“মাথার চুল নিয়ে ব্যক্তিগত কিছু অভিমত”
আসসালামু আলাইকুম/আদাব,
কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে ভালোই আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে “মাথার চুল নিয়ে ব্যক্তিগত কিছু অভিমত” শীর্ষক আমার একটি লিখনি উপস্থাপন করলাম। তাহলে শুরু করা যাকঃ-
আজ আমি আপনাদের মাঝে বেশ মজার একটি অভিজ্ঞতা তুলে ধরবো। আমার একজন চাচা আছে যার মাথায় কিন্তু চুল কম। দাদির কাছে শুনেছি জন্মগ্রহণ করার পর থেকেই নাকি তার মাথার চুল পরতে শুরু করে। চুল পরা ঠেকাতে ঘন ঘন চাচাকে ন্যাড়া করে দিতো। ন্যাড়া করলে নাকি মাথায় চুল অনেক ঘণ হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
একটা মজার বিষয় হলো যাদের মাথায় চুল কম তারা কিন্তু পকেটে সবসময় চিরুনি রাখে। কারণ তারা চুলের মর্ম বোঝে। তাই চুল সবসময় গোছালো রাখে। রাস্তা দিয়ে চলার সময় ধূলো বালি এড়িয়ে চলে। একটি চুলেরও যেন কোনভাবে ক্ষতি না হয় সেই চিন্তা মাথায় নিয়ে চলাচল করে।
একবার একজন একটি দোকানে চিরুনি কিনতে গিয়েছিলো। লোকটি কিন্তু বেশ কিপ্টে স্বভাবের ছিলো এবং লোকটির মাথায় চুল কম ছিলো। তিনি দোকানে গিয়ে বললেন ভাই আমার চিরুনির একটি দাড় ভেঙ্গে গেছে। দোকানদার লোকটিকে আগে থেকেই চিনতো এবং জানতো যে লোকটি বেশ কিপ্টে।
তাই দোকানদার একটু তামাশা করেই বললো একটা দাড় ভেঙ্গেছে তো কী হয়েছে বাকিগুলো দিয়ে চালান আপাতত। খামাখা টাকা খরচ করবেন কেন? লোকটি দোকানদারের কথা শুনে তো রেগে মেগে আগুন। লোকটি রাগান্বিত গলায় বললো আরে ভাই চিরুনির এই একটি দাড়ই অবশিষ্ট ছিলো।
আশেপাশের মানুষজন সবাই হাসতে শুরু করলো ব্যপারটি পর্যবেক্ষণ করে। তখন অনেকেই বললো এমনিতে তো আপনার মাথায় এত কম চুল না। কিপটামি করেন জন্যে এমন। একটি দাড় দিয়ে কেউ মাথা আচড়ায়। এইজন্য তো মাথায় চুল কম। শেষমেশ লোকটি আর চিরুনি না কিনে অন্য পথে হাঁটা শুরু করলো।
আমার মাথার চুল কিন্তু বেশ গাড়ো। কখনো সেলুনে চুল কাটাতে গেলে নাফিতকে বেশ খাটাখাটনি করতে হয় আমার চুলের পেছনে। অনেকসময় রাগান্বিত হয়ে দু একটা কথাও শোনায় আমাকে। একবার আমাদের বাড়ির পাশে একটি বাজারে চুল কাঁটাতে গেলে সেলুনের মালিক আমাকে বলে বিশ টাকা বেশি দিতে হবে।
আমি বললাম কেন? তখন তিনি বললেন আপনার আব্বার চুল একটু আগে কেঁটে আমার কাঁচি ভোতা হয়ে গেছে এখন আপনি আবার আসলেন কাঁচি ভাঙ্গতে। বলে রাখা ভালো আমার বাবার চুলও কিন্তু অনেক ঘন তাই সেলুনের মালিক আমাকে এভাবে বলেছিলো। বিষয়টা কিন্তু বেশ মজাদার।
আর একটি মজার কাহিনী বলি। একবার আমাদের এলাকার এক পিচ্চি ছেলে তার বাবা মাকে বললো আচ্ছা তোমাদের চুল কিছু সাদা আবার কিছু কালো কেন? বাবা বুদ্ধি করে উত্তর দিলো যে ছেলে মে বেশি দুষ্টামি করে তাদের বাবা মায়ের চুল টেনশনে সাদা হয়ে যায়।
