ভাগিনার সাথে কাটানো কিছু মহূর্ত

in Incredible India4 months ago

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে ভালোই আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে “ভাগিনার সাথে কাটানো কিছু মহূর্ত” শীর্ষক একটি লিখনি উপস্থাপন করছি। কথা না বাড়িয়ে তাহলে শুরু করা যাক।

20240212_134328.jpg

আমার একজন ভাগিনা আছে তার নাম বেশ মজার। তার পুরো নাম মোঃ লিয়াকত হোসেন কিন্তু ডাক নাম লেবু। তার নানা ঘটনাক্রমে নাম রেখেছিলো লেবু। ভাগিনা নাকি ছোটবেলায় লেবু খেতে খুব পছন্দ করতো। তাই তার নাম রাখা হয়েছিলো লেবু।

কিন্তু এখন সে মোটেও খুশি নয় এই নাম নিয়ে। কেননা সকল বন্ধুবান্ধব তাকে নামের জন্যে তার সাথে অনেক ইয়ারকি ফাজলামী করে। কিন্তু কি আর করার, নাম তো বদলানোর উপায় নেই।

যাইহোক গতকাল ভাগিনা লেবু আমাকে ফোন করে জানায় সে আমাদের এলাকায় কোন এক কাজে আসতেছে। দুই ঘন্টা তাকে আমার সময় দিতে হবে। ছেলেটিকে না বলার কোন উপায় নেই। কেননা সে একটু বেশি অভিমানি।

হুট করে যদি না বলি তাহলে ফোন কেটে দিয়ে সব যায়গা থেকে আমাকে ব্লোক করে দেবে। এর আগেও একবার দিয়েছিলো। পরে অনেক কষ্টে অভিমান ভাঙ্গিয়েছিলাম। যাইহোক কোন কিছু না ভেবেই তাকে বলে দিলাম তুই আয় আমি যাচ্ছি। এরপর বউয়ের হাতে রান্না করা নুডলুস আর সেদ্ধ ডিম খেয়ে বেরিয়ে পরলাম।

20240212_095809.jpg

ভাগিনার সাথে দেখা হতেই বুকে বুক মিলিয়ে তার সাথে কুশল বিনিময় করলাম। তারপর সে আবদার করে বসলো মামা একটা সেলফি তুলি চলো। আমিও সায় দিলাম তার কথায়।

কেননা আগেই বলেছি তার সব কথা শুনতেই হবে। কী আর করার। সেলফি তোলার মাধ্যমে ক্যমেরা বন্দি হলাম।
20240212_140542.jpg

মূলত আমরা খুবই সুন্দর একটি জায়গায় একত্রিত হয়েছিলাম। রাস্তার দুই দিকে খেঁজুর গাছ সারিবদ্ধভাবে লাগানো ছিলো। সব মিলিয়ে যায়গাটি অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছিলো।

অনেকেই সময় পেলে এখানটায় সময় কাটাতে আসে। কেননা চারিদিক নিরিবিলি পরিবেশ, তেমন একটা মানুষের আনাগোনা নেই এই রাস্তায়। একদম নিস্তব্ধ বলতে পারেন। তাই দেড়ি না করে কয়েকটা ফটো তুলে নিলাম ভাগিনার কাছে।

20240212_140436.jpg

20240212_140343.jpg

এরপর দুজন মিলে গল্প করতে শুরু করলাম। ভাগিনা তার প্রেম কাহিনী বলতে শুরু করলো। সে নাকি একটি মেয়েকে খুব ভালোবাসে, মেয়েটিও তাকে খুব ভালোবাসে, কিন্তু বর্তমানে তাদের যোগাযোগ হচ্ছে না।

মূলত মেয়েটির বাসায় সবাই সবকিছু জেনেছে। তাই মেয়েটির কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে নিয়েছে তার বাবা। এমতবস্থায় ভাগিনা কথা বলতে না পেরে সারাক্ষণ ছটফট করছে।

কিন্তু আমি তাকে বোঝালাম যা হবার হয়েছে। তোদের এখনো বয়স কম। এখন আবেগের বয়স তোদের তাই খুব খারাপ লাগছে। তবে এটা বেশিদিন স্থায়ী হবে না। তুই কিছুদিন পর এমনিতেই সব ভুলে যাবি। কিন্তু সে মানতে রাজি নয় আমার কথা। এরপর আমি তাকে আরো ভালভাবে বুঝিয়ে বলি যে তুই ধৈর্য্য ধর।

