ভয়ংকর একটি রাতের অভিজ্ঞতা/গল্প।

in Incredible Indialast year (edited)
fantasy-2847724_1280 (1).jpg
source-pixabay

Hello Everyone,

কেমন আছেন সবাই? আজ আমি চলে এসেছি একটি গল্প নিয়ে। আশা করি গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে। তাহলে চলুন আমরা গল্পটিতে চলে যাই।

ভয়ংকর একটি রাতের অভিজ্ঞতা/গল্প।

ট্রেনটা ঝক ঝক শব্দ করতে করতে কমলাপুর রেলস্টেশনের দিকে এগিয়ে চলছে। প্রচন্ড গরমে ট্রেনে বসে হাস ফাঁস করছে সবাই। যদিও খুব বেশি লোক কামরাতে বসে নেই।

বেণু, অমিত ও শৈবাল বাড়ি ফিরছে ট্রেনে করে। হঠাৎ শৈবাল বলে উঠলো কি গরম! খবর এ শুধু বলছে বৃষ্টি আসবে। কিন্তু বৃষ্টি আর আসছেই না। তখন আবার অমিত বলল, তা যা বলেছ শৈবালদা। বৃষ্টি আসলে এই প্রচন্ড গরমের হাত থেকে কিছুটা হলেও বাঁচা যেত।

তখন বেনু আবার বলে উঠলো, আজ বৃষ্টি হবে সকাল বেলায় তো খবর শুনেছি। শিমুল আবার উত্তরে বলল আরে নাহ! বৃষ্টি কোথায় পাচ্ছিস; হারাধনের দোকান থেকে সাইকেলটা নিবি, চোখ বন্ধ করে প্যাটেল মারবি, বিশ মিনিটের মধ্যে বাড়িতে পৌঁছে যাব।

হঠাৎ এই কথোপকথনের মধ্যেই বিকট বজ্রপাতের আওয়াজ। তিনজনের কথা হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল। কিছুক্ষণ বাদে বেণু বলে উঠলো শৈবালদা আর সাইকেল নিয়ে যাওয়া হচ্ছে না। এরই মধ্যে আবার ঝমঝম করে বৃষ্টি পড়তে শুরু করলো।

এভাবেই বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ট্রেনটি ছুটে চলল কমলাপুর স্টেশনের দিকে। কিছু সময় বাদে স্টেশনে পৌঁছালো ট্রেনটি। ট্রেনটি স্টেশনে থামতেই তিনজন দৌড় গতিতে নেমে পড়ল।

train-3384786_1280.jpg
source-pixabay

তাদের কাছে বৃষ্টি রোধ করার মত ছাতা ও নেই। তিনজন মিলে সিদ্ধান্ত নিল দৌড়ে চায়ের দোকানে পৌঁছাবে। যেই চিন্তা সেই কাজ, বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে হারাধনের চায়ের দোকানে উপস্থিত হলো।

বেণুর মনটা একটু খারাপ হয়ে গেল। কারণ তার সাইকেলটা নিত্য নামক একটি ছেলে নিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে অমিত বেণুকে বলল দুশ্চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই। আমার সাইকেলে তোকে বসিয়ে নিয়ে যাবো এবং পথে নিত্যকে পেলে তোর সাইকেলটা তুই নিয়ে নিস।

tea-stall-6227725_1280.jpg
source-pixabay

গরম গরম চা নিয়ে নিলো তিনজন। ইতোমধ্যে আবার হালকা ঝড়ো হওয়া বইতে শুরু করেছে। চায়ের দোকানের সামনে কয়েকটি তালগাছ রয়েছে। দুইটি তালগাছের মাঝে মনে হচ্ছে কেউ একজন দাঁড়িয়ে রয়েছে।

চায়ের দোকানদার এবং ওরা তিনজন সবাই বিষয়টি লক্ষ্য করল। তখন চায়ের দোকানদার জোরে জোরে শব্দ করে জিজ্ঞাসা করল কে ওখানে কে? কিন্তু ওপাশ থেকে কোনো শব্দ শোনা গেল না।

অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকা অচেনা লোকটি আস্তে আস্তে অন্ধকারের দিকে যেতে শুরু করল। কিন্তু ততক্ষণে ও কেউ বুঝতে পারেনি আসলে লোকটি কে। তবে চোখ ছিল বিস্ময়কর। এটা সবার চোখেই ধরা পড়েছে।

এরপর সবাই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই, বাড়ির উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ল। কিছু পথ যেতে যেতেই আবার ভয়ংকর বজ্রপাত। সাইকেল যেন সামনের দিকে এগোচ্ছেই না।

এবার সামনে ডান হাতের দিকে আবারো একটি লোক দেখা যাচ্ছে। সবাই মিলে সাইকেলের ব্রেক করে দাঁড়িয়ে পড়ল। এরপর চিনতে পারল এটা অন্য কেউ না তাদের পরিচিত সেই নিত্য।

নিত্য জানালো সে পড়ে গিয়েছিল সাইকেল নিয়ে। এরপর শৈবালের সাইকেলের ক্যারিয়ারে উঠে বসে পড়লো। বাতাসের পরিমাণটা যেন একটু বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই সাইকেল বেশ ধীরগতিতে এগোচ্ছে।

কিছুটা দূরে যাওয়ার পর শৈবালের কাছে মনে হচ্ছে নিত্যর শরীরের ওজনটা যেন অনেক বেড়ে গিয়েছে। শৈবাল নিত্য কে বলল তুই কি পাথর-টাথর খেয়ে এসেছিস নাকি! তখন নৃত্য বলল তাহলে তুই পিছনে বস আমি সামনে বসে চালাই।

কিছুটা সময় এভাবে অতিবাহিত হওয়ার পর, শৈবালের মনে হলো নিত্য খুব জোরে সাইকেল চালাচ্ছে। পেছনে থাকা অমিত ও বেণু বিষয়টি লক্ষ্য করল। অমিত নিত্যকে ডেকে বলল এভাবে সাইকেল চালাস'নে, পা পিছলে যাচ্ছে আমাদের।

তখন সাইকেলে বসে থাকা নিত্য অট্টহাসি দিল। আর এই হাসিটা ছিল অদ্ভুত যেটা শৈবাল দেখেছিল। কানের একপাশ থেকে অন্য পাশ পর্যন্ত তার গাল প্রশস্ত এবং দাঁত গুলো বেরিয়ে দিয়েছে।

অমিত ও বেণু এই অদ্ভুত বিষয়টি উপলব্ধি করল এবং সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। অন্যদিকে শৈবালকে নিয়ে নিত্য ক্ষিপ্র গতিতে এগিয়ে চলেছে।

আবার নিত্য বলছে বিকট শব্দ করে বেনু এবং অমিত তোরা ও চলে আয়। হারাধনের দোকানে আগুন ছিল বলে আমি ঢুকতে পারিনি। অমিত ও বেণু ফিসফিস করে বলতে লাগলো যে নিত্যকে ভুতে ধরেছে।

একটা ভাঙ্গা ব্রিজের উপর নিয়ে যাচ্ছে শৈবালকে। অমিত এবং বেণু পিছু নিয়েছে শৈবালদার। তাকে থামানোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে কিন্তু কিছুতেই পারছে না।

sunset-1807524_1280.jpg
source-pixabay

হঠাৎ শৈবালের জ্ঞান ফিরে পেল। তখন দেখল নিত্য শূন্যে ভেসে আছে। হঠাৎ সামনে ভেসে থাকা নিত্য বলল আমি চাইনি তোদের বিপদ হোক। ব্রিজের নিচে দেখ, কিছু দেখতে পারিস কিনা।

তখন সবাই উকি মেরে দেখলো নিত্যর শরীরের অর্ধেক অংশ কাদায় আবৃত, বাকি পায়ের অংশটুকু উপরের দিকে রয়েছে। তাদের বিষয়টি বুঝতে বাকি রইলো না। নিত্য বলল তারা যেন ওর বাড়িতে খবরটি পৌঁছে দেয়। তারপর সেই শূন্যে ভেসে থাকা নিত্যর শরীরটা বিলীন হয়ে গেল আস্তে আস্তে।

প্রকৃত বন্ধু এরকমই হয় , মৃত্যূর পর ও সঙ্গ দেয়। আমার আজকের গল্পটি আপনাদের কেমন লাগলো? জানাতে ভুলবেন না।

Sort:  
Loading...

Coin Marketplace

STEEM 0.20
TRX 0.15
JST 0.030
BTC 65185.94
ETH 2630.94
USDT 1.00
SBD 2.83