“চৈত্রের ক্লান্তি”

in Incredible Indialast year

আসসালামু আলাইকুম/আদাব,

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে ভালোই আছি। আজ আমি আপনাদের মাঝে “চৈত্রের ক্লান্তি” শীর্ষক আমার একটি লিখনি উপস্থাপন করলাম। তাহলে শুরু করা যাকঃ-

20230413_141125.jpg

এখন চৈত্র মাস চলছে। বেশ কয়েকদিন থেকে তাপমাত্রা অনেক প্রখর। আমাদের এখানে চল্লিশ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর কম বা বেশি তাপমাত্রা রয়েছে। অতিরিক্ত গরমের ফলে জীবন ধারন খুব মুশকিল হয়ে পরেছে। অতিরিক্ত তাপমাত্রা অনেকে সহ্য করতে পারতেছে না।

তাতে এখন আবার রোজার মাস। সব মুসলমান কম বেশি রোজা রাখে। এই গরমে একটু অসচেতন ভাবে চলাফেরা করলে তা আমাদের জন্য ক্ষতিকর প্রভাব বয়ে আনতে পারে। তাই আমাদের একটু সচেতন হওয়া উচিত।

হঠ্যাৎ সারা দেশে শুরু হওয়া এই প্রচন্ড গরমে মানুষের দৈনন্দিন জীবন অতিষ্ঠ। সারাদেশে গড়ে সাঁইত্রিশ থেকে আটত্রিশ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকছে দিনের বেশিরভাগ সময়। ফলস্বরুপ মানুষের স্বাভাবিক জীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে। প্রচন্ড এই গরমে আমরা সবাই খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পরছি।

কেন অসুস্থ হচ্ছে কেউ জানেন কী? না জানলে আপনাকে কতগুলো জিনিস জানতে হবে। তাহলে এই তাপদাহ ও অসুস্থতা থেকে একটু হলেও রক্ষা পাবেন।

আমরা জানি যে আমাদের শরীর তার স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে নিজস্ব কৌশল এর আশ্রয় নেয়। আমাদের শরীরের জন্য বিশ থেকে পঁচিশ ডিগ্রি তাপমাত্রা হচ্ছে আদর্শ তাপমাত্রা ও আরামদায়ক তাপমাত্রা। আমাদের শরীরে এই তাপমাত্রা থাকলে আমরা আরাম বোধ করি।

কোন কারনে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে আমাদের শরীর সেটি নিজস্ব প্রক্রিয়ায় নিয়ন্ত্রন করার চেষ্টা করে। যার মধ্যে অন্যতম একটি প্রক্রিয়া হলো ঘাম নিঃস্বরন।

এই ঘাম নিঃস্বরনের দ্বারা আমাদের শরীরের ভেতরের তাপমাত্রা কিছুটা হলেও কমিয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু তাপমাত্রা যখন অতিরিক্ত হয় তখন কিন্তু আমাদের শরীর অভ্যন্তরীন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেটি কমাতে ব্যার্থ হয়।

20230413_141043.jpg

তাই আমরা আজ জানবো এই প্রচন্ড গরম থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার কিছু উপায়ঃ-

সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মিঃ আমরা যখন ভর দুপুরে রোদের মাঝে থাকি তখন সূর্যের প্রখর তাপে আমদের শরীরের অনাবৃত কিছু অনশ অতিবেগুনী রশ্মিতে পুড়ে যায়, কিন্তু আমরা কিন্তু তৎক্ষনাত সেটি বুজতে পারি না। কিন্তু কিছুক্ষন পর দেখবো যে শরীরের চামরা লাল হয়ে জ্বালা পোড়া করছে, অনেক সময় ফোস্কাও পরতে পারে।

বাঁচার উপায়ঃ সূর্যের এই অতিবেগুনী রশ্মি থেকে বাঁচতে হলে আমাদের যতটা সম্ভব প্রখর রোদ এড়িয়ে চলতে হবে। রোদে বের হলে শরীরের বেশিরভাগ অংশ ঢেকে রাখবো এবং সম্ভব হলে ডাক্তার এর পরামর্শ নিয়ে কিছু স্কিন লোশন ব্যবহার করবো।

ঘামাচিঃ প্রচন্ড গরমে আমাদের শরীরে একধরনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লাল গোটা দেখা যায় যা ঘামাচি নামে পরিচিত। শরীরে ঘামাচি হলে চামড়া লাল দগদগে হয় এবং সারা শরীর অনেক চুলকায়। আমাদের শরীরের ঘাম থেকেই মুলত এই ঘামাচি সৃষ্টি হয়। কোন কারনে ঘাম বসে গেলে ঘামাচি হতে পারে।

বাঁচার উপায়ঃ ঘামাচি থেকে বাঁচতে আমাদের প্রতিদিন গোসল করতে হবে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে, কোন কারনে শরীরে ঘামাচি হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনু্যায়ী লোশন, পাউডার ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে।

