"অভিশাপ......."
আমি মনে করি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা যতটুকু ধন-সম্পদের মালিক হয়েছি, তা একমাত্র আল্লাহর রহমতে ই হয়েছি। আল্লাহ যদি না চাইতো তাহলে আমরা কখনোই ধন-সম্পদ কোন কিছুর মালিক হতাম না। আমরা বাড়ি ঘর তৈরি করে ভালোভাবে থাকি, এটা বেশ ভালো, কিন্তু আমরা অনেকেই আছি গরীব দুঃখী মানুষদের কে সাহায্য সহযোগিতা করতে চাই না। এটা করা কি মোটেও ঠিক।
সময়ের সাথে যেমন আমাদের জীবনের পরিবর্তন ঘটে।ঠিক তেমনি গরীব দুঃখী মানুষদের কে সাহায্য করলে আমরাও ভালো থাকতে পারি, এটা আমি বিশ্বাস করি। আল্লাহ তাআলা আপনাকে যতটুকু দিয়েছেন তার মধ্যে সন্তুষ্টি থেকে, অবশ্যই প্রত্যেকটা মানুষকে আপনার সমর্থ অনুযায়ী সাহায্য করার চেষ্টা করবেন।
একটা গ্রামের অনেক বড় একজন কৃষক ছিলেন। যার প্রচুর পরিমাণে জমি জমা ধন-সম্পত্তি ছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো তিনি প্রতিনিয়ত যে মানুষ গুলোকে তার জমিতে কাজ করতে নিতেন, তাদেরকে সঠিকভাবে তাদের ন্যায্য পারিশ্রমিক দিতেন না। তিনি ছিলেন নিষ্ঠুর প্রকৃতির এবং কৃপণ প্রকৃতির একজন মানুষ।
তিনি মানুষদেরকে সঠিক পরিশ্রম এর মূল্যায়ন যেমন করত না। ঠিক তেমনি তাদেরকে প্রতিনিয়ত অত্যাচার করত। তার এই অত্যাচার গ্রামের মানুষ সহ্য করতে পারত না এবং তাকে পছন্দ করত না। কিন্তু তার ধন-সম্পদ টাকা-পয়সা আছে এই ভয়ে মানুষ তাকে কোন কিছুই বলত না। সে যেমন বলতো মানুষ তার সাথে তেমন ভাবেই আচরণ করতো, এবং তার কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করে দেয়ার চেষ্টা করত।
একদিন একজন বৃদ্ধ দরিদ্র লোক ঐ লোকের কাছে সাহায্য চাইতে এলেন এবং তাকে বললেন। আমাকে সামান্য পরিমাণে খাদ্য এবং কিছু অর্থ প্রদান করুন। আমার পরিবারের প্রচুর পরিমাণে খাদ্যের অভাব। তখন ঐ বড়লোক নিষেধ করে দিলেন, এবং ওই বৃদ্ধ লোকটাকে তিরস্কার করে বাড়ি থেকে বের করে দিলেন এবং হাসাহাসি করলেন তার এই দরিদ্রতা নিয়ে।
এরপর বৃদ্ধ লোক ওই ধনী লোকের ব্যবহারে অনেক বেশি কষ্ট পেলেন, মনে কষ্ট নিয়ে বিদায় নেয়ার সময় তিনি ওই ধনী লোকটাকে বললেন। আল্লাহ তোমার বিচার করবে। তখন ওই ধনী কৃষক অনেক বেশি হাসাহাসি করলেন এবং বললেন। আমার এত ধন সম্পত্তি রয়েছে আল্লাহ কি আমার করতে পারবে।
কিছুদিনের মধ্যেই ওই গ্রামের মধ্যে খরা সৃষ্টি হলো। অনেক পরিশ্রম এবং অনেক কষ্ট করার পরেও তার জমি থেকে তেমন কোন ফসল উৎপাদন করা যেত না। ধীরে ধীরে তার ধন-সম্পদ সবকিছু শেষ হতে লাগলো। একটা সময় লোকটা রাস্তায় এসে পড়ল এবং ভিক্ষা করার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছাতে লাগলো। মানুষ তাকে সাহায্য করতে চাইলেও তার আগের আচরণের কথা, তাদের মনে পড়লে কেউ তাকে সাহায্য করত না।
এভাবে বেশ কয়েক বছর কেটে গেল এবং শেষ পর্যন্ত সেই কৃষক বুঝতে পারল। তার ধন-সম্পদ টাকা-পয়সা সবকিছু একমাত্র আল্লাহ তাআলার দান ছিল। ঐদিন ওই বৃদ্ধ মানুষটাকে একটু সাহায্য করতেন, তাহলে হয়তোবা আজকে তার এই দিন দেখতে হতো না। এরপর তিনি প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে লাগলেন এবং সেজদায় পড়ে থাকতেন। একটা সময় আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দিলেন এবং তিনি নিজের ভুল বুঝতে পারলেন। আবার আগের মত করে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে লাগলেন।
এখান থেকে অবশ্যই আমাদের প্রত্যেকের শিক্ষা নেয়া উচিত। আমাদের যতটুকু আছে তার থেকে অবশ্যই গরীব দুঃখী মানুষদেরকে সাহায্য করা উচিত। এতে আল্লাহ যেমন খুশি হয় এবং আমাদের ধন-সম্পত্তি দিন দিন বৃদ্ধি পায়। সবার সুস্থতা কামনা করে আজকের মত এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।