যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিনে আমার শহর এবং বিভিন্ন মুহুর্তের কিছু ছবি।

in Incredible India2 years ago
IMG_20221226_210910.jpg
(বড়দিনের সাজে সিটি সেন্টার-2)

প্রিয় বন্ধুরা,
সপ্তাহের প্রথমদিন সকলকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে এবং বছরের শেষ দিনগুলি কুশলে কাটুক এই কামনা করে আজকের লেখা শুরু করছি।

গতকাল বিশ্বব্যাপী যীশু খ্রীষ্টের জন্মদিন পালিত হয়েছে এবং এই রেশ চলবে বছরের শেষ দিন পর্যন্ত।
নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে এই আনন্দতে সমাপ্তি টানা হবে, অন্যান্য দেশের মতো আমার প্রাণের শহর কলকাতা ও সেজে উঠেছে আলোকসজ্জায় এবং আজকে তার কিয়দাংশ আপনাদের সাথে ভাগ করে নিতে আমার এখানে আসা।

IMG_20221226_210852.jpg
(পার্ক স্ট্রিট বড়দিনের সাজে)

গতকাল রবিবার ছিল, ফলে অফিসের কাজের কোনো চাপ ছিল না, দুপুরে সবে লেখা সেরে উঠতেই এক বন্ধুর বাড়িতে যাবার নিমন্ত্রণ পেলাম।

বেলা ৩:৩০ মিনিট নাগাদ বেরিয়ে গিয়েছিলাম, কারণ আমার বন্ধুর বাড়ি যেতে কলকাতার এমন কিছু জায়গার উপর দিয়ে যেতে হয় যে জায়গাগুলো আমি জানি বড়দিনে বেশ জাকজমোক সহকারে সাজানো হয়।

কাজেই একটু তাড়াতাড়ি বেড়িয়েছিলাম সেই জায়গাগুলো দেখার জন্য। প্রথমে সিটি সেন্টার ২ এর ভিতরে গিয়ে এক বিশালকায় খ্রিস্টমাস ট্রি সাজানো দেখলাম যেটি স্থাপিত করা ছিল Inox 📽️ সিনেমা হলের সামনে।

IMG_20221226_211205.jpg
(বড়দিনের অস্তমিত সূর্য - ইকো পার্ক)

এরপর ইকো পার্কের সূর্যাস্তের একটি ছবি তুলে এগোতে থাকলাম বন্ধুর বাড়ির উদ্দেশ্যে, এবং কলকাতাবাসী সকলের জানা পার্ক স্ট্রিট এমন একটি স্থান কলকাতার যেখানে প্রতিবছর চোখে পড়বার মত করে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়।

এবারেও অন্যথা হয়নি, কাজেই পথচলতি তার একটি মাত্র ছবি তোলবার সুযোগ পেয়েছিলাম এতোটাই যানজট ছিল গতকাল যে, গাড়ি দাড়াতেই দিচ্ছিল না।

ওদিকে বন্ধুর বাড়ি পৌঁছনোর তাড়া ছিল, আবার বাড়ি ফেরার কথা মাথায় রেখে এগিয়ে গেলাম।
বন্ধুর বাড়ি পৌঁছে চক্ষু চড়কগাছ, গোটা বাড়ি আলো দিয়ে সাজানো, সঙ্গে ছিল চিনা খাবার আর বাচ্চাদের হুল্লোড়।

IMG_20221226_211022.jpg
(বন্ধুর বাড়িতে খাবার আয়োজন)

মনে মনে ভাবলাম একটা মানুষের হৃদয়ের মাপকাঠি নির্ধারিত হয় যখন সে ধর্ম, বর্ণ এবং জাতির উর্ধ্বে উঠে আনন্দ ও ঐক্যতাকে প্রাধান্য দিতে পারে।

কলকাতা সহ ভারতের সবচাইতে বড় ঐতিহ্য হলো সর্বধর্মসমন্বয়, যেখানে প্রতিটি ধর্মের মানুষ অংশগ্রহণ করেন প্রতিটি ধর্মের অনুষ্ঠানে।

কলকাতায় শুধু দেশের নয় বিদেশীরাও সমান প্রাধান্য পায় এবং তার সবচাইতে বড় প্রমাণ চায়না টাউন, যেখানে চীন বংশোদ্ভুত মানুষরা বহু বছর ধরে বসবাস করছেন এবং তাদের চেহারার দিকে না তাকিয়ে যদি কথা বলেন আপনি বুঝতেই পারবেন না যে তারা চীন বংশোদ্ভুত, এমন স্পষ্ট, সঠিক বাংলা উচ্চারণ তাদের, একই তো বলে দেশ ও দশের প্রতি ভালোবাসা।

IMG_20221226_211041.jpg
(বাড়ির তিন সদস্যের তিনটি কেক)

যাইহোক, একসাথে বেশ খানিকটা সময় কাটিয়ে বাড়িতে ফেরবার সময় তিনটি কাপ কেক নিয়ে এসেছিলাম একসাথে স্ত্রী, কন্যা সহ বড়দিন পালনের জন্য।

এইভাবেই কালকের দিনটি আমার কেটেছিল, যেখানে আমি কিছু সময় কাটিয়েছি আমার শহরের সাথে, কিছু শহরের সাজ সজ্জার সাথে, খানিকটা সময় বন্ধু এবং তার পরিবারের সাথে।

অবশেষে নিজের পরিবারের সাথে, প্রতিদিনের সময়কে সঠিকভাবে কাজে প্রয়োগ করতে জানলে বোধ হয় আপনজনরা একাকিত্ব বোধ করবার হাত থেকে মুক্ত হতে পারে এবং সাথে সেই সকল সম্পর্ককে সজীব রাখা যায় যারা আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ।

আজ এই বলেই আমার লেখা শেষ করলাম, ভালো থাকুন সবাই এবং আনন্দ করে বাঁচুন।

Sort:  
Loading...
 2 years ago 

কাপ তিনটা কেক দেখে আমি লোভ সামলাতে পারছি না। বাকী চাইনিজ পদ গুলোও বেশ লোভনীয় অনেক। বেশ সুন্দর লিখেছেন আপনি। এরকম লেখা আরো লিখে আমাদের পড়ার সুযোগ করে দিবেন।
ধন্যবাদ ভাইয়া।।।

 2 years ago 

অনেক দিন বাদে আপনার পোস্ট পড়লাম। ভালো লাগলো। প্রথমেই বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাই স্যার। আশাকরি আপনি ভালো আছেন?
আপনার বন্ধুর বাড়িতে খাওয়ার আয়োজন দেখে আমারই লোভ লাগছে। আর শেষপাতে এমন কেক পেলে আজকের লাঞ্চটা জমে যেতো। ভালো লাগলো দেখে যে বড়দিনটা সকলে মিলে আনন্দ করে কাটিয়েছেন। ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

প্রথমত আপনাকে বড়দিনের শুভেচ্ছা আপনার পোস্টগুলো খুব সুন্দরভাবে আপনি উপস্থাপন করেন যা পাঠকের জন্য খুবই সহজসূলভ। আমাদের এরিয়াতে অনেক শপিং মল এবং বড় বড়া তারকা হোটেলগুলো সেজেছে ক্রিসমাসের আঙ্গিকে। আপমার পোস্টে উল্লেখিত খাবার গুলোর ফটোগ্রাফি দেখে খেতে ইচ্ছে করতেছে। নিশ্চয়ই খেতে সুস্বাদু ছিলো?

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.19
JST 0.034
BTC 90741.27
ETH 3105.77
USDT 1.00
SBD 2.95