হিট স্ট্রকঃ হিট স্ট্রক হলো গরমের রোগ গুলোর মধ্যে সবথেকে ভয়ংকর বিষয়। এর কারনে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হয়ে থাকে। আমাদের দেশে হিট স্ট্রক জনিত কারনে মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। যখন আমাদের শরীরে পানি ও লবনের সরবরাহ কমে যায় ও ঘাম বন্ধ হয়ে যায় ঠিক তখনি এটি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে।

হিট স্ট্রক এর লক্ষণগুলো হলোঃ প্রাথমিকভাবে শরীরের তাপমাত্রা একশত তিন ডিগ্রি ফারেনহাইটের উপরে থাকবে, শরীরে থেকে ঘাম বের হবে না, পালস খুব দ্রুত চলবে, মাথাব্যাথা, শারীরিক দুর্বলতা ও বমিভাব হবে।

বাঁচার উপায়ঃ এসব লক্ষণ দেখা দিলে রোগীর শরীরের তাপমাত্রা কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। মাথায় পানি দিতে হবে, সারা শরীরে বরফ মাখাতে হবে, রোগীকে তরল পানীয় কিছু পান করাতে হবে। প্রয়োজনে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।

20230413_141118.jpg

পরিশেষে সৃষ্টিকর্তার নিকট প্রার্থনা করি যে আমরা যেন এই গরমে সবাই সুস্থ থাকি। এই জন্য আমাদের নিজেদের সচেতন হতে হবে ও অন্যকেও সচেতন করতে হবে। যথাসম্ভব ছায়ায় থাকতে হবে, প্রচুর পানি খেতে হবে, ক্লান্তি লাগলে লবন পানি বা স্যালাইন পানিতে গুলিয়ে খেতে হবে। খুব সমস্যা মনে হলে ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হতে হবে।

আজ আর নয় বন্ধুরা। সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহহাফেজ।

DeviceName
AndroidSamsung Galaxy A12
Camera48 MP, f/2.0, 26mm (wide), AF
LocationBangladesh 🇧🇩 🇧🇩🇧🇩🇧🇩🇧🇩🇧🇩
Short by@rakibal
Sort:  
 last year 

দারুন বলেছেন ভাই এটা চৈত্র মাস আমরা সাধারনত জানি চৈত্র মাস খরার মাস এই চৈত্র মাসে আকাশে প্রচুর রোদ থাকে যার ফলে সাধারন মানুষের অনেক ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে ৷ ঠিকভাবে চলাফেরা বা মাঠে কাজের জন্য যেতে পারে না ৷

তাছাড়াও অনেকের অনেক ধরনের রোগ ব্যাধি রয়েছে যার ফলে মানুষ অনেক ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে ৷ তাছাড়াও রমজান মাস সারাদিন রোজা রেখে অনেকেই মাঠে কাজ করতে যায় ৷

তারপর তার পাশাপাশি আপনি আপনার পোস্টে রোদ থেকে সুরক্ষিত থাকার কয়েকটি উদাহরন দিয়েছেন যেগুলা পড়ে খুবই ভালো লাগলো ৷

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এতো সুন্দর ভাবে একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য ৷ ভালো থাকবেন ৷

#miwcc

 last year 

হঠ্যাৎ সারা দেশে শুরু হওয়া এই প্রচন্ড গরমে মানুষের দৈনন্দিন জীবন অতিষ্ঠ। সারাদেশে গড়ে সাঁইত্রিশ থেকে আটত্রিশ ডিগ্রি তাপমাত্রা থাকছে দিনের বেশিরভাগ সময়। ফলস্বরুপ মানুষের স্বাভাবিক জীবন বিপর্যস্ত হচ্ছে। প্রচন্ড এই গরমে আমরা সবাই খুব দ্রুত অসুস্থ হয়ে পরছি।

চলছে রমজান মাস, চৈত্র মাসের এই খরার মধ্যে অনেকটা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। বিশেষ করে আমি ব্যক্তিগতভাবে যদি আমার কথা বলি, তাহলে আমি খুব অস্বস্থির মধ্যে আছি।

এই রোদের মধ্যে যেমন রোজা রাখা খুব কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ঠিক তেমনি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজগুলো করাটাও অনেকটা খারাপ অবস্থার দিক, লক্ষণ আমরা বুঝতে পারছি।

এই গরমের কারণে আমরা একটু অসচেতন হলেই আমাদের শুরু হয় অসুস্থতা। এই অসুস্থতায় আমরা কেন ভুগছি সেটা হয়তোবা আমরা বুঝতে পারি না।

আপনি দেখছি আপনার পোস্টে খুব সুন্দর করেই, এই চৈত্রের প্রখর রোধের প্রভাব থেকে মুক্তির কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন। অসংখ্য ধন্যবাদ অজানায় তথ্যগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন।

#miwcc

Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.27
TRX 0.12
JST 0.031
BTC 69047.36
ETH 3739.58
USDT 1.00
SBD 3.66