আত্মহত্যা হত্যার সামীল
আসসালামু আলাইকুম/আদাব,
কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে ভালোই আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে “আত্মহত্যা হত্যার সামীল” শীর্ষক আমার একটি লিখনি উপস্থাপন করলাম। তাহলে শুরু করা যাকঃ-
আত্মহত্যা যেমন চরম পাপ ঠিক তেমনি জীব হত্যাও চরম পাপ। প্রতিটি ধর্মেই আত্মহত্যা ও জীবহত্যার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। কিন্তু আমরা জেনে শুনেও প্রতিনিয়ত জীব হত্যা করছি এবং কেউ না কেউ আত্মহত্যার মতো জঘন্য পথ বেঁচে নিচ্ছি। এর শেষ আসলে কোথায়?
একটি উদাহরণ দেয়া যাক। একটি মা পাখি তার বাচ্চাদের জন্য প্রতিদিনের ন্যায় খাবার সংগ্রহ করার জন্য বেরিয়েছিলো। বাচ্চাগুলো ছিলো খুব ছোট। সদ্যজাত বাচ্চাগুলো অনেকক্ষণ অপেক্ষা করছে মায়ের জন্য। কিন্তু মা তো আসে না। এদিকে খুদায় কাতর সব বাচ্চাগুলো।
সারাদিন এমনি করেই কেটে যায়। তারপর সন্ধ্যা আসে আসে রাত। রাত পোহায় সকাল হয়, কিন্তু মা আসে না। বাচ্চাগুলো না খেতে পেয়ে খুদার যন্ত্রনায় ধুকতে ধুকতে এবং মা মা বলে চিৎকার করতে করতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। তার মা আর আসে না। জানি কোনদিন আসবেও না।
কেন আসে না মা বলুন তো? মা তো কখনো তার বাচ্চাকে ছাড়া থাকতে পারে না। বলা যায় হয়তো ওই মা পাখিটার মৃত্যু হয়েছে। যে কোন ভাবেই মৃত্যু হতে পারে। ধরে নিলাম কোন শিকারির হাতে সে শিকার হয়েছে। যে এই পাখিটাকে শিকার করলো সে কি শুধু মা পাখিকেই হত্যা করলো, না সাথে সাথে তার ছোট বাচ্চাগুলোকেও হত্যা করলো।
কিংবা যে জীবকে হত্যা করলাম তার পরিবার কী নিয়ে বাঁচবে। হয়তো তার বাচ্চাগুলো পথ চেয়ে বসে আছে কখন আসবে মা খাবার নিয়ে।
আমাদের একটা কথা সবসময় মনে রাখা উচিত, মৃত্যু যে শুধু জাগতিক তা কিন্তু নয়। বরং সমাজে মানসিক মৃত্যুর হার তার থেকে বহুগুণ বেশি। একটু ভেবে দেখলে বুজতে বাকি থাকবে না যে আমরা প্রত্যেকেই একে অপরের সাথে সংযুক্ত বা নির্ভরশীল। কাউকে ছাড়া কেউ কখনো এই মহাবিশ্বে চলতে পারে না।
একটু খেয়াল করলে দেখা যায় যে আপনি আপনার বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয় স্বজন, প্রতিবেশি, বন্ধু কিংবা কাছের কোন মানুষ তাদের কাছ থেকে কোন না কোন দিন কিছু না কিছু দান হিসেবে গ্রহণ করেছেন। আর বলতে গেলে সে কারনেই তাদের প্রত্যেকেরই অধীকার আছে আপনার উপর।
আর আপনারও কিছু দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে তাদের প্রত্যেকের প্রতি। আর যদি সেই দায়িত্ব বা কর্তব্য পালন না করেই আপনি আত্মহত্যার পথ বেঁচে নেন তাহলে তারা কখনোই আপনাকে ক্ষমা করবে না। আর তারা ক্ষমা না করলে সৃষ্টিকর্তাও আপনাকে ক্ষমা করবেন না।
