কখনো অহংকার করা উচিত নয়!!!🥀🥀

in Incredible India11 months ago
20230705_194348.jpg edit pixllabe

আমি আশা করছি যে গল্পটা আমি শেয়ার করব! সে গল্পটা থেকে আমাদের অনেক শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত! কাউকে কখনো ছোট করে দেখতে নেই! কারণ একটা মানুষ কোথায় থেকে কোথায় চলে যেতে পারে সেটা একমাত্র আমাদের সৃষ্টিকর্তাই জানে।

আমাদের সৃষ্টিকর্তা চান তো,, সকাল বেলার ফকিরকে বিকেলবেলা বাদশা করে দিতে পারেন! আবার সকাল বেলার বাদশাকে বিকেলে ফকির করে দিতে পারেন।

একটা গ্রামে অনেক বড়লোক একটা বাড়ি ছিল! সেখানে বড়লোকের একটা ছেলে ছিল,, তার নাম ছিল সুলাইমান।

সুলাইমান দেখতে শুনতে খুবই সুদর্শন একজন ব্যক্তি ছিলেন। ঠিক তেমনি তিনি ছিলেন ধর্মাবলম্বী একজন মানুষ! পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ তার ছিল নিত্যদিনের সঙ্গী।

যখন তার বিয়ের বয়স হল চারপাশে ঘটক পাঠানো হলো মেয়ে দেখার জন্য! কিন্তু সুলাইমান পাঁচটা শর্ত দিয়েছেন! যে মেয়ের মধ্যে ওই পাঁচটা শর্ত পরিপূর্ণ থাকবে! সে মেয়েকেই সুলাইমান বিয়ে করবে।

৪-৫ গ্রাম খুঁজেও,,, এমন মেয়ে পাওয়া যায়নি! সুলাইমান এর শর্তগুলো ছিল।

  • প্রথমত মেয়েটা অসম্ভব সুন্দরী হতে হবে!
  • দ্বিতীয়তঃ মেয়েটার বাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে টাকা পয়সা ধন-সম্পত্তি থাকা লাগবে!
  • তৃতীয়তঃ মেয়েটা একজন দ্বীনদার হতে হবে! পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ কালাম পড়ে এমন হতে হবে।
  • চতুর্থ:- মেয়েটা অবশ্যই এক মায়ের একটা মেয়ে হতে হবে।
  • পঞ্চম:- মেয়েটার মধ্যে ঘরের কাজ করা সম্পূর্ণ গুন থাকতে হবে।

এমন মেয়ে খুঁজে পাওয়া খুবই দুঃসাধ্যকর ব্যাপার হয়ে গেল! চারপাশের সবাই জানাজানি হয়ে গেছে। যে সুলাইমান বিয়ে করবে,,, কিন্তু মেয়ে খুঁজে পাচ্ছে না! কারণ তিনি যে শর্ত দিয়েছেন! এই শর্তের মেয়ে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব।

ওই গ্রামেই একটা জেলে বসবাস করত! জেলের একটা মেয়ে ছিল! দেখতে যেমন সুন্দরী তেমনি অসম্ভব গুণের অধিকারী! একজন ধর্মাবলম্বী নারী,,, যে কিনা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো।

সবাই যখন সুলাইমান এর কথা বলাবলি করছিল! তখন মেয়েটা ও শুনত এবং চুপ করে থাকতো! একদিন হঠাৎ করেই সুলাইমান কে তার ভালো লেগে যায়! কিন্তু সে কখনোই সুলাইমান কে দেখেনি! সবার মুখে সুলাইমান এর গুনের কথা শুনে,, সে সুলাইমান এর প্রতি আকৃষ্ট হয়।

কারণ মেয়েটা মনে মনে এমনই একজন মানুষ খুচ্ছিল! তবে মেয়েটার মনে কখনোই লোভ ছিল না! সুলাইমান এর টাকা পয়সার প্রতি তার কোন লোভ ছিল না।

সে একদিন একটা চিঠির মাধ্যমে সুলাইমান এর কাছে নিজের মনের কথা,, এবং নিজের বিয়ের কথা লিখে পাঠায়! সুলাইমান মেয়েটার চিঠি চিড়ে ফেলে দিল! কারণ মেয়েটা একটা জেলের ঘরের মেয়ে ছিল।

মেয়েটা এ কথাটা শুনে অনেক কান্নাকাটি করেছিল! তার বাবা-মা ও তাকে অনেক মারধর করেছিল! এবং বলেছিল এত বড়লোক ছেলের প্রেমে পড়া মোটে উচিত হয়নি! যদিও মেয়েটা সুলাইমানকে কখনোই দেখেনি।

মেয়েটা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তো,, এবং রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে আল্লাহতালার কাছে কান্নাকাটি করত,,, আর বলতো।

হে আল্লাহ তুমি আমাকে বড়লোক বানিয়ে দাও! যাতে আমি সুলাইমান কে বিয়ে করতে পারি! আর নয় তো তুমি সুলইমান কে গরিব বানিয়ে দাও! যাতে সুলাইমান আমাকে বিয়ে করতে পারে।

এর কয়েকদিন পরেই সুলাইমানের বাবা মারা গেল! হঠাৎ করেই সরকারি কোষাগার থেকে চিঠি আসলো! তাদের সকল ধন-সম্পত্তি সরকার নিজেদের দখলে নিয়ে নিয়েছে! সুলাইমান একদম পথে বসে গেল। যেহেতু তার কোন ভাই বা বোন ছিল না! একমাত্র মাকে নিয়ে সে রাস্তায় বসে পড়ল।

