কঠোর পরিশ্রম ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়ের( প্রথম পর্ব)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম আমার প্রিয় পাঠক ভাই ও বোনেরা কি অবস্থা সবাই কেমন আছেন। আশা করি মহান রব্বুল আলামীনের অশেষ রহমতে আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান রব্বুল আলামীনের অশেষ রহমতে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো আছি।
কঠোর পরিশ্রম ক্ষমতা বাড়ানোর উপায়ের( প্রথম পর্ব)
হ্যাঁ বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের সাথে কঠোর পরিশ্রম ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য। যে সকল উপায় গুলো রয়েছে আজকে আমি সেই সকল উপায় নিয়ে আপনাদের সাথে প্রথম পর্ব আলোচনা করব।
আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই আমরা কঠোর পরিশ্রম দিয়ে অসাধ্যকে সাধন করতে পারি।আমরা হয়তোবা ভালো একজন লেখক হতে পারবো না। কিংবা ভালো একজন কবি কিংবা, বড় কোন মাপের মানুষ হতে পারব না। কিন্তু আমরা আমাদের কঠোর পরিশ্রম দিয়ে আমাদের শীর্ষ লক্ষ্যে পৌঁছে যেতে পারবো।
আপনি আপনার কঠোর পরিশ্রমের দ্বারা এমন একটা জায়গায় গিয়ে পৌঁছাতে পারবেন। যেটা আপনি কখনো কল্পনাও করেননি। আপনি আপনার কঠোর পরিশ্রম দিয়ে এমন অনেক মেধাবী প্রতিভাবান মানুষকে পেছনে রেখে। সেরা সেরাদের দলে গিয়ে পৌঁছাতে পারবেন যদি আপনার লক্ষ্য স্থির থাকে।
আমাদের পৃথিবীতে সবচেয়ে সত্য কথাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় যে, কথা সেটা হলো কঠোর পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি। আপনার লক্ষ্য নির্বাচন করতে হবে।তার সাথে সততা দিয়ে আপনাকে কঠোর পরিশ্রম দিয়ে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে। নিশ্চয়ই আপনি একদিন না একদিন সফল হবেন।
আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা হয়তোবা, আমি যে কথাগুলো বলেছি তার চেয়েও অনেক বেশি কিছুই আপনারা জানে। কিন্তু তারপরেও তারা জীবনে একজন কঠোর পরিশ্রমী সফল ব্যক্তি হয়ে উঠতে পারেনা। শুধু মাত্র আপনি দেহের শক্তিশালী হলেই আপনাকে চলবে না। আপনাকে এর সাথে অনেক কিছু যুক্ত করতে হবে।
একজন কঠোর পরিশ্রমী হওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই দেহের শক্তি থাকতে হবে। কিন্তু তার সাথে আপনার মানসিক শক্তিও থাকতে হবে। এবং তার সাথে আপনার জীবনে কিছু নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে।
আর তাই আজকে আমি আপনাকে সেই বিষয়গুলো নিয়ে বলবো। যে বিষয়গুলো আপনি জানলে আপনাকে আর কঠোর পরিশ্রম করার ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় নিয়ে, চিন্তা করতে হবে না। আপনার কঠোর পরিশ্রম আপনি ঠিক কোন জায়গা থেকে করবেন। আপনি নিজে থেকেই বুঝতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক সেই উপায় গুলো কি কি?
০১- একটানা অনেকক্ষণ কাজ করবেন না
আমরা সকলেই বোর হওয়া বা একঘেয়েমি এ বিষয়টা সম্পর্কে জানে। একটা জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখবেন, আমরা যখন কোন একটা কাজে প্রতি, অনেকক্ষণ যাবত মনোযোগ দেই। তখন সে কাজের প্রতি আমাদের মনোযোগ থাকে না। আমরা একঘেয়েমি হয়ে বিরক্ত হয়ে যাই, বিরক্ত বোধ করি ওই কাজের প্রতি।
মানুষের মন বলুন আর মস্তিষ্ক বলুন এটা এমন একটা জিনিস, যার সামনে একটা জিনিস অনেকক্ষণ থাকলে। সেটা বিরক্ত বোধ করে, এটা সামনে কিছুক্ষণ পরপর কিছু জিনিসের পরিবর্তন ঘটতে হয়।
যদি আপনি নিজে থেকে কিছু জিনিসের পরিবর্তন না ঘটান। তাহলে সে নিজেই কাল্পনিকভাবে সেই জিনিসের পরিবর্তন ঘটানোর, চেষ্টা করে অথবা সে ঘুমাতে চায়। আপনার অবশ্যই খেয়াল করে দেখবেন। আমরা যখন অনেকক্ষণ একটা বিষয় নিয়ে কাজ করি। তখন আমরা হঠাৎ করেই, কোন একটা কল্পনার জগতে চলে যাই ।অথবা হঠাৎ করে, ক্লান্ত হয়ে ওই জায়গায় ঘুমিয়ে পড়ি।
এই কথাটা অবশ্যই মনে রাখবেন, কঠোর পরিশ্রম করার ক্ষেত্রে এটা সবচাইতে বড় একটা বাধা
