রংপুরের চিকলির পার্কে আমার কাটানো কিছু সময়
হ্যালো বন্ধুরা,
সবাই কেমন আছেন? নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে খুব ভালো আছি।এই সুন্দর পৃথিীতে আমরা সকলেই চেষ্টা করে চলেছি ভালো থাকার জন্য। হয়তো এর মাঝে আমরা অনেকেই খুব বেশি ভালো আছি,আবার হয়তো অনেকেই একদম ভালো নেই।
ভালো মন্দ নিয়েই আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হয়।তাই সকলের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করছি, মন্দকে পিছনে ফেলে সকলেই যেনো ভালোকে সহযাত্রী করে সামনের দিকে অগ্রসর হতে পারে।
পরিবারের সদ্যদেরকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুড়ে বেড়াতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে।হোক সে সদস্য বাবার বাড়ির অথবা শশুর বাড়ির। সবাইকে নিয়ে আনন্দ ফুর্তি করতে আমার বেশ ভালো লাগে।
আর তাইতো আমার ননদের ছেলে ও মেয়েকে সহ আমার পুরো পরিবার একদিন রংপুরের চিকলির পার্ক বেড়াতে গিয়েছিলাম। বিকেলের দিকে বেড়াতে গিয়ে অনেক রাত অব্দি আমরা এই পার্কে সময় অতিবাহিত করেছিলাম। প্রচন্ড আনন্দ ও ভালোলাগার সময় টুকু এত দ্রুত পার হয়ে যাচ্ছিল তা বুঝে উঠতেই পারছিলাম না।
কখন যে বিকেল থেকে রাত হয়ে গেছে তা একদম টের পাইনি। এখানে যে ছবিটি আপনারা দেখতে পাচ্ছেন, সেই ছবিতে আমি ও আমার ছেলে মেয়ে সহ ননদ ও ননদের মেয়েকে দেখতে পাচ্ছেন। আর এই ছবিতে আমার ছেলে হাওয়াই মিঠাই খাওয়া নিয়ে খুবই ব্যস্ত ছিল।
এই ছবিতে আমিও আমার মেয়ে একটি সেলফি তুলেছিলাম। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হয়ে যাচ্ছিল। আর এই সন্ধ্যার সময় চিকলির পার্কটিতে মনমুগ্ধকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল। আমার কাছে চিকলি পার্কে কাটানো মুহূর্তগুলো এতটাই ভালো লেগেছিল যে, তা হয়তো আমি কখনো ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।
তখন ছিল গ্রীষ্মকাল, প্রচন্ড গরমে আমাদের গা থেকে ঘাম দরদর করে ঝরছিল। কিন্তু বেড়ানোর আনন্দ এতটাই বেশি ছিল যে এই গরম আমাদের কাছে কিছুই মনে হচ্ছিল না। ছেলে ও মেয়েকে গরম কাটানোর জন্য কিছুটা ঠান্ডা পানীয় খাওয়ানোর জন্য চিকলির পার্কে অবস্থিত একটি রেস্টুরেন্ট যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করেছিলাম।
যেই ভাবা সেই কাজ ঠান্ডা ঠাণ্ডা ম্যাংগো জুস ছেলে ও মেয়েকে কিনে দিয়েছিলাম। ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা ম্যাংগো জুস খেয়ে তারা খুব স্বস্তি পেয়েছিল। চিকলির পার্কে যে সকল রেস্টুরেন্ট রয়েছে সবগুলোতে তুলনামূলক বাইরের রেস্টুরেন্টগুলোর চেয়ে প্রচুর দাম ছিল। কিন্তু কি আর করার চড়া দামেয় সকল খাবার কিনে খেতে হয়েছিল।
এরপর ছেলে মেয়েকে বিনোদন দেয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের রাইডার্সগুলোতে চড়িয়েছিলাম। আর আমার ছেলে মোটরসাইকেল গেম খেলে এতটা আনন্দ করেছিল যে, আমি মা হিসেবে তার এই আনন্দটুকু উপভোগ করেছিলাম। তার হাসি মাখা মুখ দেখে মনের ভেতর শান্তি অনুভব করেছিলাম।
সন্তানের মুখের হাসি প্রতিটি বাবা মায়ের কাম্য। তবে সমস্যায় পড়ে গেলাম, যখন আমার ছেলে রাইডার্স এর টাইম শেষ হয়ে যাবার পরও সে কিছুতেই মোটরসাইকেল থেকে নামতে চাইছিল না। তাই কি আর করার আবারো টিকিট কেটে মোটরসাইকেল গেমটি তাকে দুইবার খেলতে দিয়েছিলাম।
মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য রাইডার্সগুলো বিভিন্ন রংবেরঙের লাইট দিয়ে সুসজ্জিত করেছিল পার্ক কর্তৃপক্ষ। যাতে করে জনসাধারণ রাতের বেলাতেও অনেক দূর থেকেই এই রাইডার গুলো দেখতে পায়। হরেক রকম লাইট গুলো জল জল করে জ্বলে থাকার কারণে সত্যি সত্যিই রাইডার্সগুলো খুব দৃষ্টিনন্দন হয়েছিল।
রাতের বেলায় এরকম দৃশ্য দেখতে কার না ভালো লাগে বলুন। এই চিকলির পার্কে এসে আমার নিজের কাছে মনে হয়েছিল, আমিও যেন আমার ছেলে মেয়েদের বয়সে ফিরে গেছি। তারা যেভাবে আনন্দ উল্লাস করেছিল আমিও তাদের সাথে ঠিক ততটাই আনন্দ করেছিলাম।
আমরা অনেক ঘোরাফেরা করে ফিরে আসার সময় আমার ছেলে হঠাৎ করে নতুন একটি রাইডার দেখেছিল। তো ব্যাস শুরু হয়ে গেল কান্না আর জেদ। কিন্তু আমার ছেলে যে রাইডার্স দেখেছিল তা ছিল একটি ছোট্ট সুন্দর গাড়ি। যা আমার ছেলে চালাতে পারতো না।
তাই বাধ্য হয়ে আমার মেয়ের সাথে ছেলেকে বসিয়ে, সেই গাড়িতে করে পুরো চিকলির পার্ক ভ্রমণ করার সুযোগ করে দিয়েছিলাম। এবার আমার ছেলের আনন্দের সাথে সাথে আমার মেয়ের আনন্দও কম ছিল না।
চিকলির পার্ক থেকে ফিরে আসার সময় মনে হচ্ছিল, আবার কখন এই পার্কে বেড়াতে আসতে পারবো। সময়টা আমাদের এতটাই ভালো কেটেছিল যে মন কিছুতেই সেখান থেকে আসতে চাইছিল না।
কিন্তু কি আর করার ফিরে তো আসতেই হবে, তাই ফিরে আসার সময়, চিকলির বিলের কাছে সবুজ মনোরম দৃশ্যের পাশে দাঁড়িয়ে নিজের একটি ছবি তুলেছিলাম। স্মৃতি হিসেবে মুঠোফোনে রেখে দেয়ার জন্য। আজ এ পর্যন্তই শেষ করছি, আবারো নতুন কোন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়ে যাব।
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপু, আপনার সুন্দর মন্তব্য পেয়ে খুব খুশি হলাম। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
চেনা যায়গাগুলো দেখলে ভালোই লাগে। চিকলি পার্কে আমিও ১ মাসে আগে গিয়েছিলাম। আমার মতে রংপুরে এই পার্কটি বেস্ট। এমন পার্ক এখন পর্যন্ত আমি দেখিনি। অনেক ভালো লেগেছিলো। বিশেষ করে ঝর্ণা আর তার আশে পাশের প্লেস গুলো অসাধারণ। অত্যন্ত সুন্দর ভাবে চিকলি ওয়াটার পার্কের কাটানো মুহুর্ত টা আমাদের সামনে উপস্থাপন করেছেন। অনেক ভালো হয়েছে। ভালো থাকবেন
একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া, চিকলি পার্ক রংপুরের মধ্যে বেস্ট পার্ক। আমার কাছেও খুবই ভালো লেগেছে। আমার পোস্ট পড়ে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।