একজন আত্মহত্যাকারী, যে নিজেকে হত্যা করতে পারে সেতো সুযোগ পেলে তার প্রিয়জনকেও হত্যা করতে পিচপা হবে না। একটি অপ্রয়োজনীয় হত্যা যেমন জবাবদিহিতার ঊর্ধে নয় ঠিক তেমনি আত্মহত্যাও।
আত্মহত্যাকে হত্যা ব্যতীত আর অন্য কিছু বলার অবকাশ আছে বলে আমি মনে করি না। তাই নিঃসন্দেহে একজন আত্মহত্যাকারীর পরিচয় হত্যাকারি ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।
আমরা সকলেই জানি একটি দূর্ঘটনা সারাজীবনের কান্না। তাহলে একটি আত্মহত্যা কী হতে পারে একটু ভেবে দেখুন তো। যে আত্মহত্যা করে বা কাউকে হত্যা করে সে তো ভাবে আমি মরে গিয়ে বা কাউকে মেরে বেঁচেই তো গেলাম। কিন্তু সে তো জানে না তার মৃত্যুর পর স্বজনদের সাথে কী কী হয়।
সে তো মরে বেঁচেই গেলো কিন্তু স্বজনরা দিনের পর দিনে না মরে বেঁচে থাকে। পালটে যায় বেঁচে থাকা মানুষগুলোর জীবনে গতিপথ। সেপথ হয়তো বিভীষিকাময়, কাঁটায় ভরা ও অনেক ভয়ংকর। এভাবে চলতে চলতে ধ্বংস হয়ে যায় অনেক জীবন, সেই ওই পাখির বাচ্চাদের মতো।
কারো জৈবিক মৃত্যু হয় কারোবা মানসিক। এর দায় আসলে কার। পুরোপুরি ঐ আত্মহত্যাকারীর কিংবা হত্যাকারি ব্যক্তির।
সৃষ্টিকর্তা আমাদের প্রত্যেককে সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চই তিনি কোন মহান উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের সৃষ্টি করেছেন। কারণ প্রত্যেক সৃষ্টির পেছনেই মহান সৃষ্টিকর্তার কোন না কোন কারণ লুকায়িত থাকে।
একবার নিজেকে প্রশ্ন করে দেখা দরকার আমি কেন সৃষ্টি হলাম। স্রষ্টার ইচ্ছে পূরণে আমি কতটুকু নিজেকে বিলিয়ে দিতে পেরেছি। এই পৃথিবী ছেড়ে তো আমাকে আবার সেই স্রষ্টার নিকটেই ফেরত যেতে হবে। তখন তিনি যদি আমাকে এই প্রশ্নগুলো করেন তখন আমি কি বা জবাব দিবো।
আজ আর নয়। ভালো থাকবেন বন্ধুরা।
আত্মহত্যা মহাপাপ এটা আমরা সবাই জানি,,, কিন্তু তারপরেও আমাদের মধ্যে এমন কিছু মানুষ আছে যারা ডিপ্রেশনের মধ্যে গিয়ে নিজেদের জীবনটা শেষ করে দেয়, আজকে আপনি আপনার পোস্টে খুব সুন্দর ভাবে উল্লেখ করেছেন! আমাদের জীবনের সাথে জড়িয়ে থাকে,,,, আমাদের পরিবার আমাদের আপনজন।
আমরা হয়তোবা ডিপ্রেশনে গিয়ে আত্মহত্যা করে ফেলি! কিন্তু আমাদের পরিবারের উপর আমাদের যে দায়িত্ব বা কর্তব্য থাকে! সেটা সঠিকভাবে পালন না করে নিজেকে শেষ করে দেই! এতে করে হয়তোবা আমাদের পরিবার অনেক বড় বিপদের সম্মুখীন হয়।
সমস্যা আছে সেটা সমাধানের চেষ্টা আমাদের প্রত্যেককে করতে হবে চেষ্টা করতে হবে! নিজেকে ঠিক রেখে পরিবারের পাশে দাঁড়ানো! অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা টপিক আমাদের সাথে আলোচনা করার জন্য! আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল! ভালো থাকবেন।