সরস্বতী পুজোয় একরত্তি ভাইপোকে নিয়ে ঘুরতে বেড়োনো (২০২৪)
নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে ভালো আছেন। আজ আবারও চলে এসেছি আপনাদের সঙ্গে নতুন একটি বিষয় শেয়ার করে নেওয়ার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
আর একদিন পরেই ২০২৫ সালের সরস্বতী পুজো। সরস্বতী পুজো মানেই বাঙালির valentines day। সকল বাঙ্গালীর মতই আমার কাছেও সরস্বতী পুজো খুবই স্পেশাল একটা পুজো। ছোটবেলা থেকেই এই সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে আমাদের কি মাতামাতিই না থাকতো। সব বন্ধু-বান্ধবরা মিলে রাস্তায় মোটরবাইক, সাইকেল, গাড়ি সমস্ত কিছু থামিয়ে আমরা চাঁদা তুলতাম। তারপর যে টাকা চাঁদা উঠত সেই টাকা দিয়ে আমরা জমিয়ে সরস্বতী পুজো করতাম। সেই রাত জেগে অপটু হাতে ট্যারাব্যাকা মন্ডপ তৈরি থেকে শুরু করে ঠাকুর কেনা, ফল বাজার করা, দশকর্মা দোকান থেকে পুজোর যাবতীয় সামগ্রী কিনে আনা সমস্ত কিছুই সম্পন্ন হতো আমাদের দ্বারাই। তাই ছোট থেকেই এই সরস্বতী পুজো আমার কাছে বেশ আনন্দের একটা পুজো। অন্যান্য বড় বড় পুজোগুলো যেমন দুর্গাপুজো ,জগদ্ধাত্রী পুজো, কালীপুজো এগুলোতে মজা হয় ঠিকই তবে এই পুজোগুলোতে তো আমরা প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করতে পারিনা। তাই সেসব পুজোর মজা ঠিক সরস্বতী পুজোর মতো নয়। সরস্বতী পুজোয় আমরা ছেলে মেয়েরা মিলে অপটু হাতে টুকটুক করে সমস্তটা গুছিয়ে তুলতাম। আর তার মধ্যে এক অন্য রকমের মজা ছিল। তবে বড় হওয়ার সাথে সাথে সেইসব কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। তবুও যেটা হারায়নি সেটা হল বন্ধু-বান্ধবরা মিলে ঘুরতে যাওয়া। এই দিন সকালবেলায় স্নান সেরে শুদ্ধ বস্ত্র করে মা সরস্বতীকে অঞ্জলি দেওয়ার পর, প্রসাদ মুখে দিয়ে উপসঙ্গ করে নতুন শাড়ি পড়ে আমরা বেরিয়ে পড়তাম পাড়ার অন্যান্য ঠাকুর পরিদর্শন করতে।
এই ঠাকুর দেখার ব্যাপারটা কিন্তু ছোট থেকে এখনো পর্যন্ত চলে আসছে। তবে বন্ধুবান্ধব পরিবর্তন হয়েছে প্রতি মুহূর্তেই। সেই ছোট্টবেলায় যে সকল বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ঘুরতে বের হতাম তারা আজকে কোথায় আছে তাও জানিনা। তবে বন্ধুবান্ধব পরিবর্তন হলেও ঘুরতে বেরোনোর সেই আগ্রহ বা উচ্ছ্বাস কোনটাই কমেনি। তবে আগের বছরের সরস্বতী পুজোটা ছিল আরো অনেক বেশি স্পেশাল। তারও আবার দুটো কারণ ছিল। প্রথমত আগের বছর সরস্বতী পুজো ও ভ্যালেন্টাইনস ডে দুটোই পড়েছিল একই দিনে অর্থাৎ ১৪ ই ফেব্রুয়ারি। ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষ্যে যে দিনটা স্পেশাল ছিল তা তো আমি আগের একটি পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করেইছিলাম। তবে সেকেন্ড যে কারণে দিনটা স্পেশাল ছিল সেটা হল সেই দিন প্রথমবার আমার একরত্তি ভাইপো আমার সাথে ঘুরতে বেরনোর বায়না করেছিল। আমিও না করিনি। সেই দিন তাকে নিয়ে কি কি করেছিলাম আর কিভাবে সমস্যায় পড়েছিলাম সেই সবই আপনাদের সাথে আর শেয়ার করব।
