গ্যাংটক থেকে লাচেন যাবার পথের কিছু ছবি।
প্রিয় বন্ধুরা,
নতুন বছর আসতে না আসতেই প্রথম মাসটি শেষ হতে চলেছে, সময় কারোর জন্য বা কোনো পরিস্থিতিতেই থেকে থাকে না।
আশাকরি আপনাদের দিনগুলি কুশলেই কেটে যাচ্ছে, আজ কলকাতায় বেশ ঠাণ্ডা পড়েছে, তাই শীতলতার কথা ভেবে সিকিমের বেশ কিছু ছবি নিয়ে হাজির হলাম।
উদ্দেশ্য কেবল ছবি ভাগ করে নেওয়া নয়, সাথে একই আকাশের নিচে বিভিন্ন মানুষের জীবন যাপনের ধারা নিয়ে কিছু কথা ভাগ করে নেওয়া।
আমরা যারা উষ্ণভাবাপন্ন আবহাওয়াতে বেড়ে উঠেছি, তাদের কাছে দু-একদিনের ঠাণ্ডাই কাবু করে দেবার জন্য যথেষ্ট।
অপরপক্ষে শীতল আবহাওয়ায় থাকা মানুষদের প্রতিদিন এই ঠান্ডার সাথেই সহবাস করতে হয় এবং দৈনন্দিন কাজ সম্পন্ন করতে হয়।
আমরা যারা গরমের সাথে মোকাবিলা করছি, তাদের জায়গাতে এসে এই পার্বত্যাঞ্চলের মানুষদের লড়াইটা কঠিন হয়ে যায়।
আমার উপরিউক্ত কথাগুলো বলার কারণ আমরা যে পরিস্থিতিতে বেড়ে উঠি, সেখানের সবকিছুই আমাদের কাছে সময়ের সাথে সহজ হয়ে যায় তাই সামান্য আবহাওয়ার তারতম্য আমাদের বিচলিত করে তোলে।
আমার কথার অর্থ হলো দুর থেকে যা কিছু সহজ মনে হয়, কাছে গেলে দেখা যাবে সেটাই অনেক কঠিন অনেক মানুষের ক্ষেত্রে।
আমি এই সকল পার্বত্য অঞ্চলে ঘুরতে গিয়ে বেশ অবাক হয়েছি এখানের মানুষদের জীবন যাপনের পদ্ধতি দেখে।
সমতলে যেখানে সূর্যের তাপ আমাদের একপ্রকার ঝলসে দেয় এবং গলদঘর্ম হয়ে আমাদের কাজ সমাধা করতে হয়,
সেখানে এই সকল পার্বত্যাঞ্চলে সূর্যের দেখা পাওয়া একপ্রকার সৌভাগ্য।
বছরের প্রায় সময় কুয়াশার মধ্যে দিয়ে পথ খুঁজে নিতে হয়, এবং এখানের মানুষরা এই আবহাওয়াকে মাথায় করে খাড়াই পর্বতের গা থেকে কাটা রাস্তা ধরে ভারী জিনিষ পিঠে নিয়ে উপরে ওঠে, যেটা আমাদের মত সমতল ভূমিতে থাকা মানুষদের কাছে অবাক করবার বিষয়।
আমি নিজে গাড়ি চালাতে জানি, কিন্তু সত্যি বলতে পাহাড়ি পথে গাড়ি চালানো আর পার্বত্য পথের মধ্যে আকাশ পাতাল পার্থক্য।
আপনারা জানেন কিনা জানিনা তবুও বলি, যেসকল মানুষদের পাহাড়ে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা আছে তারা যেকোনো রাস্তায় গাড়ি চালাতে সক্ষম, কিন্তু এই বিষয়টি কিন্তু সমতল ভূমিতে গাড়ি চালানোর ক্ষমতা রাখা মানুষদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
সৃষ্টিকর্তা সকলকে তাদের উপযুক্ত স্থানের সাথে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েই সৃষ্টি করেন, আর কিছুটা নিজেদের অর্জন করে নিতে হয়।
তাই অভিযোগ নয়, নিজের প্রাপ্ত জীবনে যতটুকু পাওয়া যায় তাকে সাদরে আহ্বান জানিয়ে শেষ পর্যন্ত মোকাবিলা করে যাবার নামই জীবন।
একটু শীত পড়লেই যেমন গুটিয়ে যেতে নেই, তেমনি উচ্চ তাপমাত্রা কেও উপেক্ষা করে এগিয়ে যাবার নামই জীবন।
জীবন একটাই তাই অভিযোগ নয়, পরিস্থিতির মোকাবিলা করে তাকে উপভোগ করতে হবে প্রতিনিয়ত।
এই পর্যন্তই লিখে আজকের লেখায় ইতি টেনে বিদায় নিলাম। ভালো থাকুন সকলে আর জীবনে প্রতিনিয়ত উপভোগ করুন।
একদম রাইট কথা ভাই। এজিবনের পর আর জীবন নাই, তাই অভিযোগ করা নয়, পরিস্থিতি যেমনি হোক না কেন সেটার মোকাবিলা করাই প্রতিনিয়তের বড় কাজ। আর এটাই জীবন যুদ্ধের সংগ্রামী।
সুন্দর লিখেছেন আপনি। ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। বায়