এখনো ছাত্র মানুষ তোরা। মেয়ের তো এখনে বিয়ে হচ্ছে না। তুই পড়াশোনা শেষ করে একটা চাকুরি কর তারপর না হয় তোর বাবা সহ আমি ঐ মেয়ের বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবো। এবার সে একটু খুশি হলো আর বললো আচ্ছা মামা।

আসলে আবেগের এই বয়সটা সত্যি প্রত্যেকের জন্য কঠিন এক সময়। এই সময়ে অনেকেই অনেক ভুল করে বসে। ভালোভাবে ছেলেমেয়েদের এই বয়সটায় গাইড করতে না পারলে ভবিষ্যতে অনেক সমস্যার সম্মুক্ষীন হওয়া লাগতে পারে।

20240212_135525.jpg

যাইহোক আমি টেকনিক্যালি আমার ভাগিনাকে আরো কিছু বিষয়ে বুঝালাম। সে সবকিছু বুঝে এবার বাসায় যেতে চাচ্ছিলো। আমি আমার বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য তাকে অনেক জোড়াজুড়ি করলেও সে শেষ পর্যন্ত রাজি হয়নি।

আজ আর নয় বন্ধুরা, ভালো থাকবেন সবাই।

Sort:  
Loading...
 4 months ago 

প্রিয় মানুষকে নাম দিতে পারি, কিন্তু এই ধরনের একটা নাম পাওয়া আসলেই অপ্রীতিকর। আপনারা যেখানে গিয়েছেন জায়গাটা সত্যিই অসম্ভব সুন্দর। দুই ধারে খেজুর গাছের সারি দেখে মনটা ভরে গেল।

 4 months ago 

আমার এক ফ্রেন্ড ছিল যার নাম লাবু, কিন্তু আমরা সবাই তাকে লেবু নামেই ডাকতাম। আপনার ভাগ্নের নামও লেবু কি সেভাবেই হয়েছে।

কথায় আছে মামা ভাগ্নে যেখানে, আপদ নেই সেখানে। আপনাদের মামা ভাগ্নের সুন্দর পার করানো মুহূর্ত গুলো মনে হচ্ছে অনেক বেশি সুন্দর ছিল।

 4 months ago 

আপনার ভাগিনার সাথে সুন্দর কিছু সময় কাটানো মুহূর্ত শেয়ার করেছেন ৷ আসলে আমার প্রত্যেকে কোন না কোন প্রিয় বা কাছের মানুষের সাথে একটি সুন্দর মূহুর্ত কাটাতে পছন্দ করে থাকি ৷

ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷

 4 months ago 

নিরিবিলি পরিবেশে কাটানোর সময় গুলো খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপনা করেছেন মেঠো পথের দুই সাইড দিয়ে খেজুর গাছ দেখতে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।

ভাই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাগনার সাথে কাটানো সুন্দর মুহূর্ত গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

 4 months ago 

সত্যি কথা বলতে আমাদের দেশের জন্য মোবাইলের ব্যবহারের একটা নির্দিষ্ট বয়সের সময়-সীমা থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথায় যেদিকে তাকাই সেদিকেই এইরকম অপ্রীতিকর ঘটনা।

আবেগের বসে কতো কিছু, কিন্তু একটা সময় ফলাফল একদমই জিরো। আপনাকে দেখে ভালো লাগলো যে আপনি বন্ধুর মতো বিষয়টির নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করেছেন।

 4 months ago 
  • প্রথমেই আপনাকে বলি যে জায়গায় আপনারা ছবি তুলেছেন, সেটা দেখেই মন ভরে গেছে। খেজুর গাছে ঘেরা কি অপূর্ব পরিবেশ, এই পরিবেশ আমাকে সত্যিই টানে, আর সেই টানেই বাংলাদেশ যাওয়ার ইচ্ছা বেড়ে যায়।

  • আপনার ভাগ্নের নামটা সত্যিই হাস্যকর। তবে একথাও ঠিক যে, ছোটোবেলায় এই ধরনের নামে অনেকেই ডেকে থাকে, যেগুলো পরবর্তীতে ডাকনাম হয়ে থেকে যায়।

  • ভালোই করছেন ভাগ্নে কে বুঝিয়ে, সত্যিই এই বয়েসে অনেকেই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়, যার মাশুল সারা জীবন দিতে হয়। ধন্যবাদ আপনাকে ভাগ্নের সাথে কাটানো কিছু মুহূর্তের কথা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.12
JST 0.028
BTC 64024.15
ETH 3515.24
USDT 1.00
SBD 2.55