বন্ধুদের নিয়ে কিছু ঘটনা ও আমার ব্যক্তিগত জীবন
কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে ভালোই আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে “বন্ধুদের নিয়ে কিছু ঘটনা ও আমার ব্যক্তিগত জীবন” শীর্ষক আমার একটি লিখনি উপস্থাপন করলাম। তাহলে শুরু করা যাকঃ-
বন্ধু। কথাটি জীবনে কতবার উচ্চারণ করেছি বলতে পারবেন। জানি পারবেন না, আমিও পারবো না। বন্ধু কথাটির সাথে আমরা এমন কেউ নেই যে পরিচিত নই। সবার জীবনেই বন্ধু নামক কিছু ব্যক্তির স্থান হয় আর বন্ধুরা সবসময় আপনই হয়।
বন্ধুদের নিয়ে এরকম কিছু মজার ঘটনা আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স করেছি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন অনেক বন্ধুর সান্যিধ্য পেয়েছি। সবার মধ্যে নতুন কিছু চরিত্র আবিষ্কার করেছি।
বিভিন্ন উপজেলার মানুষের চলন বলন ইত্যাদি বন্ধুদের কাছ থেকে জেনেছি। আমাদের ক্লাসে মোট দুইশত পঞ্চাশ জন ছাত্র ছিলো। এদের মধ্যে আশি ভাগই মেসে থাকতো। আমি যেহেতু স্থানীয় ছিলাম সেহেতু আমার মেসে থাকার কোন প্রয়োজন পরেনি।
কিন্তু আমার যাদের সাথে বন্ধুত্ব হয়েছিলো বেশ ভালো তারা সকলেই মেসে থাকতো। মেসে থাকার কারণে আমিও কারণে অকারণে তাদের সাথে গিয়ে মেসে সময় কাটিয়ে আসতাম। মেসে বিভিন্ন অঞ্চলের ছেলেপেলে থাকতো।
প্রত্যেকেই আলাদা আলাদা চরিত্রের অধিকারী। তাদের সাথে আমি মিশে অনেক কিছুই শিখেছিলাম।
চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় কত যে আনন্দ করতাম তা বলে বোঝাতে পারবো না। চা খাওয়া শেষে বিল দেয়ার সময় বিপত্তি বেজে যেত। কেউ বিল দিতে চাইতো না। সবাই সবার মুখের দিকে তাকাতো। অনেকে পকেট বের করেও দেখাতো যে দেখ আমার কাছে কোন টাকা নেই।
একদিন একটি বন্ধু এমনটি করেছিলো পরে আমরা সবাই মিলে তাকে চেক করা শুরু করি। দেখি সে তার গোপন পকেটে চকচকা দুটো পাঁচশত টাকার নোট সযত্নে লুকিয়ে রেখেছে। পরবর্তীতে সে বাধ্য হয়েছিলো বিল দিতে। এমন মজার সব সৃতি রয়েছে চা খাওয়া ঘিরে।
সবাই সবার সাথে অনেক ফ্রি ছিলাম। যাদের গার্লফ্রেন্ড ছিলো তাদের কাছ থেকে আমরা বেশি বেশি বিল দাবি করতাম। এমনো হতো যে যেদিন যার গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে যাবে সেদিন করে তাকে সব বিল চুকাতে হবে। এই শর্তে যেকেউ রাজি হতো।
কেননা সবাই মোটামুটি প্রেম করতো। একদিন নিজের পকেটের টাকা গেলে অন্যদিন আরেকজনের কাছ থেকে ডাবল খাওয়া আদায় করতো।
ছাত্র জীবনে কৃপনতা কোন দোষ নয়। কারণ যারা মেসে থাকত তাদের টাকা হিসাব করেই চলতে হতো। পরিবার থেকে হিসাবে বেশি তাদের টাকা দেয়া হতো না। তারপরও অনেক বন্ধু হিসাবের টাকা থেকেও টাকা বাছিয়ে সবাইকে খাওয়াতো, আড্ডা দিতো।
এখন মোটামুটি সবাই টাকাওয়ালা হয়েছে, চায়ের বিল দিতে গেলে হয়তো কেউ কারো মুখের দিকে তাকিয়ে থাকবে না। কিন্তু সব বন্ধুগুলা কী একসাথে হতে পারবো। জানি পারবো না।
কারন সবাই সবার জীবন নিয়ে ব্যস্ত, পরিবার নিয়ে ব্যস্ত, চাকুরি, ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ত। চাইলেও আর সেই সময়ে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। এখন সেসব কিছুই সৃতি।
