" প্রথমবার বাংলাদেশের লটকন খাওয়ার গল্প "
-: লটকন :- |
---|
Hello,
Everyone,
আশাকরছি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি অনেক ভালো কেটেছে।
আমার দিনটিও ব্যস্ততার মধ্যে মোটামুটি ভালোই কেটেছে। আজকে আমি আপনাদের সাথে একটা নতুন ফল খাওয়ার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করব।
আমি হয়তো এর আগে আপনাদেরকে বহুবার বলেছি যে, মায়ের মুখে বাংলাদেশের গল্প শুনে ছোটবেলা থেকেই বাংলাদেশে যাওয়ার আমার ভীষণ ইচ্ছা। তবে মায়ের মুখে যত গল্প শুনেছি, বিয়ের পর আমার শাশুড়ির মুখে আরো অনেক বেশি গল্প শুনেছি। কারন আমার মা অনেক ছোটবেলায় এদেশে এসেছিলেন, তবে শাশুড়িমা অনেক পরে এসেছেন।
আর এই গল্প শুনে বাংলাদেশ সম্পর্কে আমার একটা কাল্পনিক জগত তৈরি হয়েছে, তার পাশাপাশি নিজের চোখে বাংলাদেশ দেখার ইচ্ছে আরও বেশি প্রবল হয়েছে। আর আপনাদের লেখায় বাংলাদেশকে দেখে আমি প্রতিনিয়ত মুগ্ধ হই।
বাংলাদেশের যে সব বিষয়ের গল্প শুনেছি, তার মধ্যে সবথেকে বেশি হচ্ছে জাতির পিতা শেখমুজির রহমানের কথা। আমার শশুর মশাই আজও ইউটিউবে ওনার ভাষন শোনেন। শশুর মশাইয়ের কাছেই ওনার গল্প শুনেছি।
আর শাশুড়ি মা শুধু মাছের গল্প করেন। কারণ ওনাদের ওখানে অনেক ধরনের মাছ পাওয়া যেত এবং উনি নিজে মাছ খুব পছন্দ করেন। আর বর্তমানে সব থেকে বেশি শুনি পদ্মা সেতু ও ঢাকার রাস্তায় জ্যামের কথা।
যাইহোক আজকে অন্য কিছু নয় বাংলাদেশের একটি ফল আজকে প্রথমবার খেলাম। তাই সেই অভিজ্ঞতাই ভাবলাম আপনাদের সাথে শেয়ার করি। আপনাদের অনেকের পোস্টেই আমি "লটকন" সম্পর্কে পড়েছি।
আসলে আমার ননদের বাড়িতে বাংলাদেশ থেকে কয়েকজন আত্মীয় এসেছেন এবং তারাই আমার ননদের জন্য লটকন নিয়ে এসেছেন। যেহেতু আমি কখনো খাইনি, সেই কারণে আমার ননদ আমার জন্য কয়েকটা পাঠিয়ে দিয়েছে।
শুনেছি আমাদের দেশেও এখন নাকি কয়েক জায়গায় লটকন পাওয়া যায়। কিন্তু আমি কখনো খাইনি। আজ প্রথমবারে খেলাম সেটাও কিন্তু বাংলাদেশেরই।
যদিও বাইরে থেকে দেখতে লটকন গুলো একদমই শুকিয়ে গিয়েছিল। হয়তো এক দুদিন আগেই কিনেছিলেন এবং নিয়ে আসতে একটা দিন সময় লেগেছে। তারপর আবার আমার কাছে পাঠিয়েছে বোধহয় এই কারণেই বাইরের খোসা গুলোর রং এমন হয়ে গেছে।
আপনারা যারা লটকন খেয়েছেন, তারা এর স্বাদ সম্পর্কে জানেন। কিন্তু আমার কখনো জানা ছিল না। প্রথমত আমি ভাবছিলাম বোধহয় সবগুলোই নষ্ট হয়ে গেছে। কারণ খোসাগুলো লালচে ধরণের হয়ে গিয়েছিল, যেমনটা আপনারা ছবিতে দেখতে পারছেন।
আমার কোন ধারণা ছিল না যে এর খোসাটা অনেকটাই মোটা হয়। কারণ প্রথমে ফলটি দেখে আমি বুঝতে পারছিলাম না যে, এটার কোন অংশটা খেতে হবে। পরে আমার শাশুড়ি মা দেখিয়ে দিলেন। শশুরমশাইও একটা খেলেন এবং তারসাথে নিজের ছোটবেলায় লটকন খাওয়ার গল্প করছিলেন।
