"অপেক্ষার দ্বিতীয় দিন,কঠিন সময় সহজে পার হতে চায় না"
"সময় যেন কিছুতেই কাটছে না" |
---|
আরো একটা রাত পার করলাম না ঘুমিয়ে। আজকে নিয়ে তিনি রাত দুচোখের পাতা এক করিনি। লেখার শুরুতেই যদি আপনাদের ভালো খবর দিতে পারতাম, তাহলে সত্যিই ভালো লাগতো। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেটা দিতে পারছি না।
গতকাল অপারেশনের পরে ডাক্তাররা বলে দিয়েছিলেন যে, ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা আগে সেইভাবে কিছুই বলা যাবে না।কারণ এই সময়টুকু দাদাকে মেডিসিন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হবে, যাতে ব্রেন এবং মাসলস্ গুলো রিলাক্স থাকে।
গতকাল রাতে দিদি বারোটা নাগাদ একবার দাদাকে দেখতে গিয়েছিল, তখন এসে বলে মোটামুটি সব কিছুই ঠিক আছে শুধু অল্প জ্বর আছে। তারপর ও কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলেন। আমি ওর মাথার কাছে বসে রইলাম। সত্যি কথা বলতে হসপিটালে থাকার অভ্যাস একদম নেই তাই, এই পরিবেশে আমি কিছুতেই চোখের পাতায় এক করতে পারছি না।
সকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ দুই বোন ফ্রেশ হয়ে ব্রাশ করলাম। তারপর দিদি ওর থাইরয়েডের মেডিসিন খেলো। তার কিছুক্ষণ পরে দাদাকে দেখে ফিরে এসে জানালো, দাদার টেম্পারেচার এখন অনেকটাই বেশি। তার পাশাপাশি বাম সাইডের চোখ ও নাক বেশ কিছুটা ফুলেছে এবং সেটা কেন হয়েছে এখনো সঠিকভাবে বোঝা যাচ্ছে না। যতক্ষণ মেডিসিনের ডাক্তারের সাথে কথা বলা না হচ্ছে।
দিদি যেহেতু এই প্রফেশনেই আছে, তাই ও হয়তো বেশ কিছু জিনিস বুঝতে পারছে, যেগুলো আমি বুঝতে পারছি না। কিন্তু ও আমাকে পরিষ্কার ভাবে কিছু বলছে না। তবে ওকে দেখে কোথাও একটা আমার নিজেরই ভিতরে ভিতরে ভয় লাগছে। তবে ওর হসপিটালের সকলে অনেক বেশি সাপোর্টিভ, কারণ গতকাল শুধুমাত্র দাদার অপরেশন করার জন্য স্পেশাল নিউরো সার্জেন্ট এবং মেশিন আনা হয়েছিল, যাতে দাদার অপারেশন সাকসেসফুলি করা যায়।
এছাড়া সারাদিন রাত ওর যে সকল কলিগদের ডিউটি থাকছে, তারা সব সময় ওর খোঁজ খবর নিচ্ছে। ওর সঙ্গে এসে দেখা করছে। সকাল থেকে আমি বহুবার ওকে বললাম দুটো বিস্কুট খাওয়ার জন্য, কিন্তু খেলো না। এরপর তিনজন কলিগ এসে প্রায় জোর করেই ওকে নিচে নিয়ে গেছে। আমি আর নিচে যাইনি, কারণ এখানে একজনের থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। যাতে কোনো এমারজেন্সি হলে দিদিকে ফোন করে ডাকতে পারি।
"এখানেই কাটছে আমাদের দিনগুলো" |
---|
কাল রাত দেড়টা পর্যন্ত মাত্র চব্বিশ ঘন্টা পার হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৪৮ ঘন্টা পার হতে হবে। এই ২৪ ঘন্টা যেন কিছুতে কাটতে চাইছে না। আরো ৪৮ ঘন্টা এইরকম ভাবে অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। কিন্তু প্রতিদিন যখন দিদি দাদাকে দেখে আসছে, ও একটু একটু করে ভেঙে পড়ছে।
আর ওকে দেখে আমার নিজেরই কেমন একটা অসহায় লাগছে। আসলে কিছু কিছু জিনিস থাকে, যেগুলো আমাদের সকলের হাতের বাইরে, যেগুলো আমরা চাইলেও পরিবর্তন করতে পারি না। তবে এই বাস্তব কথাগুলো শুনতে বা অন্যকে বলতে যতটা সহজ, কিন্তু মেনে নিতে সত্যিই অনেক বেশি কঠিন মনে হয়।
"ধন্যবাদ আমাদের পাশে থাকার জন্য" |
---|
