একাগ্রতা এবং সময়ানুবর্তিতার গুরুত্ব//Importance of concentration and punctuality

in Incredible Indialast year
magic-cube-1976725_640.jpgsource

শুভ বিকাল, অতিরিক্ত গরমে ক্লান্ত শরীরও মন নিয়ে লিখতে বসলাম। আশা করি এই গরমকে আপনারা উপভোগ করছেন যার যার মত করে। সেই সাথে এটাও প্রত্যাশা করতে পারি যে আপনারা সকলেই ভালো আছেন।

সেই সাথে আরও একটি প্রত্যাশা আমি রাখতেই পারি। আপনারা ইতোমধ্যে আমার আজকের লেখার শীর্ষক লাইনটি পরিদর্শন করেছেন বা আপনাদের চোখে পড়েছে।

একাগ্রতা এবং সময়ানুবর্তিতা সম্পর্কে আমরা জানিনা এরকম হয়তো কেউ বলবেন না। তবে এ বিষয়টি জানা থাকলেও আমরা কতটা প্রয়োগ করি আমাদের বাস্তব জীবনে এইটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার।

আমরা সাধারণত আগ্রহী পৃথিবীতে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের জীবনী পরিদর্শন করতে। আবার কেউবা আগ্রহী তার সফলতার কাহিনী গুলো অধ্যয়ন করতে।

এটাকে শুধুমাত্র অধ্যয়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখাটা নির্বোধের কাজ।

কেন? কিভাবে এই সফলতা?

source

প্রথমত আপনি যখন এই সফলতার রহস্য খুঁজতে যাবেন। অর্থাৎ কেন প্রশ্নের উত্তর আপনি খোঁজার চেষ্টা করবেন, তখনই একটা জিনিস আপনি পাবেন সেইটা হচ্ছে তাদের খারাপ সময় গুলো।

পৃথিবীর ইতিহাসে আমার দেখা যতজন সফল মানুষ এবং যাদের সম্পর্কে আমি জেনেছি জানার চেষ্টা করেছি, তাদের অবস্থান বিখ্যাত হওয়ার পরে ঠিক যেরকম তার উল্টোদিকে ছিল পূর্বে।

এই মানুষগুলো তাদের এই খারাপ অবস্থা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। কখনোই তাদের দুর্বলতাকে দুর্বলতা মনে করেনি বরং সেটাকে তাদের শক্তি করে নিয়েছে।

তবে হ্যাঁ, আবেগ দিয়ে কিন্তু আসলে জীবন চলে না। তারা যখন উদ্দেশ্য নিয়ে নিয়েছিল হাতে যে সফলতা এনেই ছাড়বে, তখন থেকেই তারা কিছু জিনিস হারিয়ে ফেলেছিল জীবন থেকে।

  • সামান্য ব্যথায় ব্যথিত হওয়া। আরাম-আয়েসের জীবন থেকে নিজেকে বেরিয়ে নিয়ে আসা। সবাইকে কাজের মধ্যে আটকে দেওয়া। মানুষের কথায় কান দেওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখা।

  • নিজের উদ্দেশ্যে অটুট থাকা। নিজের পরিকল্পনা থেকে সরে না যাওয়া এবং সঠিক সময়ে পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। নিজের কাজকে কখনোই ছোট মনে না করা।

আমরা একটা প্রবাদ বাক্যের সাথে সবাই পরিচিত যে,

  • সময় এবং নদীর স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না।

এখন আমি এটার পরিপ্রেক্ষিতে যেটা আপনাদেরকে বলব হয়তো একটু অবাক লাগবে। তবে যদি সত্যিই মনোযোগের সাথে পরিদর্শন করেন তাহলে কোথাও একটা মিল খুঁজে পাবেন বাস্তবতার সাথে।

  • আমি এটা অস্বীকার করি না যে সময় ও স্রোত বেঁধে রাখা যায় না। আবার বলব এটা বেঁধে রাখা সম্ভব।

    যদি আপনি পরিকল্পনা অনুসারে সময়মতো কোনো কাজ করেন তাহলে ওই কাজের মাধ্যমে আপনার সময়টা বেঁধে রাখা হয়। যেটা আপনি নিজেও বুঝতে পারেন না।

একাগ্রতা এবং সময়ানুবর্তিতার গুরুত্বঃ-

woman-865021_640 (1).jpgsource

ধরে নিন কিছুক্ষণের জন্য আপনি একটা কোম্পানিতে চাকুরী নিয়েছেন। যেখানে আপনার শিক্ষানবিশ কাল চলছে আর আমাদের জানা তখন আমাদেরকে ওই কোম্পানির কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত করানো হয়।

সেই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে আপনার মাসের বেতনটা খুব বেশি না। এমনকি ওই সময় আপনি আবারো একটি ভাল অফার পেয়েছেন অন্য কোন কোম্পানিতে যোগদানের জন্য।

এখন এটা নির্ভর করবে আপনার উপর যে আপনি কোথায় চাকরি করবেন। তবে এক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে যে আপনি যেহেতু প্রথম চাকুরীতে যোগদান করেছেন তাই উচিত আপনার ঠিকানা বেশ সময়টা অতিবাহিত করা।

কারণ এটা আপনার প্রথম সুযোগ তাই এটাকে সঠিকভাবে জীবনে কাজে লাগানো সবারই উচিত। আপনি যদি চমৎকার একটা পারফরম্যান্স করতে পারেন এই শিক্ষানবিশ কালে তাহলে দেখা যাবে এই কোম্পানিতে আপনার পদোন্নতি সম্ভাবনা খুব বেশি থাকবে।

আপনি যদি শুধু চাকুরী করার উদ্দেশ্যে একটা কোম্পানিতে যোগদান করেন তাহলে বিষয়টা এখানে সীমাবদ্ধ। তাহলে আপনি আর বিখ্যাত সেই মানুষের তালিকায় নিজেকে তালিকাভুক্ত করতে পারবেন না।

অন্যদিকে আপনি এই শিক্ষানও বেশ কালটাকে কাজে লাগিয়ে নিজের পদোন্নতি করে এবং কোম্পানির সকল কার্যক্রম গুলো যদি আয়ত্ত করতে পারেন, তাহলে ধরে নিন আপনি নিজেই একটা কোম্পানি।

যেখানে আপনি চাকুরী পাচ্ছিলেন না তারপর একটা চাকুরী পেয়েই গেলেন। আর নিজেকে যদি আপনি কোম্পানির মত করে তৈরি করতে পারেন তাহলে দেখবেন চাকরি আপনার কাছে ছুটে আসবে আপনাকে যেতে হবে না।

এই বিষয়গুলো অনুসরণ করে যারা পৃথিবীর বিখ্যাত। হয়তো বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে কোম্পানি হিসেবে তৈরি করেছেন তারা অথবা এই শিক্ষানবিশ কালটাকেই তারা কাজে লাগিয়েছে।

আমি আপনাদেরকে এই লেখার মধ্যে একটা জিনিস উপলব্ধি করানোর চেষ্টা করেছি যে আপনারা যেখানেই প্রবেশ করবেন না কেন সেখান থেকে ভালো একটা কাম আউট নিয়ে বেরিয়ে আসবেন।

হাতির দলের মধ্যে নির্যাতিত হয়ে থাকার চেয়ে পিঁপড়ের দলের সর্দার হয়ে থাকাটা অনেক সম্মানের।

তবে এই সম্মানের জায়গাটা আপনাকে কেউ ছেড়ে দিবে না। আপনার পরিশ্রম, সততা ও দক্ষতা, এই জায়গাটা আপনার জন্য বরাদ্দ করবে।

যেখানেই থাকবেন না কেন সেখানেই নিজেকে তৈরি করুন। এদিক ওদিক ছোটাছুটি করে নিজের পায়ের তলার মাটিকে দুর্বল করার থেকেও শ্রেয় হচ্ছে এক জায়গায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা।

অনেক ধন্যবাদ সকলকে আমার লেখাটি মনোযোগের সাথে পরিদর্শন করার জন্য।

Sort:  
Loading...
 last year 

আমরা সাধারণত আগ্রহী পৃথিবীতে বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের জীবনী পরিদর্শন করতে। আবার কেউবা আগ্রহী তার সফলতার কাহিনী গুলো অধ্যয়ন করতে।

আমরা সাধারণত আগ্রহ প্রকাশ করি। যারা সাফল্য অর্জন করেছে তাদের সাফল্য অর্জন করার গল্পটা সুন্দরভাবে পড়তে। এবং সে অনুযায়ী নিজেদের জীবনটা গড়ে তুলতে। কিন্তু অনেকেই তাদের এই সাফল্য অর্জন করার গল্পটা পড়ে ঠিকই। কিন্তু নিজেদের জীবনের সাফল্য অর্জন করতে গেলে, ব্যর্থ হয়ে যায়।

যেখানে আপনি চাকুরী পাচ্ছিলেন না তারপর একটা চাকুরী পেয়েই গেলেন। আর নিজেকে যদি আপনি কোম্পানির মত করে তৈরি করতে পারেন তাহলে দেখবেন চাকরি আপনার কাছে ছুটে আসবে আপনাকে যেতে হবে না।

আপনাদের কথাগুলোর সাথে আমি একমত পোষণ করছি। কারণ যেখানে আমাদের কোন চাকরি ছিল না। সেখানে আমরা যদি ছোটখাটো একটা চাকরি পেয়ে যাই। এবং সেখানেই যদি নিজেদের সততা ধৈর্য সবকিছুকে কাজে লাগিয়ে টিকে থাকতে পারি। আমরা কিন্তু আমাদের সেই চাকরিতে নিজেদের পদোন্নতি করতে পারব।

আপনি আজকে আমাদের মাঝে খুবই সুন্দর একটা বিষয় তুলে ধরেছেন। আপনার এই বিষয়টা থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।

যেমনটা আমি আপনার পোস্ট করে বুঝতে পারলাম। মানুষকে অবশ্যই একটা জায়গাতে টিকে থাকার জন্য ধৈর্যের প্রয়োজন। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটা বিষয় আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল ভালো থাকবেন।

#miwcc

 last year (edited)

এই মানুষগুলো তাদের এই খারাপ অবস্থা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। কখনোই তাদের দুর্বলতাকে দুর্বলতা মনে করেনি বরং সেটাকে তাদের শক্তি করে নিয়েছে

আপনার উল্লেখিত এই লাইনগুলো সত্যিই খাটি কথা।বিজ্ঞানী এডিসন যদি তার ব্যর্থতার দিনগুলোকে মনে করে গবেষণা থামিয়ে দিতেন তাহলে হয়তো আমরা বিদ্যুতের সাথে কখনোই পরিচিত হতে পারতাম না, হয়তো আজও আমদের রাত্রি কাটতো অন্ধাকারে।

বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে যদি একজন মূর্খ মানুষ হয়েও একাগ্রতার সাথে কাজ না করতেন তা হলে হয়তো আমরা চুম্বক থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন কখনোই করতে পারতাম না।
আর এই একাগ্রতার ফলেই মাইকেল ফ্যারাডে মূর্খ মানুষ হওয়া সত্বেও পৃথিবীর সেরা বিজ্ঞানীদের মাঝে নিজের নামকে লিখিয়ে রেখেছেন স্বর্ণাক্ষরে।

তাই একাগ্রতা যে আমাদের কতদূর নিয়ে যেতে পারে সেটা আমরা এই দুইজন বিজ্ঞানীর জীবনী থেকেই উপলব্ধি করতে পারি।

যেখানে আপনি চাকুরী পাচ্ছিলেন না তারপর একটা চাকুরী পেয়েই গেলেন। আর নিজেকে যদি আপনি কোম্পানির মত করে তৈরি করতে পারেন তাহলে দেখবেন চাকরি আপনার কাছে ছুটে আসবে আপনাকে যেতে হবে না।

আমাদের দেশে এখন মানুষের মুখে মুখে একটাই কথা, "দেশে চাকরি নেই শিক্ষার কোনো মূল্য নেই"।তবে এই কথাটার কতটুকু সত্যতা আছে সেটা আমার জানা নেই।

কারণ আমাদের পাড়ায় রাকিব নামে এক বড় বাই আছে।উনি আজ পর্যন্ত প্রায় পনেরোটা চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন যার মধ্যে স্কুলের শিক্ষকতার পাশাপাশি আরো ৪ টা সরকারি চাকরি ছিলো।

তাহলে দেখুন ইনি চাকরির পরে চাকরি ছেড়ে দিচ্চে আর আমাদের দেশের মানুষেরা বলে বেরাচ্ছে চাকরি নেই।তারা এইটা দেখছে না যে,চাকরির জন্য যে কোয়ালিটিটা দরকার হয়তো তিনি বা তারা সেই কোয়ালিটির যোগ্য নই।অথবা চাকরি করার প্রতি তাদের কোনো একাগ্রতা নেই।

জীবনে সফল হওয়ার জন্য যে পড়াশোনা করে চাকরিই করা লাগবে এমন কোনো কথা নেই।আপনারা নিজেরা কর্মসংস্থান তেরি করতে পারেন, নিজেরা উদ্দোক্তা হতে পারেন। এতে আপনারা যেমন সফল হবেন ঠিক তেমন দেশের আর বাকি দশজন মানুষকে সফলতার পথে হাটতে সাহায্য করতে পারবেন।

তাই আমাদের সকলের উচিৎ যে কাজের মধ্যেই আমরা থাকি না কেনো কাজটি যেন মন থেকে সম্পূর্ণ একাগ্রতা দিয়ে করি।

পরিশেষে ধন্যবাদ জানাচ্ছি @piya3 আপুকে এত সুন্দর একটা বিষয়ের ওপর পোস্ট করে আমাদের মাঝে একাগ্রতা বৃদ্ধির দানা বা বীজ বপন করার জন্য।

#miwcc

 last year (edited)

Hello
@nasir04

Post সম্পর্কিত মন্তব্য করাটাই মানসম্মত।

আমি কোনো বিজ্ঞানীদের নাম উল্লেখ করিনি আমার এই লেখনীতে।

আশা করি বিষয়টি পরবর্তীতে খেয়াল রাখবেন।

 last year 

ধন্যবাদ আপু একাগ্রতা ও সময়ানুবর্তিতা নিয়ে এত সুন্দর পোষ্ট করার জন্য। আপনার কথাগুলো যদি আমরা আমাদের জীবনে কাজে লাগাই তাহলে অবশ্যই ভালো কিছু করতে পারবো। ধন্যবাদ আপু এত ভালো একটি লিখা আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

#miwcc

Coin Marketplace

STEEM 0.18
TRX 0.16
JST 0.030
BTC 62516.71
ETH 2436.18
USDT 1.00
SBD 2.65