ইংরেজিতে "attention span" বলে একটা কথা আছে।যার সোজা বাংলা ভাষায় বলতে গেলে, একটানা মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা। এই কাজটা আসলে কোন ব্যক্তিই পারে না। একটানা কোন যা কাজের প্রতি মনোযোগ কেউই ধরে রাখতে পারে না।
তবে আপনাকে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করার জন্য একটানা কাজের প্রতি মনোযোগ ধরে রাখার শক্তি অর্জন করতে হবে।
০২ আপনার কাছে যে কাজ অনেক বড় মনে হয় সে কাজকে আপনি আপনার অনুযায়ী ছোট ছোট করে ভাগ করে নিন।
- আমরা যখন কোন বড় কাজ করতে যাই বা কোন বড় কাজ করার চেষ্টা করি।তখন আমাদের মস্তিষ্কে সেটাকে বারবার বাধা দেবে। আমরা যখন মস্তিষ্কের বিরুদ্ধে গিয়ে আমাদের ইচ্ছা অনুযায়ী কোন বড় কাজ করার চেষ্টা করি। তখন কিন্তু মস্তিষ্কেও বারবার মেসেজ পাঠায় যে তারা এখন বিশ্রামের প্রয়োজন।
একটা সময় দেখা যায় আমরা না চাইলেও আমাদের কিছুক্ষণ পর বিশ্রাম নিতে হয়। কারণ আমাদের মস্তিষ্কের বিশ্রামের প্রয়োজন। আর সে ক্ষেত্রে আমরা কঠোর পরিশ্রম করার সময় অনেকটা বাধা বিঘ্ন ঘটে।
এখন আপনার ঠিক কি করা উচিত আপনি যেটা করবেন। আপনার যেকোনো বড় কাজকে আপনি ছোট ছোট করে ভাগ করবেন। সেটা আপনার মস্তিষ্ক কল্পনার বিকাশ ঘটে।
আমাদের মস্তিষ্ক এবং কাল্পনিক এবং বাস্তবতার ঘটনার মধ্যে কিন্তু একই প্রক্রিয়ার ঘটে। যেমন আমরা অনেক সময় দেখা যায় কাজ করতে করতে কোন একটা হাস্যকর কথা, আমাদের মনে পড়ে যায় হঠাৎ করেই আমরা হেসে ফেলি।আবার অনেক সময় দেখা যায় কোন একটা কষ্টের কথা। আমাদের মনে পড়ে যায়, যার কারণে হঠাৎ করেই আমাদের মনটা খারাপ হয়ে যায়।
ধরুন আপনার হাতে অনেক বড় একটা প্রজেক্ট এর কাজ চলে এসেছে। এখন আপনাকে কাজটা খুবই মনোযোগ সহকারে সম্পন্ন করতে হবে। তার জন্য আপনাকে প্রথম অবস্থায়, কাজটাকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে নিতে হবে।
ধরুন আপনাকে কোন একটা বিষয়ের উপরে অন্ততপক্ষে 50 পৃষ্ঠার একটা বই তৈরি করতে হবে। আপনি প্রথম অবস্থায় যেটা মনে করবেন। আপনার মাথা থেকে আপনি 50 পৃষ্ঠায় ঝেড়ে ফেলে দিবেন। তার পরে আপনি প্রথমে চিন্তা করবেন। আপনি প্রথম দশ পৃষ্ঠায় কি লেখা যায়।এটা নিয়ে আগে ভাববেন এবং মনোযোগ সহকারে, সেই লেখাটুকু সম্পূর্ণ করবেন।
আপনি যদি সম্পূর্ণ বই অর্থাৎ ৫০ পৃষ্ঠা একই সাথে লেখার সিদ্ধান্ত নেন। বা ওই বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন। তখন কিন্তু আপনার মস্তিষ্কের উপর গিয়ে, খুবই বড় একটা আঘাত হানবে। যার ফলে আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে ঘুম পাড়িয়ে দেবে।
আর তাই আমি আপনাকে বলব আপনি ওই বড় বইটা যদি খুব মনোযোগ সহকারে সম্পন্ন করতে চান। তাহলে আপনাকে প্রথমে প্রথম দশ পৃষ্ঠা লিখে শেষ করতে হবে। এরপরে বাকি ১০ পৃষ্ঠায় কি লিখবেন, তা নিয়ে চিন্তা করবেন। এরপরে বাকি দশ পৃষ্ঠা দশ পৃষ্ঠা করে কি লিখবেন, তা নিয়ে চিন্তা করবেন। এইভাবে ক্রমান্বয়ে করে যখন আপনি ছোট ছোট করে, আপনার কাজটাকে সম্পূর্ণ করবেন। তখন দেখবেন আপনার সম্পূর্ণ বড় কাজটা একেবারে, অল্প সময়ের মধ্যে অনেক পরিশ্রম কম করে আপনি সম্পূর্ণ করতে পারবেন।
- আপনি আপনার বড় কাজটাকে একটু মাথা ঘাটিয়ে বুদ্ধি বের করে ছোট ছোট কাজে পরিণত করে। আপনার বড় কাজটাকে সম্পন্ন করতে পারবেন। এতে করে যেমন আপনার সময় বেঁচে যাবে।আপনার মস্তিষ্কের উপর তেমন একটা চাপ পড়বে না।এবং আপনার পরিশ্রম ক্ষমতাও বৃদ্ধি পাবে।
- আজ এই পর্যন্ত, আগামীকাল আমি আবারো আপনাদের সামনে। কঠোর পরিশ্রম ক্ষমতা বাড়ানোর উপায় এর দ্বিতীয় পর্ব, নিয়ে হাজির হয়ে যাব আপনাদের মাঝে।
আর সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।নিরাপদে থাকুন এবং মহান রব্বুল আলামীনের কাছে দোয়া করি। তিনি যেন আপনাদের সবাইকে সুস্থ রাখে। এই কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিলাম। আসসালামুয়ালাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ.
We support quality posts anywhere and any tags.
Curated by : @lhorgic