দিন গুনছি পিকলুর সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য
Hello,
Everyone,
আশাকরি সকলে ভালো আছেন এবং আজকের দিনটা প্রত্যেকের খুবই ভালো কাটছে।
আজকে সকাল থেকে অনেক বেশি ব্যস্ত থাকার কারনে লিখতে বসতে বেশ কিছুটা দেরি হয়ে গেলো। আসলে আমরা বাড়িতে যে অশৌচ পালন করছিলাম আজকে সেটা শেষ হলো। তাই একটু কাঁচা ধোয়া করতে হলো। অনেক দিন বাদে আজকে পুজো দিতে বসে ঠাকুরের আসন পরিস্কার করলাম।
বেশ কয়েক দিন পুজো না দেওয়ায়, ঠাকুরের আসনে হাত না পরায় সবকিছুই ধুলোতে নোংরা হয়ে ছিলো। তাই সেই সবকিছু গুছিয়ে পরিস্কার করে পুজো দিতে অনেকটা সময় লেগে গেলো।তারপরে একেবারে লাঞ্চ সেরে লিখতে বসলাম।
অনেক দিন পিকলুর কথা শেয়ার করা হয় না আপনাদের সাথে। আসলে গত কয়েক দিন ধরেই পিকলুকে নিয়ে মনটা বেশ খারাপ। বেশ কয়েকদিন আগে জানিয়েছিলাম যে পিকলুর শরীরটা খুব একটা ভালো নেই। মাঝে ওকে নিয়ে ডক্টর দেখাতেও গিয়েছিলাম।
ডক্টর ওষুধ দিয়েছেন। ওকে যেই শ্যাম্পু দিয়ে স্নান করানো হয় সেটাও পাল্টে দিয়েছেন। পিকলুর গায়ে ছোটো ছোটো দাগ দেখা যাচ্ছে, যেগুলো ও ভীষন চুলকাচ্ছে। আর ওর গায়ে পশম বেশি থাকার কারনে নাকি এই ধরনের ইনফেকশন সারতে সময় লাগবে।
এগুলো পর্যন্তও ঠিক ছিলো। কিন্তু এরপর ডক্টর যেটা বললেন সেটা শুনে কিছুক্ষণের জন্য আমি যেন সবকিছু অন্ধকার দেখছিলাম। পিকলুর একটু শারীরিক সমস্যার কারনে ওর একটা অপরেশন করতে হবে। ওষুধের দ্বারা চিকিৎসা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে ডক্টর নিজেই বললেন- এর একমাত্র চিকিৎসা অপরেশন।
কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর আমি সবটা জানতে চাইলে ডক্টর বললেন, খুব ভয়ের কিছু নেই। অপরেশনটা জরুরি, না হলে পরবর্তীতে পিকলুর স্কিন ক্যান্সার হয়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা আছে।
বিশ্বাস করুন আমার মায়ের মৃত্যুর পর ক্যান্সার শব্দটা শুনলেই আমার মনটা কেমন যেন হাহাকার করে ওঠে। আমি ঐ ডাক্তারের চেম্বারে পিকলুর কোলে নিয়ে দাড়িয়ে শুধু ভাবছিলাম আমার সবথেকে প্রিয় জিনিস গুলো কি এইভাবেই হারিয়ে যাবে।
খুব এমারজেন্সি নয় তাই অতটা তাড়াহুড়ো নেই। আপাতত ইনফেকশন কমানোর ওষুধ খাচ্ছে।ওকে খাবার খাইয়ে, ওষুধ খাইয়ে, মলম লাগানো সবকিছু করতেও অনেক সময় লাগে। যাদের বাড়িতে পোষ্য আছে বা যারা পিকলুর মতো নির্বাক পশুদের ভালোবাসেন তারা নিশ্চয়ই আমার কষ্টটা বুঝতে পারছেন।
বাড়িতে ফেরার পর থেকেই এই বিষয়টা আমার মাথায় রয়ে গেছে। সব কাজের ভিতরেও ওর অপরেশনের চিন্তাটা মাথায় থেকেই যাচ্ছে। অনেক কুকুর ও বিড়াল এই সমস্যার সম্মুখীন হয়।অপরেশন করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঠিক হয়ে যায়।
পিকলু এমনিতেই ভীষন শান্ত স্বভাবের। আর আমাদের বাড়িতে ও সবথেকে বেশি আমাকে ভালোবাসে। আমি যখন ওর গায়ে মলম দিতে যাই ও আমাকে পর্যন্ত কামড়াতে আসে। তাতেই বোঝা যায় ও ঠিক কতটা ব্যাথা পেলে তবে আমাকে কামড়াতে আসে। খুব কষ্ট পাচ্ছে ও। আর প্রতিদিন ওকে কষ্ট দিতে আমার আরও বেশি কষ্ট হচ্ছে।
আজকে প্রায় ৪-৫ দিন হয়ে গেলো ও ঠিকভাবে খাচ্ছে না। ডক্টর বলেছেন খুব বেশি হলে ৬ মাসের মধ্যে অপরেশন করিয়ে নিতে হবে। কিন্তু বাড়িতে এসে শুভর সাথে আলোচনা করে আমরা ঠিক করেছি ডিসেম্বর মাসেই অপরেশন করিয়ে নেবো। শীতকালে অপরেশন করা ভালো, গরমে ব্যান্ডেজ বাঁধা থাকলে ওর বেশি কষ্ট হবে। এমনিতেই গরম সহ্য করতে পারে না ও। আর শীতকালে সেলাইও তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যাবে।
আমি সত্যিই জানিনা কেন আমার এতো ভয় করছে। অপরেশন করার দিনের কথা ভেবেই আমার ভয় লাগছে। কিন্তু এটাও ঠিক ভয় পেলে চলবে না। আমাকে তো সাহস রাখতেই হবে,পিকলুকে ভালো করতেই হবে। পিকলুকে ছাড়া থাকার কথা আমি ভাবতেও পারিনা।
আপনারাও একটু পিকলুর জন্য প্রার্থনা করবেন ও যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে। সকলে ভালো থাকবেন।
তোমার পিকলু নিশ্চয়ই খুব তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে যাবে, চিন্তা করো না।
অনেক ধন্যবাদ দিদি আপনু মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।
আপনার পিকলু খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুক এই কামনা করি, ভাষায় হয়তো আমাদের মত করে এরা নিজেদের কষ্ট বোঝাতে পারে না, কিন্তু এদের শারিরীক ভঙ্গিমা বুঝিয়ে দেয় এদের কষ্ট।
সত্যিই তাই। কথা না বলতে পারলেও মানুষের থেকেও ভালো ভাবে সবটা বুঝিয়ে দিতে পারে এরা।
অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্টে পড়ে ❤️❤️ দোয়া রইল আপনার পিকলুর জন্য
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর মন্তব্যের জন্য। ভালো থাকবেন।
@sampabiswas চিন্তা করিস না রে দিদি। চিকলু ভালো হয়ে যাবে।