আমার স্কুলের কিছু মুহূর্ত
নমস্কার বন্ধুরা, আজ আমি তোমাদের সঙ্গে আমাদের কৃষ্ণনগর শ্রী রামকৃষ্ণ মিশন এ গদাধর অভ্যুদয় প্রকল্প ছাত্রদের কিছু মুহূর্ত শেয়ার করব।
আমি এই বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষিকা ।আমাকে আমার ছাত্ররা বড় দিদিমণি বলে ডাকে। এছাড়াও আরো দুজন শিক্ষক এবং একজন শিক্ষিকা আছেন। আমাদের এই স্কুলের টাইম সকাল সাতটা থেকে সকাল নটা পর্যন্ত।
আমাদের এই বিদ্যালয়টি সাধারণ বিদ্যালয় এর মত নয়। এটি আসলে ফ্রী টিউশন ক্লাস এর মতো বলা যেতে পারে। এখানে খুব দুস্থ পরিবারের পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের পড়ানো হয়।
প্রার্থনা পর্ব:
সবার প্রথমে সকাল সাতটায় যখন ছেলেমেয়েরা স্কুলে আসে তখন প্রথমে তারা পরপর লাইন করে দাঁড়ায় ও ব্যায়াম করে।তারপর তারা 'মা আমাদের মানুষ কর' এই গানটি করার পর একটি 'বৈদিক মন্ত্র' ও 'স্বদেশ মন্ত্র'পাঠ করে তারপর জাতীয় সংগীত গায়।প্রার্থনা শেষ হয় ৭:১৫ মিনিটে।
পড়াশোনা পর্ব:
প্রথম পর্ব শেষ হলে সব বাচ্চারা কার্পেট পেতে পরপর বসে পড়ে এবং নিজেদের পাঠ্যপুস্তক বের করে। তাদের পড়াগুলো ঠিক করে বুঝিয়ে দেওয়া। তাদের থেকে পড়া নেওয়া এবং পড়া এখানে বসেই মুখস্ত করিয়ে দেওয়া হয়। বাচ্চারা ৭:১৫ মিনিট থেকে ৮:৪৫ মিনিট পর্যন্ত পড়াশোনা করে। এই সময় তারা খুব মনোযোগী থাকে ।
টিফিন পর্ব:
পড়াশোনা শেষ হলে বাচ্চাদের জন্য সকালে খুব সামান্য একটা টিফিনে ব্যবস্থা থাকে। এই টিফিনে এক একদিন এক এক রকম খাবার দেওয়া হয়। বেশিরভাগ দিনে তাদেরকে এক গ্লাস করে দুধ দুটি করে বিস্কুট ও একটি করে কলা দেয়া হয়। মাঝেমধ্যে তাদেরকে ডালিয়ার খিচুড়ি বা চালে ডালে খিচুড়ি করে দেওয়া হয়। কোন কোন দিন মুড়ি ও ঘুগনী ও তাদেরকে টিফিন হিসাবে দেওয়া হয় ।এছাড়া থাকে আরো অনেক রকমের ফল মিষ্টি। আসলে টিফিনটা তাদের দেওয়া হয় যাতে তারা একটু পুষ্টিকর খাবার পায়।
প্রতিমাসে তাদেরকে নানা রকম উপহার দেওয়া হয় যেমন তাদের টুথব্রাশ, টুথপেস্ট ,বই ,খাতা ,পেন্সিল ,পেন, গায়ে মাখা তেল ,সাবান ,শ্যাম্পু। প্রতিমাসে একটি দিন তারা রামকৃষ্ণ মিশনে একটি ছোট পিকনিক মত করে থাকে।
বাচ্চাদের সব থেকে মজার দিন হচ্ছে রবিবার বা তাদের যেদিন স্কুল ছুটি থাকে। এই দিনগুলিতে স্কুলের টাইম একটু বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এই দিনগুলিতে বাচ্চারা পড়াশোনা টিফিন করার পর মিশনে খেলা করার সুযোগ পায় এক একদিন তাদের একেক রকম খেলা করানো হয় এছাড়া তারা কি করে নিজেদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ পরিষ্কার রাখবে সেটি ও শেখানোর জন্য আশ্রমের চত্বর এ পড়ে থাকা পাতা কাগজ তুলে পরিষ্কার করতে বলা হয়।