আপনারা সকলে দাদার জন্য অনেক প্রার্থনা করেছেন, তার জন্য আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই। তবে অনুরোধ করবো ততক্ষন প্রার্থনা করবেন যতক্ষণ আমরা এই বিপদ কাটিয়ে উঠতে না পারছি।
আমি চেষ্টা করবো যখনই সুযোগ পাবো, আপনাদেরকে সবটা জানানোর। আমার পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন, সাবধানে থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
অবশ্যই, দিদি। আমাদের ও ভালো লাগবে অপেক্ষার পর একটা ভালো বার্তা শুনতে পেলে। ঈশ্বর আপনাদের সাথে সবসময় আছেন। ধৈর্য্য রাখুন, আর ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখুন।
আমাদের সবার প্রার্থনা আছে আপনাদের সাথে। 🙏🙏🙏
দিদি আপনি একটু না ঘুমালে আপনিও তো অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তাই একটু ঘুমানোর চেষ্টা করুন। আমার কাছে অনেক খারাপ লাগছে আসলে আমি কারোর কষ্ট সইতে পারি না, কেন না জানি অঝরের চোখ দিয়ে পানি আসে। কষ্টের কোন সিনেমা দেখলে চোখ দিয়ে পানি আসে আর এটা তো বাস্তব আর্টিকেলটি অর্ধেক পড়ার পর বাকিটা পড়তে পারি নাই। তবে মন থেকে দোয়া করি যেন আল্লাহ সুবহানাতায়ালা তাকে সুস্থ করে দেন। আপনাদের সকলের জন্য দোয়া রইল আল্লাহ সুবহানাতায়ালা যেন ধৈর্য শক্তি আরও বাড়িয়ে দেন।
দিদি কি বলবো ভাষা খুজে পাচ্ছি না। তবে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছি। তিনি যেন খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠে,,, ভরসা রাখুন ইনশাল্লাহ সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা রাখুন। নিশ্চয়ই সুখবর পাবেন।আর আপনার অপেক্ষার প্রহর ও শেষ হবে। আপনার জন্য অনেক শুভ কামনা করছি।
আল্লাহতালা আমাদেরকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাধ্যমে পরীক্ষা করে থাকে। এই অসুস্থতার সময়ে আপনি তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। আল্লাহতালার কাছে দোয়া করি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক এবং আপনি নিজেকে শক্ত রাখুন। সুস্থতা অনেক বড় একটি নেয়ামত যা অসুস্থ ব্যক্তি অনুভব করতে পারে। যারা সার্বক্ষণিক তার সাথে থাকে সেও বুঝতে পারে যেমনটি আপনি তার পাশে সার্বক্ষণিক রয়েছেন। দোয়া করি সৃষ্টিকর্তা সুস্থ করে দিন।
দিদি মন খারাপ করবেন না। সৃষ্টিকর্তা যা করবেন মংগলের জন্য করেন। এখন শুধু ধৈর্য্য সহকারে প্রার্থনা করতে হবে। আমরা সবাই প্রার্থনা করি দাদা যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠেন।
প্রথমে সৃষ্টিকর্তার কাছে চাইবো আপনার দাদা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। হসপিটালে আমি আমার মাকে নিয়ে এরকম অনেক রাত না ঘুমিয়ে কাটাতে হয়েছিল। আল্লাহ আপনাদের এই কষ্টের সময় দ্রুত আনন্দে পরিনত করুক এই দোয়াই করি।
দাদার কথা জেনে খারাপ লাগলো।প্রার্থনা করি তিনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন।সাথে আপনিও নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন।
প্রথম যখন কমিউনিটির হ্যাংআউটে দাদার খবরটা শুনতে পাই তখন সত্যি মন খারাপ হয়ে গেছিল। দোয়া করি দাদা খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায় । দাদার জন্য যে আপনার অপেক্ষায় ইনশাল্লাহ একদিন সে অপেক্ষা শেষ হবে। দাদা আবার সুস্থ আপনার কাছে চলে আসবে এই দোয়াই করি।