স্বরচিত গল্পঃ বোনের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসা
কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে ভালোই আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে “স্বরচিত গল্পঃ বোনের প্রতি ভাইয়ের ভালোবাসা” শীর্ষক একটি লিখনি উপস্থাপন করছি। কথা না বাড়িয়ে তাহলে শুরু করা যাক।
কদিন ধরেই প্রচন্ড শীত পরছে। কুয়াশায় আচ্ছন্ন চারদিক। মোটরবাইক গুলো সব হেড লাইট জালিয়ে রাস্তায় চলাচল করছে। ঘন কুয়াশায় রাস্তার এপাশ থেকে ওপাশে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। পাশ দিয়ে একটি কুকুর ঘেউ ঘেউ করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছে। মনে হয় কারও তাড়া খেয়েছে।
যাইহোক রাসেল এই ঘন কুয়াশার মাঝেও বাড়ী থেকে বের হয়েছে। দুপুর তিনটা বাজে কিন্তু সূর্যের দেখা নেই। তাই রাসেল বাসা থেকে বের হয়ে মোড়ের চায়ের দোকানে এসে বসলো। হাত জোড়া ঘষতে ঘষতে বলতে লাগলো মামা একটা জব্বর করে চা দাও দেখি। আদা চিনি বেশি দিও।
রাসেল বেশ সুদর্শন। যেমন গঠন তেমন লম্বা। চুলগুলো বেশ বড়। কুয়াশা আর চুল যেন মিশে গেছে। দোকানদারের সাথে রাসেলের বেশ সক্ষতা রয়েছে। তাই দোকানদার খুব যত্ন করে রাসেলকে চা বানিয়ে দেয়। রাসেল চায়ে চুমুক দিয়ে বলে আহ! এমন ঠান্ডায় এক কাপ চা যেন অমৃত।
বিশেষ করে তোমার হাতের চা মামা। ভাবছি ফেসবুকে তোমার চায়ের একটা রিভিউ দেবো। চা ওয়ালা মামা লজ্জ্বায় মুখ লুকায়। আর বলতে থাকে কী যে বলেন মামা আমাগো মতো গরীব মাইনসের চা কে খাইবো? রাসেল বলে খাইবো খাইবো।
এমন খুনসুটির মাঝে রাসেলের বোন এসে হাজির হয়। বলে ভাইয়া আমি আর কলেজে যাবো না। রাস্তার মোড়ে বখাটে গুলোর উৎপাত বেশ বেড়েছে। আজ আমাক অনেক বাজে কথা বলছে। আমি আর কলেজে যাবোই না। রাসেল এবার বোনকে বলে তুই বাড়ী যা। আমি দেখছি।
এই বলে দোকানদারের কাছে একটা সিগারেট চায় রাসেল। রাসেল খুব একটা সিগারেট খায় না। তবে রাগান্বিত হলে বা টেনশন করলে সিগারেট খায়। দোকানদার মামা অবাক হয়ে রাসেলের দিকে তাকায়। এরপর রাসেল তুহিনকে ফোন দেয় এবং চায়ের দোকানটায় আসতে বলে।
তুহিন আসলে তুহিনকে সব খুলে বলে রাসেল। এরপর লাঠি শোঠা হাতে নিয়ে পাড়ার মোড়ে যায় এবং সব বখাটেদের বেধম মাইর শুরু করে। যে যেদিকে পারে ছুটতে থাকে। কয়েকজন বেশ আহত হয়। এরপর স্থানীয় লোকজন এসে বাধা দেয় এবং পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠায় এবং রাসেল আর তুহিনকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে গিয়ে রাসেলের পরিবারের লোকজন কে আসতে বলা হয়। বলে রাখা ভালো রাসেলের বাবা একজন স্কুল শিক্ষক। এলাকার সবাই তাঁকে অনেক সম্মান করে। রাসেলের বাবা এসব শুনে বেশ ভেঙ্গে পরে।
পরবর্তীতে থানায় গিয়ে রাসেলকে ছাড়িয়ে আনে। বাসায় এনে রাসেলকে যাতা বলতে থাকে তার বাবা। এরপর রাসেলের বোন তার বাবাকে সবটা জানালে বাবা একটু শান্ত হয়। বোন রাসেলকে জড়িয়ে ধরে বলে দাদাভাই তুই আমার জন্য কেন এমনটা করলি।
অথচ আমি তোকে কত কথা শোনাই বাবাকে দিয়ে। বাবা কোন কিছু আনলে সবার আগে আমি ভালোটা বেছে নেই। কত ঝগড়া করি তোর সাথে। আর তুই কিনা আমার জন্য মারপিট করলি। রাসেল মুচকি হেসে বলে তুই বড়ভাই হলে বুজতি। কাল থেকে কলেজে যাবি। কেউ কিছু বললে জাষ্ট আমায় জানাবি।
হ্যা আমাদের সমাজে কিন্তু এই গল্পের মতন ভাই আর বোনের সম্পর্ক হয়ে থাকে। আমরা আমাদের বোনকে মাথার তাজ বানিয়ে রাখি। ভাই বোনের সম্পর্কে থাকে না কোন স্বার্থ। বোনের বিপদে ভাই সর্বস্ব দিয়ে ঝাপিয়ে পরে।
আজ আর নয় বন্ধুরা, ভালো থাকবেন সবাই।
ধন্যবাদ খুব সুন্দর একটি লেখা শেয়ার করার জন্য এবং লেখাটা পড়ে আমার পুরনো কিছু স্মৃতি মনে পড়ে গেল এজন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাই বোনের সম্পর্ক টা, অন্য সম্পর্ক থেকে একটু আলাদা, দুই ভাই বোন যতই মারামারি ,ছোটাছুটি, করেছি , দিনশেষে একটা খাবার কে দুই ভাগ করে খাওয়ার অভ্যাসটা আমাদের মধ্যে ছিলো।
কথায় আছে দূরে গেলে সম্পর্কের মায়া বোঝা যায় ঠিক যেমনটা আমি আমার ভাইয়ের ক্ষেত্রে বুঝতে পারছি।
ধন্যবাদ আপনাকে আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।
আপনার আজকের পোস্টটের বিষয়বস্তুটা খুব ভালো ছিলো। ঠিকই বলেছেন ভাই বোন যতই ঝগড়া করুক না কেন ভাই বোনের সম্পর্ক পৃথিবীর সব থেকে মধুর সম্পর্ক।।
একজন মায়ের পরে যদি কোন ছেলেকে প্রকৃতভাবে ভালোবেসে থাকে। তাহলে হচ্ছে তার বোন। ভাই বোনের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হবে মারামারি হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তারপরেও দিনশেষে একটা ভালোবাসা থেকেই যায়। আজকে আপনার গল্পের মাধ্যমে, আপনি সেই বিষয়টাই আমাদের সাথে উপস্থাপন করতে চেয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার গল্প উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।
লেখাটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো ৷ বড় ভাই হিসেবে সে তার দায়িত্ব পালন করেছে ৷ কারন বোনকে যদি কোন বখাটে ছেলে ডিস্টাব করে তাহলে তো মাথা গরম হবেই ৷ বখাটে ছেলেদের পিটিয়েছে বেশ ভালোই হয়েছে তা না হলে তারা আরো মাথায় বসে যেতো ৷
ভাই বোনের ভালোবাসা আসলে সব ভালোবাসাকেই হার মানিয়ে থাকে ৷
ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি লেখা আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য ৷ ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ৷