পুজোর দিন সকাল বেলায় প্রথমেই চলে গিয়েছিলাম আমার হবু শ্বশুর বাড়ি। ওদের বাড়িতে সকাল সকালই পুজো হয়ে গিয়েছিল। ব্রাহ্মণবাড়ির এই এক দারুণ সুবিধা ব্রাহ্মণের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। সেখানে পৌঁছে দেখি শুভায়ন মানে আমি আমার হবু বর ততক্ষণে পুজো করতে বসে পড়েছে। যদিও ও অন্য কোথাও গিয়ে পুজো করে না। শুধুমাত্র বাড়ির পুজোই করে। ওদের বাড়িতে গিয়ে একটা নতুন জিনিস দেখেছিলাম। সেটা হল জোড়া ইলিশ পুজো। এর আগে আমি অন্য কোথাও সরস্বতী পুজোয় জোড়া ইলিশ পুজো করতে দেখিনি। সরস্বতী পুজোর দিন ওদের মধ্যে আবার গোটা সিদ্ধ খেতে হয় মানে গোটা গোটা সবজি সিদ্ধ। সেই দিন ও মনের রান্না করার নিয়ম নেই। যদিও এখন সেইসব নিয়ম অনেকেই মানে না। যাইহোক, সেখানে পুজো দেখে, প্রসাদ খেয়ে, ঠাম্মির সাথে দু চারটি ফটো তুলে এবং সকলের সাথে বাক্যালাপ করে বাড়ি চলে এসেছিলাম।
প্রতিবছরের ন্যায় আগের বছরও আমার ঘোরাঘুরির পর্ব শুরু করেছিলাম আমার এক স্টুডেন্টদের বাড়ি থেকে। তাদের বাড়ির প্রতি বছরই ঘরোয়া ভাবে সরস্বতী পুজো হয় আর আমাকে প্রতিবছরই যেতে বলে। আর প্রথমেই ভাইপোকে নিয়ে চলে গিয়েছিলাম ওদের বাড়ি। প্রসঙ্গত বলে রাখি আগের বছর সরস্বতী পুজোর সময় আমার ভাইপোর বয়স ছিল দুই বছর তিন মাস। মানে বুঝতেই পারছেন কতটা ছোট্ট ছিল। তাও যেহেতু বায়না জুড়ে ছিল তাই আমিও সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলাম। যদিও তখনো বুঝিনি এই ছোট্ট বাচ্চাটাকে সঙ্গে করে নিয়ে গেলে কতটা সমস্যার মধ্যে পড়তে হতে পারে। যাই হোক ওদের বাড়ি প্রসাদ খেয়ে ঠাকুরকে প্রণাম করে বেশ কিছু ফটো তুলে নিয়েছিলাম। আমার ভাইপো যেকোনো নতুন জায়গায় গেলে প্রথমে একটু চুপচাপ থাকে তারপর খুবই দুরন্ত হয়ে ওঠে। সেখানে গিয়েও তাই। কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকার পর দুটো দিদিকে পেয়ে তার সে কি উচ্ছ্বাস। ও খুব কম বয়সেই স্পষ্ট কথা শিখে গিয়েছিল। তাই সবাই ওর কথা শুনতে খুব পছন্দ করছিল।
সেখানে কিছুক্ষণ কাটানোর পর আমরা বেরিয়ে পড়েছিলাম বিভিন্ন মন্ডপগুলো ঘুরে দেখার জন্য। এই বাড়ি থেকে বেরোনোর পরেই শুরু হয়েছিল আমার ভাইপো কে নিয়ে বিপদে পড়ার আসল গল্প। যা আমি আমার পরবর্তী পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার পরবর্তী পর্ব নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আপনার সরস্বতী পুজোর স্মৃতিগুলো খুবই সুন্দর এবং প্রাণবন্ত। ভাইপোর সাথে এই বিশেষ দিনটি কাটানোর অভিজ্ঞতা সত্যিই মজাদার ছিল। তাদের খুশি আর দুরন্ত আচরণ দেখে আপনি নিজেও নিশ্চয়ই অনেক আনন্দ পেয়েছেন। পরবর্তী পোস্টের অপেক্ষায় রইলাম, আশা করি আরো মজার গল্প জানতে পারব।
সরস্বতী পূজা আপনাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ আজকে আপনার পোস্ট পরিদর্শন করে বুঝতে পারলাম কিন্তু আপনি সকালবেলা আপনার ভাইপোকে নিয়ে সোজা চলে গিয়েছিলেন আপনার হবু শ্বশুর বাড়িতে ওখানে গিয়ে আপনি নতুন একটা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন আসলে এই বিষয়গুলো আমার একেবারেই অজানা আজকে আপনার পোস্টের মাধ্যমে অনেক কিছুই জানতে পারলাম এরপরে আপনার স্টুডেন্টের সাথে আপনার ভাইপোকে নিয়ে আবার ঘুরতে বের হয়েছিলেন অসংখ্য ধন্যবাদ সরস্বতী পূজা এবং আপনাদের ঘোরাঘুরি সম্পর্কে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন।