গভীর রাতের ভৌতিক ঘটনা

in Incredible India2 years ago (edited)

আজকের ভৌতিক ঘটনাতে সকলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।

pexels-photo-3375857.jpegsource

ভূত

প্রিয়
পাঠক বন্ধুগণ

আশা করি আপনারা সকলেই খুব ভাল আছেন। আমি ও ভালো আছি, সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায়। তো চলুন আজকের রহস্যময় একটি গভীর রাতের ভৌতিক গল্পটা আমরা উপভোগ করি।

pexels-photo-840996.jpegsource

দাপ্তরিক কাজ করার মুহূর্তে

বাড়ির সকলে ইতিমধ্যে আমার পিসির বাড়িতে চলে গিয়েছে। আমার পিসির বাড়ি সাতক্ষীরাতে। সেখানে আমার পিসির একমাত্র ছেলের বিবাহ অনুষ্ঠান, আমাকেও যেতে হবে। চাকুরী সূত্রে আমার ঢাকাতে থাকা। আজ বৃহস্পতিবার, যার জন্য অফিসে অর্ধদিবস কাজ করতে হচ্ছে।

pexels-photo-4489371.jpegsource

অফিস শেষ করে বের হওয়া

অনেক চেষ্টা করেও সকাল সকাল বের হতে পারলাম না। অফিসের কাজ সম্পন্ন করে বের হতে হতে বিকেল হয়ে গেল। বাসে যখন উঠলাম তখন প্রায় সন্ধ্যা ছয়টা বেজে গেছে।

pexels-photo-2266406.jpegsource

বাস স্ট্যান্ডে

অনেক সময়ের পথ। তাই আগে থেকেই সঙ্গে করে একটি গল্পের বই নিয়ে এসেছি। এই গল্পের বইটা পড়ে সময় পার করে দিব। ডিসেম্বর মাস তাই বেশ ঠান্ডাও পড়েছে। এবং নদী পার হতেই ঠান্ডার প্রকোপ ক্রমশ বেড়েই চলেছে। কারণ আমাদের গাড়িটি এখনই ফরিদপুরের দিকে প্রবেশ করবে এবং এদিকে প্রচুর ঠান্ডা। তাই ব্যাগ থেকে মোটা চাদর টি বের করে নিজেকে চাদরে মুড়িয়ে ফেললাম একরকম।

pexels-photo-11871762.jpegsource

বাসের মধ্যে

গাড়িটি বেশ দ্রুতগতিতে যাচ্ছে। এবং যেহেতু সপ্তাহের শেষ দিন তাই সাপ্তাহিক ছুটিতে অনেকে বাড়িতে যাচ্ছে। গাড়িটি একটি রেস্টুরেন্টের সামনে দাঁড়ালো। বিকেল থেকে তেমন কিছু খাওয়াও হয়নি। এবং জানতে পারলাম যে এখানে ৩০ মিনিটের মতো অবস্থান করবে। তাই বিলম্ব না করে বাস থেকে নেমে পড়লাম, এবং কিছু হালকা খাবার খেয়ে নিলাম।

আবার দুরন্ত গতিতে ছুটে চলতে শুরু করলো গাড়িটি। গাড়ির সব জানালা গুলো বন্ধ রয়েছে। তার পরেও অনেক বেশি ঠান্ডা লাগছে। যেহেতু সারাদিন পরিশ্রম করার পরে চুপচাপ বসে থাকলে ঘুম ঘুম একটা অনুভূতি হয়, এবং ঠিক এরকমটাই হচ্ছিল তাই চোখ বন্ধ করে একটু বসলাম।

একটার পর একটা স্ট্যান্ড পার করে গাড়িটি প্রচণ্ড গতিতে ছুটে চলেছে। এবং যখনই গাড়িটি পুরোপুরি ফরিদপুরের মধ্যে প্রবেশ করেছে, তখনই যেন ঠান্ডা আরো বেশি প্রকোপ হয়ে উঠেছে।

pexels-photo-7252069.jpegsource

বাস স্ট্যান্ডে রাতে

যখনই আমি আমার গাড়ির গন্তব্য স্থানে পৌঁছালাম অনেক বেশি ঠান্ডা অনুভূতি হচ্ছিল। তাই গাড়ির ভেতরে বসেই নিজেকে আবারো বিভিন্ন শীতের গরম কাপড় এবং চাদর দিয়ে সুন্দর করে মুড়িয়ে নিলাম।

গাড়ি থেকে নামার পর এবার আমার পিসির বাড়িতে পৌঁছাতে হবে। কিন্তু কোথাও কোন গাড়ি দেখতে পাচ্ছি না। এখানে প্রায় আরো আমার ১ ঘন্টা সময় অতিবাহিত হবে অটোতে গেলে।

pexels-photo-4427225.jpegsource

সকল দোকান বন্ধ

তখন রাত প্রায় দশটা বেজে আসছে। শীতের তীব্রতা অনেকটা বেশি যার জন্য রাস্তাঘাটে লোকের সমাগম কম দেখা যাচ্ছে। এমনকি তেমন বিশেষ গাড়িও দেখা যাচ্ছে না। যাহোক আমার ট্রলি ব্যাগ নিয়ে হাঁটতে শুরু করলাম। দোকানপাঠ প্রায় সবই বন্ধ করে দিয়েছে। এবং যাও দুই-একটা খোলা আছে তাও শাটারপ্রায় নামিয়ে দিয়েছে।

আমি তো এত রাতে মহা বিপদে পড়ে গেলাম। কিভাবে পৌছাবো এত রাতে! বাড়িটা তো বেশ দূরে প্রায় ৮/৯ কিলোমিটার হবে। এতটা রাস্তা তো আসলে হেঁটে যাওয়া ও সম্ভব নয়।

এভাবে হাঁটতে হাঁটতে একটা ফাঁকা রাস্তায় এসে পৌছালাম। কোথাও কোন জনমানব দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু একটু দূরেই একটা অটো দেখতে পেলাম। একটু স্বস্তি পেলাম অটোটিকে দেখতে পেয়ে।

কাছে গিয়ে দেখতে পেলাম, অটো-চালক চাদরে নিজেকে মুড়িয়ে নিয়ে আসনে বসে ঘুমাচ্ছে। তাকে ডেকে তুললাম এবং জিজ্ঞাসা করলাম তিনি যাবেন কিনা। তখন অটোচালক বললো যাবে।

তারপর অটোতে উঠে বসলাম। ঠান্ডার জন্য নিজেকে আবার সুন্দর করে চাদরে মুড়িয়ে নিলাম। তারপর অটো চালক কে বললাম, যে আমি বিনয় মুখার্জির বাড়িতে যাব। তখন অটোচালক বলল, হ্যাঁ তার তো ছেলের বিয়ে। আপনাকে আমি সময় মত পৌঁছে দিব।

অটোতে বেশ নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়লাম। কারন আমার পিসির স্বামীর বেশ পরিচিতি রয়েছে। হঠাৎ করে বীভৎস ঠান্ডা জিনিসের ছোঁয়ায় ঘুমটি ভেঙে গেল। জেগে দেখলাম যে লাল শাড়ি পরা একটি অল্প বয়সী মহিলা বসে আছে। আসলে মুখটি আমি দেখতে পারিনি। কিন্তু সাধারণত লাল শাড়ি পরে অল্প বয়সী নতুন বধুরা। এক কথায় যাদের নতুন বিবাহ হয়।

pexels-photo-5422595.jpegsource

ভূতের সাথে কথোপকথন

তার হাতের ঠান্ডা স্পর্শে আমার ঘুম ভেঙে গেছে। এবং এই মহিলা এত রাতে আসলো কিভাবে? কোথা থেকে? আমি তো অটোতে একাই উঠেছিলাম এবং আমার তো মনে হচ্ছে না কোথাও অটোটা থেমেছে।

খুব কষ্ট করে ওই মুহূর্তে ঘড়ির সময়টা দেখলাম যে রাত বারোটা বেজেছে। এত রাত হয়েছে কিন্তু এখনো পিসির বাড়িতে পৌঁছাতে পারিনি। আমার পিসির বাড়ি তো এতটাও দূরে নয়। বেশি হলে এক ঘন্টা লাগতে পারে কিন্তু অটোতে বসেছি তো দুই ঘন্টা পার হয়ে গিয়েছে।

এবং দেখলাম একটা ঘন জঙ্গলের মধ্যে প্রবেশ করেছি। তখন আমি অটোচালককে ধমক দিলাম। এবং বললাম আপনি আমাকে কোথায় নিয়ে এসেছেন।

তখন আসলে যেটা ঘটলো বলতে গেলে আমার এখনই শরীরের রক্ত শীতল বা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। একটা কঙ্কাল আকৃতি আমাকে বলল যে, "চুপ করে থাক, তোকে আজ আমি মেরে ফেলবো।"

pexels-photo-6009274.jpegsource

গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়লাম

কোনো দ্বিতীয় পথ না পেয়ে অটো থেকে শরীরের সব বল প্রয়োগ করে লাফিয়ে পড়লাম রাস্তায়। এবং শুধু এতটুকুই বুঝতে পারলাম যে, আমার মাথায় একটা আঘাত লেগেছে, খুব ব্যথা হচ্ছিল।

এবং যখন আমার জ্ঞান ফিরলো তখন হালকা সূর্যের আলো দেখা যাচ্ছিল। একটি চায়ের দোকান দেখতে পেলাম। চায়ের দোকানদার আমাকে জিজ্ঞাসা করল এত সকালে আমি কোথা থেকে এসেছি। চায়ের দোকানদারকে ঘটনাটি খুলে বললাম। তখন চায়ের দোকানদার বলল, আপনার ভাগ্য ভালো বেঁচে গিয়েছেন। এরকম অনেকবারই ঘটেছে কিন্তু তার মধ্যে আপনি সৌভাগ্যবান, যে আপনি এখনো বেঁচে আছেন।

প্রিয় বন্ধুরা আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি আশা করি ভালো লেগেছে। অনুগ্রহ পূর্বক, আপনাদের মূল্যবান মন্তব্য জানাবেন ।

Sort:  
 2 years ago 

এমন ঠান্ডা অনুভব করার সময় যদি পাশে শীতের কাপড় থাকে অবশ্যই পেঁচিয়ে নিতে হবে নিজের শরীরে।

আপনি শহর থেকে আপনার পিসির ছেলের বিবাহতে উপস্থিত হবেন এজন্য আপনার পথ চলা। কিন্তু কোন কারনে গাড়ি না পাওয়াই অটোতে উঠতে হলো এবং বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে উল্লেখ ভাবে মধ্যবয়সী নারী মনে হচ্ছে সে নববধূ লাল শাড়ি পরা। সেইখান থেকে আপনি কোন রকম ভাবে বেসে ফিরেছেন অটো থেকে লাভ দিয়ে।

যাই হোক আপনি ফিরেছেন এই গল্পটা খুবই ভালো লেগেছে চায়ের দোকানদার আপনাকে সৌভাগ্যবান বলেছে।

খুবই ভালো লাগবে এমন গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই,
আমার লেখাটি মনোযোগের সাথে অধ্যয়ন এবং আপনার মূল্যবান মন্তব্য প্রকাশ করার জন্য।

Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.16
TRX 0.12
JST 0.026
BTC 57320.16
ETH 2472.81
USDT 1.00
SBD 2.31