নিজেকে সময় দেয়ার বিষয়ে আমরা বেশ কৃপন
কেমন আছেন বন্ধুরা? আল্লাহ্র অশেষ মেহেরবানীতে আমি সুস্থ্য এবং ভালো আছি। সুস্থ্যতা আল্লাহ্ তা’লার সবচেয়ে বড় নিয়ামত। আর এই নিয়ামত পেয়ে আমি অনেক খুশি।
আজ আমি আপনাদের মাঝে “নিজেকে সময় দেয়ার বিষয়ে আমরা বেশ কৃপন” শীর্ষক একটি লিখনি উপস্থাপন করছি। তাহলে শুরু করা যাকঃ-
একটু গভীর মনযোগ দিয়ে চিন্তা করুন তো, প্রতিদিন আমরা নিজেদের কতটুকু সময় দেই? যতটুকু সময় দেই ততটুকু যথেষ্ঠ কী না? আমার মনে হয় যতটুকু সময় আমরা নিজেদের দেই ততটুকু সময় যথেষ্ঠ না।
এর বিভিন্ন কারণ রয়েছে। তবে সব কারণ ছাপিয়ে চারিদিক একবার তাকালে দেখবো আমরা কতটা সংকটাপন্ন সময় পার করছি। এই বছরেই আমি আমার দুজন কাছের মানুষকে হারিয়েছি।
একজন গ্রামবাসী বড় ভাই আরেকজন কলেজ জীবনের বান্ধবি। তাদের প্রত্যেকের জীবন আমাদের মতনই স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু তাদের শরীরে যে মরনব্যাধী বাসা বেধেছিলো তারা বোধয় একটু দেড়িতেই সেটি টের পেয়েছিলো।
ততক্ষণে সময় ফুরিয়ে গেছে। চিকিৎসা করেও আর কোন লাভ হয়নি। একথা বললাম কেননা তারা কখনো নিজের জন্য সময় রাখেনি। সবসময় ক্যরিয়ার, সংসার আর টাকার পেছনে দৌঁড়েছে।
আমার যে গ্রামবাসী বড় ভাই ছিলো, তিনি একজন ফ্রিল্যান্সার ছিলেন। বেশ ভালোই দিন পার করছিলেন তিনি। স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন সবাইকে নিয়ে বেশ সুখে দিন কাটছিলো তার। কিন্তু তিনি সবসময় কাজে ব্যস্ত থাকতেন।
দিন নেই রাত নেই শুধু কাজ আর কাজ। বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম থেকে তিনি কাজের অর্ডার নিতেন এবং দিন রাত পরিশ্রম করে সেগুলো সম্পন্ন করে দিতেন। এত কাজের ভীরে তিনি নিজেকে এক প্রকার ভুলেই গিয়েছিলেন।
নিজের জন্য তিনি কখনো কোন সময় রাখেননি। কোন অসুখ হলে নিজে যা বুঝেছেন তাই ঔষুধ হিসেবে সেবন করেছেন। সবার কথা ভাবতে গিয়ে নিজেকে নিয়ে ভাবার সময়টুকু পাননি তিনি।
আমার বান্ধবীর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। তার যেহেতু যৌথ পরিবারে বিয়ে হয়েছিলো তাই সব কাজ তাকে একাই সামাল দিতে হয়েছিলো। ছোটবেলা থেকেই তার কিডনির সমস্যা ছিলো। কিন্তু সে সামান্য অসুখ মনে করে তেমন পাত্তা দেয় নি।
বিয়ের পরে কখনো মাথায় আনেনি তার ভেতরে একটি অসুখ রয়েছে। দিনরাত শুধু সংসারের জন্য পরিশ্রম করে গেছে। কিন্তু একসময় এসে তার জীবন থমকে গেছে।
সেদিন সবাই আফসোস করেছে ইশ আগে যদি ভালো ডাক্তার দেখানো হতো তাহলে হয়তো আর কিছুদিন বেঁচে থাকতো। খুব অল্প বয়সেই দুনিয়া থেকে চলে গেলো।
সব কিছু দেখে নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করি তারা যে এভাবে চলে গেলো কখনো কি টের পায়নি তাদের ভেতরে অনেক বড় অসুখ রয়েছে? মন উত্তরে বলে নিজের জন্য তারা পর্যাপ্ত সময় ব্যায় করেনি তাই হয়তো রোগ সনাক্ত করতে পারেনি।
এখন মূল কথায় আসি। সংসার জীবন আমাদের প্রত্যেকেরই আছে। আমাদের নিজস্ব ক্যরিয়ার রয়েছে। সবকিছু ছাপিয়ে কিন্তু আমার জীবন সবার আগে। আমি নিজেই যদি সুস্থ্য ও স্বাভাবিক না থাকি তাহলে সংসার ও ক্যারিয়ার দিয়ে কী হবে।
আমি না থাকলেও এগুলো সমান তালে চলবে। কারণ পৃথিবীর নিয়ম ঠিক এরকম। তাই প্রতিদিন নিজের জন্য সময় বরাদ্দ রাখা জরুরী।
উন্নত বিশ্বে দেখবেন সকলেই নিজের প্রতি কতটা দায়িত্বশীল ও যত্নশীল। তারাও কিন্তু নিজের ক্যরিয়ার ও নিজের পরিবারকে নিয়ে ভাবে। পরিবারের জন্য নিজেকে উজার করে দেয়। তারপরেও তারা কতটা স্বাস্থ্য সচেতন।
আমি প্রায়শই ইউটিউবে সার্চ দিয়ে তাদের জীবনধারা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি। তারা কতটা স্বাস্থ্য সচেতন।
তারা নিয়ম করে জিমে যায়, মাসে একবার হলেও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এর কাছে যায়, খাদ্য তালিকায় সব ধরনের খাদ্য স্থান পায়, মাসে একবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঘুরতে বের হয় ইত্যাদি।
আমরা বাঙ্গালিরা আসলে এসব করি কিনা সে বিষয়ে কিন্তু যথেষ্ঠ সন্দেহো রয়েছে। তবে অনেকেই এখন স্বাস্থ্য সম্পর্কে বেশ সচেতন।
সব মিলিয়ে আমাদের নিজের সময় দিতেই হবে। সময় দেয়ার ব্যপারে কোন কৃপনতা করা যাবে না। তিন মাসে একবার হলেও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হবে।
সাধারণ অসুখ বিসুখ হলেও ডাক্তারের পরামর্শমতন ঔষধ সেবন করতে হবে। নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে হবে। কারণ আপনার স্বাস্থ্য যেমন আপনার সম্পদ ঠিক তেমনি পরিবার তথা দেশের সম্পদ।
আজ আর নয় বন্ধুরা। ভালো থাকবেন সকলে। আল্লাহ্হাফেজ।
X promotion link: https://x.com/AlRiaz76338/status/1804185843860672747
আসলে আপনি যে কথাগুলো বলেছেন সে কথাগুলো অনেকটাই সত্য কথা, আমরা বিভিন্ন ধরনের কাজ কর্ম পিছনে ছুটে ছুটে নিজের কথা ভুলে যাই। এবং নিজেকে যে একটি সময় দিতে হয় সেই সময়তেই আমরা দিতে পারি না এ কারণে আমাদের বিভিন্ন ধরনের রোগের সম্মুখীন হতে হয়। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে করার জন্য।
আপনার লেখা টাইটেল টা দেখি পোস্টটা করছিলাম এত বেশি ভালো লেগেছে আর বাস্তব সত্যি কথার উপরে পোস্টে লিখেছেন।
আমরা কখনো নিজেকে নিয়ে একটু ভাবি না নিজেকে সময় দেই না।
আর এই সময়ের অভাবে নিজেকে নিয়ে না বসার অভাবে ,আমাদের ভিতরে এমন এমন দূরত্ব সৃষ্টি হয় ।এমন এমন রোগ সৃষ্টি
হয় যেগুলা একটা সময় নিজেকেই অনেক তাড়িয়ে বেড়ায়।
তাই আমাদের প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত প্রতিদিন একটু একটু করে নিজেকে সময় দেওয়া।
আমার মনে হয় আমরা বাঙালিরা নিজেরাই ডাক্তার। মানে ধরুন ছোটো থেকে বড়দের মুখে ঘরোয়া চিকিৎসা পদ্ধতি শুনে হোক, বা বেশকিছু পরিচিত ঔষুধের নাম জেনে হোক, শারীরিক সমস্যা হলে আমরা নিজেদের চিকিৎসা নিজেরা শুরু করি। আর এই কারণেই সমস্যা দেখা দেয়। আর তখন অনেক কিছুই আমাদের হাতের বাইরে চলে যায়। বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়কে আজ লেখার মাধ্যমে তুলে ধরার জন্য, ধন্যবাদ আপনাকে। ভালো থাকবেন।
্নাকে।আমরা যখন আমাদের জীবনের সেরা সময় পাই তখন আসলে বুঝতে পারি না, অনেকেই এই সময় নিজের জন্য ব্যয় না করে চেষ্টা করে ক্যারিয়ার গরতে, কিন্তু একটা সময় এসে শুধু আক্ষেপ হয়, কি সময় ফেলে এসেছি এটা ভেবে। আমরা চাইলেও আর সে সময় গুলো ফেরত পাই না। তাই আমাদের উচিঠ নিজের জন্যে কিছু সময় বের করা। ধন্যবাদ সুন্দর বিষয় নিয়ে লেখার জন্য।