ইতিহাস ও ঐতিহ্যের লালবাগ কেল্লা:

in Incredible Indialast year
হ্যালো বন্ধুরা

photo-1662563013196-f71e724704aa.jpeg

Source

আমাদের জীবনযুদ্ধ আমাদের কেবল যান্ত্রিকতা শিখিয়েছে। তারপরও আমাদের অতীত ঐতিহ্যকে স্মরণ করতে হবে। আমাদের জন্য না হলেও আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য। ঢাকার তিতুমীর বাঁশের কেল্লা, শালবন বিহার, মহাস্থানগড়, লালবাগ কেল্লার মতো অনেক ঐতিহাসিক কীর্তি ও স্থাপত্য সম্পর্কে আমাদের বংশধরদের সম্যক ধারণা দিয়ে যেতে হবে।

বাংলাদেশ ইতিহাস ও ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ একটি দেশ। এর বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ধরনের ঐতিহাসিক নিদর্শন সবাইকে আকৃষ্ট করে। রিমি বেশ কিছুদিন ধরেই বলে আসছিল লালবাগ কেল্লা দেখতে যাবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে আসি। রাতেই ঢাকায় পৌঁছালাম। পরদিন সকালে ঢাকার লালবাগে রিয়াজউদ্দিন রোডে লালবাগ কেল্লায় গেলাম। নিয়মানুযায়ী টিকিট নিয়ে দুর্গে প্রবেশ করলাম।

photo-1662563012463-2780e82c1073.jpeg

Source

লালবাগ কেল্লার বিশাল তোরণ বা গেটটিই প্রথম আমাদের আকর্ষণ করেছিল। এই দুর্গে তিনটি ফটক রয়েছে। একটি ছাড়া বাকি সব বন্ধ করা হয়েছে। ভেতরে প্রবেশ করলেই বাগানের অপরূপ দৃশ্য দেখে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। একটু এগিয়ে গেলেই দেখা মিলবে বিখ্যাত শায়েস্তা খানের প্রিয় দুহিতা পরীবিবির সমাধি। কোন বছরে পরীবিবি মারা গেছেন তার কোনো প্রমাণ নেই। অনেকে অনুমান করেন যে তিনি ১৬৮৭-৮৮ খ্রিস্টাব্দের কোনো এক সময়ে মারা গিয়েছিলেন।

photo-1662563012404-dd7df131457f.jpeg

Source

স্বভাবতই তার প্রিয় কন্যার এই অকাল মৃত্যু শায়েস্তা খানকে গভীরভাবে মর্মাহত করে। তাই শায়েস্তা খান তার মেয়ের স্মৃতি চিরন্তন করার জন্য অনেক টাকা খরচ করে এই সমাধিটি নির্মাণ করেন; যা একটি দৃষ্টিনন্দন ভবন হিসেবে পরিচিতি পায়। ভবনটি অসংখ্য মূল্যবান মার্বেল পাথর, কষ্টি পাথর এবং বিভিন্ন ফুল, লতা ও পাতা শোভিত টাইলস দ্বারা সজ্জিত।

photo-1616458050653-0f365d14e93b.jpeg

Source

এর ভেতরের যে নয়টি ঘর রয়েছে তাও বৈচিত্র্যময়। কক্ষগুলির উপরের অংশটি গম্বুজযুক্ত এবং শক্ত পাথর দিয়ে সজ্জিত। মাজারের মূল গম্বুজটি মূল্যবান তামার পাত দিয়ে আবৃত। আরও আছে সমাধি, ঝর্ণা, পাহাড়ের মতো ঢিবি এবং সুড়ঙ্গ।

দুর্গের পূর্ব প্রান্তে একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরের চারপাশে একটি ঘাট এবং একটি সুন্দর সিঁড়িও রয়েছে। এর পেছনে রয়েছে সেনা ব্যারাক; বর্তমানে এটি একটি আনসার ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও রয়েছে লালবাগ কেল্লা মসজিদ। সম্রাট আওরঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র শাহজাদা আজম বাংলার সুবেদারের সময় এটি নির্মাণ করেন। মসজিদটি আয়তাকার এবং তিনটি গম্বুজ রয়েছে। মসজিদটি স্থাপত্যের দিক থেকে মুঘল যুগের নিদর্শন ।

photo-1662563013151-3523ddfbe172.jpeg

Source

আরও আকর্ষণীয় হল সুবেদার শায়েস্তা খানের বাসভবন এবং তার দরবার মহল। এই সময়কালে ব্যবহৃত মানচিত্র, ট্যাবলেট, সুরাহি ও শিলা পাথর। এছাড়াও রয়েছে বর্শা, বর্শা, লোহার জাল বর্ম, স্ক্যাবার্ড এবং স্ক্যাবার্ড, তীর, বর্শা, ঢাল, তীর এবং বর্শা প্রমাণ লোহার জালের পাত্র, ঢাল, তলোয়ার, গ্লাভস, পারকাশন লক বন্দুক, রাইফেল, সামরিক ইউনিফর্ম, রাজকীয় পোশাক ইত্যাদি।

photo-1646494174578-302cae3b8469.jpeg

Source

এছাড়াও দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে সিংহাসনে উপবিষ্ট রাজার প্রতিকৃতি, শাহজাদা আজম শাহের প্রতিকৃতি, সিংহাসনে আওরঙ্গজেবের প্রতিকৃতি, আসাফ শাহ বাহাদুরের প্রতিকৃতি, রাজপুত্র ও রাজপুত্রের অশ্বারোহীর প্রতিকৃতি। সবচেয়ে আকর্ষণীয় খাজা হাফিজ সিরাজের প্রতিকৃতি, গাছের ছায়ায় চিন্তাশীল।

অবশেষে ফিরে আসার সময় উপস্থিত হলো।চলে এলাম ইতিহাস এর স্বাক্ষী কে রেখে।নিয়ে এলাম স্মৃতি,যা চির অমলিন।

ধন্যবাদ
Sort:  
 last year 

আমি লালবাগ কেল্লার নাম অনেক শুনেছি কিন্তু কখনো যায়নি। আমার যাওয়ার খুব ইচ্ছা আছে, আমি একদিন এখানে যাব। আর দেখব আসলে এখানে কি রয়েছে আর কতটুকু সত্যতা আছে।

আপনি অনেক বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। বৈচিত্র্যময় নয়টি ঘর হয়েছে এবং আরো অনেক তথ্য দিয়েছেন যেগুলো আমি কিছু জানতাম না। অনেক ধারণা পেলাম আপনার পোস্টটি পড়ে! এবং আমি যখন যাব অবশ্যই এগুলো খেয়াল রাখব। আপনি যেগুলো বলেছেন কোন পাশে কি রয়েছে সব ‌।

ধন্যবাদ আপনাকে লালবাগ কেল্লা সম্পর্কে এত বিস্তারিত আলোচনা করার জন্য।

ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
এখানে অবশ্যই যাবেন।একি সাথে ঢাকায় অন্যান্য প্রাচীন স্থাপত্য গুলো ও দেখে আসবেন।ইতিহাস থেকে অনেক কওছু শেখার আাছে।অবশ্যই আপনার ভাল লাগবে এসব জায়গায়।

Loading...
 last year 

লালবাগ কেল্লা ঘুরে দেখার ইচ্ছা আমারও আছে। সময় সুযোগ হলে অবশ্য ঘুরে আসবো। আপনি ঠিক বলেছেন আমাদের বাংলাদেশে বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্হান আছে যা আমাদের ঘুরে দেখা উচিত এবং এর ইতিহাস জানা উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ আপনাকে।
অবশ্যই এসব জায়গা ঘুরে দেখা উচিত।প্রথমত এটা আমাদের দেশের মধ্যেই অবস্থিত তাছাড়া রাজধানী শহরে।পরিবিবির মাজার দেখলে অবশ্যই আপনার মনে সেই সব কল্পনা ভেসে উঠবে যে,এক সময় তারা এই অঞ্চল শাসন করেছে।আরও সব রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হবে বলে আশা রাখি।

 last year 

আমরা বইয়ে অনেক পড়েছি লালবাগ সম্পর্কে ৷ কিন্তু আজকে আপনার পোস্টে লালবাগের কিছু ফটোগ্রাফি ও লালবাগ কেল্লার ঐতিহাসিক কিছু পরিচিতি আপনি আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন ৷ অনেক অজানা তথ্য আমরা জানতে পারলাম ৷

ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷

লালবাগ কেল্লা আমার বাড়ি থেকে মাত্র ১০ মিনিটের হাটা পথ।আসলে ঘনবসতি পূর্ণ এই ঢাকা শহরের মানুষের কাছে এ-ই লালবাগ কেল্লা একটি খোলা মেলা পরিবেশে ঘুরে বেড়ানোর জায়গা। ইদানীং প্রচুর ভীড় হয়। তাই যাওয়া হয় না। তবে আমি মাঝে মাঝে আমি সকালে হাটতে যাই লালবাগ কেল্লার ভিতরে।
পোস্ট টি পড়ে খুব ভালো লাগলো।

এটা জেনে ভাল লাগলো যে আস্তে আস্তে মানুষের এটা দেখার আগ্রহ বাড়ছে।আমার অনেক জব এর পরিক্ষা ওই দিকে হতো।আপনি যেটা বলছেন,ঘনবসতি আর রিকশার অত্যাচারে খুব খারাপ লাগতো।এটা আমাদের সংরক্ষণ করা উচিৎ।

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.16
JST 0.029
BTC 67675.25
ETH 2482.42
USDT 1.00
SBD 2.51