Better Life with Steem|| The Diary Game|| 28th May 2024
Hello Friends,
যদিও সকালে একটু বেরিয়েছিলাম কিন্তু বেশিক্ষণ রোদ্দুরে না টিকতে পেরে এক পর্যায়ে রোদ্দুরের ভয়ে বাড়িতে পালিয়েই এসেছিলাম। প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় রেমাল যেন প্রকৃতির এক নৃশংস চিত্র দেখিয়েছিল আমাদের। যেটার ক্ষতিপূরণ আদেও পূরণ করতে কতোদিন লাগবে সেটা এখনো বলতে পারছি না।
কারো পৌষ মাস আবার কারো সর্বনাশ।
প্রবাদ
ঘূর্ণিঝড় রেমালের পরের পরিস্থিতি কিছুটা এইরকম। তবে ক্ষতি হয়নি এইরকম পরিবারের সংখ্যা নগন্য। কম বা বেশি প্রত্যেকেরই ক্ষতি হয়েছে। ইতিহাসে ঘূর্ণিঝড় রেমালের স্থায়ীত্ব সম্ভবত লিপিবদ্ধই থাকবে।
যাইহোক, আমি এখন আপনাদের সাথে ভাগ করে নিবো ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডব শেষ হওয়ার পরের দিনের কিছু চিত্র যেটা আমার জীবনধারার সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত।
Morning |
---|
দিনটি ছিল মঙ্গলবার, বিগত দুইদিন ঘুম না হওয়ার কারণে ঐ দিন একটু বিলম্বই হয়েছিল সকালে ঘুম থেকে উঠতে। আমার বাবা ও বাড়ির পাশের ছোট্ট একটি খাল থেকে দুই কেজি ওজনের একটি রুই মাছ ধরে নিয়ে এসেছিল। এটার জন্যই সকাল নয়টার দিকে আমার কাজিন রূপম সোরগোল শুরু করেছিল এবং আমাকে ঘুম থেকে টেনে তুলেছিল।
সত্যি বলতে আমি তখনও ঘুমের মধ্যেই ছিলাম, কোনোরকম চোখ মুছতে মুছতে ব্রাশ করে নিজের ওষুধ খেয়েছিলাম। আমার মোবাইলে ও চার্জ ছিল না। আমি রাতেই ৩০% চার্জ দেখেছিলাম, তারপর মোবাইল বন্ধ করে রেখেছিলাম।
মোবাইল হচ্ছে নিত্যদিনের সঙ্গী আবার চার্জ নেই সেটা একদমই ভালো কথা না। তাছাড়া কোথাও বিদ্যুৎ ও নেই। তাই চার্জারটা হাতে নিয়েই বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম রিপনের বাড়ির উদ্দেশ্যে। পথের মাঝখানেই আমাদের বাজার তাই আমি প্রথমে বাজারে পৌঁছে রিপনকে খুঁজেছিলাম।
ঐ সময়ে আবার দেখা হয়েছিল আমার প্রিয় বিড়ালটির সাথে। দুইদিন পরে দেখা যে কারণে আমাকে দেখেই কিছু একটা হয়তো বলতে চাইছিল। তাই ওর সাথে কিছুটা সময় অতিবাহিত করতে করতেই রিপন ও চলে এসেছিল। তারপর আমি রিপনের সাথে ওদের বাড়িতে গিয়েছিলাম আই পি এস এ মোবাইল চার্জে দিতে।
রিপনের বাড়ির সামনে রাস্তার বিপরীতে এক কাকু বিরল প্রজাতির একটা মাছ ধরেছিল। আপনারা অনেকেই এটাকে শৈল মাছ ভাবতেছেন কিন্তু এটা শৈল মাছ না। এটা সেই বিরল প্রজাতির গজাল মাছ। যেটার বৃদ্ধি পরিমাপযোগ্য হয়তো না। কারণ এদের শারীরিক বৃদ্ধি স্থির না।
Noon |
---|
আমি মোবাইল চার্জ দেওয়ার জন্য এতোটাই উদ্বিগ্ন ছিলাম যে এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখার ও সময় পাই নি। তাই বাড়িতে ফেরার সময়ের কিছু দৃশ্য এখন তুলে ধরছি। মোটামুটি উচ্চতা আছে এইরকম কোনো গাছ মনে হয় এই ঘূর্ণিঝড়ের জন্য আর মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে নেই।
যদিও নারকেল গাছ ঝড়ে তেমন একটা পড়ে না কিন্তু রেমালের তাণ্ডব নারকেল গাছকেও ছাড়েনি। এমনকি সুপারি বাগান পর্যন্ত উজার করে দিয়েছে। এই ঝড়ে আমাদের দেশের বেশ কয়েকটি জেলা অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সেই জেলা গুলোর মধ্যে আমাদের বাগেরহাট ও একটি। যেটার বাস্তব চিত্র আপনারা আমার এই ছবির মাধ্যমেও দেখতে পারছেন। যাইহোক, আমি বাড়িতে ফিরে স্নান সেরে দুপুরের খাবার শেষ করেই একটু বিশ্রাম নিয়েছিলাম। তারপর মোবাইল নিয়ে আসতে হবে তাই আমি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলাম।
Afternoon |
---|
আমাদের বাড়ির পাশে ছোট্ট খালে জল আর মাছে সমান ছিল। মাছ বিক্রি করা তো যাচ্ছিল না আবার এতো মাছ যে খাওয়া ও সম্ভব না। মূলত বিদ্যুৎ না থাকায় মাছ সংরক্ষণ করা সম্ভব ছিল না যে কারণে মাছ বিক্রি করা ও যাচ্ছিল না।
আবার কেউ কেউ যদিও বিক্রি করছিল কিন্তু সেটা জলের দামে। বাজার পৌঁছে দেখলাম রিপন ইতিমধ্যে আমার মোবাইল নিয়ে বাজারে এসেছিল তাই আমি মোবাইল ও চার্জারটা নিয়ে নিয়েছিলাম। এরপরে দেখলাম অনেক মানুষ জড় হয়ে কি যেন দেখছে। ঐখানে এক জেলে বাইশ কেজি ওজনের একটি ভেটকি মাছ নিয়ে এসেছিল যেটা ঐ ব্যক্তি নদীর তীরে জেগে ওঠা চর থেকে ধরে নিয়ে এসেছেন।
এতো লোকজনের ভীড় যে শুধু মাছের লেজটাই দেখলাম। যাইহোক, আমি ছোট ব্রিজের কাছে গিয়ে অন্যদের সাথে মাছ ধরা দেখার দলে যোগ দিয়েছিলাম। কোনো দেখা দেখি যে যার মতো করে জাল ছুঁড়ে মাছ ধরছিল।
প্রায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছিল তাই আমিও বাড়িতে ফিরে এসেছিলাম। এভাবেই ঐ দিনটি অতিবাহিত করেছিলাম। আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
END |
---|
Tweet link:-
https://x.com/keya3456/status/1796931389784461456?t=tnqaACj8XA_dTxn4_ZpU5w&s=19
কয়েকদিন আগে যে ঘূর্ণিঝড় রেমালো হয়েছিল তাতে বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে অনেক জেলায় ভালই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তার মধ্যে আপনাদের এলাকায়ও বেশ ভালোই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দেখলাম। এরকম ঘূর্ণিঝড় হলে কমবেশি সবারই ক্ষতি হয়। যাইহোক, ঘুম থেকে উঠে মোবাইলে চার্জ ছিল না এজন্য রিপন ভাইয়ের বাড়িতে গিয়ে মোবাইল চার্জ দিয়েছেন।আপনি যে মাছটির নাম উল্লেখ করেছেন গজাল মাছ। এটা আমাদের এদিকেও পাওয়া যায়।
সারাদিনের মুহূর্তগুলো তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
কারেন্ট না থাকলে আমাদের জীবনটা কতটা অচল হয়ে যায়। সেটা আমরা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারি। আপনাদের ওখানে এখনো পর্যন্ত কারেন্টের দেখা পাওয়া যায়নি। আপনার ফটোগ্রাফি দেখে যতটুকু বুঝলাম। যে পরিমাণ আপনাদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা সত্যিই অনেক বেশি। রাস্তার পাশে নারিকেল গাছ পড়ে আছে, আমি কখনো দেখিনি ঝড়ের সময় নারিকেল গাছ পড়ে। কিন্তু আপনার ফোটোগ্রাফিতে দেখতে পেয়েছি।
আসলে কারেন্ট না থাকলে ফ্রিজের মধ্যে মাছ রাখা সম্ভব হয় না। তাই হয়তোবা অনেকেই মাছ কেনা থেকে বিরত আছে।অসংখ্য ধন্যবাদ একটা দিনের কার্যক্রম উপস্থাপন করার জন্য, ভালো থাকবেন। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি আপনাদের ওখানকার সমস্যাগুলোর সমাধান হয়ে যাবে। খুব দ্রুতই আপনারা কারেন্টের দেখা পাবেন। ভাল থাকবেন।
আপনার লিখার মধ্যে একটা অন্যরকম মাধুর্যতা রয়েছে।নির্ভূল বানান আর সুন্দর শব্দচয়ন যে কারোর ভালো লাগতে বাধ্য। আপনার বাবা বড় একটা রুই মাছ ধরে এনেছিলেন।আপনার কাজিন আপনাকে জাগিয়ে তুলে সেটি দেখিয়েছে।আর আপনার কাকু একটা বিরল প্রজাতির মাছ ধরেছিলো।আপনি ফোনে চার্জ করে বাসা ফেরার পথে বেশ কিছু ঘুর্নিঝড় তান্ডবের ফটোগ্রাফি করেন।সবকিছু দেখে মনে হলো আপনাদের ওইদিকে প্রচুর মাছের মৌসুম চলতেছে।ধন্যবাদ আপনাকে এতো সুন্দর একটা দিন আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের ক্ষতচিহ্ন এখনো রয়ে গেছে। আপনার তোলা ছবির মাধ্যমে এটা আরেকবার দেখলাম। আপনাদের এদিকে বেশ মাছ পাওয়া যায়। তবে ২২ কেজি ওজনের ভেটকি মাছ 🐟 দারুন!!!ওখান থেকে যদি একটা ভাগ নিতে পারতাম!!! চমৎকার হতো। কারণ এত বড় মাছ সত্যিই অনেক সুস্বাদু হয় তাও আবার ভেটকি মাছ।
তবে বিদ্যুৎ না থাকাটা খুবই বিরক্তিকর ব্যাপার। আর মোবাইলে যদি চার্জ না থাকে তাহলে তো মাথা খারাপের মতো লাগে।
সব মিলিয়ে খুব সুন্দর ভাবে আপনি দিনলিপি উপস্থাপন করেছেন। খুব ভালো লেগেছে আমার পড়ে।
বাংলাদেশ এর দদক্ষিনাঞ্চলের জেলাগুলোতে রেমাল তার ভালোই ক্ষতচিহ্ন রেখে গেছে এটা জানতাম কিন্তু আপনার লেখা পড়ে আরো ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারলাম।
আমি ছোটবেলায় আমাদের এলাকায়ও বন্যার সময় দেখেছি প্রচুর মাছ পাওয়া যেত কিন্তু সেসময়ও আপনাদের এলাকার মতোই কারেন্ট থাকতো না।
যাক, কামনা করি দ্রুত সব ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে মানুষজন তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরত যাক।
ভালো থাকবেন সবসময় এই শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।