একদিন যখন ওই মেয়েটার বাবা নদীতে মাছ ধরতে যাচ্ছে! তখন সুলাইমান মেয়েটার বাবাকে ডেকে বলল!সে ও তার সাথে মাছ ধরতে যেতে চায়।

কিন্তু লোকটা একটু ইতস্ত বোধ করলেন,, কারণ উনি অনেক বড়লোক ঘরের ছেলে! উনি এই কাজ করবে শুনেই উনি অবাক হলেন।

সুলাইমান এর সামনে কোন পথ খোলা ছিল না! তাকে যে কোন কাজ করেই তার মায়ের খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে! তাদের থাকার জন্য একটা ঘর তৈরি করতে হবে।

তখন মেয়েটার বাবা সুলাইমান কে তাদের বাড়িতে নিয়ে গেল! এবং সেখানেই তাদের থাকার ব্যবস্থা করে দিল! এভাবেই প্রতিদিন সুলাইমান মেয়েটার বাবার সাথে নদীতে মাছ ধরতে যেত।

সুলাইমান যবে থেকে মেয়েদের বাবার সাথে মাছ ধরতে যাওয়া শুরু করেছিল! সেই দিন থেকে মেয়েটার বাবা অনেক বেশি বেশি মাছ পাওয়া শুরু করলো! এবং বাজারে বিক্রি করতো এবং পরিবারের সাথে বেশ ভালোভাবে দিন কাটাতে লাগলো।

একদিন মেয়েটার বাবার সুলাইমান কে অনেক পছন্দ করল! কারণ সে দেখতে শুনতে যেমন সুদর্শন,,, তেমনি একজন ধর্মাবলম্বী মানুষ! এমন একটা মানুষের কাছে যদি তিনি তার মেয়েটাকে বিয়ে দিতে পারেন! তাহলে তার জীবনটা সার্থক হবে বলে তিনি মনে করলেন।

যেই ভাবা সেই কাজ! যেহেতু মেয়েটা অসম্ভব সুন্দরী আর সুলাইমান ও সুদর্শন একজন পুরুষ! তাই পরিবারের সম্মতিতে দুজনের বিয়ে হল।

বিয়ের দিন রাতে তাদেরকে যখন এক ঘরে দেয়া হলো! তখন দুজন কথা বলতে বলতে,, সুলাইমান নিজের জীবনের কথাগুলো তার স্ত্রীর কাছে বলে ফেলল।

মেয়েটা তখন হাউমাউ করে কান্না করতে লাগলো! এবং সুলাইমান কে জড়িয়ে ধরে সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করতে লাগলো! এবং সুলাইমানকে সম্পূর্ণ ঘটনা খুলে বলল।

সুলাইমান সাথে সাথে সেজদায় পড়ে গেলেন! এবং সৃষ্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চাইতে লাগলেন।

অহংকার মানুষকে কতটুকু পতনের দিকে তলিয়ে নিয়ে যেতে পারে! এই ঘটনা থেকে আমি অনেক কিছু বুঝতে পেরেছি! অহংকার করা মোটেও ভালো নয়।

অহংকার করা ঠিক নয়! অহংকার পতনের মূল এ জিনিসটা আমরা সবাই জানি,,,, কিন্তু তারপরেও আমরা অহংকার করি।

এই গল্প থেকে আমি যতটুকু শিক্ষা পেয়েছি! ততটুকুই আপনাদের সাথে শেয়ার করছি! কখনোই অহংকার করবেন না! আপনার জীবনে আপনি এখন ভালো একটা অবস্থানে আছেন! আপনার অবস্থানে দাঁড়িয়ে আপনি আরেকজন মানুষকে ধিক্কার দিচ্ছেন।

হয়তোবা এমন একদিন আসবে! সে মানুষটা আপনার জায়গায় দাঁড়িয়ে,,, আপনার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিবে!

আজ আর লিখছি না! সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন! এই কামনাই করছি! গল্পটা কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাতে ভুলবেন না। আল্লাহ হাফেজ!

Sort:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Loading...
 11 months ago 

একটি মানুষের সুন্দর জীবন ধ্বংস হওয়ার মূল কারণ তার অহংকার। অহংকারের কারণেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মানুষ ধনী থেকে গরীব হয়, সুখী থেকে অসুখী হয়।

তাই কোন কিছু নিয়ে বেশি অহংকার করা ঠিক নয়, কোন কিছুই স্থায়ী নয় আমাদের জন্য। আমাদের এই পৃথিবীতে সব কিছুই ক্ষণস্থায়ী আজকে আছে কালকে থাকবে না।

 11 months ago 

আমরা সবাই জেনে আসি যে অহংকার পতনের মূল, মানুষ অহংকার করলে ধনী থেকে গরিব হয়ে যায়, এবং গরিব থেকে ধনী হতে সময় লাগে না। তাই আমাদের অহংকার করা একদমি উচিত নয়।

ধন্যবাদ আপনাকে শিক্ষামূলক একটি পোস্ট আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য।

 11 months ago 

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ,, আমার পোস্ট পড়ে এত সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য!

Coin Marketplace

STEEM 0.22
TRX 0.12
JST 0.029
BTC 65343.70
ETH 3384.20
USDT 1.00
SBD 3.18