনি চাইলে দেশী মুরগি দিয়েও এই রেসিপিটি করতে পারেন। ভালো থাকবেন।
আসাধারণ সুন্দর করে প্রতিটি জিনিসের সঠিক পরিমাণ উল্লেখ করে রান্না করেছেন এই চিকেন
কষা রেসিপি টি। স্পেশাল রেসিপি টি স্পেশাল ভাবেই রান্না করেছেন আপনি। খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে।আর খেতে মে বেশ সুস্বাদু হয়েছে তা দেখে ই বুঝতে পারছি। ভালো থাকবেন সবসময়।
হ্যাঁ ম্যাম, খেতে সত্যিই ভালো হয়েছিল। তবে আমার ঠান্ডা লাগার কারনে, আমি স্বাদটা বুঝতে পারিনি। তবে আমার হাজব্যান্ড ও শশুরমশাই খুব ভালো খেয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমার কমেন্টের রিপ্লাই এতো সুন্দর করে গুছিয়ে দেওয়া জন্য। ভালো থাকবেন।