তুমি দুষ্টামি করবা না তাহলে আমরাও টেনশন করবো না এবং আমাদের চুলও সাদা হবে না। একটু ভেবে এবার ছেলে উত্তর দিলো আচ্ছা বাবা দাদা দাদি আর নানা নানির তো সবগুলো চুল সাদা ধবধবে। তাহলে তোমরা কী খুব দুষ্ট ছিলে। এরপর বাবা হেসে বললো বেশি পাকনামো কথা বলো না। কান মলা দিবো তাহলে। যাও পড়তে বসো।
চুল নিয়ে তো অনেক গল্প হলো। এবার আসুন জেনে নেই চুলের যত্ন করার কিছু নিয়ম কানুন।
চুলকে সুরক্ষিত রাখতে সূর্যের আলো, রোদ, বৃষ্টি এগুলো এড়িয়ে চলা উচিত। সূর্যের কড়া তাপ, প্রচন্ড বৃষ্টিতে ভেজা, তারপর ধুলোবালি ইত্যাদি কিন্তু চুলের জন্য বেশ ক্ষতিকর।
বাইরে কোথাও বের হলে ছাতা ব্যবহার করা উচিত। এতে চুল সূর্যের আলো কিংবা রোদ বৃষ্টি থেকে সুরক্ষিত থাকে। ছেলেদের ছাতা ব্যবহার না করলেও ক্যপ পড়া উচিত। বাইরে বের হলে ছাতা না থাকলেও কাপড় কিংবা ওড়না চুল ঢাকার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
ভেজা চুল অনেকবেশি ভঙ্গুর হয়। তাই চুলের গোড়ায় বা মাথায় অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করে শ্যম্পু ব্যবহার করা উচিত নয়। আর শ্যম্পু ব্যবহারে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। নিম্নমানের শ্যম্পু কখনই ব্যবহার করা উচিত নয়।
গোসল শেষ করে সাথে সাথেই চুলে চিরুনি লাগানো উচিত নয়। কারন ভেজা চুল ভঙ্গুর হওয়ার কারণে চিরুনির চাপের ফলে অতিরিক্ত চুল উঠে আসতে পারে। তাই বাতাসে চুল শুকিয়ে চুলে চিরুনি লাগানো উচিত।
চুল সুন্দর ও ঝলমলে রাখতে সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন শ্যাম্পু ব্যবহার করা অতিব জরুরী। এছাড়াও তেল ব্যবহার চুলের জন্য বেশ উপকারী।
অনেকেই চুলে হিট দিয়ে থাকেন। তবে গবেষকরা চুলে হিট দিতে বারণ করেছেন। কারন এতে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে।
আজ আর নয়। ভালো থাকবেন বন্ধুরা।
আপনি কিভাবে চুলের যত্ন নিতে হয় এ এই বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন যা করে অনেক কিছু জানতে পারলাম।আসলে চুল আমাদের শরীরের এমন একটি জিনিস যা আমাদের বাহ্যিক সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি করে।
যাদের মাথায় চুল কম তারা কিন্তু অনেক সময় চুল না থাকার কারণে তারা অনেক চিন্তায় থাকে। আর যাদের মাথায় চুল অনেক বেশি তারা নিজেদের চুল নিয়ে বিভিন্ন রকমের স্টাইল করতে পারে। আর আজকাল তো চুল রং করা থেকে শুরু করে চুলে অনেক কিছু লাগানো যেন এটা ফ্যাশান হয়ে পড়েছে।
যেহেতু চুল আমাদের সম্পদ এবং বাহ্যিক সৌন্দর্য । তাই চুলকে সবসময় পরিস্কার এবং গোছানো রাখা আমাদের দায়িত্ব। তাছাড়াও পরিস্কার এবং গোছালো চুল আমাদের ব্যক্তিত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। তাই নিজের চুলের প্রতি নিজেকেই দায়িত্ব নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। পরিশেষে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন