বন্ধুরা ৩ রা মে গিয়েছিলাম বৃদ্ধাশ্রম "আপন নিবাসে"। এটি উত্তরায় অবস্থিত। বেশ কয়েক বছর যাবতই আমার এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার খুব আগ্রহ। একেবারে হঠাৎ করেই যাওয়ার সুযোগ হয়ে গেল। আমার মেয়ের ভার্সিটি থেকে একটি গ্রুপ বৃদ্ধাশ্রমে যাবে এবং এখান থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করে তারা প্রতিবেদন তৈরি করবে। যেহেতু আমার মেয়েটি অসুস্থ,তা আমি আমার পূর্বের পোস্টে উল্লেখ্য করেছিলাম ।তাই ওকে একা ছাড়েনি তার সাথে আমিও গিয়েছিলাম। বন্ধুরা শেয়ার করছি বৃদ্ধাশ্রম থেকে অর্জিত আমার অভিজ্ঞতা।
সকাল ছয়টার দিকে ধানমন্ডি ৫ থেকে শাহবাগানে গেলাম বাসে চড়ে। তারপর শাহবাগের স্টেশন থেকে আব্দুল্লাহপুর গেলাম বাসে, তারপর আব্দুল্লাহপুর থেকে অটো রিক্সায় করে একেবারে "আপন নিবাস বৃদ্ধাশ্রম"। এলাকাটা একেবারেই নির্জন অনেকটা গ্রামের মতো , তাই আমরা আব্দুল্লাহপুর থেকে অটোর রিক্সা রিজার্ভ করে নিয়ে গিয়েছিলাম। কারণ আসার সময় অটো রিক্সা পাবোনা ,এই তথ্য আমাদের কাছে আগেই ছিল।
দশটার ভিতরেই আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম গন্তব্যে। একেবারে নিরিবিলি একটি পরিবেশ এবং খুব গোছানো।
আমরা ওখানে যাওয়ার পর সবাই আন্তরিকভাবেই আমাদের গ্রহণ করেছিল এবং কিছুক্ষণ আমাদের অপেক্ষা করতে বলল। এর কারণ হলো এখানে বেশিরভাগ মানুষই ভারসাম্যহীন। তাই তাদের একটু বোঝানোর ব্যাপার রয়েছে ।তাছাড়া আমার কাছে মনে হল অনেকেই নিজে নিজে ওয়াশরুমে যেয়ে বাথরুম ইউজ করতে পারেন না। এ কারণে হয়তো ওদের একটু সময় বেশি লেগেছে।
আর যেহেতু আমার মেয়ের টিম লিডার আগে এসেই ওদের খাবারের ব্যবস্থা করে রেখে গিয়েছিলেন এবং কিছু অনুদানর দিয়ে এসেছেন। কিছু ফুটফুটে বাচ্চা ছিল তাদের মায়েদের গর্ভাবস্থায় রাস্তায় থেকে কুড়িয়ে
এনেছে, তাই এই শিশুগুলোর প্রকৃত পিতা কে তা জানা সম্ভব নয়। এত ফুটফুটে বাচ্চা গুলো পিতৃ পরিচয়হীন ভাবতে আমার কাছে অনেকটাই খারাপ লাগছিল।
এবং আমার মেয়ের টিমের সদস্য রাও বিষয়টিকে খুব গভীরভাবে নিয়েছে। তারা আসলে এখানে এসে জীবনের বাস্তবতা বুঝতে শিখেছে। এ ধরনের প্রোগ্রামের প্রয়োজন রয়েছে বলে আমারও মনে হয়। আমি আমার মেয়ের উসিলায় বৃদ্ধাশ্রম দেখে আসলাম এবং বৃদ্ধদের রাহাজানি শুনে আসলাম।
তারা আসলে ওখানে খুব একটা ভালো নেই সত্যি কথা বলতে কি পরিবার ছাড়া কেউ ভালো থাকতে পারে না। সুস্থ এবং স্বাভাবিক জীবনের জন্য নিরাপদ পরিবেশ দরকার এবং নিজ পরিবার দরকার। তারা শিশুদের জন্য চিপস , চকলেট ,ব্যাট ও বল কিনে নিয়ে গিয়েছিল তাদের উপহার দেওয়ার জন্য। বাচ্চা গুলো খুব খুশি হয়েছে এই উপহারগুলো পেয়ে। আর সবাই মিলে অনেক অন্যরকম একটি দিন অতিবাহিত করলাম। আমার মেয়ের বন্ধুরা আমাকে পেয়ে অনেক আনন্দিত হয়েছে ।কারণ আমার ওখানে যাওয়ার কোন কথাই ছিল না ।মেয়ে অসুস্থতার কারণেই সাথে আমি গিয়েছিলাম। তাই ওরাও খুব খুশি হয়েছে আন্টিকে এভাবে পাব তা আমরা কখনো ভাবি নি।
সত্যি কথা বলতে আমার জীবনের একটি নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হলো । আমাদের চারপাশের মানুষের অবস্থা গুলো দেখলে মনে হয় ,রাব্বুল আলামিন আমাদের কে রহমতের উপর রেখেছে। তাই আমি মনে করি সময় সুযোগ করে এ ধরনের পরিবেশে যাওয়া উচিত ।নিজের মানসিকতা পরিবর্তন করার জন্য।
বন্ধুরা আজ আর নয়, আজ এখানেই লেখার সমাপ্তি টানছি, আল্লাহ হাফেজ।
বৃদ্ধাশ্রমে আমার কখনো যাওয়া হয়নি।তবে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষদের প্রতি কেন জানি আমার একটা দূর্বলতা কাজ করে। এটা আরো বেশি হয়েছে বাবা -মারা যাওয়ার পরে থেকে।
মেয়ের জন্য আপনার যাওয়া হয়ে গেল
ছোট ছোট্ট বাচ্চাগুলোকে দেখে কস্ট লাগলো। কত মানুষ একটা বাচচা পায় না।
তবে আপনারা বাচচাগুলোর জন্য চকলেট, চিপস আর ছোট ছোট উপহার নিয়ে গিয়ে ভালো কাজ করেছিলেন।
একদম ঠিক বলেছেন যে, রাস্তা -ঘাটে অনেক মানুষকে দেখে মনে হয় আমরা অনেক ভালো
আছি।
ভালো লাগলো আপনার লেখায় এধরণের মানুষদের কথা তুলে ধরার জন্য ।
ভালো থাকবেন সবসময়।
Hey friend, you visited Vridhaasharam and helped many people in needy. Very often, people do not believe in these kind hearted works. Its good that you gone to hospital and seeked doctor when needed. I am happy that kid is doing well. Those food platers looks tasty and must satisfied the craving.
সত্যি কথা বলতে বৃদ্ধাশ্রমের কথাটি শুনলেই কেন জানি মনের ভেতর একদম কেঁপে উঠে। তবে এখন পর্যন্ত আমার বৃদ্ধাশ্রমে কখনো যাওয়া হয়নি।
আপনার বৃদ্ধাশ্রমে কাটানো মুহূর্তগুলো জেনে খুব ভালো লাগলো। ছোট ছোট বাচ্চাদের জন্য আপনি কিছু উপহার নিয়ে গিয়ে খুব ভালোই করেছেন।
বৃদ্ধাশ্রমে কাটানো মুহূর্তগুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।