শৈশবকালে স্কুলে যাওয়া স্মৃতি
আসসালামু আলাইকুম
- কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আজকে আমি আমার শৈশবের স্কুল জীবনের কিছু স্মৃতি আপনাদের কাছে শেয়ার করব আশা করছি সবার ভালো লাগবে।
আমার শৈশবের স্কুল জীবন একদমই অবিস্মরণীয়। ছোটবেলা থেকেই আমি স্কুলে যেতে খুব পছন্দ করতাম।সেই ছোটবেলা, যখন স্কুলে যাওয়া ছিল আনন্দের, রোমাঞ্চকর আর নতুন কিছু শেখার উত্তেজনা, আজও তা মনে পড়লে অদ্ভুত এক সুখানুভূতি হয়।
স্কুলের প্রথম দিন টা মনে পড়ে। সেই দিনটা ছিল এক ধরনের অজানা ভয় আর মিশ্রিত আনন্দের। মা আমাকে হাত ধরে স্কুলে নিয়ে গেলেন। তার স্নেহময় হাত ধরে, আশঙ্কার মাঝেও যেন একধরনের নিশ্চয়তা ছিল। প্রথম দিনের পর থেকেই স্কুলে যাওয়ার অভ্যস্ততা হয়ে উঠেছিল।প্রথম প্রথম খুব একটা বন্ধুত্ব ছিল না কারো সাথে।
তারপর আস্তে আস্তে সবার সাথে বন্ধুত্বটা সৃষ্টি হলো এবং একে অপরকে দেখেই দৌড়ে চলে আসতাম।সকালে ছিল প্রাথমিক ব্যায়াম আর একে অপরের সঙ্গে খুনসুটি আমার স্কুল জীবনের অমূল্য স্মৃতি ছিল। স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে তখন আমাদের সম্পর্ক ছিল এই ধরনের নিখাদ এবং সরল। কখনো টিফিন ভাগাভাগি কখনো লুকোচুরি খেলা আমাদের দিন চলতো এভাবেই।
স্কুলের পরিবেশ, সেই ছোট্ট ছোট্ট গাছ, ফুলের গন্ধ, দূরের মাঠে আকাশে উড়তে থাকা পাখিরা, সবকিছু যেন তখন একটা জীবন্ত চিত্র হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো। বিশেষ করে সকালবেলা, যখন সূর্য উঠে আর ঝিরঝির বৃষ্টির শব্দ শোনা যেত তখন আমার মনে হতো স্কুলের প্রতিটি কোন যেন আলোকিত হয়ে উঠেছে।
শিক্ষকরা তখন আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় গাইডলাইন ছিলেন কিন্তু আমরা তখন বুঝতাম না। আজ ঠিকই শিক্ষকদের মর্মতা বুঝতেছি তারা আমাদের জীবনের কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিল খুব কঠিন। বাইরে থেকে দেখতে যতটা কঠিন হয় আসলে ভেতর থেকে তিনি কঠিন ছিলেন না। আর তার এই বাইরের কঠোরতা যদি না থাকতো তাহলে আজ আমরা এই পর্যায়ে পৌঁছাতে পারতাম না।
আবার মাঝে মাঝে তাদের হাসি মাখা মুখ ভালোবাসা এবং কঠোরতা সব মিলিয়ে তারা আমাদের জীবনের মূল্যবান শিক্ষক হয়ে উঠেছিলেন। সবার মধ্যেই ছিল এক ধরনের আদর্শ যা আমাকেও সঠিক পথে চলতে সাহায্য করেছে। কতই স্মৃতি না ছিল স্কুলের আনাচে-কানাচে।আজও শুধু স্মৃতি রয়েছে। স্কুলের পড়াশোনা নিয়ে স্মৃতি ভরা হলেও যে মুহূর্তগুলো আমার সবচেয়ে ভালো লাগত তা ছিল পেছনের মাঠে খেলা ধুলা।
বিশেষত্ব ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা যখন দৌড়াদৌড়ি করে, তখন আমাদের মাঝে এক অদ্ভুত বন্ধুত্ব তৈরি হয়ে যেত। একে অপরের সঙ্গে খেলার সময় সব দুঃখ বেদনা ভুলে যেতাম। কখনো দৌড়াদৌড়ি কখনো কানামাছি আবার কখনো মাটিতে দাগ কেটে খেলার অনুভূতিগুলোই অন্যরকম ছিল। তবে সবার আগে ছিল আমাদের স্কুলের প্রার্থনা। সবার চোখ বন্ধ হয়ে যেত আমরা একসঙ্গে উচ্চারণ করতাম আমাদের প্রার্থনা। স্কুল শুরু হতো প্রার্থনা দিয়ে আর সে সময়টুকু আমার কাছে ছিল যেন এক ধরনের শান্তির মুহূর্।
আজকাল সেটা আর সম্ভব নয়। কিন্তু সেই সময়ের প্রতিটি মুহূর্ত যেন আমার মনে গেঁথে আছে। তবে যখন পরীক্ষার সময় হইতো তখন এক ধরনের চাপও অনুভব করতাম। স্কুলের মাঠে খেলতে যাওয়ার কথা মনে থাকলেও পড়াশোনা আর পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিতে হতো।তবে সেটা ছিল এক ধরনের উত্তেজনা, যে উত্তেজনা পরীক্ষার পর মিষ্টি ফলাফল পাওয়ার আনন্দে পরিণত হতো।
স্কুলের স্মৃতিগুলো সব সময়ই সুখের কারণ তা আমাদের জীবনের সবচেয়ে নিদর্শন ছিল।শৈশবের সেই দিনগুলোতে যা কিছু শিখেছিলাম তা আজও আমাকে পথ দেখায়। আজকের দিনে যখন আমি স্কুলের দিকে ফিরে তাকাই মনে হয় যেন কিছুই পরিবর্তন হয়নি। আমার হৃদয়ে এখনো সেই শৈশবের মাধুর্য এবং শুদ্ধতা লুকিয়ে আছে। এইসব ছোট ছোট স্মৃতি ও অভিজ্ঞতা আমাকে একজন ভালো মানুষ হতে শেখায়, এবং শৈশবকালের স্কুলে যাওয়ার স্মৃতি গুলো আজও আমার জীবনের সবচেয়ে প্রিয় জায়গায় বসে রয়েছে।
এই স্মৃতিগুলো কখনো ভোলার নয়। যদি সম্ভব হতো আবার সেই স্কুল জীবনে ফিরে যেতে পারতাম তাহলে অবশ্যই যেতাম কিন্তু সেটা আর সম্ভব নয়। এই মধুর স্মৃতিগুলো সময় কখন ছিল না কোনো চিন্তা ছিল না কোন ভাবনা জীবনের শুধু ছিল আনন্দ আর আনন্দ।
- যাই হোক স্কুল জীবনের স্মৃতি আসলে লিখে শেষ করার নয় আজ এই পর্যন্তই সবাই ভালো থাকেন সুস্থ থাকেন আল্লাহ হাফেজ।
আপনারা আজকের এই পোস্ট পড়তে গিয়ে কিছু সময়ের জন্য শৈশবে ফিরে গিয়েছিলাম। অনেক মিষ্টি ছিলো সেই দিন গুলো আমাদের। যে দিন গুলো হয়তোবা আমরা আর কখনো ফিরে পাবো না। নতুন নতুন বন্ধুদের দেখা। তাদের সাথে সময় কাটানো। তাদের সাথে ঝগড়া করা। তাদের সাথে খেলাধুলা করে দিন পার করা। এগুলা আসলেই আমাদের জীবনে একটি স্মৃতি হয়ে আছে। যাইহোক এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সামনে উপস্থাপনা করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
সত্যিই অনেক স্মৃতি মনের ভিতর গেঁথে রয়েছে। শৈশবের সেই সময়গুলো সত্যিই অসাধারণ ছিলো, যেখানে নতুন বন্ধুদের সাথে আনন্দে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত আজও মনের মধ্যে উজ্জ্বল। ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।