শাশুড়ি মা আমাকে বললেন লটকন মাখা খেতেও খুব ভালো লাগে। যখন ওনরা স্কুলে পড়তেন তখন নাকি সকলে মিলে এইভাবে লটকন মাখা খেতেন। তাই আমিও আজকে সেই ভাবেই খেলাম। সত্যি কথা বলতে বেশ ভালো লাগলো।
-: লটকন মাখার জন্য ব্যবহৃত উপকরন :- |
---|
লটকন মাখার জন্য কি কি উপকরন ব্যবহার করেছি সেটা একবার আপনাদেরকে জানাই। মাত্র ৩-৪ টি উপকরণ নিয়েছিলাম-
- লটকন- ৮-১০ টি
- বিট লবন- ½ চা চামচ
- ভাজা শুকনো লঙ্কা- ১টি (ছোটো)
- চিনি- সামান্য পরিমাণ
-: লটকন মাখার পদ্ধতি :- |
---|
- প্রথমে আমি লটকন গুলির খোসা ছাড়িয়ে নিয়েছি। আর ভিতরের কোয়া গুলো আলাদা করে নিয়েছি।
- তারপর পরিমাণ মতো বিট লবণ ও একটা ভাজা শুকনো লঙ্কা নিয়ে লঙ্কাটা লবনের সাথে মেখে নিলাম। তারপর চিনি মিশিয়ে নিলাম
- এবার চামচের সাহায্যে লটকনের কোয়াগুলোকে হালকা করে থেঁতো করে নিয়েছি, যাতে লবণ এবং লঙ্কাটা ভেতর পর্যন্ত যায়।
- তারপর সবকিছু একসাথে চামচ দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করে নিয়েছিলাম।
বেশ ভালো লেগেছে আমার এই লটকন মাখা। অনেক দিন বাদে টকজাতীয় কিছু মাখা খেলাম।
যাইহোক, আজকে লটকন মাখা খেতে খেতে ঠিক করলাম, বাংলাদেশ গেলে অনেক লটকন নিয়ে আসবো। আপনারা কারা কারা এই ভাবে মাখা খেয়েছেন অবশ্যই জানাবেন।
সকলে ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।
আমি মালেশিয়াতে অনেক বার লটকন খেয়েছি, কিন্তু আপনার মত এভাবে করে খাই নাই, পাকা লটকন টক মিষ্টি মিষ্টি লাগে তাই শুধু লবণ দিয়েই খেয়েছি। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপনি সর্বপ্রথম লটকন খেয়েছেন তাও বাংলাদেশেও লটকন এবং তার রিভিউ খুব সুন্দর ভাবে দিয়েছেন।
হ্যাঁ এটার স্বাদ অনেকটা টকমিষ্টি। শুধু খেতে ভালো লাগে কিন্তু আমি শাশুড়ি মার কথা মতন সাথে একটু লংকাও নিয়েছিলাম, সেটাও খেতে বেশ ভালো লেগেছিল, আপনি একবার খেয়ে দেখতে পারেন।
ইনশাল্লাহ দিদি আপনি যেভাবে বলছেন পরবর্তীতে খেয়ে দেখব।
প্রথমে আমি আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপনি প্রথমবার লটকন খেয়েছেন তাও বাংলাদেশের। খুব সুন্দর ভাবে বানিয়ে খেয়েছেন।আমিও একবর লটকন খেয়েছিলাম তখন এতটা স্বাদ পায়নি। প্রথমবার খেয়েছি তো খাওয়ার মজাটা বুঝতে পারিনি।
তো আবার যদি কোন সময় খায় তাহলে আপনার মতোন করে খাওয়ার চেষ্টা করব। থ্যাঙ্ক ইউ
আপনি বাংলাদেশে থেকেও মাত্র একবার লটকন খেয়েছেন, এটা কিন্তু বেশ অবাক ব্যাপার। পরেরবার নিশ্চয়ই একবার আমার মতন করে খাওয়ার চেষ্টা করবেন, আশা করছি আপনার ভালো লাগবে। ভালো থাকবেন।ধন্যবাদ।
