"অগ্নিকান্ড ও এটি থেকে বাঁচার উপায়"
আসসালামু আলাইকুম/ আদাব,
কেমন আছেন বন্ধুরা। আমি ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে অগ্নিকান্ড ও এটি থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে আমার একটি লিখা আপনাদের নিকট উপস্থাপন করছি। শুরু করা যাক।
অগ্নিকান্ড বর্তমান জীবনে একটি আতংকের নাম। বাংলাদেশ সহ বিশ্বে এর ভয়াবহতা দিন দিন বেড়েই চলছে। এভাবে চললে হয়ত আমরা খুব অচিরেই ধ্বংসের মুখে পতিত হব। তাই আমাদের এখন থেকেই সাবধান হওয়া উচিত।
প্রতি বছরই বাংলাদেশ সহ পুরো বিশ্বে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। আর এই আগুনে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। কিছুদিন আগে নারায়ণগঞ্জের হাশেম ফুডস কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জনের মৃত্যু হয়। গত পাঁচ বছরে বিশ্বে প্রায় ১০ লাখ অগ্নীকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
আগুন সাধারণত একটি বিশেষ রাসায়নিক বিক্রিয়া যা বাতাসে অক্সিজেনের সাথে জ্বালানীতে কার্বন এবং হাইড্রোজেনের সংমিশ্রণের কারণে ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলে সেটি আমাদের বন্ধু, আবার সে যদি একটু বেপরোয়া হয়, তাহলে সে আমাদের শত্রু হয়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডের মূল কারণ অবহেলা। তারপর আছে অজ্ঞতা। অতএব, প্রত্যেককে তাদের অবস্থান সম্পর্কে সর্বাধিক সচেতন হওয়া উচিত।
রান্না করার পরে, চুলার আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলতে হবে। সিগারেটের পোড়া অংশ নিভিয়ে নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে। এ ছাড়া কারখানায় ধূমপান পুরোপুরি নিষিদ্ধ করতে হবে। ছোট বাচ্চাদের আগুন নিয়ে খেলা থেকে বিরত রাখতে হবে। গ্যাস ও কুকার জ্বালানোর আগে, দরজা এবং জানালা খুলতে হবে এবং গ্যাস সংযোগ এবং পাইপগুলি ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে হবে।
বৈদ্যুতিক তার এবং নির্মাণ আনুষাঙ্গিক গুলি অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ইলেকট্রিশিয়ান দ্বারা নিয়মিত চেক করা আবশ্যক। হোম, ওয়ার্কপ্লেস ও সিভিল ডিফেন্সে অগ্নি নিরাপত্তা, অগ্নিনির্বাপণ, উদ্ধার ও প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ে মৌলিক প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। ফায়ার ব্রিগেডের সহায়তায় নিয়মিত অনুশীলনের আয়োজন করতে হবে।
একটি ভবন নিরাপদ হতে হলে বিল্ডিং কোড মেনে চলার মাধ্যমে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অগ্নি সুরক্ষা ও অগ্নি নির্বাপণ আইন এবং সংশ্লিষ্ট প্রবিধান অনুযায়ী প্রতিটি বাণিজ্যিক, সরকারী এবং বেসরকারী ভবনে অগ্নি সুরক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে। একটি স্বয়ংক্রিয় ফায়ার অ্যালার্ম সিস্টেম থাকা উচিত যাতে আগুন লাগলে সবাইকে তাত্ক্ষণিকভাবে সতর্ক করা যায়।
একটি চিহ্ন বিল্ডিংয়ের প্রতিটি তলায় ট্রান্সমিশন নির্দেশ করা উচিত যাতে এটি অন্ধকারেও দেখা যায়। আগুন লাগলে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করতে হবে। নীতিগতভাবে, আগুনলাগার কারণ সম্পর্কে সবাইকে অবহিত করতে হবে।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে দেশের বিভিন্ন স্থানে অগ্নিকান্ড ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় অসংখ্য মানুষ নিহত ও আহত হয়। আগুন ও বিস্ফোরণের কারণ এবং এসব ঘটনা রোধে কী করা দরকার তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তবে এসব দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানাতে পারেনি দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে, ফায়ার ব্রিগেড এবং নাগরিক সুরক্ষা কর্তৃপক্ষ এই বিস্ফোরণ বা আগুনকে মানুষের অবহেলা এবং অজ্ঞতার জন্য দায়ী করে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুষ্ক মৌসুমে (অক্টোবর থেকে এপ্রিল) বিশ্বব্যাপী অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। তবে মানুষ সচেতন হলে এসব ঘটনা অনেকটাই এড়ানো সম্ভব। সাধারণভাবে, বাড়ি এবং হোটেলগুলিতে আগুন লাগার ঘটনা বেশি দেখা যায়।
মানুষের অবহেলার কারণেই এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। উদাহরণস্বরূপ: আলোকিত সিগারেট, দিয়াশিলাই, একটি খোলা মোমের বাতি বা কেরোসিন, একটি বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট, একটি গ্যাস সিলিন্ডারের লিক, কয়লা বা অনুরূপ গরম ময়লা এবং অন্যান্য দাহ্য পদার্থের মাধ্যমে যখন তখন অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে পারে।
আগুন বা রাসায়নিক বিক্রিয়ার বিষয়টি অনেকেই জানেন না। আগুনের প্রাথমিক পর্যায়ে কী করতে হবে সেটাও হয়তো অনেকে জানে না। তাই এসব বিষয়ে শিক্ষা অর্জন করা জরুরী।
কেউ কোথাও সিগারেটের ফিল্টার নিক্ষেপ করলে আগুন লেগে যেতে পারে। এ মৌসুমে খরার কারণে আগুন জ্বলতে পারে। তবে বর্ষামৌসুমে এমনটা হয় না। আগুন লাগার প্রাথমিক পর্যায়ে আগুন নেভানো সম্ভব হলে ক্ষয়ক্ষতি ব্যাপকভাবে হ্রাস করা যেতে পারে।
তাই আগুন লাগলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এলাকা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আগুনে অক্সিজেনের উৎস নিভিয়ে ফেলতে হবে। পোড়া তেলে পানি দেয়া যাবে না, তাতে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এক্ষেত্রে বালি দিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে। গ্যাসে আগুন লাগলে দরজা-জানালা খুলে দিতে হবে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে অবশ্যই পানি দিয়ে ঠাণ্ডা করতে হবে।
আজ আর নয় বন্ধুরা। সবাই ভালো থাকবেন।
আগুন থেকে বাচার একমাত্র উপায় হলো নিজেকে এবং অন্যান্য বা প্রত্যেকে সচেতন থাকতে হবে ৷ এক ফোটা আগুন অনেক কিছু ধংস করে দিতে পারে ৷ তাই আমাদের সচেতন থাকাটাই শ্রেয় ৷
আমার যেখানে সেখানে আগুন লাগিয়ে থাকি ৷ সেই আগুন আমাদের কাজ শেষ হলে নিভিয়ে রাখতে হবে ৷ তাহলেই আগুন থেকে বাচার উপায় আমরা খুজে পাবো ৷
ধন্যবাদ আপনাকে একটি সতকর্তামূলক পোস্ট শেয়ার করার জন্য ৷
#miwcc