মানবিকতা/কৃতজ্ঞতা যেন বিলুপ্তির পথে।
![]() |
---|
হ্যালো বন্ধুরা,
আজ আমি একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে ভাগ করে নিতে চলে এসেছি যেটা কিছুদিন আগের একটি ঘটনা। কিছু ঘটনা নিজেকে ভাবিয়ে তোলে, মাঝেমধ্যে তো নিজেকে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে আমি কি সঠিক? নাকি ভুল?
কিছু ঘটনা শুনলে মনে হয় কিছু মানুষ হয়তো শুধুমাত্র শারীরিক গঠনেই মানুষ। যাইহোক, এখন আমি মূল ঘটনাতে চলে যাবো। যেহেতু, সারাদেশে দীর্ঘ সময় ধরে চলছিল শিক্ষার্থীদের দাবী আদায়ের পর্ব, তাই একটা থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিল। কখনো কখনো লক্ষ্য করলেই দেখবেন প্রকৃতি ও আমাদের কিছু বার্তা দেয়।
যে কারণে ইন্টারনেট সংযোগে ছিল বেশ জটিলতা। যদিও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ ছিল কিন্তু গ্রামে যেন কোনো স্পিডই ছিল। তাই, বি আর ডি বি, এর নবম গ্রেডের একটা চাকরীতে আবেদনের জন্য আমি আমার এক পরিচিত বড় ভাইয়ের অফিসের উদ্দেশ্যে বেরিয়েছিলাম।
![]() |
---|
পথেই অপরিচিত এক কাকু বয়সী অটোচালকের অটোতে উঠে পড়েছিলাম। তবে লোকটা মুখের দিকে তাকাতেই মনে হলো তিনি চিন্তিত। হঠাৎ তিনি আমার নাম ধরে ডেকে বললেন তোমার সাথে অনেক দিন বাদে দেখা হলো এবং তিনি বললেন আমি যখন মোংলাতে চাকরি করতাম তখন তিনি আমার সাথে কয়েকবার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাহায্য নিতে এসেছিলেন।
প্রকৃতপক্ষে এই মানুষটি এতোটাই মানসিক চাপে আছে যে এক প্রকার শরীর অনেকটা জীর্ণশীর্ণ যে কারণে আমি চিনতে পারিনি প্রথম দিকে। আমি এই অবস্থার কথা জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন যে তাঁর সেই দশ লক্ষ টাকা ফেরত না পাওয়াতে তিনি আজ পথে এসে দাঁড়িয়েছেন।
এখানেও আছে এক রহস্যময় গল্প। এই কাকা আমাদের উপজেলা- রামপালের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চাকরি করতেন শুরুর থেকে যে কারণে সকল উর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাঁর খুব পরিচিত। এক ব্যক্তি প্রবাসে থাকতে পঁচাত্তর লক্ষ টাকা তাঁর স্ত্রীকে দিয়েছিলেন কিন্তু দেশে এসেই সব শেষ।
স্ত্রী সব টাকা নিজের করে নিয়েছিল এবং ডিভোর্স দাবি করেছিল। বিদেশ থেকে সাথে করে যে অর্থ এনেছিল সেইটা ও শেষ। এবার জীবন বাঁচানোর তাগিদে চাকরির খোঁজে রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। কোনোরকম একটা চাকরিও পেয়েছিলেন।
কিছু দিন পরে এই অসুস্থ কাকার সাথে দেখা ও ভালো সম্পর্ক হয়েছিল। এক পর্যায়ে তিনি এই কাকার কাছে স্থায়ী একটা কোম্পানিতে চাকরি করার অভিমত প্রকাশ করেছিলেন। এই কাকা তখন তাকে সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছিলেন। প্রবাসী লোকটি পদোন্নতি পেয়ে ভালো অবস্থানে ও চলে গিয়েছিলেন।
![]() |
---|
ভালো সম্পর্কের সুযোগ নিয়ে ওই প্রবাসী লোকটি এই কাকার কাছে ১০ লক্ষ টাকার কথা বলেছিলেন। কাকা অনেক কষ্ট করে ১০ লক্ষ টাকা ও দিয়েছিলেন। কয়েক মাস যেতে না যেতেই কাকার প্রকল্প শেষ এবং তিনি অন্য একটি কোম্পানিতে যোগদানের কথা চিন্তা করছিলেন।
যেহেতু, এই কাকার মাধ্যমে ঐ প্রবাসী লোকটি এখন ভালো অবস্থানে আছেন তাই তিনি তাঁকে একটা চাকরির কথা বলেন। কিন্তু ঐ প্রবাসী লোকটি কয়েকদিন কথা দিয়ে ও যোগাযোগ পর্যন্ত করেনি। এমনকি সর্বশেষ এই কাকাকে যে মোবাইল নাম্বারটা দিয়েছিলেন সেটাও মোবাইল থেকে বের করে ফেলে দিয়েছিলেন।
কাকা বিষয়টি বুঝতে পেরে দশ লক্ষ টাকার কথা বলেন কারণ তাঁর ও পরিবার আছে। কিছু একটা তো করতেই হবে। কিন্তু ঐ প্রবাসী লোকটি তখন টাকার কথা অস্বীকার করেন।
এই ঘটনা থেকে আপনারা কি বুঝতে পারলেন, অবশ্যই জানাবেন বন্ধুরা।
আমি, এটা বুঝতে পারলাম যে কাউকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করা ঠিক না।
পাশাপাশি, আমাদের অতীতটা সর্বদাই মনে রাখা উচিত। নচেৎ এই পৃথিবীতে কেউ আর কাউকে সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়ে দিবে না।
আমরা সাহায্য অবশ্যই করবো। তবে আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে লেনদেনের তথ্য রাখা উচিত। নচেৎ কষ্টার্জিত অর্থ এভাবে নষ্ট হয়ে ও যেতে পারে।
আমার আজকের লেখাটি এখানেই সমাপ্ত করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।
@radjasalman,
ধন্যবাদ স্যার, আমার পোস্টটি পরিদর্শন করার জন্য। 🙏