অবশ্যই আরেকবার খেলে আপনার মতন করে বানিয়ে খাব ওই রকম করে খেয়ে মজাটা আমার ট্রাই করতে হবে। থ্যাংক ইউ আপু
বেশ চমৎকার ভাবে লেখাটা শুরু করেছেন।পড়তে পড়তে ভাবছি কখন আপনি বাংলাদেশ পৌঁছবেন। কিন্তু আপনার কাছে বাংলাদেশের ফল এসে পৌঁছাল। আপনার বাংলাদেশ ভ্রমণের স্বপ্ন খুব শিগগির পূর্ন হোক। আমরা একটা ভালো পোস্ট দেখতে পাব। আমার ঠাকমাতো অবিভক্ত বাংলার থেকে চলে আসার পরে কয়েক বার পাকিস্তানে গেছিল।ঠাকমার পাসপোর্ট অনেকদিন পরে পাওয়ার পর জানতে পারি। ওনার জীবন দশায় জানতে পারলে নিশ্চয়ই জিগ্যেস করতাম কেন যেত। হয়তো শিকড়ের টানে। ঠাকমার সঙ্গে দাদুও যেতো।
☺ আপনার কমেন্টটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আমিও মাঝেমধ্যে ভাবি কবে বাংলাদেশে পৌঁছানো সম্ভব হবে। আপনার ঠাকুমার কথা জানতে পেরে আরো ভালো লাগলো। আসলে ঠাকুমাদের কাছে পুরনো দিনের গল্প শুনতে বোধহয় আমাদের সকলেরই ভালো লাগে। তবে আমারও আফসোস হচ্ছে আপনি কেন আপনার ঠাকুমার জীবন দশায় পাসপোর্টটা খুঁজে পাননি। তাহলে হয়তো পাকিস্তানেরও বেশ কিছু গল্প আজ আপনার লেখার মাধ্যমে আমরা পড়ার সুযোগ পেতাম। যাইহোক এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। খুব ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
প্রথমে শুনে ভালো লাগলো আপনি বাংলাদেশের লটকন খাচ্ছেন প্রথমবার। আমরা যারা বাংলাদেশে আছি তাদের কাছে একটি অনেক জনপ্রিয় এবং অনেক পরিচিত একটি ফল।
আপনার বাংলাদেশে আসার খুব ইচ্ছা!! আমার শুনে অনেক ভালো লাগলো। আমিও চাই আপনি বাংলাদেশে আসেন এবং আমাদের দেশে একটু ঘুরে যান। আপনি সবসময় আপনার মা এবং শশুরের মুখে বাংলাদেশের অনেক কথাই শুনেন। যদি একবার বাস্তবে দেখে যান তাহলে আপনিও অনেকের সাথে বাংলাদেশ সম্পর্কে গল্প করতে পারবেন।
আপনার আজকের পোস্টটি পড়ে আমার অনেক ভালো লেগেছে। বাংলাদেশের ফল প্রথমবার খাচ্ছেন একটু অন্যরকম আনন্দ কাজ করছে আপনার মাঝে।
প্রথমে ধন্যবাদ জানাই এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। আমিও অনেকের মুখে এই লটকনের গল্প শুনেছি এবং সত্যিই আমার নিজেরও ফলটি খেতে বেশ ভালো লেগেছে। এটা আপনি ঠিকই বলেছেন অন্যের মুখে গল্প শোনা আর নিজের চোখে দেখার মধ্যে অনেক পার্থক্য। সত্যিই মন থেকে একবার বাংলাদেশ ঘোরার ইচ্ছা রয়েছে। আদেও সেটা পূরণ হবে কিনা জানিনা। তবে যদি যাওয়া সম্ভব হয় এবং তখনও এই প্লাটফর্মে সঙ্গে যুক্ত থাকা হয়, তাহলে নিশ্চয়ই সে গল্প আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করবো। ভালো থাকবেন।
হ্যাঁ দিদি একবার হলেও বাংলাদেশে এসে ঘুরে যান অনেক ভালো লাগবে আর আসার আগে অবশ্যই জানাবেন।
লটকন আমার একটা প্রিয় খাবার এর মাঝে পরে।লটকন দেখলেই আমারা রথের কথা মনে পরে কারন আমি যখন ছোট ছিলাম তখন রথের সময়ই বেশি পাওয়া যেত।অবশ্য এখন বাংলাদেশের সবজায়গাতেই এটা বরষার সময়ে দেখতে পাওয়া যায়।
একটু বড় সাইজের লটকন সাধারণ খেতে বেশি ভালো। আপনি যেগুলো খেয়েছেব এগুলো শুকিয়ে গেছে যার কারনে এমন দেখাচ্ছে না হলে টাটকা লটকন দেখতে হলদেটে হয়ে থাকে।
লটকন খেতে হলে আপনাকে বর্ষার সময়ে বাংলাদেশে আসতে হবে।আর কিছুদিন পরেই পাওয়া যাবে না।
ভালো থাকবেন দিদি।
আমি যে লটকন গুলো খেয়েছিলাম সেগুলো খুব একটা বড় নয়, কিন্তু তবুও বেশ ভালোই লেগেছে। রথের সময় এই ফল বেশি পাওয়া যায়, এটা আমার জানা ছিল না, আপনার কমেন্ট পড়ে জানতে পারলাম। আপনার নিজের ও লটকন খেতে ভালো লাগে জেনে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। ভালো থাকবেন।
আপু আপনি যখন লটকন মাখছিলেন বলছেন আর সেই মুহূর্তে আমার জিহবায় জলে ভরে গিয়েছে। কারণ এই ফলটি খেতে আমি খুব পছন্দ করি।
অনেক ভালো লাগলো আপনার পোস্ট টি পড়ে। ভালো থাকবেন।
আপনাকেও ধন্যবাদ এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। আসলে যে কোনো টক জাতীয় জিনিস মাখার কথা শুনলেই আমাদের জিভে জল চলে আসে। আর এখানে লটকন খেতে আপনার নিজেরই খুব ভালো লাগে সুতরাং জল আসাটাই স্বাভাবিক। আপনাদের ওখানে প্রচুর লটকন পাওয়া যায়, তাই এরপর যখন খাবেন তখন আমার মতন করে একবার খেয়ে দেখবেন, আশা করি ভালো লাগবে। ভালো থাকবেন।
আমি গত কালকেই আমার ছেলেদের জন্য লটকন কিনে নিয়ে এসেছিলাম। আসলে ওরা যেভাবে খায়,,লটকন টাকে সুন্দরভাবে ছিলে একটা বাটির মধ্যে নিয়ে,, এরপর তার সাথে বিট লবণ এবং হালকা লাল মরিচের গুড়া দিয়ে দেয়। এরপর ভালোভাবে বাটির মধ্যে ঢাকনা দিয়ে। দুই হাত দিয়ে ঝাঁকিয়ে তারপর তারা খায়। দেখতেই লোভনীয় লাগে,, খেতে তার চাইতে অনেক বেশি মজা লাগে।
আজকে আমাদের বাংলাদেশের লটকন ফল খেয়ে,, আপনি তার বিষয়ে আপনার পোস্টে উল্লেখ করেছেন। আসলে লটকন খুবই মজার একটা ফল।এটা খেতে অনেক বেশি ভালো লাগে,, কারণ টক জাতীয় ফল। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে,, বাংলাদেশি ফল খেয়ে তার সম্পর্কে বিস্তারিত আমাদের সাথে আলোচনা করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল। ভালো থাকবেন।
বাহ্ আপনার ছেলেরাও লটকন খেতে পছন্দ করে জেনে ভালো লাগলো। আসলেই এই টক জাতীয় ফলগুলো অল্প লবণ এবং লঙ্কা দিয়ে মাখলে খেতে অসম্ভব সুন্দর লাগে। ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্ট পড়ে এত সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। লটকন খেতে আমার ও বেশ ভালো লেগেছে, পরবর্তীতে আবারো খাবার ইচ্ছা রইল। ভালো থাকবেন