আমি নিজেও ব্যক্তিগত ভাবে অনেক ব্যস্ত। অনেক বন্ধু আমার সাথে যোগাযোগ করে কিন্ত আমি তাদের সময় দিতে পারি না। কেউ কেউ এলাকায় এসে দেখা করে কিন্তু পর্যাপ্ত আড্ডা তাদের সাথে দেয়া হয় না।
আমার ব্যস্ততা আমার কর্মক্ষেত্রকে ঘীরে। ছাত্র জীবনের কথা মনে পরলে এখনো চোখে জ্বল ছলছল করে। যাইহোক আমার বর্তমান জীবন নিয়েও কোন আফসোস নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটি ব্যাংক এর এজেন্ট চালাই। সাথে আরো দুজন সহকর্মী রয়েছে।
সকাল দশটায় আসি রাত দশটায় হিসাব ক্লোজ করে চলে যাই। দুপুরে অবশ্য বাসায় গিয়ে খেয়ে আসতে পারি। শত ব্যস্ততার মাঝেও সবাইকে সময় দেয়ার চেষ্টা করি। কমিউনিটিতেও একটু করে সময় দেই। কমিউনিটিতে তেমন সময় দিতে পারি না জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
সপ্তাহে একদিন অর্থ্যাৎ শুক্রবার সময় পাই, সেদিন আবার পরিবারের যাবতীয় কাজ এবং সবাইকে সময় দেয়া সব মিলিয়ে দিনটি কীভাবে কেটে যায় টেরই পাই না। আমাকে যেহেতু প্রতিদিন পাঁচশত থেকে সাতশত মানুষকে ব্যাংকিং সেবা দিতে হয়।
তাই শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল দশটা থেকে রাত নটা পর্যন্ত থাকতে হয়। পরবর্তী এক ঘন্টা হিসাব মেলানোর কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে হয়।
যাইহোক ব্যক্তিগত কিছু কথা আজকে শেয়ার করলাম। বন্ধুত্বের মাঝে আসলে ব্যস্ততা কোন বাধা নয়। তাই আমি যতই ব্যস্ত থাকিনা কেন বন্ধুদের সময় দেবার চেষ্টা করি। তাদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করি। কেননা দিনশেষে বন্ধুই বন্ধুর জন্য।
আজ আর নয় বন্ধুরা, ভালো থাকবেন সবাই।
ছাত্র জীবন তথা মেসের জীবন এসব স্মৃতি কখনো ভোলার নয়। আমি নিজে কখনো মেসে থাকি নি কিন্তু বাড়ি থেকে দূরে আমার এক বন্ধুর মাসির বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়ে আমি তিন বছরের কলেজ জীবন কাটিয়েছি। কলেজের লাগোয়া মেসগুলোতে আমার খুব যাতায়াত ছিল আর দেখতাম ওরা পড়াশোনার পাশাপাশি জীবনটাকে কি সুন্দর এনজয় করছে। দেখে একটু আধটু হিংসেও হতো যে আমি মেসে থাকতে পারছি না। তখন যেহেতু মোবাইল ফোন ছিল না তাই কলেজ ছাড়ার পর ওদের সাথে সম্পর্ক প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। পরে ফেসবুকে বেশ কিছু কলেজের বন্ধুদের সঙ্গে আবার যোগাযোগ স্থাপন করতে সমর্থ্য হই।
আপনার বন্ধু গল্পটা বললাম বেশ কিছু ঘটনা উল্লেখ করেছেন। আসলে ছাত্র জীবনে কৃপনতা করতে হয়। এটা নিজেকে বাধ্য হয়ে করতে হয়। যেমন ঘর থেকে টাকা হিসাব করে দিয় তেমনি নিজের আবার টেনে হিসাব করে চলতে হয়। এই পোস্টে আপনার বাস্তবতা কিছু তুলে ধরেছেন জেনে খুব ভালো লাগলো থ্যাঙ্ক ইউ।
সত্যিই বন্ধুদের সাথে কাটানো দিন গুলি অনেক মিস করি। আমার এখন ও অনেক বন্ধু আছে কিন্তু তারা সবাই আগের বন্ধুদের মত হতে পারবে না কারণ ছোট বেলার বন্ধু হলো সব থেকে বেস্ট।আর চা খাওয়ার সময় টা সব থেকে বেশি ভালো ছিল কে টাকা দিবে তা নিয়ে কত খুনসুটি হতো। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর পরিবার ও নিজের খেয়াল রাখবেন।
আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন বন্ধুদের নিয়ে কিছু কথা ও আপনার ব্যক্তিগত জীবন। আমাদের জীবনে কমবেশি সবারই বন্ধু আছে। স্কুল লাইফ থেকে শুরু করে কলেজ জীবন চাকরির ক্ষেত্রে সবারই বন্ধ থাকে। বন্ধু মানে সুখ দুঃখ কষ্ট সব কথা ভাগাভাগি করে নেয়া যায়। কিন্তু একটা সময়ে আসে যে যার জীবন নিয়ে কর্মজীবন নিয়ে সংসার নিয়ে সবাই বেঁচে থাকে। বন্ধু আবার দুই প্রকার, একজন প্রয়োজনীয় বন্ধু একজন বিপদের বন্ধু। অসংখ্য ধন্যবাদ
আপনার বন্ধুদের গল্প পড়লাম। বেশ কিছু ঘটনার ব্যাখ্যা আপনি নিজেই দিয়ে দিয়েছেন। আসলেই ছাত্র জীবনে কৃপণতা করতে হয়। এটা অনেকটা বাধ্য হয়ে সবাই করে কারণ সবার
হাতে পর্যাপ্ত টাকা থাকে না। তবে আপনার সেই সব বন্ধুরা আজ সবাই সচ্ছল ও ভালো আছে নিশ্চয়ই। আপনি আপনার ব্যস্ততার কথা লিখেছেন। সব মিলিয়ে আপনার লেখাটা আমার কাছে চমৎকার লেগেছে।
বন্ধু এই শব্দটা যত ছোট এর বিশ্লেষণ করতে গেলে অনেক বড়। আপনি ঠিকই বলেছেন ছাত্র জীবনটা অনেক বেশি সুন্দর। আজকে আপনার পোস্ট পরিদর্শন করতে গিয়ে আমার ছাত্র জীবনের কথা মনে পড়ে গেল। আমরা তো মেয়েরা ছিলাম টক বেশি পছন্দ করতাম। সবাই চেষ্টা করতাম যে যার বাড়ি থেকে সাধ্যমত টক নিয়ে আসার জন্য। আর যখন গ্রীষ্মকাল ছিল বা থাকতো। তখন আমরা সবাই বাড়ি থেকে আম নিয়ে যেতাম। তার সাথে ঝাল ঝাল মরিচের গুড়া আর হচ্ছে লবণ। বেশিরভাগ ঝাল মুড়ি খাওয়া অনেক বেশি পছন্দ করতাম। আপনাদের মত চা খেতাম না। যেদিন যাকে ধরতাম সেদিন তার থেকে সব রকমের সবকিছু আদায় করে নিতাম। ঝালমুড়ি ফুচকা চটপটি একসাথে। আপনার জীবনের সাথে এবং আপনার বন্ধুদের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো, আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
বন্ধু জীবনের একটি পার্ট।। বন্ধুদের সাথে জীবনের অনেক ঘটনায় লুকিয়ে থাকে।। আপনি মাসে থাকেননি কিন্তু মেসে বন্ধুদের সাথে আপনার অনেক ওঠা বসা হয়েছে বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের সাথে।।
আর আপনার বন্ধুর গল্প করে বেশ ভালো লাগলো।। আর হ্যাঁ সব বন্ধুর আচার ব্যবহার মন মানসিকতা একরকম হয় না।। আমিও জীবনে অনেক বন্ধুদের সাথে ওঠাবসা করেছি।। জীবনে সব বন্ধু কিন্তু নেয় আবার কিছু কিছু বন্ধু রয়ে গেছে।। ধন্যবাদ বন্ধুত্ব নিয়ে এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।
ভাইজান বন্ধুত্ব ওই ছাত্রজীবন পর্যন্তই সুন্দর থাকে একটা ভালোবাসা থাকে বন্ধুত্বের প্রতি। কিন্তু যখন জীবনের তাগিদে সবাই আলাদা হয়ে যায় তখন আর বন্ধুত্ব এতো গভীর থাকে না শুধ ফোনে যোগাযোগ হয় অথবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কথা হয়। বন্ধুত্ব নিয়ে মানুষের কত স্মৃতি থাকে। মানুষ এক সময় অনেক পয়সাওয়ালা হয়ে যায় কত কিছু করতে পারে কিন্তু আগের সেই বন্ধুদের সাথে সবাই একসাথ হতে পারে না। ধন্যবাদ ভাই আপনারা বন্ধুত্বের কিছু সুন্দর স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
জীবন একটা সময়ে যান্ত্রিক হয়ে যায়।তবুও চেষ্টা করতে হবে এর ভিতর যেন আমাদের বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা হয়।স্কুল জীবনের বন্ধুরা সারা জীবন সাথে থাকে।আবার কলেজ লাইফের বন্ধুরাও বেশ ভালো হয়েছে আমার।
ভালো লাগল পোস্টটি পড়ে,ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন।