খেলাধুলা নিয়ে ব্যক্তিগত কিছু অভিমত

in Incredible Indialast month

কেমন আছেন বন্ধুরা? আল্লাহ্‌র অশেষ মেহেরবানীতে আমি সুস্থ্য এবং ভালো আছি। সুস্থ্যতা আল্লাহ্‌ তা’লার সবচেয়ে বড় নিয়ামত। আর এই নিয়ামত পেয়ে আমি অনেক খুশি।

আজ আমি আপনাদের মাঝে “খেলাধুলা নিয়ে ব্যক্তিগত কিছু অভিমত” শীর্ষক একটি লিখনি তুলে ধরছি। তাহলে শুরু করা যাকঃ-

Colorful Illustrative Youth Sports A3 Landscape Poster.png
Edit by canva

আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই খেলাধুলার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমি এমনো দেখেছি, কলেজ মাঠে কিছু বয়বৃদ্ধ ব্যক্তি ফুটবল নিয়ে খেলা করছে।

খুব আগ্রহ নিয়ে তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম তাঁরা এই বয়সে কেন ফুটবল নিয়ে খেলা করছেন।

উত্তরে তাঁরা বলেছিলেন, বাবারে খেলার কোন বয়স হয় না। যেকোন বয়সে যেকেউ চাইলেই মাঠে এসে খেলতে পারে। তবে তার জন্য প্রয়োজন খেলাধুলাকে ভালোবাসার। কারণ ভালো না বাসলে আসলে কোন কিছুই করা সম্ভব নয়।

এই দেখো, আমরা বয়সের ভারে এতটাই ভারাক্রান্ত যে, আমাদের ফুটবল নিয়ে খেলার কথা কেউ চিন্তাও করতে পারে না। তবুও আমরা খেলছি। কারণ আমরা খেলাধুলার গুরুত্ব বুঝি এবং খেলাধুলা করা পছন্দ করি ও ভালোবাসি।

সেই দিনটি এখনো আমার ভীষণ মনে পরে। তাঁদের এই কথাগুলো থেকে আমি এখনো অনুপ্রাণিত হই।

এবার আসি শিশুদের বিষয়ে। আমরা সকলেই জানি শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে খেলাধুলা কী পরিমাণ ভূমিকা পালন করে। তবুও আমরা বড়রা কেন জানি শিশুদের মাঠে খেলার বিষয়টি অবহেলার চোখে দেখি।

অথচ একটু খেয়াল করলেই বুঝবেন, মাঠে খেলাধুলা করা একজন শিশু ও খেলাধুলা না করা একজন শিশুর মাঝে পার্থক্য কতখানি। ঘরবন্দি শিশুরা অনেক কিছু থেকেই পিছিয়ে থাকে।

ঘরবন্দি শিশুরা মূলত বাইরের জগত এবং বাস্তবতা থেকে অনেকদূর পিছিয়ে থাকে। তাদের মানসিক বিকাশ খুব দেড়িতে হয়।

যেই শিশুগুলো বাইরে সবার সাথে মেলামেশা করে এবং মুক্ত পরিবেশে ও খোলা মাঠে খেলাধুলা করে, সেই শিশুগুলো খুব তারাতারি যেকোন কিছুর সাথে মানিয়ে নিতে পারে। তাদের মাঝে কোন কিছু জয় করার বেশ স্পৃহা লক্ষ্য করা যায়।

pexels-allan-mas-5623062 (1).jpg
source

তারা কোন কিছুকেই ভয় পায় না। লাইফে যেকোন চ্যলেঞ্জ নিতে তারা প্রস্তুত থাকে।

অপরদিকে ঘরবন্দি শিশুরা বাইরে বেরোতে ভয় পায়। যেকোন নতুন জিনিসের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের অনেক সময় লাগে। তারা বেশ ভীতু হয়। অল্পতেই ঘাবরে যায়।

আমার মতে শিশুদের খোলা মাঠে খেলতে দেয়া খুব জরুরী। এক্ষেত্রে বিকেলের সময়টুকু যথেষ্ঠ। এখন তো আধুনিক যুগ। গ্রামীন খেলাগুলো হারিয়ে গেছে।

তাই শারীরিক কশরত হয় এমন খেলার মধ্যে আধুনিক যুগে ক্রিকেট এবং ফুটবল একমাত্র ভরসা। শিশুদের ফুটবল ও ক্রিকেট খেলতে দেয়া উচিত।

এতে করে তাদের শারীরিক বিকাশ খুব দ্রুত হবে। তারা মাঠে দৌঁড়াবে, বল ছুঁড়ে মারবে। এতে করে এক ধরনের ব্যয়াম হবে। যা একটি শিশুর বিকাশে জরুরী।

pexels-yankrukov-8613146.jpg
source

আরেকটি বিষয় রয়েছে, সেটি হলো শিশুদের নিরাপত্তা দেয়া। সেটি যে ক্ষেত্রেই হোক না কেন। খেলাধুলার ক্ষেত্রে নিরাপত্তার কথা সবার আগে মাথায় আনা উচিত। এক্ষেত্রে বয়স বেশ প্রভাব ফেলে।

একটি শিশুর বয়স যত তাকে সেই বয়সের শিশুদের সাথে খেলার সুযোগ করে দিতে হবে। বড়দের সাথে মোটেও খেলতে দেয়া যাবে না। খেলাধুলার বিভিন্ন উপকরন সব বয়স অনুযায়ী গ্রহণ করতে হবে। যেমন ফুটবল।

বিভিন্ন নাম্বারের ফুটবল বাজারে পাওয়া যায়। বয়স অনুযায়ী ফুটবলের মাপ এবং ওজন রয়েছে। শিশুর বয়স মাথায় রেখে তাকে সেই ধরনের ফুটবল দিতে হবে।

নয়তো যেকোন সময় যেকোন ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। অন্যান্য খেলাগুলোর জন্যও এই কথা প্রযোজ্য।

আমার মতে বাবা, মা ও শিক্ষকরা শিশুদের সবথেকে বেশি খেলাধুলায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারে। কারণ একজন বাবা ও একজন বাবা একটি শিশুর প্রধান অভিভাবক।

বাবা-মা শিশুকে যেই পথে পরিচালিত করবে, শিশু কিন্তু সেই পথেই পরিচালিত হবে। অনেক অভিভাবক শিশুকে বিকেলে খেলতে যেতে দেয় না। অন্যান্য বন্ধুদের সাথে মিশতে দেয় না। কিন্তু এটি মোটেও কাম্য নয়।

তবে পরিবেশ অনুযায়ী এর তারতম্য হতে পারে। একজন শিক্ষক একজন শিশুর জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। শিক্ষক যদি শিশুকে খেলাধুলার বিষয়ে উৎসাহিত করে তাহলে সেই শিশুটির এমনিতেই খেলাধুলার প্রতি আগ্রহের সৃষ্টি হয়।

আমাদের দেশে অবশ্য এই বিষয়টির বেশ ভালোই চর্চা হয়। প্রতি বছর প্রতিটি স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটিগুলোতে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা হয়।এখানে বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করা হয়ে থাকে এবং শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়ে থাকে।

pexels-kampus-8941650.jpg
source

এছাড়াও এখন আমাদের দেশে প্রতিটি স্কুলে ও কলেজে বয়স ভিত্তিক ক্রিকেট, ফুটবল ও কাবাডি খেলা চালু হয়েছে। সরকারী এবং বেসরকারীভাবে এই খেলাগুলো পরিচালিত হচ্ছে, যা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।

যাইহোক বন্ধুরা, এই ছিলো আমার খেলাধুলা নিয়ে কিছু অভিমত। আমারও একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। আমি চাই আমার ছেলে খেলাধুলায় যেন অংশগ্রহণ করে। তার যে খেলা ভালো লাগবে সেই খেলায় যেন সে নিজের সেরাটা দিতে পারে। বাকিটা উপর ওয়ালার ইচ্ছা।

আজ আর নয় বন্ধুরা। ভালো থাকবেন সকলে। আল্লাহ্‌হাফেজ।

Sort:  
 last month 
 last month 

আপনি যে ঘটবার কথা শেয়ার করেছেন সেটা সত্যি ভালো লাগলো। বৃদ্ধ বয়সে তারা প্রতিদিন মাঠে খেলা করে এটা সত্যি খুব ভালো বিষয়। খেলার কোনো বয়স নেই, যে কেউ ইচ্ছাশক্তি দিয়েই খেলা করতে পারে। আর তাছাড়া খেলাধুলা করলে আমাদের শরীরের ফিটনেস ধরে রাখতে সাহায্য করে। বাজারে বিভিন্ন সাইজের বল রয়েছে তাই বয়স অনুযায়ী সে-ধরনের বল দেওয়া উচিত। নিজের ছেলের জন্য এজটা বল কিনে রাখেন আর কয়েকদিনের মধ্যেই খেলার মতো হয়ে যাবে৷ ভালো লাগলো আপনার পোস্টটি পড়ে। ভালো থাকবেন।

Loading...
 last month 

শরীর সুস্থ রাখতে খেলাধূলার গুরুত্ব অনেক। আপনি ঠিকই বলেছেন খেলাধূলার কোন বয়স হয় না। সকলেই খেলতে পারেন। এর জন্য আগ্রহটাই বড় ব্যাপার। বর্তমানের টেকনোলোজির এই যুগে শিশুরা সব ভিডিও গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছে। তাই বাইরের খেলার প্রতি অনেকেরই আগ্রহ নেই। তাছাড়া মাঠেরও অভাব রয়েছে। আপনি খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন যে শিশুর মানসিক বিকাশে খেলাধূলার প্রয়োজনীয়তা। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্টটি করার জন্য।

 last month 

খেলাধুলা করা শরীরের পক্ষে খুব উপকারী। ছোটবেলা থেকেই খেলাধুলা করতে খুব ভালোবাসি। খেলাধুলা করলে শরীর সুস্থ থাকে। তবে এখনকার বাচ্চারা কেউ খেলাধুলা করতে পছন্দ করে না। সবাই এখন ছোট থেকেই মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত। ধন্যবাদ এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 last month 

আসলেই কথাটি সঠিক, খেলার কোন বয়স নেই। প্রতিটি মানুষের জীবনে এই খেলাধুলা নিয়ে অনেক স্মৃতি রয়েছে। খেলাধুলা করলে প্রতিটি মানুষের মানসিক বিকাশ এবং শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকে। বর্তমান সমাজের অনেক অভিভাবকরাই নিজের সন্তানকে ঘরের ভিতরে বন্দী রাখে। এজন্য তাদের মেধা বিকাশ খুব দেরিতেই ঘটে। তাই এতোটুকু বলতে পারি, একজন শিশুর ছোট থেকে বড় হওয়া পর্যন্ত খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
ভালো থাকবেন।

 last month 

খেলাধুলা নিয়ে আপনার মতামত সত্যিই অসাধারণ। আসলে যারা খেলাধুলা পছন্দ করে তারা তাদের বয়সের উপর ভিত্তি না করে। সেই খেলাধুলা টা কে যদি ভালোবাসাতো। তাহলে জীবনের যেকোনো মুহূর্তে তাদের প্রিয় সেই খেলাধুলা অবশ্যই করতে পারত। বর্তমান সময়ের বাচ্চারা খেলাধুলার কাছ থেকে অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। যার জন্যই তাদের নানা ধরনের সমস্ত শরীরের মধ্যে দেখা দিচ্ছে।

বাচ্চাদের খেলাধুলার দিকে যতটা খেয়াল রাখতে হবে। তার চাইতেও খেয়াল রাখতে হবে। তাদের সমস্যাগুলোর প্রতি, কেননা মাঝে মাঝে দেখা যায় খেলাধুলা করতে গিয়ে তাদের অনেক ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এক্ষেত্রে অবশ্যই বাবা-মা এবং পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্যকে অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। ধন্যবাদ খেলাধুলা সম্পর্কে আপনার ব্যক্তিগত মতামত আমাদের সাথে উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.13
JST 0.030
BTC 65133.17
ETH 3480.37
USDT 1.00
SBD 2.52