"কারেন্ট না থাকা বিগত তিন দিন........."
আমরা যে কোন জিনিসে যখন অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাই। তখন সেখান থেকে বের হয়ে আসতে আমাদের অনেকটা সময় লেগে যায়। বিগত প্রায় তিন দিন আট ঘন্টা আমাদের এখানে কারেন্ট ছিল না। কারেন্ট না থাকার কারণে মনে হয়েছে, আমরা ১৯৯৭ কিংবা ১৯৯৮ সালের সময় পার করছি।
ওই সময়টাতেও গ্রামাঞ্চলে তেমন একটা কারেন্ট ছিল না। কেননা আমার জন্ম যখন হয়েছিল তখন আমি আমাদের বাড়িতে কারেন্ট দেখতে পাইনি। একটু বড় হওয়ার পর আমার মায়ের মুখ থেকে শুনতে পেয়েছিলাম। ১৯৯৭,৯৮,৯৯ এই সময়টাতে মোটামুটি কারেন্ট ছিলই না।
আমি নিজেও কারেন্ট দেখিনি, যখন একটু একটু বড় হতে শুরু করলাম পরেই দেখতে পেলাম, তখন হারিকেন দিয়ে পড়াশোনা করতাম। তখন আমাদের ঘরে বাতি জ্বালানো হতো, যেটাকে আমরা কফি বলে থাকি। এই কফি দিয়ে মা রাতেও রান্না করত আবার রাতে আমরা এই কফি দিয়ে রাতের খাবার খেতাম। গত তিনদিন আমাদের অবস্থা ঠিক তেমনি হয়েছে।
আমার বিগত তো পোস্ট থেকে আপনারা হয়তো বা জেনে থাকবেন যে, আমাদের এখানে বন্যায় প্লাবিত হয়েছিল। কিছুটা পানি শুকিয়ে গিয়েছিল কিন্তু এই তিন দিনের বৃষ্টির কারণে, আরো পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, আগে যতটুকু ছিল তার চাইতে দ্বিগুণ।
দিনের বেলা যেমন তেমনভাবেই কেটে যেত। কিন্তু সন্ধ্যার পর মনে হতো অন্ধকার কোন জঙ্গলে বসবাস করছি। কেননা মোবাইল লাইট কোন কিছুর মধ্যে চার্জ তেমন একটা ছিল না। সৌর বিদ্যুৎ সামান্য একটা চার্জ হত সন্ধ্যায় একটু জানালেই শেষ হয়ে যেত। রাতে খাবার খেতে অনেকটা কষ্ট হয়েছিল, মোমবাতি জ্বালিয়ে খাবার খেতে হতো।
বিগত দিনগুলো খুব কষ্টের মাধ্যমেই কাটাতে হয়েছে। তখন চিন্তা করলাম যে আমরা যখন জন্মগ্রহণ করিনি। যখন কারেন্ট ছিল না তখন মানুষ কতটা কষ্ট করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করত। কত কষ্ট করে রাতের খাবার খেতে হতো, কত কষ্ট করে পড়াশোনা করতে হতো।
রাতের বেলা আমার ছেলেকে যখন পড়তে বললাম, ও আমাকে বলছে অন্ধকারে কিভাবে পড়বে, তখন আমি ওকে মোমবাতি জ্বালিয়ে দিলাম। মোমবাতির আলোয় নাকি ওর বইয়ের পড়া দেখা যাচ্ছে না। তখন আমি ওকে বললাম আমরা যখন পড়াশোনা করেছি, তখন শুধুমাত্র হারিকেন দিয়ে পড়াশোনা করেছি। তাহলে আমরা কিভাবে বইয়ের পড়া গুলো দেখতাম। অনেকটা হেসে আমার কথা উড়িয়ে দিলো বিষয়টা এরকমই।
বর্তমান সময়ে আর অতীতের সাথে আমরা কখনোই মিল খুঁজে পাবো না। আমাদের ছোটবেলা যেরকম ছিল বর্তমান সময়ে যারা বাচ্চা রয়েছে, তাদের ছোটবেলাটা কিন্তু অনেকটাই আধুনিক। তারা অনেক কিছুই পেয়েছে যে বিষয়গুলো থেকে আমরা নিজেরা অনেক বেশি দূরে ছিলাম। গত দিনগুলো খুব কষ্টেই কেটে গিয়েছে, তবে আলহামদুলিল্লাহ আবারও কারেন্ট ফিরে এসেছে। ইনশাআল্লাহ অবশ্যই আবার আপনাদের সাথে প্রতিনিয়ত নিজের লেখা শেয়ার করতে পারব। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।
TEAM 4
Congratulations! Your post has been upvoted through steemcurator06. Good post here should be..আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্ট যাচাই করে এত সুন্দর ভাবে মন্তব্য করার জন্য ভালো থাকবেন।
একদম মানুষ অভ্যাসের দাস যে কাজে অভ্যস্ত হয়ে গেছে সেটা না করলে বা না পেলে অনেক বেশি অশান্তির মধ্যে পড়তে হয়।। শুনে খারাপ লাগলো বৃষ্টির কারণে পানি আবারো দ্বিগুণ বেড়ে গেছে যার ফলে বিদ্যুৎ নেই।। বর্তমান সময়ে বিদ্যুৎ না থাকলে পুরো বাড়ি অন্ধকার মনে হয় আর ঠিকই বলেছেন এই অন্ধকারে জঙ্গলে থাকার অনুভূতি মনে হতে পারে।।
বর্তমানে বাংলাদেশের কারেন্ট যাওয়া পরিমান খুবই বেড়ে গেছে। হঠাৎ করে কারেন্ট চলে যাওয়ার সময় টা খুবই বিরক্তির।এখন আমাদের এখানে কারেন্ট যাওয়ার পরিমাণ একটু কমে গেছে। সুন্দর লেখাটি আমাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।