বাহ্যিক সৌন্দর্য্য দেখে কোনো কিছু নির্বাচন করা ঠিক না।
source |
---|
শুভ সন্ধ্যা,
আজ আপনাদের মাঝে নিয়ে এসেছি ছোট্ট একটি গল্প। এই গল্পটি নিয়ে আসার কারণ:
আজ সকালে এগারোটার দিকে , আমি একবার বাজারে গিয়েছিলাম। বাবা ও মা, মামার বাড়িতে যাচ্ছিল। আমার একা একা বেশ বিরক্ত লাগছিল । বাবা মা গাড়িতে উঠে পড়লো। তারপর আমি একটা চায়ের দোকানে গিয়ে বসলাম।
source |
---|
আমাদের গ্রামের অনেক ছেলেপেলে উপস্থিত ছিল। কারণ শিক্ষাঙ্গন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিদ্যালয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বসে রয়েছে।
তাই বাজারের কাছাকাছি যাদের বাড়ি, সবাই আড্ডা দিতে এসেছে দোকানে। সবার সাথে আমিও একটি ব্ল্যাক কফি নিলাম। আমি এর আগেও বলেছি যে কফি আমি অনেক বেশি পছন্দ করি। তবে সেটা ব্ল্যাক কফি হলে তো কোনো কথাই নেই।
কফিটা ও মাত্র শেষ করেছি। এরই মধ্যে আমার এক বন্ধু উপস্থিত হয়েছে। তাই দোকান থেকে বের হতে গিয়েও বেরোতে পারলাম না। বন্ধুর সাথে বসে আরও একটি কফি নিয়ে নিলাম।
দুপুরের দিকে আমাদের বাজারে দুইটি চায়ের দোকান ও একটি ফাস্টফুডের দোকান খোলা থাকে। এজন্যই বললাম কারণ যত লোক বাজারে উপস্থিত হবে, এই তিনটি দোকানেই ভীড় জমাবে।
হঠাৎ দুইটি বাইকে করে পাঁচজন ভদ্রলোক চায়ের দোকানে প্রবেশ করলেন। একজন বেশ বাকপটু মানুষ। আমার এরকমটাই মনে হলো যে তিনি কথা বলতে খুব বেশি পছন্দ করেন।
চায়ের দোকানীকে তারা পাঁচ কাপ চা প্রস্তুত করতে বললেন। এবার চা বিতরণের পালা। কিন্তু পাঁচ কাপের জায়গায় দশ কাপ চা তৈরি করা হয়েছে। যেহেতু অন্যান্য মানুষও আছে সেখানে চা নেয়ার জন্য।
গরম চা এবং সাথে অন্য কিছু চায়ের কাপও রয়েছে। দোকানীকে অতিক্রম করে বাক্যটুকু মানুষটি নিজের পছন্দমত একটা কাপ নিয়ে নিল। তবে এটা দেখে আমার একটু হাসি পেল। কারণ ওইটাতে গরম চা ছিলনা। একটু আগে আমি যে কফিটি খেয়েছি, তার সঙ্গেই একটি লোক চা শেষ করে কাপ জমা রেখেছিল।
সবাই চা নিচ্ছে, আর ওই মানুষটি চুপচাপ বসে আছে। হঠাৎ দেখলাম তিনি একটু রেগে গেলেন। রাগ করে চায়ের কাপটা রেখে দিলেন। চায়ের দোকানদার বিষয়টি বুঝতে পারেনি। আমিসহ আমার বন্ধু এবং আরো অনেকে বিষয়টি আমরা লক্ষ্য করেছি।
source |
---|
আমরা সবাই চুপচাপ বসে আছি কেউ কিছু বলছি না। তারপর বাকপটু লোকসহ বাকি চারজন অর্থাৎ পাঁচজন মিলে দোকানদারকে দউ'একটই কথা শোনাতে লাগলো। তখন আর আমরা চুপচাপ থাকতে পারলাম না।
আমি বলে বসলাম যে আপনারা শান্ত হয়ে বসুন তারপরে কথা বলুন। প্রথমেই আমি বললাম আপনারা যেহেতু চারিতে এসেছেন তাই চায়ের দোকানদারের জন্য অপেক্ষা করা উচিত ছিল। আপনাদের যে চায়ের কাপটিতে সমস্যা হয়েছে ওই কাপটি আপনারা নিজে হাতে নিয়েছেন।
এখানে চায়ের দোকানদারের দোষ কোথায়? আমার সাথে বসে থাকা অন্যান্য ছেলেপেলে ও আমার বন্ধু সবাই মিলে ওনাদেরকে বিষয়টা বুঝিয়ে বললাম। তারপর চায়ের বিল পরিশোধ করে তারা বিদায় নিল।
এই ঘটনাটি থেকে আপনারা কি বুঝতে পারলেন?
আমি যে বার্তাটি দিতে চাই এই ঘটনার মাধ্যমে, আমাদের কখনোই উচিত না বাইরের চাকচিক্য দেখে তার মূল্যায়ন করা। ঘটনাতে লক্ষ্য করলে দেখতে পারবেন লোকটি এসেছিল যা নিতে কিন্তু কাপের উপর নজর দিতে গিয়ে সে চায়ের স্বাদ নিতে পারল না।