বেচে থাক গ্রাম, বেচে থাক একটি ধানের শীষের উপরে একটি শিশিরবিন্দু।
প্রিয় বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? শনিবারের সন্ধ্যেবেলায় বৈঠক খানায় বসে আজকের লেখা সম্পন্ন করছি।
প্রতিদিন আপনাদের মাঝে কিছু এমন বিষয় নিয়ে আমি হাজির হই, যেটি কেবল আমি বিশ্বাস করি তাই নয়, ব্যক্তিগত জীবনে মেনে চলি।
আজকে আমার সপ্তাহের সবচাইতে পছন্দের দিনটিতে বসে শৈশবের স্মৃতিচারণ করতে করতে উপরিউক্ত শিরোনামের নির্বাচন করেছিলাম।
আমি পূর্বেও আমার লেখায় উল্লেখ করেছি, গ্রাম এবং গ্রাম্য পরিবেশের উপরে আমার একটি বাড়তি টান রয়েছে।
কেউ ভাবতে পারেন আমি আধুনিক নই, কেউ ভাবতে পারেন বয়েস বৃদ্ধির কারণে আমার চিন্তাধারা হয়তো খানিক সাবেকি;
তবে সময়ের সাথে আমি নিজেকে বাহ্যিক দিক থেকে আধুনিক পরিষেবার সাথে এবং নিত্য নতুন বহু কিছু বিষয়ের সাথে খাপ খাইয়ে নিলেও আন্তরিক দিক থেকে আমি বাংলার মাটির সান্নিদ্ধ্যেই রয়ে গেছি।
শহরে রয়েছি আজ বহু বছর এবং কাজের সুবাদে আমাকে ঘুরে বেড়াতে হয়েছে বহু আধুনিক শহরের পাশপাশি প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে।
কাজেই দুটি জায়গা, মানুষের রোজনামচা জীবনযাপন, বেশভূষা, খাদ্যাভ্যাস এবং তাদের স্বভাব, ব্যবহার সবটাই আমার খুব কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে।
আর ঠিক সেই কারণেই আমার গ্রামের প্রতি এবং সেখানকার মানুষের প্রতি ভালোবাসা অপরিবর্তিত রয়ে গেছে।
তাই আজ যখন কিছু ছবি আপনাদের সাথে ভাগ করবার কথা ভাবছিলাম, তখন উপরিউক্ত কবিগুরুর কবিতার লাইনটি মাথায় নিজে থেকেই চলে এলো।
কত মূল্যবান কথা বিশ্বকবি বলে গেছেন বহু বছর আগে, কতটা আধুনিক চিন্তাধারা থেকে লেখাটি আসতে পারে যেখানে দাঁড়িয়ে তিনি দেখেছিলেন আজকের পৃথিবীর বাস্তবিক পরিস্থিতি কি হতে চলেছে।
যদিও শীর্ষকে উদ্ধৃত উপরিউক্ত আট লাইনের কবিতাটি কবিগুরু লিখেছিলেন সত্যজিৎ রায়ের উদ্দেশ্যে, এবং তাঁর মাকে বলেছিলেন বড়ো হলে ও লেখাগুলোর মানে বুঝবে।
বেগুনি খাতার পৃষ্ঠায় লেখা সত্যজিৎ রায়কে উপহার দেওয়া সেই আট লাইনের কবিতা আজ এমন কোনো বাঙালি নেই যিনি জানেন না, তবে তার আক্ষরিক অর্থ আজও মানুষ বুঝে উঠতে পারেন নি।
যদি তাই হতো তবে, আজকের আধুনিক ছেলে মেয়েদের কাছে গ্রাম ততটাই আকর্ষণীয় হতে পারত যতটা শহরের জীবন এবং সাথে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে রয়েছে।
এরজন্য কিন্তু খানিক দায়ী আমরা এবং আমাদের আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতা, যেখানে আমরা আমাদের সন্তানকে বদ্ধপরিসরে বড়ো করে তুলছি, ইংরিজি যতটা গুরুত্ব দিয়ে শেখাচ্ছি ততটাই দূরে করে দিচ্ছি মাটির কাছ থেকে।
আজ আমরা প্রযুক্তির মধ্যে আবদ্ধ করে রেখেছি শৈশব, খোলা মাঠ, উন্মুক্ত হওয়া, পুকুরের জলে আজ কটা শিশু খেলে বেড়ায়!
এখন শহরের ছেলে মেয়েরা সাঁতার শেখে সুইমিং পুলে, কচুরিপানা, পাকের গন্ধ, গুগলি এখনকার শহুরে ছেলে মেয়েদের মধ্যে কতজন কুড়িয়েছে?
অনেক হয়তো নামই শোনে নি, কাজেই কবি জানতেন ভবিষ্যত্ প্রজন্ম বাংলাকে স্মৃতির পাতা থেকে বিস্মৃত করে দেবে, তাই গ্রামের শোভার বর্ণনা তিনি দিয়ে গিয়েছেন তাঁর এই আট লাইনের কবিতায়।
অবশেষে তাই সকলের কাছে আমার বার্তা, আধুনিকতা কোনো দোষের নয় তবে জানবেন গ্রাম বাংলাকে বাদ দিয়ে, শহরের সৌন্দর্য্য ফিকে।
কাজেই আমার আশা বেচে থাক গ্রাম, বেচে থাক একটি ধানের শীষের উপরে একটি শিশিরবিন্দু।
ভালো থাকুন সবাই, খুব আনন্দের সাথে কাটুক আপনাদের খ্রিস্টমাস দিবস, সাথে আগামী দিনগুলো এই কামনা করে আজ বিদায় নিলাম।
সুজলা সুফলা শস্য-শ্যামলা আমাদের এই বাংলাদেশ। আমাদের বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রজাতির ধান জন্ম তেমনি আপনি ধানের ছবি তুলে ধরেছেন এটা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে আসলেই অসাধারণ লাগছে ধানের ফলনগুলো তাই আপনাকে এত সুন্দর পোস্ট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
গ্রাম বাংলার প্রাকৃতিক দৃশ্য সত্যিই মনোমুগ্ধকর। আমিও গ্রামেই বাস করি সে জন্য এই দৃশ্য গুলো আমার চিরচেনা।
আপনার সৃজনশীল লেখাতে উল্লেখিত প্রতিটা ফটোগ্রাফী ই অত্যন্ত সুন্দর।
These are amazing shots 🙌👍 rice